৩:৫৪ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে ভূমিকা রাখবে অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিনের সরিষা নিয়ে গবেষণা
ads
প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২৪ ৭:২২ অপরাহ্ন
খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে ভূমিকা রাখবে অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিনের সরিষা নিয়ে গবেষণা
কৃষি গবেষনা

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু ,বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহঃ স্বল্প মেয়াদী ও উচ্চ ফলনশীল সরিষার জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।আর এ গবেষনা কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাকৃবির জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিন। দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চফলনশীল সরিষা নিয়ে কাজ করছেন তিনি। তার সাথে কাজ করছেন তার স্নাতক -স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি শিক্ষার্থীরা।

অধ্যাপক রবিন জানান, বাকৃবির জেনেটিকস এন্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত সরিষার মোট দশটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলো হলো সম্পদ, সম্বল এবং বাউ সরিষা-১ থেকে ৮ পর্যন্ত। সম্পদ এবং সম্বল উদ্ভাবনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অধ্যাপক ড. লুৎফুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. আব্দুল কুদ্দুস । বাউ সরিষা-১,২,৩ এই তিনটি জাত লবণাক্ততা সহিষ্ণু। তিনটি জাত উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। ওই গবেষণা দলে আমিও ছিলাম। এরপরে অতি স¤প্রতি বাউ সরিষা-৪,৫,৬,৭,৮ পাঁচটি উচ্চ ফলনশীল জাত আমি রিলিজ করেছি। জাতগুলো ছত্রাকজনিত অলটারনারিয়া ব্লাইট রোগের প্রতি অধিক মাত্রায় সহনশীল। এগুলোর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকের মাঠে দুই টনের বেশি ফলন পাচ্ছি। যশোর এবং খুলনা অঞ্চলে এই জাতগুলোর দুই থেকে আড়াই টন ফলন পেয়েছি। এর মধ্যে বাউ সরিষা-৫ কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা জাতগুলো দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন- কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা , সাতক্ষীরা, বরিশাল, যশোর, বগুড়া এবং নওগাঁসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছি এবং কৃষকের আগ্রহে পরিণত হয়েছে বাউ সরিষা-৫।

জাতগুলোতে ফ্যাটি এসিডসহ সরিষার গুরুত্বপূর্ণ তেলের উপাদানগুলো ভারসাম্য মাত্রায় থাকায় এ জাতের সরিষাগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে আমি মনে করি। বাউ সরিষা-১ থেকে ৮ পর্যন্ত যে জাতগুলো আমরা কৃষকের জন্য রিলিজ করেছি, সেই জাতগুলো ছিলো ব্রাসিকা জুসিয়া প্রজাতির। এগুলো ৮৮ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তো যায় এবং ফলনও ভালো। বর্তমানে আমরা স্বল্প জীবন দৈর্ঘ্যের জাত উদ্ভাবন করার চেষ্টা করছি যেগুলো হবে ব্রাসিকা ন্যাপোস প্রজাতির। এই জাতগুলোর ৭৮ থেকে ৮২ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যাবে এবং ফলনও উচ্চপর্যায়ের হবে।

বর্তমানে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে কিন্তু জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এমনতাবস্থায় দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উল্লেখিত গবেষণা ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন রাজবাড়ী জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর নানা উদ্যোগে দেশে সরিষার আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশীয় চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল কম আমদানি করেছে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ।
ডক্টর রবিনের সরিষা নিয়ে গবেষণা কাজটি চলছে বাকৃবির গবেষণা মাঠে। ওখানে গিয়ে দেখা যায় সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের কাজ করছে মৌমাছিরা। দেখলাম দুইজন শিক্ষার্থী কাজ করছেন মাঠে। তাদের মধ্যে একজন আতকিয়া আবিদা। তিনি জানান, আমি এখানে হাইব্রিডাইজেশন কাজ করছি। এক জেনোটাইপের সাথে অন্য জেনোটাইপের নিয়ে হাইব্রিডাইজেশন করছি। এভাবে কোনো পরিবর্তন হয় কি না কিংবা নতুন কোনো বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় কিনা সেটিই আমরা দেখছি। মুন মোদক নামে স্নাতকে অধ্যায়নরত একজন শিক্ষার্থী জানান, এখানে সরিষার অনেকগুলো জাত লাগানো হয়েছে। কোন জাতের সরিষায় আগে ফুল এসেছে, কোনটিতে পরে ফুল এসেছে, কোনটিতে ৫০ শতাংশ ফুল এসেছে, কোন জাতের সরিষায় রোগ কম বা বেশি হচ্ছে সেটির পর্যেবক্ষণ এবং নিয়মিতভাবে তথ্য রাখছি আমরা। পরে দেশে বহুল প্রচলিত বারি সরিষা-১৪ এর সাথে তুলনা করবো। কারণ, আমরা চাই তার থেকেও উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে।

আমাদের দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হলো কৃষি। স্বাধীনতা উত্তর দেশের উন্নয়নে এবং মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন কৃষক ও কৃষিবিদরা। নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাও অর্জিত হয়েছে। কৃষি গবেষণার আতুঁড়ঘর এই বাকৃবির শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ নিরলস প্রচেষ্টায় নিশ্চিত হবে কৃষি বিপ্লব।

দেশে সনাতন কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নে তথা বিজ্ঞান-ভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি-বিজ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনৈতিক বুনিয়াদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম উচ্চতর কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পথ চলা শুরু হয়। ধীরে ধীরে কৃষি উন্নয়নের কারিগর তৈরির কারখানা হয়ে ওঠে বাকৃবি। কৃষি গবেষণার আতুঁড়ঘর এই বাকৃবির শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ নিরলসভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ শুরু করেন। শুরু হয় কৃষির বিপ্লব।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop