৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ৯ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ১৪, ২০২২ ২:২৯ অপরাহ্ন
দক্ষিণাঞ্চলের অর্থকরী ফসল গোলগাছ
এগ্রিবিজনেস

নাম গোলগাছ হলেও দেখতে কিছুটা নারিকেল পাতার মতো। এটি দক্ষিণাঞ্চলের অর্থকরী ফসল। নোনাজলে জন্ম, নোনা সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অথচ এর ডগা থেকে বেরিয়ে আসছে মিষ্টি রস।

সেই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। সুস্বাদু এই গুড়ের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। প্রতি বছর শীত মৌসুমে প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রায় শতাধিক কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়ে এ গাছের রস সংগ্রহ করতে। এরপর বাড়ির উঠানে বসে শুরু হয় রস দিয়ে গুড় তৈরির কাজ।

আর সেই গুড় স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে চলছে এলাকার কৃষকদের জীবন-জীবিকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে কৃষকরা প্রতিদিন সকাল হলেই রস সংগ্রহ করতে ছুটে যায় গোলবাগানে। আর ব্যস্ত হয়ে পড়ে ওইসব কৃষক পরিবারের গৃহবধূরা। কেউ কলস কিংবা বালতি নিয়ে যাচ্ছে।

অবার কেউ রস ভর্তি কলস বালতি নিয়ে বাড়ি ফিরছে। কেউ কেউ সংগৃহীত রস বাড়ির উঠানে নিয়ে আসছেন। আর সেই রস গৃহবধূরা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে ঢোঙ্গায় রাখছেন। এরপর তারা তাফালে খড়কুটা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রস দিয়ে তৈরি করেন গুড় বা মিঠা। ওই গ্রামের সুনিতি রানী বলেন, বিয়ের পর থেকে গোলের রস দিয়ে গুড় তৌর করছি।আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে।

গৃহবধূ বিথীকা রানী বলেন, এখন রস জ্বাল দিতে হবে। এখন কথা বলার সময় নেই। একটু বসতে হবে।

সংশ্লিষ্ট গোল গাছের মালিকরা জানান, প্রতিটি গোলগাছ পাতাসহ উচ্চতা হয় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত। এর ফুল হয় হলুদ এবং লাল বর্ণের। ফুল থেকে গাবনা পরিপক্ব হলে সেটি তালগাছের আঁটির মতো কেটে শাস খাওয়াও যায়। এটি পাম জাতীয় উদ্ভিদ। এসব গাছ নদী কিংবা খালের পাড়ে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয়। তবে গোলগাছ চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক, সহজসাধ্য এবং ব্যয়ও খুব কম। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। এতে কোনো পরিচর্যাও করতে হয় না। এক সময় এ উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও নদীর তীরে প্রচুর গোলের বাগান দেখা যেত। কিন্তু জলবায়ুর প্রভাবজনিত কারণ ও প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ আর চাষাবাদের অভাবে এ গাছ ক্রমশই ধ্বংস হতে বসেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ বনাঞ্চল সুন্দরবনসহ দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে গোলগাছ রয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, কুয়াকাটা, রাঙ্গাবালি, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, বরগুনার আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, ভোলা ও খুলনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাসহ চরাঞ্চলে গোলগাছের বাগান রয়েছে। শীত মৌসুমে গোলবাগানের মালিকরা এর রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করে থাকেন।

নবীপুর গ্রামে গোল গাছ চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, তার বাগান থেকে প্রতিদিন ৪ কলস রস বের হয়। এতে মোট ১৩ কেজি গুড় আসে। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে উঠে কলস নিয়ে বাগানে যেতে হয়। এরপর প্রতিটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে আনতে হয়। অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু হয়ে চৈত্র মাস পর্যন্ত রস সংগ্রহের কাজ চলবে।

একই গ্রামের মনিন্দ্র শিকারী বলেন, গোলগাছের গুড়ের স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ উপজেলায় শতাধিক পরিবার গোলগাছের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, এ উপজেলার চাকামইয়া, নীলগঞ্জ ও টিয়াখালীর ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা এসেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২২ ২:২২ অপরাহ্ন
জয়পুরহাটে আলুর কেজি ৫ টাকা, দিশেহারা চাষিরা
এগ্রিবিজনেস

প্রতিদিনই কমছে আলুর দাম। ভালো ফলন হলেও বাজারে দাম না থাকায় লোকসানের মুখে পড়ছেন জয়পুরহাট জেলার আলুচাষিরা। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে প্রতি কেজি আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা। ফলে খরচের তুলনায় লোকসান বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা তারা।

জেলা শহরের নতুনহাটে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, গতকাল যে আলু প্রতি মণ ছিল ৪৫০ টাকা তা আজ বাজারে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ২৫০ টাকার আলু ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এভাবে দিন দিন আলুর দাম কমে যাচ্ছে। রোমানা পাইকারি (লাল) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা মণ। আর প্রতি কেজি ১০ টাকা। বট পাইকারি (লাল) মিউজিকা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা মণ। গ্রেনোলা আলু প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

আলুর পাইকারি ক্রেতা জুয়েল ও সুলতান আহম্মেদ বলেন, আলুর বাজার এক দিন আগে যা ছিল পরের দিন তা থাকছে না। দাম হুহু করে কমে যাচ্ছে। আমরা যেসব আলু কিনছি এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচাবাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। কিন্তু আলুর বাজার একেবারেই উঠছে না।

বাজারে গ্রানোলা আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা বলেন, প্রতি বিঘায় আলুর ফলন হচ্ছে ৫৮-৬০ মণ। আলু চাষে জমিতে ১৮-২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজার হিসেবে আলু বিক্রি করলে ১২-১৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করা সম্ভব নয়। এতে আমাদের কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরকারিভাবে রফতানি ও দাম নির্ধারণ করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

কালাই উপজেলার হাজীপাড়া গ্রামের আলুচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, জমি থেকেই আলু বিক্রি করে দিচ্ছি। আজ ৩৭০ টাকা দরে ৮০ মণ মিউজিকা আলু বিক্রি করেছি। তবে প্রতি মণ ১০ টাকা কমে ৩৬০ টাকা দরে ৩০ মণ আলু বিক্রি করেছেন বালাইট গ্রামের মো. মোজাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কিন্তু ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

জেলা কৃষি বিপণন বিভাগের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক মো. সাখওয়াত হোসেন বলেন, আলুর ভরা মৌসুম চলছে। এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে। এজন্য আলুর দাম কম।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২২ ১:৪৫ অপরাহ্ন
পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, তবে হতাশ চাষিরা
এগ্রিবিজনেস

পাবনায় এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ চাষি পেঁয়াজ ঘরে তুলেছেন। তবে পেঁয়াজের দাম আশানুরূপ না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। এতে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

জানা গেছে, গত কয়েক বছর পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছরও জেলার চাষিরা লাভের আশায় অনাবাদী জমি আবাদের উপযুক্ত করে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তবে বাজারে দাম কম থাকায় তাদের লোকসান গুনতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ মৌসুমে পাবনায় ৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ১ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন। আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে জেলা কৃষি বিভাগ। তবে সব কৃষকের পেঁয়াজ ঘরে না তোলায় উৎপাদনের সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করতে পারছে না কৃষি অফিস।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চরাঞ্চল বা উঁচু জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ও জানুয়ারির শুরুতে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে সেগুলো পরিপাটি করে জেলা শহর বা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। চারা পেঁয়াজ উঠার তিন মাস আগে বাজার সামাল দেয় মুড়িকাটা পেঁয়াজ।

সুজানগর পৌরহাটে পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসেছেন খয়রান গ্রামের পেঁয়াজচাষি রফিক হোসেন। তিনি জানান, যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তাতে কিছুটা লোকসান গুনতে হচ্ছে। মণপ্রতি সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারলে অন্তত খরচের টাকা উঠত।

সদরের সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হাছেন আলী জানান, এ জেলার পেঁয়াজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যান। তবে পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার না থাকায় বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে কৃষকরা মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলেই স্থানীয় হাট-বাজারে দ্রুত বিক্রি করে দেন।

সদরের পুষ্পপাড়া হাটে পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা সাইদুল ইসলাম, রজব আলীসহ অনেকে বলেন, গত বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ভালো ছিল। এই আশায় এবার পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। হাটে পেঁয়াজ এনে হতাশ। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজার দর কমিয়ে পেঁয়াজ কিনে ঢাকার বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করছে।

ঈশ্বরদী উপজেলার চরগড়গড়ি গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, গত বছর এ সময় এক মণ মূলকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। কিন্তু এ বছর পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। মূলকাটা পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ করা যায় না। তাই আশানুরূপ দাম না পেলেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এ বছর জেলায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৭ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জেলায় এবার ৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে ১ দশমিক ১১ লাখ মেট্রিক টন মূলকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে ফলন ভালো হওয়ায় দাম কম হলেও কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে না। জেলায় একটি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা যায় কি না সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১১, ২০২২ ৩:৪২ অপরাহ্ন
মাশরুমে স্কুলশিক্ষার্থীর মাসে আয় ৩০ হাজার টাকা
এগ্রিবিজনেস

আব্দুল্লাহ, স্কুলশিক্ষার্থী। নরসিংদী সদর উপজেলার পৌরশহরের বীরপুর মহল্লার সন্তান। বাড়ির ছাদে মাশরুম চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে সে। চাষ শুরু করার ছয় মাসের মাথায় এখন তার প্রতিমাসে গড়ে আয় হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তার বাগানের নাম ‘ফিউচার মাশরুম সেন্টার’। 

বাবা মকবুল হোসেনের আদরের সন্তান সে। নরসিংদী আইডিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তার এ সাফল্য দেখে অনেকেই এখন মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

আব্দুল্লাহ জানায়, সাভার মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে ট্রেনিং নিয়ে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি বাড়ির ছাদে মাশরুম চাষ শুরু করে। এখন তার সেন্টারে ১ হাজারের উপরে খড়ের স্পন প্যাকেট রয়েছে। বর্তমানে তার বিনিয়োগ ২ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল্লাহর তিনতলা বাড়ির ছাদের একপাশে টিনের শেড। শেডের নিচে পাটের রশির শিক্কা। শিক্কায় ঝুলছে মাশরুমের বীজপত্র স্পন। খড় দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বানানো এই বীজপত্রের চারপাশ দিয়ে ছোট-বড় মাশরুম উঁকি দিচ্ছে।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে সারাদেশের ন্যায় যখন তারও স্কুল বন্ধ, সেসময়ে বাসায় বেকার বসে না থেকে পড়াশুনার পাশাপাশি নতুন কিছু শেখার এবং করার প্রত্যয়ে সে অনলাইনে মাশরুম সম্পর্কে জানতে আগ্রহ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে সাভার মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে একটি প্রশিক্ষণ কোর্স করে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে মাশরুম ফার্ম করার উদ্যোগ নেন। ২০২১ সালের জুন মাসের দিকে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে চাষ শুরু করেন। প্রথমে কোনোরকমে আয় আসলেও গত দুইমাস ধরে অনেকটা বেড়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি বাবার কাছ থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। গত ছয় মাস কাজ করেছি, তিন মাস লাগে একটা বীজপত্র বা মাইসিলিয়াম শেষ হতে, প্রতিটি মাইসিলিয়াম থেকে দেড় কেজি মাশরুম আসে। প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি হয় ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। এখন আমার পুঁজি ২ লাখের বেশি টাকা। মোট আয় হয় মাস প্রতি ৩৫-৪০ হাজার টাকার বেশি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমাসে গড়ে আমার ৩০ হাজার টাকা লাভ থাকছে।’

মাশরুম চাষ পদ্ধতি নিয়ে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘খড়, কাঠের গুঁড়া, ভুসি, তুষ ও চুন দিয়ে নিজেরাই মাশরুমের বীজ তৈরি করা যায়। পরে বীজের সঙ্গে জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন সেন্টার থেকে আনা টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত পানি স্প্রের ২০ দিনের মাথায় শুরু হয় ফলন। এ কাজে তেমন একটা পরিশ্রম নেই।’

মাশরুম বাজারজাতকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশে প্রতিদিন প্রায় সবাই মাশরুম খেয়ে থাকেন। এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তবে আমাদের দেশে এখনো পর্যন্ত মাশরুমটা সমাজের সব স্তরে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। কেউ কেউ ব্যাঙের ছাতা বলে থাকেন। আমরা একে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। অনলাইনে অর্ডার নেই, পরে কুরিয়ার করে পাঠাই। আবার অনেকে এসে বাড়ি থেকেই নিয়ে যায়। তবে বেশিরভাগই মাশরুম আমার বাড়ি থেকে লোকজন এসে নিয়ে যান।’

আব্দুল্লাহর পিতা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের এইরকম কাজে আমি অত্যন্ত খুশি। অবসর বসে না থেকে সে যে উৎপাদনমুখী কাজ করছে, এটাই অনেক।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১১, ২০২২ ৩:১০ অপরাহ্ন
পাবনায় সরিষা ফুলের মধু থেকে এবার আয় হবে ১০ কোটি
এগ্রিবিজনেস

পাবনায় প্রতিটি অঞ্চলেই সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় মৌ খামারিরা। ইতোমধ্যে খাঁচা পদ্ধতিতে চাষকৃত মৌ মাছির মাধ্যমে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যাপক সারা ফেলেছে।

জেলার সুজানর, চাটমোহার, ভাঙ্গুড়া, ফুরদুপর, আটঘড়িয়া উপজেলার প্রতিটি বিল অঞ্চলের সরিষার ক্ষেতের পাশে বসানো হয়েছে মধু সংগ্রহরে মৌ খাঁচা। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় শতাধিক মৌ খামারি সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করছেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবার জেলাতে প্রায় ১০ মেট্রিকটন মধু সংগ্রহীত হবে যার বাজার মূল্য ১০ কোটি টাকা।

এদিকে এই মধু স্থানীদের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশ ও বিদেশে।

জেলার প্রায় প্রতিটি অঞ্চলের কৃষক নিজেদের জমিতে কম বেশি সরিষার আবাদ করে থাকেন। বিশেষ করে বিল অঞ্চলগুলোতে গেলে দিগন্ত মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহে দৃষ্টি জুড়িয়ে যাবে। যেদিকে চোখ যায় সে দিকেই সরিষা ফুল চোখে পরবে। বিগত দিনগুলোর থেকে বর্তমানে সরিষার আবাদ ও ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর অন্যতম কারণ ফসলের মাঠের পাশে মৌ মাছির খামার। ফসলের মাঠে এই মৌ মাছি মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পরাগায়ন ঘটছে ফসলের। আর এরই কারণে কৃষক স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি ফলন পাচ্ছে। তাই খাঁচায় মৌ মাছি দিয়ে মধু সংগ্রহরে মাধ্যমে এক দিকে যেমন বহু পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ মধু পাওয়া যাচ্ছে অন্যদিকে চাষিদের ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে বহুগুণ।

আমাদের দেশে শীতের সময়ে মধুর প্রচলন ও ব্যবহার বহুগুণে বেড়ে যায়। আর এই মধুর চাহিদা অনেকাংশ পূরণ করে থাকে সরিষা ফুলের থেকে সংগৃহীত মধু। কৃষিসমৃদ্ধ পাবনা জেলাতে তাই শীতের এই সময়ে সরিষা ফুলের মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে বিদেশে। জেলাতে এ বছরে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১০ মেট্রিকটন। যার বাজার মুল্যে প্রায় ১০ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ হবে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদরের দুবলিয়া এলাকার সরিষা চাষি কৃষক জব্বার আলী প্রামানিক বলেন, সরিষা ফুল থেকে কিভাবে মধু সংগ্রহ করা যায় এ বিষয়টি আগে জানতান না আমরা। আগে বিভিন্ন বাড়িতে গাছের ডালে মৌ মাছি বাসা করতো। সেখান থেকেই মধু সংগ্রহ করা হতো। আর আর এখন খাঁচায় চাষকৃত মৌ মাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করছি। মৌ মাছির কারণে আমাদের সরিষার ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে আর মধু পাচ্ছি আমরা।

স্থানীয় মধু বিক্রেতা উদ্যোগতা মো. মামুন খান বলেন, পড়াশুনার পাশাপাশি আমি প্রতিবছরই খামারিদের কাছ থেকে মধু নিয়ে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইনে এই মধু বিক্রি করি। এর মাধ্যমে আমাদের বাড়তি আয় হচ্ছে। আরেক দিকে সরিষা ফুলের ভেজালমুক্ত মধু ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি।

মৌ খামারি মো. ওলি প্রামানিক বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আমি সলিষা ফুলের মধু সংগ্রহের কাজ করছি। শুধু সরিষা নয় লিচুর ফুল, তিলের ফুলের মধুও আমরা সংগ্রহ করি। তবে সবচাইতে বেশি সরিষা ফুলের মধু হয়ে থাকে। স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন কোম্পানির লোকেরা আমাদের কাছ থেকে মধু কিনে নিয়ে যায়। তবে এই বছরে বৃষ্টির কারনে অনেক মাছি মারা গেছে। তাই কিছুটা হলেও আমাদের ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবো। কৃষি বিভাগ প্রশাসন ও স্থানীয়রা আমাদের এই মধু সংগ্রহের কাজে সহযোগিতা করে থাকে।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মিজানুর রহমান বলেন, মধু বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ শক্তিবর্ধক সর্বরোগের মহৌষধ। পাবনা জেলা যেহেতু কৃষি সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। আর এই জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের এই সময়ে সরিষার আবাদ ব্যাপক হয়ে থাকে। আর এই সরিষা ফুল থেকে মৌ খামারিরা মধু সংগ্রহ করে থাকেন। চাষকৃত বিশেষ জাতের এই মৌ মাছি সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে খাঁচায় নিয়ে জমা করেন। এর ফলে একদিকে ফসলের পরাগায়নে ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে মধু সংগ্রহ করে পুষ্টির চাহিদার পাশাপাশি বাড়তি আয় করছে খামারিরা। জেলাতে এবারে প্রায় ১০ মেট্রিকটন সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা হবে। এই সরিষার মধু দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি সংগ্রহ করে পক্রিয়াজাত করে বাজারে বিক্রি করছে। জেলাতে প্রায় ৭০ জন খামরি প্রায় ৬ হাজার মৌ বক্স স্থাপন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, খামারিদরে আমরা নানা ভাবে সহযোগিতা করছি। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে মৌ বাক্স সরবরাহ করা হয়ে থাকে কৃষি বিভাগ থেকে। তাই সরিষা ফুল এবং ফল দুটিই আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে উপকার করছে।

জেলাতে এবারে প্রায় সারে ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আর প্রায় ৭০ জন তালিকাভুক্ত খামারি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৬ হাজার এই মৌ মাছির বক্স স্থাপন করেছেন। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে এই মধু দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ মৌ খামরি ও ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে মধুতে প্রায় ৩০ প্রকারের উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে সুগারের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করে থাকে এই মধু।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১১, ২০২২ ১২:০৮ অপরাহ্ন
কৃষি যন্ত্রপাতির বাজারের প্রায় ৭০ ভাগ এখনও আমদানি নির্ভর
এগ্রিবিজনেস

দেশে গত এক দশকে অত্যাধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০১১ সালে এই বাজার ছিল ১০ হাজার কোটি টাকার, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৬শ’ কোটি টাকায়।

কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে না উঠা, দক্ষ জনবলের অভাব, কর সুবিধা না থাকায় কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার এখনো আমদানি নির্ভর বলে জানান আমদানিকারকরা।

বাংলাদেশে ফসলি জমির পরিমাণ ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার হেক্টর। এর ৯০ ভাগ জমিই যান্ত্রিক চাষাবাদের আওতায় চলে এসেছে। ফলে সনাতনী চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ শুরু হয়েছে।

এর প্রভাবে দেশের বাজারে অত্যাধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার বেড়ে গেছে। গবেষকরা বলছেন, ২০১১ সালে এই বাজার ছিল ১০ হাজার কোটি টাকার, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৬শ’ কোটি টাকার।

চাহিদা বাড়লেও কৃষি যন্ত্রপাতির বাজারের প্রায় ৭০ ভাগ এখনও আমদানি নির্ভর। এ জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে না উঠা, দক্ষ জনবলের অভাব, কর সুবিধা না থাকাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।

দেশেই অত্যাধুনিক কৃষিযন্ত্রের উৎপাদন বাড়লে কৃষির উপকরণ ব্যয় কমবে, পাশাপাশি কর্মসংস্থান হবে বহু মানুষের-এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১১, ২০২২ ১১:২৫ পূর্বাহ্ন
দিনাজপুরে চালের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
এগ্রিবিজনেস

দিনাজপুরে সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে চালের দাম। সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় দু’টাকা। চালের এই বাড়তি দামে ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। মিল মালিকরা বলছেন, ধানের বাজার চড়া হওয়ার কারণেই চালের দাম বেড়েছে। তবে দাম বাড়ার জন্য মিল মালিকদের দুষছেন ব্যবসায়ীরা। 

দেশের সিংহভাগ চাল উৎপাদনকারী জেলা দিনাজপুর। গেলো এক সপ্তাহ হঠাৎ চড়া এখানকার চালের বাজার। বর্তমানে বিআর ২৮ চাল খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ৫৩ থেকে বেড়ে ৫৪ টাকা; মিনিকেট ৫৬ থেকে বেড়ে ৫৮ এবং নাজির শাইলের দাম বেড়ে হয়েছে ৬৮ টাকা।

তবে মাঝারী ও চিকন চালের দাম বাড়লেও মোটা গুটি স্বর্নার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। চালের বাজারে অস্থিরতার পেছনে মিল মালিকদের কারসাজি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে মিল মালিকদের অজুহাত, ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে চালের দাম বাড়িয়ে দিতে হয়েছে। দিনাজপুরে প্রতিবছর চাল উৎপাদন হয়, প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৯, ২০২২ ৪:২০ অপরাহ্ন
হিলিতে কমেছে পেঁয়াজের দাম
এগ্রিবিজনেস

একদিন আগেও বন্দরে প্রতি কেজি নতুন ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৩১-৩২টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে এখন কমে তা ২৭টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকারসহ নিম্ন আয়ের মানুষজন।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজ ওঠার কারণে সরবরাহ বেড়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা এখন কম। অপরদিকে মৌসুম শেষ হওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের মানও খারাপ। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজে গাছ গজিয়ে ওঠায় এখন দাম কম। এমন অবস্থায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুণতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। যে কারণে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কিছুটা কমিয়ে দিয়েছিলেন আমদানিকারকরা। এ কারণে বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে মাত্র তিন ট্রাক পেঁয়াজ আসে। এতে দাম বাড়তির দিকে ছিল। তবে আবারও দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ার কারণে আমদানি বেড়েছে। এতে করে দাম আবার কিছুটা কমেছে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে তিন ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। সেখানে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার বন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ বেড়ে ১৯ ট্রাকে ৫২৯টন পেঁয়াজ এসেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৯, ২০২২ ১২:৩০ অপরাহ্ন
বান্দরবানে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ক্যারাগুলা’
এগ্রিবিজনেস

ক্যারাগুলা পাহাড়ের একটি অপরিচিত ছোট ফলের নাম। গত কয়েক বছর ধরে এ ফলটি পাহাড়িসহ সবার কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি বান্দরবানের পাহাড়ে বেশি হয়। পর্যটকদের কাছেও ধীরে ধীরে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। 

অনেকেই স্থানীয়ভাবে এটিকে বান্দরগুলা ফল বলে। ফলটি হালকা পাতা রঙের। পুরো ফলের চতুর্দিকে ছোট ছোট কাটায় আবৃত। পাহাড়িরা এই ফলটি শুঁটকি মাছ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভর্তা করে খায়। বিভিন্ন তরকারি ও সালাদের কাজেও এটি ব্যবহৃত হয়। এটি খেতে বেশ সুস্বাদু। রয়েছে ভিটামিন সি। অনেকেই আবার ফলটি কাঁচাও খায়। কাঁচা খাওয়ার শুরুতেই কামড় দিলে হালকা তিতা ও টক অনুভূত হয়।

নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ক্যনুপ্র‚ মারমা বলেন, ক্যারাগুলা ফলটি পাহাড়ের জুম চাষে স্বাভাবিকভাবেই হয়ে থাকে। একবার গাছ উঠলে দ্বিতীয়বার গাছ লাগাতে হয় না। ফল পাকার পর বীজ থেকে গাছের চারা হয়ে থাকে। প্রতি বছর জুম ফসল রোপণ করলেও ক্যারাগুলা রোপণ করতে হয় না। বাজারে এই ফলের বীজ পাওয়া যায় না।

তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়গুলোতে এই ফল বেশি উৎপাদিত হয়। পাহাড়িদের ‘লাকচু’ নামের এক বিশেষ খাবারে ক্যারাগুলা বেশি ব্যবহূত হয়। বিভিন্ন প্রকার চাটনিতে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়।

বান্দরবান বাজারের উবাচিং মারমা ও লংকা ত্রিপুরা জানান, ক্যারাগুলা খুব সুস্বাদু ফল। বিভিন্নভাবে এটি রান্না করে খাওয়া যায়। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক ঘুরতে এসে কিনে নিয়ে যান।

বান্দরবান জেলা সদর ও উপজেলাগুলোর পাহাড়ি রেস্টুরেন্টগুলোতে বিভিন্ন তরকারি, সালাদ ও চাটনিতে ক্যারাগুলা ব্যবহার করা হয়।

বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক জানান, ক্যারাগুলা ফলের বাণিজ্যিক কোনো চাষ হয় না। এটি বিভিন্ন পাহাড়ে বিক্ষিপ্তভাবে উৎপাদিত হয়। এই ফলটি আমরা দেখে থাকলেও এটির স্থায়ীভাবে বীজ কিংবা চাষ হয়নি, বিধায় সংরক্ষণ করা হয়নি। পাহাড়ের কী পরিমাণ জায়গায় এই ফল উৎপাদিত হয় তা তার জানা নেই। তবে এটি ভিটামিন সি যুক্ত ফল। এটি পাহাড়িরা বেশি খায়। বর্তমানে এই ফলটি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৪, ২০২২ ৩:১৫ অপরাহ্ন
জয়পুরহাটে আগাম আলুতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত দাম
এগ্রিবিজনেস

আগাম জাতের আলু উত্তোলনের ধুম পড়েছে জয়পুরহাটের মাঠে মাঠে। এই আলুর ফলন কম হলেও দাম ভালো থাকে। তাই প্রতিবছর ভালো দাম পাওয়ার আশায় চাষিরা আগাম জাতের আলু রোপণ করেন। কিন্তু এবার আলুর ফলন গত মৌসুমের চেয়ে ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় রয়েছেন চাষিরা। চাষাবাদে খরচ বৃদ্ধি পেলেও মাঠে কিংবা হাটে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মূল্য।

আগাম জাতের আলুচাষিরা জানান, এখন যারা আলু তুলছেন, তাদের সব খরচ বাদ দিয়ে কিছুটা লাভ থাকছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণে এক শ থেকে দেড় শ টাকা কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন তাদেরকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এতে হতাশায় আছেন সেখানকার আলুচাষিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার বুম্বু বানিয়াপাড়া, কোমরগ্রাম, ভাদশার দুর্গাদহসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষান-কৃষানিরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন মূলত মিউজিকা, গ্রানোলা, ফ্রেশ, ক্যারেজ, রোমানা পাকরি এবং বট পাকরি আলু বেশি তোলা হচ্ছে।

আক্কেলপুর বাজারে মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) সকালে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, আজকের বাজারে প্রতি মণ ক্যারেজ আলু ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর গ্রানোলা আলু ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা মণ। আলুর দাম দিনদিন নেমেই যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চাষিদের লোকসানে পড়তে হবে।

এবার ৪৫ শতক জমিতে আগাম জাতের মিউজিকা আলু চাষ করেছেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার বানিয়াপাড়ার আলুচাষি মুবিনুল ইসলাম মোবিন। তিনি বলেন, রোপণের ৫৮ দিন বয়সে আমি আলু তুলেছি। জমিতে বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ৬৫ মণ। কিন্তু পাইকারকে প্রতি বস্তায় ৩ কেজি হারে বিঘাপ্রতি কয়েক মণ আলু ঢলতা (অতিরিক্ত) দিতে হবে। এজন্য বিঘাপ্রতি ৬৫ মণ ফলন হলেও সব বাদে ৬০ মণের দাম পাওয়া যাবে।

বর্তমানে আলুর বাজার কম। আমার আলু আগেই ৪৬০ টাকা মণ হিসেবে দরদাম করে রেখেছিলাম। এজন্য খরচ বাদে কিছু টাকা লাভ করতে পেরেছি। এই আলু আজকের বাজারে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা মণ। আমার আরও আলু আছে। দশ-পনেরো দিন পরে সেগুলো তুলতে হবে। কিন্তু বাজার দিন দিন যেভাবে নেমে যাচ্ছে তাতে লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি।

কোমরগ্রাম দক্ষিণপাড়ার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি নিজেই আলু রোপণ থেকে শুরু করে নিড়ানি, বাঁধানো এবং ভার বহনসহ যাবতীয় কাজ করেছি। তাই অন্যের থেকে বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা খরচ কম হয়েছে। এক বিঘা জমির আলু তুলেছি। ফলন হয়েছে ৬৬ মণ। ৪৬০ টাকা দরে বিক্রি করেছি।

আলুর পাইকারি ক্রেতা আসলাম হোসেন আলী বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচাবাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। এক সপ্তাহ পরে আলুর দাম বাড়তেও পারে। আবার কমতেও পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। কিন্তু ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলুর অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে।

জেলা কৃষি বিপণন বিভাগের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক মো. সাখওয়াত হোসেন বলেন, আজকের বাজারে রোমানা পাকরি ও বট পাকরি (লাল) আলু ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। এই আলু এক সপ্তাহ পূর্বে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ ছিল। আর আজকে মিউজিকা (সাদা) আলি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা মণ। এই আলু এ সপ্তাহপূর্বে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মণ ছিল।

আলুর বাজার বর্তমানে নিম্নমুখী। এতে চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হিমাগারগুলোতে এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত কিছু আলু আছে। সেজন্য বর্তমানে আগাম জাতের আলুর দাম কমতির দিকে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হিমাগারে সংরক্ষিত অতিরিক্ত আলু শেষ হলে নতুন আলুর প্রতি টান বাড়বে এবং দামও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop