Category: কৃষি বিভাগ
পাঁচবিবিতে গমের বাম্পার ফলন
কৃষি বিভাগ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার গম চাষাবাদ বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এরই মধ্যে মাঠ থেকে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার শুরু থেকেই গমের বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার পাঁচবিবি উপজেলায় ১ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে। এবার ৫ হেক্টর বেশি চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৫ মেট্রিক টন।
উপজেলায় এবার চাষ করা গমের বেশিরভাগই সরকারি প্রণোদনার আওতাভুক্ত। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ হাজার ৩০০ জন কৃষকের মাঝে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় সরকারিভাবে ১৫ জন কৃষকের মাঝে প্রদর্শনীও দেওয়া হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, ‘সরকারিভাবে পাওয়া প্রণোদনার বীজ ও বাজার থেকে কেনা বীজ দিয়ে দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু গম বিক্রিও করেছি। দাম ভালোই পেয়েছি।’
রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের কৃষক প্রসাদ চন্দ্র মন্ডল, রতন কুমারসহ কয়েকজন জানান, ‘এরআগে গম মাড়াই সমস্যার কারণে চাষাবাদে অনীহা এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন মাড়াই যন্ত্র আসার কারণে গম চাষে আগ্রহী হয়ে ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় গম চাষে খরচ কম হয়। আবার গম মাড়াই করে গমের কাষ্টি জ্বালানি হিসাবেও ব্যবহার করা যায়।’
রতনপুর বাজারের গম ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে শুরুতেই প্রতি মণ গমের বাজারদর ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। পরে বাজার কিছুটা কমে যায়।’ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি মণ গম ১৭০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। তবে গমের বাজার আরও বাড়তে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, ‘বারি-৩২, বারি-৩৩ জাতের গম উচ্চ ফলনশীল ও রোগ প্রতিরোধী হওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এমনকি খরা সহিষ্ণু। যে কারণে গমের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
কুমিল্লার চান্দিনায় টমেটো চাষে স্বচ্ছলতা
কৃষি বিভাগ
কৃষিকাজ করেও যে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার রাসেল আহমেদ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক সম্মান লাভ করে রাসেল কয়েক বছর ধরে চাকরির জন্য ঘুরতে ঘুরতে যখন ক্লান্ত, ঠিক তখনি নিজ এলাকার এক বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়ে স্বচ্ছলতা এসেছে রাসেলের পরিবারে। পরিবারের চার বোন ও দুই ভাইয়ের মাঝে সবার বড় তিনি।
জেলার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামে মাঠজুড়ে দৃষ্টিনন্দন টমেটো ক্ষেত তার। সারিবদ্ধ টমেটো গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত থোকা থোকা টমেটো ধরে আছে। অনেকেই আবার তার টমেটো ক্ষেত দেখতে আসছেন। ক্ষেতে দাঁড়িয়ে কথা হয় টমেটো চাষি রাসেল আহমেদের সঙ্গে।
তিনি জানান, আমার কোনো আবাদি জমি নেই। করোনাকালীন সময় মায়ের দেওয়া ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে প্রথম টমেটো চাষ শুরু করি। প্রথম বছর ১ লক্ষ টাকা বিক্রি করে লাভ হয় ৬০ হাজার টাকা। পরের বছর ২০২২ সালে দ্বিগুণ লাভ করেন। চলতি বছরে তিনগুণ লাভের মুখ দেখেন রাসেল। এ বছর তিনি ৫০ একর জমিতে আগাম জাতের টমেটো চাষ করেছেন। আড়ৎদারদের কাছে প্রতি কেজি টমেটো এখন গড়ে ২৫/৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এবছর খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে বাজারজাতকরণ শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন।
তিনি আশা করছেন, এখন দাম কিছুটা কম হলেও জমিতে যে পরিমাণ টমেটো আছে, তাতে বাজার মূল্য ঠিক থাকলে আরও দেড় লাখ টাকা পাওয়া যাবে। রাসেল আহমেদ জানান, এক বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় ও মায়ের সহযোগিতায় টমেটো চাষে আমার পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, পরিশ্রম দিয়ে যে কেউ নিজের ভাগ্য বদলাতে পারে রাসেল তারই প্রমাণ। চাষিরা যাতে আগাম সবজি চাষ করে লাভবান হতে পারেন সেজন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা চালানো হয়।
হবিগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
কৃষি বিভাগ
হবিগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ জমি থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন।
কৃষি বিভাগ জানায়, আগামী ১০ এপ্রিলের পর থেকে হাওরে ধান কাটা শুরু হবে। ব্রি-২৮ ও হাইব্রিড জাতের ধান প্রথম পর্যায়ে কাটা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাওরে জমির পরিচর্যায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেশিরভাগ জমিতে সার ও কীটনাশক দেওয়া শেষ।
কোথাও ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে শুধুমাত্র সেই জমিগুলোতে চলছে শেষ দফার কীটনাশক ছেটানোর কাজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৯ উপজেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৫ দশমিক ২ মেট্রিক টন হিসেবে এবার ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রতি কেজি বোরো ধানের বাজার দর ৩০ টাকা হলে এবার জেলায় ১ হাজার ৯১২ কোটি টাকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, গত বছর বোরো ধানের বাজার মূল্য কেজি প্রতি ৩০ টাকা ছিল। এবার কেজিতে কমপক্ষে দু’টাকা বাড়বে।
তিনি আরও জানান, গত বছর বোরোর আবাদ প্রায় দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। এবার সেই সমস্যা হয়নি। ফলে ধানের ফলন ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। অল্প পরিমাণ জমিতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার পর সেটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। বোরোতে এবার আর কোনো সমস্যা নেই।
ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নামের শেষে ‘সরকার’ থাকায় জমি চলে গেল সরকারি মালিকানায়!
কৃষি বিভাগ
নামের শেষে ‘সরকার’ থাকায় জমির মালিকানা সরকারি খাতায় চলে গেছে। দক্ষিণ ভারতের কর্নাটক রাজ্যে বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) থেকে পালিয়ে কর্নাটকে গিয়ে স্থায়ী হওয়া ৭২৭ হিন্দু শরণার্থীর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৩১ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বল হয়, কয়েক দশক ধরে মালিকানায় থাকা জমি হঠাৎ করে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরে জানা যায়, কর্মকর্তারা জমির দলিলে মালিকের নামের সঙ্গে সরকার দেখে এটিকে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে ধরে নেন।
৬৫ বছর বয়সী কৃষক বিভূতি সরকার তাদেরই একজন, কর্নাটকের রায়চুর জেলার সিন্ধানুর তালুকে থাকা বিভূতির পাঁচ একর জমি বেহাত হয়ে যায়। এক বছরের বীমা না পরিশোধ করায় বিভূতির জমি সরকারি খাতে চলে যায়।
বিভূতি সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাধীন তদন্তে বেরিয়ে আসে অদ্ভুত তথ্য। তাদের নামের একটি অংশ সরকার দেখে ভুলে সরকারি খাতায় জমি নিয়ে নেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে হাজার হাজার হিন্দু ভারতে আশ্রয় নেয়। তৎকালীন ভারত সরকার কর্নাটকসহ পাঁচ রাজ্যে বিশেষ ক্যাম্পে থাকতে দেয় শরণার্থীদের। একই সঙ্গে নতুন করে জীবন শুরু করতে প্রত্যেককে পাঁচ একর করে জমি দেওয়া হয়।
হাত পেতে নয়, বাঁচতে চাই আত্মসম্মান নিয়ে: চাষাবাদে তৃতীয়লিঙ্গের সাফল্য
কৃষি বিভাগ
গাজীপুরের কোনাবাড়ির বাইমাইল বিলের, উঁচু একটি মাঠে একসময় ছিলো ইটভাটা। বছর পাঁচেক আগে বন্ধ হয়ে যায় সেটির কার্যক্রম। পড়ে থাকা জমি বর্গা নিয়ে পরম যত্নে চাষ উপযোগী করা হয়েছে। ১৩ বিঘার ধান কাটা হবে এ মাসেই।
তবে সচরাচর যাদের চাষাবাদে দেখা যায় তারা নয়, এ ফসল তৃতীয় লিঙ্গের একদল মানুষের শ্রমে-ঘামে। সমাজে যাদের পরিচয় হিজড়া।
ধানের পাশাপাশি আরও প্রায় তিন বিঘা জমিতে চাষ করেছেন টমেটো, করলা, লালশাক, লাউসহ নানা জাতের সবজি। কদিন আগেই খেত থেকে তোলা হয়েছে পেঁয়াজ।
গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি-কবুতরের খামারও করেছেন তারা। আয়ও হচ্ছে বেশ। তাদের আশা আরও বড় পরিসরে কাজ করবেন তারা।
৫০ জনের দলটির নেতৃত্বে থাকা কালু জানালেন, প্রতিনিয়ত নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই চলতে হয় তাদের। একটু ভালো থাকার আশায়, মাস পাঁচেক হলো কৃষিকাজ শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, হাত পেতে নয়, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই। কৃষি উদ্যোগ নিয়েছি কারণ এটি জনগণের জন্যেও ভালো আমাদের জন্যেও ভালো। আর জনগণও দেখলো আমরাও কিছু করতে পারি।
শুরুতে ছিলো নানা আলোচনা-সমালোচনা। কাজের মাধ্যমেই সেসবের জবাব দিয়েছেন কালু। বলেন, লোকজন বলেছে ওরা হিজড়া, ওরা কি করবে, কেমনে ফসল ফলাবে, কেমনে কৃষি কাজ করবে। ওরা পারবে না, শুধু শুধুই টাকা-পয়সা নষ্ট করতেছে। কিন্তু আমাদের কাছে পরিশ্রম করে খেলে সেটাই সম্মানের।
এ চাষিদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রয়োজনে বিশেষ বিবেচনারও আশ্বাস তাদের। জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ওনাদেরকে প্রযুক্তিগত, কারিগরি সবধরনের সহযোগিতা থেকে বীজ-সারে আর্থিক সহায়তা করতে চেষ্টা করবো। এছাড়া সরকারি প্রণোদনা যদি দিয়ে থাকে প্রতি বছর তবে সেই খাত থেকে আমরা চেষ্টা করবো ওনাদের সহযোগিতা করতে।
এ কর্মকর্তা জানান, আসছে আমন মৌসুমেই এ সহায়তা দেয়া সম্ভব।
সৎপথে যেকোনো উপার্জনই সম্মান ও গৌরবের। সেই চিন্তা থেকেই কৃষি কাজের এই উদ্যোগ বলে জানান তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষগুলো। তারা বলছেন, সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে দেশ ও সমাজ গঠনে তারাও রাখতে পারেন ভূমিকা।
কোটালীপাড়ায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি
কৃষি বিভাগ
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলার ৬০০০ মেট্রিক টন ধানের উৎপাদন বাড়বে। যার বাজার মূল্য ৭৫ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে চাষাবাদের আওতায় এনে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রী বন্ধবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদের তত্ত্ববধানে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকারের দিক নির্দেশনায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বোরোধান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠে নামে। তারা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের নিয়ে ৩২ টি উদ্বুদ্ধ করণ সভা করে। বিভিন্ন খালের কচুরিপানা পরিস্কার, জলাবদ্ধতা নিরসন ও খাল খনন করে অনেক জলাবদ্ধ পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনে। এছাড়া বোরো মৌসুমে সমলয় পদ্ধতি, কচুরিপানার বেডে ভাসমান পদ্ধতি ও ঢিবি পদ্ধতিতে কোটালীপাড়ায় চাষাবাদ শুরু হয়। এসব উদ্যোগের ফলে কোটালীপাড়া উপজেলায় ধানসহ অন্যন্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণের কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা না রেখে সব জমি চাষাবাদের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। সেই লক্ষ্য পূরণে আমরা কৃষককে সরকারি প্রণোদনার বীজ সার দিয়েছি। সেই সাথে অধিক জমিতে চাষাবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করেছি।
কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে ২৬ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানেরআবাদ করেছে। ফলে এ উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এ বছর কোটালীপাড়া উপজেলায় ৬০০০ মেট্রিক টন ধানের উৎপাদন বাড়বে। যার বাজার মূল্য ৭৫ লাখ টাকা। কোটালীপাড়ায় সমলয় পদ্ধতিতে ১০০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষক কচুরিপানার ভাসমান বেডে ও ঢিবি পদ্ধতিতে সবজির আবাদ করেছেন । এখান থেকে অন্তত ৩০ লাখ টাকা মূল্যের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। এ কাজগুলো তত্ত্ববধান করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার দিক নির্দেশনা দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণের মহা-পরিচালক বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাস এসব চাষাবাদ এলাকা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। তিনি সার্বক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছেন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহাবানে সাড়া দিয়ে কৃষকরা উৎসাবের আমেজে ধান রোপণ করেছেন। সবজিও আবাদ করছেন। এসব কারণে এতবড় কর্মযজ্ঞ আমরা চালিয়ে নিচ্ছি।
কোটালীপাড়া উপজেলার পীড়ারবাড়ি গ্রামের কৃষক অনন্ত বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশি বেশি করে ফসল উৎপাদন করতে বলেছেন। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের প্রণোদনার সার বীজ দিয়েছে। বেশি করে ফসল রোপণের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে ও পরামর্শ দিয়েছে। এ কারণে আমি এ বছর ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি করেছি। এখান থেকে আমি ১০০ মণ ধান পাব।
একই উপজেলার কান্দি গ্রামের কৃষক সন্তোষ মধু বলেন, আমাদের জমি জলাবদ্ধ থাকত। তাই ধান চাষ করতে পারতাম না । এ বছর খালের কচুরিপানা পরিস্কার করা হয়েছে। সেই সাথে খাল খনন করে দেওয়া হয়েছে। জমি থেকে পানি নেমে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ধানের চারা দিয়েছে। এছাড়া ধান রোপণে শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই আমার ১ একর জমিতে ধান রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাই।
ধারাবাশাইল গ্রামের কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণের মহা পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার স্যার,ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্পের পিডি ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বারবার আমাদের কাছে এসেছেন। ফসল চাষ বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাদের আন্তরিকতায় ও সহযোগিতায় আমরা ফসল চাষ বৃদ্ধি করেছি। মাঠে ধানের অবস্থাও বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসলের বাম্পার ফলন পাব।
কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে । কোটালীপাড়ায় এবার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ৫ কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন খালে কচুরিপানার ভাসমান বেডে সবজি ফলেছে। ঢিবি পদ্ধতিতে এখানে চাষাবাদ হয়েছে। এ ভাবে ফসল উৎপাদন অব্যাহত থাকলে আমাদের কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে। আর্থসামাজিক অবস্থা বদলে যাবে।
দেশের কৃষকরাও আজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে : শিক্ষামন্ত্রী
কৃষি বিভাগ
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সারের জন্য এখন আর কৃষককে গুলি খেতে হয় না। কৃষকরাও ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে।
আজ চাঁদপুরের হাইমচরে কৃষকদের এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিনামূল্যে বীজ ও সার, বকনা বাছুর, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ হতে প্রাপ্ত অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।
বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিদ্যুৎতের ভয়াবহ অবস্থার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ তার সুফলভোগী হয়েছে। বিদ্যুৎ ও পানির জন্য জনসাধারণ আর কষ্ট পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ক্ষামতায় এসেছিলেন তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি সাধারণ মানুষের কথা ভাবেন বলেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
গরু চরানো নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত কৃষক
কৃষি বিভাগ
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলায় গরু ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে শুকুর আলী (৪৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মুসলিমপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত শুকুর আলী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মুসলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকালে মুসলিমপুর গ্রামে শুক্কুর মিয়া তাঁর গুরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য গ্রামের পাশে ধান খেতে নিয়ে যান। এ সময় নায়েব আলী তাঁকে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে পাশে থাকা নায়েব আলীর চার ছেলে ময়না মিয়া, লিটন মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও আইনুল মিয়া শুক্কুরের ওপর হামলা চালান।
খবর পেয়ে শুক্কুর মিয়ার লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শুকুর আলীকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। বর্তমানে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে কমলো ভুট্টার দাম
কৃষি বিভাগ
অবশেষে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম নিম্নমুখী হয়েছে। সোমবার (২৭ মার্চ) শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) খাদ্যশস্যটির সরবরাহ মূল্য কমেছে। তবে চীনে চাহিদা থাকায় খুব একটা লোকসান গুনতে হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে বিজনেস রেকর্ডারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়, এদিন সিবিওটিতে সবচেয়ে সক্রিয় ভুট্টার চুক্তি মূল্য হ্রাস পেয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতি বুশেলের দর স্থির হয়েছে ৬ ডলার ৩৯ সেন্টে। আগের কার্যদিবসে খাদ্যপণ্যটির দাম ৩ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
মুম্বাই-ভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেন, খাদ্যশস্যের আরও দাম কমার সুযোগ খুবই সীমিত। বাজার স্থিতিশীল হবে। কারণ, বিনিয়োগ আসছে।
ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের শীর্ষ ভুট্টা ক্রেতা চীন। দরপতন হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্যপণ্যটি কিনতে শুরু করেছে দেশটি। এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে আমদানি বাড়াতে যাচ্ছে তারা।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭ দশমিক ৬৭৭ মিলিয়ন একরে ভুট্টা চাষ হচ্ছে। ২০২২ সালের তুলনায় যা ১ শতাংশ কম। ফার্ম ফিউচার্স ম্যাগাজিনের এক জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে।