শরীয়তপুরে স্কোয়াস চাষে লাভবান কৃষক
এগ্রিবিজনেস
মধ্যপ্রাচ্যের সুপরিচিত কুমড়া জাতীয় পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি স্কোয়াস প্রথমবারের মতো চাষ শুরু হয়েছে শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর বিচ্ছিন্ন চর নওপাড়া ইউনিয়নে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শ ও সহায়তায় সবজিটি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। একই সঙ্গে বাগান সম্প্রসারণে অন্যান্য কৃষককে আগ্রহী করতে নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
স্কোয়াস নামের মধ্যপ্রাচ্যের এ সবজিটি দেশে তেমন পরিচিত নয়। তবে শরীয়তপুর জেলার দুর্গম চরাঞ্চল নওপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের এ সবজিটি চাষাবাদে আগ্রহী করে তুলতে অবহিতকরণ প্রশিক্ষণ সভা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সাধারণ কৃষকদের সবজিটি খেতে ও চাষাবাদে আগ্রহী করার জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সবজিটি বিনামূল্যে বিতরণ করছেন। সেই সঙ্গে বাড়ির উঠানে উঠানে অস্থায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে সবজিটির খাদ্যগুণ তুলে ধরছেন। পাশাপাশি চাষাবাদে জড়িত কৃষকদের ফসলের মাঠে গিয়ে বিষমুক্ত পরিবেশ রক্ষা করে অধিক উৎপাদনের কলা কৌশল শিখাচ্ছেন।
সবজিটি চাষ করে কৃষক সাত থেকে আটগুণ লাভ করছেন। এ বিষয়ে সবজি চাষি রেজাউল করিম মোহাম্মদ জানান, অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ৮ শতাংশ জমিতে প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্কোয়াস চাষ করেন। এতে চাষের ব্যয় তুলে লাভবানও হয়েছেন। তার আয় আসবে ৫০ হাজারের ওপরে। তার পাশাপাশি গ্রামের অনেকেই সবজিটি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সবজির খাদ্যগুণ নিয়ে নড়িয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রোকনুজ্জামান বলেছেন, সবজি বলতেই খনিজ লবণ ও ভিটামিনে পরিপূর্ণ খাদ্য। সবজিটি খাদ্য ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ। স্কোয়াস চাষ কৃষকের জন্য লাভজনক। এটি খাওয়া নিশ্চিত করা গেলে খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও চাহিদা মিটবে। সেই সঙ্গে ভাতের ওপর চাপ কমবে।
কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকের পাশে রয়েছে মন্তব্য করে শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুস সাত্তার জানান, পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনে কৃষককে সবসময় পরামর্শ দেওয়া হয়। কীটনাশক ব্যবহার না করে শরীয়তপুরে বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদন করা হয়। এতে এ জেলার নিরাপদ সবজির কদর সারা দেশে। বর্তমানে নতুন ফসল চাষে শিক্ষিত যুব সমাজ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। নতুন সবজি স্কোয়াস পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর অধিক প্রচার প্রয়োজন।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে জেলায় প্রায় ১০ একর জমিতে স্বল্প পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০ জন কৃষক নতুন সবজি স্কোয়াস চাষে জড়িত হয়েছেন। এদের সবাই লাভবান হচ্ছেন বলে দাবি কৃষি বিভাগের।