পোল্ট্রির উৎপাদন খরচ কমাবে কেঁচোর পাউডার
ক্যাম্পাস
পোল্ট্রির খাদ্যে উদ্ভিদ প্রোটিনের বিকল্প কেঁচোর পাউডার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপুষ্টি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো শফিকুর রহমান শিশির এবং তার গবেষক দল। তারা বলছেন, কেঁচোর উৎপাদনশীলতা বেশি এবং উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় তা পোল্ট্রির উৎপাদন খরচ কমাবে।
গবেষকরা জানান, তাদের গবেষণায় রেড ওয়ার্ম বা কেঁচো ব্যবহার করা হয়েছে। কেঁচোর প্রতি কেজিতে ড্রাই বায়ো মাস ১০-১২ শতাংশ পাওয়া যায়। বিভিন্ন মিডিয়াতে (প্লাস্টিক অথবা সিমেন্ট রিং) কেঁচো উৎপাদনের জন্য জৈব উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। সবজির উচ্ছিষ্টাংশ, কলাগাছ, মুরগির ফ্লারি ও গোবর একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে মাত্র ২১ দিনে ২০০ গ্রাম কেঁচো বীজ থেকে প্রায় দ্বিগুণের বেশি কেঁচো উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। একবার বীজ স্থাপন করলে ফসলের মতো বারবার কেঁচো উত্তলন করা সম্ভব। সামনে এর পুষ্টি গুণাগুণ নিয়ে আরও গবেষণা করা হবে বলে জানান গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা গেছে, পোল্ট্রি খাদ্য রেশনে কেঁচোর পাউডার ব্যবহারে ব্রয়লার মুরগির স্বাদে, রঙে ও চর্বির পরিমাণে পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তিত রেশন খাওয়ানো ব্রয়লারের মাংস কিছুটা লালচে রঙের হয়। বুকের মাংসে কম পরিমাণে চর্বি জমতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে প্রধান গবেষক ড. মো. শফিকুর রহমান শিশির বলেন, পোল্ট্রি খাদ্যের দামবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে উদ্ভিদ ও প্রাণি প্রোটিনের মূল্যবৃদ্ধি। পোল্ট্রি খাদ্য রেশনের প্রায় ২৫ শতাংশ প্রোটিন দেওয়া হয়। যার মধ্যে উদ্ভিদ প্রোটিনের প্রধান উৎস সয়াবিন ও প্রাণিজ প্রোটিনের জন্য মিট মিল, ব্লাড মিলসহ মিথিওনিন ও লাইসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই খাদ্য উপাদানের দাম যেমন একদিকে বেশি তেমনি অধিকাংশ আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া মিথিওনিন ও লাইসিনের মতো অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের প্রোফাইল উদ্ভিদের চেয়ে প্রাণীতে বেশি শক্তিশালী। পোল্ট্রি রেশনের ৭-৮ শতাংশ কেঁচো থেকে পাওয়া প্রোটিন ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে খাদ্যের দাম যেমন কমে আসবে তেমনি পোল্ট্রির উৎপাদন খরচও কমে আসবে।
গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন- পশুবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসান মোহাম্মদ মোর্শেদ, পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আবিদুর রহমান খান, অজিত মজুমদার এবং উম্মে সালমা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের আওতায় ২০১৬ সালে দুই বছর মেয়াদি প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি শুরু হয়।