খাল পুনঃখননে কৃষকের মুখে হাসি
কৃষি বিভাগ
নওগাঁর আত্রাইয়ের লালপাড়া-পৈঁসাওতা খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। এই খাল পুনঃখনন হওয়ায় উপ-প্রকল্প এলাকার কৃষক-সমিতির সদস্য উপকৃত হয়েছে। খালটির দৈর্ঘ্য চার কি.মি.।
জানা গেছে, আত্রাইয়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সার্বিক তত্ত্বাবধানে, টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খাল পুনঃখনন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে লালপাড়া-পৈঁসাওতা (এসপিনং-২৫৩২৭) পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ। খাল খনন শুরু হয় চলতি বছরের মার্চ মাসে আর শেষ হয় ৩১শে এপ্রিলের মধ্যে। খালটি উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের লালপাড়া স্লুইস গেট থেকে শুরু হয়ে পৈঁসাওতা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়েছে। খালটি পুনঃখনন হওয়ায় পৈঁসাওতা, বাহাদুরপুর, দমদত্ত বাড়িয়া, হিঙ্গলকান্দি, উলুবাড়িয়া, লালপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষ বিভিন্ন উপায়ে সুবিধা ভোগ করছেন। খালটি পুনঃখনন করায় বর্ষার পানি সংরক্ষণ করে শুষ্ক মৌসুমে খাল তীরবর্তী আটশ’ হেক্টর জমিতে সেচ কাজ সহজসাধ্য হয়েছে।
সুবিধাভোগী হিঙ্গলকান্দি গ্রামের কৃষক বাবলু বলেন, লালপাড়া-পৈঁসাওতা উপ-প্রকল্প খালটি পুনঃখনন করায় এলাকার কৃষকরা নতুন করে সোনালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। আগে বন্যার পানি উপচে ফসল ডুবে যেত খাল পুনঃখনন করায় এখন আর এ সমস্যা নেই। খালের পানি ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষবাদ শুরু করেছি।
লালপাড়া-পৈঁসাওতা (এসপিনং-২৫৩২৭) পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, খালের পানি ব্যবহার করে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ এবং বীজতলা বপন সহজ হবে। তা ছাড়া এ পানি ব্যবহার করে রবি মৌসুমে গম, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদন হবে। যার ফলে একদিক যেমন কৃষকরা লাভবান হবেন পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. পাভেজ নেওয়াজ খান বলেন, খালের মাটি খালসংলগ্ন রাস্তায় ব্যবহার করে রাস্তা প্রায় ৪.৫ ফিট উচুঁ করা হয়েছে এবং প্রায় ১১০০ মি. রাস্তার শোল্ডার তৈরি করা হয়েছে।
আত্রাই-রাণীনগরের সংসদ সদস্য আলহাজ আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, বর্ষাকালে অতিবৃষ্টির ফলে রাণীনগর ও রক্তদহ বিলে যে রূপ বন্যা সৃষ্টি হয় তা নিষ্কাশনের একমাত্র পথ এই খালটি পুনঃখননের মাধ্যমে বন্যার পানি নিষ্কাশন সহজ হবে। আমি মনে করি এ গুরুত্বপূর্ণ খালটি পুনঃখননের ফলে বিভিন্ন মৌসুমে কৃষকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সুবিধা ভোগ করবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোফায়েল আহম্মেদ জানান, খাল খননের ফলে ওই এলাকার কৃষির প্রসার ঘটানো ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ সহজ হবে। তাছাড়া মৎস্য চাষ ও হাঁস পালনসহ অন্যান্য সুবিধা পাবে। এতে করে সমিতির সদস্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।
অপরদিকে খালের উভয় পাড়কে সুরক্ষিত এবং মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করার একটি রাস্তা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষকরা ১২ মাস সেচ সুবিধা পাবেন।