ছাগলের কৃমি দমনে যা করবেন
প্রাণিসম্পদ
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন বাংলাদেশের খামারীদের ভাগ্যবদলের অন্যতম পাথেয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। তবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলেও নিতে হয় আলাদা যত্ন। বিশেষ করে কৃমি দমনে কার্যকরী পদক্ষেপ খামারীদের জন্য বেশ উপকারী।
ছাগলের বাচ্চার কৃমি দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ:
কৃমি দমন : কৃমি ছাগলের মারাত্মক সমস্যা। বয়স্ক ছাগল ও বাচ্চার কৃমি দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ও উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না।
কৃমির জন্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কাজেই কাছের প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে ছাগলের মল পরীক্ষা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছাগলকে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।
১-৪ মাস পর্যন্ত বাচ্চা দের কৃমি মুক্ত করার পদ্ধতি:
বাচ্চা ছাগল, ভেড়া, গাড়ল:- বিভিন্ন খামারী এরং ছাগল পালন কারীর সাথে আলোচনা করে এবং নিজে অভিজ্ঞতা থেকে একটি সাধারণ বিষয় লক্ষ্যণীয় হল ছাগলের ক্ষেত্রে বাচ্চা জন্মানোর প্রথম ১ মাস বাচ্চা গুলোর দৈহিক বৃদ্ধি ভাল থাকে এবং দেখতে খুব সুন্দর থাকে কৃমি মুক্ত না করা বাচ্চাগুলো দ্বিতীয় মাস থেকেই আস্তে আস্তে দৈহিক বৃদ্ধি এবং সৈন্দর্য কমতে থাকে, দিন দিন শুকিয়ে যায় আর পেটের সাইজ বড় হতে থাকে,খুবই ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়, আবার পায়খানার সাথে সাদা সাদা ফিতা কৃমি,হুক কৃমি,চাবুক কৃমি বের হতে থাকে ।
বাচ্চাগুলো খুবই দূর্বল হয়ে ধীরে ধীরে হাড় চামড়ার সাথে ভেসে উঠে কিছু বাচ্চা মারা যায় আবার কিছু বাচ্চা বছর পার হলেও শরির স্বাস্হ্য খারাপ হতেই থাকে । আমারা খামারে সাধারণতঃএই সমস্যার সন্মুখিন হচ্ছি বা হতে পারি। সেজন্য নিচের নিয়মে ছাগল,গাড়লের বাচ্চাদের কৃমি মুক্ত করতে পারলে খামার কে লাভবান করা সম্ভব।
বাচ্চাকে ১ মাস বয়স হলে নিওট্যাক্স,বা এক্সট্রাস মানুষের সিরাপ জেনেরিক নেইম লিভামিসোল প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ এমএল হিসেবে খাওয়াতে হবে । (বিঃদ্রঃ কৃমির প্রভাব দেখা দিলে ১৫দিন বয়স থেকেও দেওয়া যেতে পারে।) দুই মাস বয়স পূর্ন হলে এলটিভেট জেনেরিক নেইম লিভামিসোল + ট্রাইক্লাবেন্ডাজল ৪০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়াতে হবে ।
তিন মাস বয়স হলে এমেকটিন প্লাস জেনেরিক নেইম আইভারমেকটিন + ক্লোরসুলন ২৫ কেজি হিসেবে ১ এমএল চামড়ার নীচে ইঞ্জেকশন দিতে হবে। চার মাস বয়স হলে প্যারাক্লিয়র ফেনবেন্ডাজল গ্রুপের ট্যাবলেট ১০-২০ কেজির জন্য ১ টি । তার ৭-৮ মাস পূর্ণ হলে বড় ছাগলের রুটিনে কৃমি মুক্ত করতে হবে ।
বাচ্চা গাড়ল, ভেড়া, ছাগলের ক্ষেত্রে যেহেতু ১-২ মাসের অধিক সময় পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে তাই কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পর লিভারটনিক না খাওয়াতে পারলে তেমন কোন সমস্যা হবে না আর ৩-৪ মাসে কৃমির ঔষধের দেওয়ার পর লিভারটনিক খাওয়াতে হবে ।