রাঙামাটিতে সোর্সোপ চাষে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে
কৃষি গবেষনা
বিদেশি ফল সোর্সোপ। যার বৈজ্ঞানিক নাম অনারা মুরিকাটা। দেখতে অনেকটা আতার মতো। স্বাদে কিছুটা টক। তাই স্থানীয়দের কাছে এটি টক আতা হিসেবে পরিচিত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকলেও পরির্বতন হয় না রঙ। তবে আতার চেয়ে আকারে বড়। ডিম্বাকৃতির, কিছুটা চ্যাপ্টাও। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও তেমন মজাদার। রসালো এ ফলের গন্ধও অতুলনীয়। তাই এর নাম সোর্সোপ।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলছেন, এই সোর্সোপ কৃষিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে রাঙামাটিতে।
রাঙামাটি কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর সময় লেগেছে গবেষণা করে বিদেশি এ ফল সোর্সোপ উদ্ভাবন করতে। এটা বাংলাদেশে প্রথম। শুধুমাত্র রাঙামাটিতে সোর্সোপ ফল চাষে সফলতা এসেছে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলা রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম থেকে সোর্সোপ ফলের চারাগাছ চারা সংগ্রহ করা হয়। এপর শুরু হয় গবেষণা। মোট ৩০টি গাছে কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বোপন করা হয়। ২০১৯ সালে সে গাছে ফল ও ফল আসে। প্রথমে সবগুলো গাছে ফল আসেনি কিন্তু ২০২০ সালে সব গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। ২০২২সালেও বেশ ভাল ফলন পাওয়া যায়। তাই বলা যায় এ গাছের উপর গভেষণা করে আমরা সফল হয়েছি। পার্বত্যাঞ্চলের মাটি এ গাছের জন্য খুবই উপযোগী। গবেষণা ৪ জন সদস্য নিয়ে আমরা টিম গঠন করি। সবই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। জাতীয় জীব বোর্ডে সোর্সোপ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। নিবন্ধন হয়ে গেলে এ সোর্সোপ ফল গাছ কৃষকদের মাঝে চাষাবাদের জন্য ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এটি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় গাছ যা সর্বোচ্চ দশ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। সাধারণ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মিটারের পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রথম ফল আনতে সময় লাগবে ১৬ থেকে ২৫ মাস পর্যন্ত। স্বাদ টক জাতীয়। তবে পারিপক্ক হলে খুবই মিষ্টি। আমেরিকা, আফ্রিকার, ইউরোপে ও স্পেনে এ সোর্সোপ ব্যাপক চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফলের ব্যাপক ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের জন্য খুই উপকারী। এছাড়া এটি হজমশক্তি এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।