সিভাসুতে IVSA Bangladesh এর ৫ম কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন
ক্যাম্পাস
৮:৩২ পূর্বাহ্ন
দীন মোহাম্মদ দীনু: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌখিন চিত্রশিল্পীদের সংগঠন ক্যানভাসের ৪র্থ চিত্র প্রদর্শনী ২১/০৬/২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। এই চিত্র প্রদর্শনীতে বাকৃবির সৌখিন চিত্র শিল্পীদের নান্দনিক চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনী শেষে ক্যানভাসের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি (২০২৩-২০২৪) ঘোষনা করা হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. লুৎফুল কবির এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার মীম নির্বাচিত হয়েছেন।
কমিটিতে আরো রয়ছেনে, ড. মোঃ তৌহিদুল ইসলাম (সহ-সভাপতি), ফারহানা প্রমি (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক), মোঃ আল-আমিন সাদিক অয়ন (সাংগঠনিক সম্পাদক), মোঃ আতিকুল ইসলাম শাওন (সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক), সানজিদা আক্তার তৃষা (কোষাধ্যক্ষ), সাইয়্যেদুল মুরসালিন (দপ্তর সম্পাদক), সঞ্চারি সাকিদার (প্রচার সম্পাদক)। এছাড়াও কমিটিতে ২০ জন নির্বাহী সদস্য এবং ৩০ জন উপদেষ্টা মন্ডলী সদস্য রয়েছেন।
কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু: মরহুম জাতীয় অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আমীনুল হক ‘স্মারকগ্রন্থ’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে মোড়ক উন্মোচন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল। মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আয়োজনে ২০ জুন মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদীয় ডিন অফিস সভাকক্ষে স্মারকগ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আবুল মনসুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেমর ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল। আলোচক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, বাকৃবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সাবেক পরিচালক জিটিআই প্রফেসর ড. এম. এ. হালিম,ডা. নাজিয়া আমিন সালসাবিল, প্রফেসর ফাতেমা হক শিখা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মরহুম জাতীয় অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আমীনুল হক এত বড় মাপের মানুষ যে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে এত ছোট্ট পরিসরে কিছুই লেখা সম্ভব নয়। তারপরও ৩৩জন গুণী মানুষ তাদের লেখায় চেষ্টা করেছেন মরহুম জাতীয় অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আমীনুল হক এর বর্ণাঢ্য জীবন সম্পর্কে তুলে আনতে। অনেকের লেখায় তাঁর অত্যন্ত উচু মানের ব্যক্তিজীবন ওঠে এসেছে।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আবুল মনসুর বলেন, যার হাত ধরে দেশে মাৎস্যবিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা শুরু হয়েছিল তিনি হচ্ছেন অধ্যাপক ড. এ কে এম আমিনুল হক। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, জাতীয় অধ্যাপক এবং মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন।
উল্লেখ্য অধ্যাপক ড. এ কে এম আমিনুল হক একজন শিক্ষাবিদ ও সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ছিলেন। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৫২ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, লাহোর থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। ১৯৫৭ সালে নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাকৃবির উপাচার্য হিসাবে ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ পর পর দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বাকৃবিতে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ প্রতিষ্ঠা করেন। এজন্য তিনি ফাদার অব ফিশারিজ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশ সরকার কতৃক ২০০৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় অধ্যাপক নিযুক্ত হন। তিনি শাহাবুদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রীর পদমর্যাদার একজন প্রাক্তন উপদেষ্টা। ১৯৮৮ সাল থেকে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির নির্বাচিত সহযোগী। ২০০৮-২০১২ ইনস্টিটিউটটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মৎস্য বিভাগের সামুদ্রিক পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ধানের রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য মাঠে সেন্সর ভিত্তিক পরিবর্তনশীল হারে কৃষি রাসায়নিক স্প্রেয়িং ব্যবস্থপনা শীর্ষক প্রকল্পের গবেষণা অগ্রগতি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১৯জুন) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালাটি আয়োজন করে কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ওই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ ফলন পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হচ্ছে ফসলকে রোগবালাই মুক্ত রাখা। আর ফসলকে রোগবালাই মুক্ত রেখে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের কৃষি অধিকাংশই নির্ভরশীল বিভিন্ন রাসায়নিক সারের উপর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের প্রায় ৭৭শতাংশ কৃষক প্রতি মৌসুমে অন্তত একবার হলেও রাসায়নিক সার ব্যবহার করে। এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে যে পরিমাণ অপচয় হয় এতে খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশের ও কৃষকের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
এই সকল সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে এই প্রজেক্টের কাজ চলছে। আমরা যদি জানতে পারি একটি পাতার ঠিক কতটুকু অংশ রোগে আক্রান্ত এবং ততটুকুরই ট্রিটমেন্ট করা গেলে রাসায়নিক ব্যবহারের পরিমাণ যেমন কমে যাবে তেমনি পরিবেশে দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুকিও কমবে। এতে ফলন বাড়বে ও আর্থিক ক্ষতি কমবে এবং এই প্রক্রিয়ায় সাসটেইনেবল প্রোডাকশন ও প্রিসিশন এগ্রিকালচারকেও প্রমোট করবে।
কর্মশালায় কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
ড. মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের কৃষিখাত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রবেশ করবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে কৃষি হবে সেন্সর ভিত্তিক রোবট ও ড্রোনের ব্যবহার ভিত্তিক। যার মাধ্যমে প্রিসিশন এগ্রিকালচার বাস্তবায়িত হবে। আমাদের কাজের বাধা হলো বাজেট স্বল্পতা। যে কারণে কাজের অগ্রগতি কম থাকে। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলে গবেষণার অগ্রগতি বৃদ্ধি পাবে। এতে নতুন নতুন প্রযুক্তি কৃষিতে যুক্ত হবে, যা কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।
কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় ইমেজ প্রসেসিংয়ের বিভিন্ন দিক, স্প্রেয়িংয়ের ক্ষেত্রে ড্রপলেটের আকার, ক্যামেরার বিভিন্ন কোণ, চাকার স্থায়িত্ব এবং স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় অংশ নেয় কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন হাওলাদার, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আওয়াল, অধ্যাপক ড. মোরশেদ আলম ও অধ্যাপক ড. মো হামিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. চয়ন কুমার সাহা, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ম্যাথমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেছবাহ উদ্দিন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সদ্য সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টুর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ আয়ের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এনিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে আলোচনা-সমালোচনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়োগে দুর্নীতি ও অবৈধ আয়ের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি, ১৭/জি উত্তরায় ২টি ফ্লাট, জার্মান ও ইংল্যান্ডে বাড়ি এবং নিজ জেলা বরিশালেও বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলেও দুদকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাকৃবির সহকারি অধ্যাপক ইসফাক আহাম্মেদ।
গত ৩১ মে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেল) উত্তম কুমার মন্ডল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
চিঠিতে দুদক কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, বাকৃবি সদ্য সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ চলতি বছরের ২৯ মার্চ দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দায়ের হয় (যাহার অভিযোগ নং- ২৮/২০২৩)। প্রাপ্ত এই অভিযোগ তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বিশ^বিদ্যালয় মুঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরে গত ৩১ মে গ্রেরণ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ইসফাক আহাম্মেদ দাবি করেন, প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু চাকরি বিধি লঙ্গন করে ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আর্ন্তজাতিক ধান গবেষনা ইনস্টিটিটের আঞ্চলিক কার্যালয়ে গোন্ডেন রাইচ প্রকল্পে পরামর্শক (কনসালটেন্স) হিসাবে কাজ করেছেন। এতে অবৈধ ভাবে প্রায় ৮ কোটি টাকা আয় করে বিদেশে পাচার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে এই পরামর্শক কাজে যাওয়া আসায় তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের যানবাহন ও জ¦ালানি ব্যবহার করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি করেছেন।
একই সঙ্গে প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার পর দুইটি বাসা দখলে রেখে এবং এতে পাহাড়া বসিয়ে প্রায় ৭৬ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন। এছাড়াও তিনি নিজের আত্মীয়কে দিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ করিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।
ইসফাক আরও দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়োগে বাণিজ্য করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু। এতে তাঁর ছেলেরাও জড়িত রয়েছে। এছাড়াও লুৎফুল হাসান মন্টু নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের সুনামধন্য কয়েকজন শিক্ষককে ছাত্রলীগ লেলিয়ে দিয়ে লাঞ্চিত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ইসফাক।
তবে এসব অভিযোগ সম্পুন্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভুয়া বলে দাবি করেছেন প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান মন্টু। তিনি বলেন- যিনি নিজেকে সহকারি অধ্যাপক দাবি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভুয়া অভিযোগ করেছেন, তিনি নিজেই অস্তিত্বহীন। এই নামে কোন শিক্ষক বিশ^বিদ্যালয়ে নেই, আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। তবে পূর্বচালে আমার ছয় ডেসিমেল জমি আছে, বরিশালে পৈত্রিকসূত্রেপ্রাপ্ত জমিতে ছোট একটি বাড়ি আছে এবং ঢাকার দক্ষিন কমলাপুরে পৈত্রিকসূত্রেপ্রাপ্ত জমি আছে। এর মধ্যে বোনদের অংশের কিছু জমি আমি কিনেছি। এর বাইরে পৃথিবীর কোথাও আমার বাড়ি নেই।
এ সময় চাকরিবিধি লঙ্গন করে ধান গবেষনায় পরার্মশক হিসাবে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে সেখানে আমি তিন বছর পরামর্শক ছিলাম। এটা নিয়ম মেনেই করেছি। তাছাড়া আমার কোন ঠিকাদার আত্মীয় বিশ^বিদ্যালয়ে কাজ করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন শতাধিক কর্মচারিরা নিয়োগ হয়েছিল। এটি শুরু করেছিলেন আগের ভিসি। তবে আমার সময়ে দুইটি পৃথক নিয়োগ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে কোন ধরনের নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি।
এ সময় তিনি দাবি করেন, মূলত আমার দ্বায়িত পালনকালীন সময়ে কেউ হয়ত কোন সিদ্ধান্তে আমার প্রতি অসন্তোষ্ট হয়েছে। আর এ কারণেই হয়ত আমাকে হয়রানি করার জন্য এই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে বলে আমি মনে করি।
সূত্র: ইনকিলাব
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেটে নন ক্যাডার বা ক্যাডার বহির্ভূত পদে এনিমেল হাজবেন্ড্রির বিপরীতে কোনো ডিগ্রি না রাখায় এ কর্মসূচি ডেকেছেন শিক্ষার্থীরা। মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
সোমবার (১৩ জুন) পশু পালন অনুষদের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে এ ঘোষণা দেন পশুপালন অনুষদ ছাত্র সমিতির ভিপি রেজওয়ান উল আমিন।
তিনি বলেন, ডক্টর অব ভেটেরিনারি সাইন্স (ডিভিএম) ডিগ্রিধারীরা যেমন ভেটেরিনারি কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন পান ঠিক তেমনি বি.এস.সি ভেট সায়েন্স অ্যান্ড এ.এইচ (কম্বাইন্ড) ডিগ্রিধারীরাও ভেটেরিনারি কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন পান। সেক্ষেত্রে স্পষ্টত দুইটা ডিগ্রি আলাদা কিছু নয়। এনিমেল হাজবেন্ড্রি (পশু পালন) ডিগ্রির সমতুল্য কোনো ডিগ্রি বাংলাদেশে নেই। অবিলম্বে এনিমেল হাজবেন্ড্রির বিপরীতে রাখা তথাকথিত কম্বাইন্ড ডিগ্রি তুলে দিতে হবে। অন্যথায় কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণির উৎপাদন বিষয়ক কয়েকটি নন-ক্যাডার পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের একই পদে নিয়োগ সংশোধনের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে টানা ৫ দিন ধরে আন্দোলন করেছেন পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আজ ১২ জুন (সোমবার) দুপুর ০২টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত নতুন প্রজ্ঞাপনের ষষ্ঠ অধ্যায়ের ২০নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত নীতিমালা বাতিল করে ফিশারিজ গ্রাজুয়েটদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের দাবিতে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্র-সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক তাসফি-উল ইসলাম এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন
মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের প্রফেসর ড. ফাতেমা হক শিখা, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক, প্রফেসর মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন, প্রফেসর ড. মোঃ শাহেদ রেজা, প্রফেসর ড. মোঃ নূরুল হায়দার রাসেল, ও প্রফেসর ড. তানভীর রহমানসহ ছাত্র-সমিতির ভিপি জায়েদ বিন রেজাউল আলিফ এবং জিএস নাসির আহমেদ সাগর।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, নতুন এ প্রজ্ঞাপনে মাছের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভেটেরিনারিয়ানদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, যা মোটেই যৌক্তিক নয়। মাছের চিকিৎসার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফিশারিজ গ্রাজয়েটদেরই অধিকার থাকবে। এ সময় বক্তারা আরোও বলেন, দুপুর ০২টায় বাকৃবিসহ বাংলাদেশের মোট ১৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শিক্ষা ও গবেষণা ভাবনায় পরবর্তী প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের উদ্যোগে দেশের অভ্যন্তরে স্নাতকোত্তর (Post Graduate ) পর্যায়ে কৃষি বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, তথ্য ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি, কলা ও মানবিক এবং ব্যবসা শিক্ষা সহ মোট ১৬ (ষোল) টি অধিক্ষেত্রে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ২২ (বাইশ) জন অনন্য মেধাবী শিক্ষার্থীকে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার”-২০২২ হিসেবে অ্যাওয়ার্ডের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ৩ লক্ষ টাকার চেক হাতে তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ১১ জুন, ২০২৩ রোজ রবিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নরসিংদীর কৃতি সন্তান মোঃ নাজমুস সাকিব কৃষি বিজ্ঞান অধিক্ষেত্রে শিক্ষা, গবেষণা ও এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটিতে বিশেষ অবদান রাখায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাত থেকে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার-২০২২” অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন ।
মোঃ নাজমুস সাকিব, ০৮ জুলাই ১৯৯৯ তারিখে নরসিংদী জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা জনাব মোঃ আব্দুল করিম, দক্ষিণ শিলমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মাতা জনাবা কামরুন্নাহার, বাসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুনামের সাথে চাকুরি করছেন। মোঃ নাজমুস সাকিব বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিশারিজ বায়োলজি এন্ড জেনেটিক্স বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত আছেন। স্নাতক পর্যায়ে ফিশারিজ, একোয়াকালচার এন্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদে সর্বোচ্চ ৩.৯৬ সিজিপিএ অর্জন করে প্রথম স্থান অর্জন করায় তিনি ইউজিসি মেধাবৃত্তি ২০২২ প্রাপ্ত হন। ইতোপূর্বে তিনি এস.এস.সি. ২০১৪, জে.এস.সি. ২০১১ ও প্রাথমিক শিক্ষাবৃত্তি ২০০৮ পরীক্ষায় যথাক্রমে ঢাকা বোর্ডে ১১ তম, নরসিংদী জেলায় ২য় ও নরসিংদী সদর উপজেলায় ৫ম স্থান অর্জন করে ট্যালেন্টপুলে সরকারি শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেন। তিনি রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও ব্রাহ্মন্দী কামিনী কিশোর মৌলিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একোটিয়াটিক বায়ো রিসোর্স রিসার্চ ল্যাব, শেকৃবি-তে মৎস্য খাতের বিভিন্ন গবেষণা কার্যের সাথে যুক্ত আছেন। উল্লেখ্য যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত ‘Fish Diversity and Ecosystem Services of Dubla Island of Sundarbans, Bangladesh’ গবেষণা প্রকল্পে তিনি গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গবেষণা নিবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে সহ-লেখক হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে এবং আরও কিছু গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন যেমন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) কম্পিউটার ক্লাবের সদ্য বিদায়ী সভাপতি, International Association of Students in Agricultural and Related Sciences-IAAS Bangladesh SAU-Dhaka এর প্রতিষ্ঠাকালীন Head of Control Board, শেকৃবি অন্ট্রাপ্রিনিয়রশীপ ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, শেকৃবি ফটোগ্রাফি সোসাইটির ইভেন্ট প্লানিং সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও গ্রাম বাংলার মৎস্যচাষী এবং খামারীদের মাছ চাষে বিনামূল্যে মৎস্য সেবা প্রদানকারী অলাভজনক সংগঠন ‘বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল’ এর আইটি ও যোগাযোগ সচিব হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে রচনা লিখন, কবিতা আবৃত্তি এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হিসেবে তার বেশ কিছু অর্জন রয়েছে। মোঃ নাজমুস সাকিব কে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার” অ্যাওয়ার্ড ২০২২ পাওয়ায় তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার এই অর্জনের জন্য আমি কতজ্ঞ মহান সৃষ্টি কর্তার প্রতি, আমার পিতা মাতা ও পরিবারের প্রতি, স্কুল, কলেজ ওবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ, আত্মীয়-সজন ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি। যাদের স্নেহ, ভালোবাসা ও সহযোগিতায় আমি আজ এই পর্যায়ে এসেছি। শিক্ষা, গবেষণা ও এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটির মানদন্ডের ভিত্তিতে আমার এই “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার” অ্যাওয়ার্ড ২০২২ প্রাপ্তি আমাকে এক দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবনের আদর্শকে বুকে ধারণ করে শিক্ষা ও গবেষণায় আরো মনোনিবেশ করতে উৎসাহ প্রদান করবে এবং অন্য দিকে পড়াশোনার পাশাপাশি বরাবরের মতোই সহশিক্ষা ও এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটি গুলো চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। সেই সাথে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার” অ্যাওয়ার্ড ২০২২ থেকে প্রাপ্ত অর্থ আমি আমার পরবর্তী শিক্ষা ও গবেষণা কাজে ব্যবহার করবো। সর্বোপরি, আমি নিজেকে একজন আদর্শ, দায়িত্বশীল ও সুদক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়তে চাই। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে উচ্চশিক্ষা লাভ ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করতে চাই। সেই সাথে নিয়মিতভাবে গবেষণার পাশাপাশি মৎস্যচাষী ও কৃষকের দ্বারে গবেষণালব্ধ জ্ঞান পৌঁছে দিয়ে তাদের কল্যাণে কাজ করে যেতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ” ।
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় ও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের উদ্যোগে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে উপবৃত্তি, শিক্ষাবৃত্তি, ভর্তি সহায়তা, চিকিৎসা অনুদান, এমফিল ও পিএইচডি ফেলোশিপ প্রদান করে থাকে। সেই সাথে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে স্বীকৃতি ও উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার” অ্যাওয়র্ড প্রদান করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি পদের চাকরিতে নিয়োগ বিধিমালা থেকে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি বাদ দেওয়ায় আজ ১১ই জুন বিকাল ৫ টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট ফেডারেশন , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
গত ৩০ মে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড কর্মকর্তা ও নন-ক্যাডার কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালায় কয়েকটি পদে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন(ডিভিএম) ডিগ্রিকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেট অনুসারে সহকারী ব্যবস্থাপক, সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট অফিসার, অ্যানিমেল প্রোডাকশন অফিসার, পশুপালন কর্মকর্তা ও জ্যু অফিসার পদে বিএসসি অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ও বিএসসি ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রিধারীদের এসব পদে আবেদনের সুযোগ রাখা হয়নি। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিএসএফ এর নেতৃবৃন্দ ও ভেটেরিনারি অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ জানিয়ে প্রকাশিত গেজেটে ভেটেরিনারি ডিগ্রি অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি অভিন্ন ডিগ্রি চালুর দাবি জানায়।
মানবন্ধনের এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিএসএফ এর সভাপতি তানভীর সাঈদ নোবেল জানায় এই গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন এর শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
বশেমুরকৃবি বিভিএসএফ এর সাধারণ সম্পাদক মো: জাকারিয়া হোসেন জানায় ৩০ মে প্রকাশিত ননক্যাডার নিয়োগ বিধিমালার গেজেট দ্রুত সংশোধন করা উচিত।
বশেমুরকৃবি বিভিএসএফ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: গোলাম দস্তগীর জানায় এই গেজেট সংশোধন না করা অব্ধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিভিএম এর শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে আন্দোলন ও আমরণ অনষণে অংশগ্রহণ করবে।
সিভাসুতে বর্তমানে ইন্টার্নরত ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের জন্যে পেশাগত দক্ষতা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর গত ২৮ মে থেকে ৮ জুন, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী একটি কর্মশালা আয়োজন করে। ইউনিভার্সিটি অব্ব্রিস্টল (ইউকে) এবং সেন্ট জর্জেস ইউনিভার্সিটি (গ্রেনাডা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ) এর সমন্বয়ে সিভাসু এই কর্মশালাটি আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণ করে সিভাসুর ইন্টার্নরত ৩০ জন শিক্ষার্থী।
ডিভিএম ডিগ্রী লাভের পর একজন ভেটেরিনারিয়ানের কর্মজীবনের শুরুতে যে যে পেশাগত দক্ষতার অভাবে কর্মক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় সেই বিষয়গুলো একটি গুণগত গবেষণালব্ধ ফলাফলের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় এবং সেই অনুযায়ী এই কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।১৫ জন করে মোট দুইটি দল গঠন করে ১০দিনের (৫দিন, প্রতি দল) জন্যে এই কর্মশালাটির পরিকল্পনা করা হয়। এই কর্মশালায় প্রাধান্য দেয়া হয়, স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর একজন ভেটেরিনারিয়ানের জন্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো।কর্মশালার প্রথম দিনে সিভি (জীবন বৃত্তান্ত) প্রস্তুত, কভার লেটার (পরিচিতি পত্র), মোটিভেশনাল লেটার (অনুপ্রেরণা পত্র) প্রস্তুত এবং ইন্টার্নশিপের দীর্ঘসময়টিকে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত চাকরির পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে সময়কে সামঞ্জস্য করার বিষয়ে একটি প্রেক্টিক্যাল পর্ব রাখা হয়। দ্বিতীয় দিনে সরকারি চাকরি পরীক্ষার জন্যে কার্যকরী প্রস্তুতি পরিকল্পনা বিষয়ে একটি আলোচনা পর্ব সংযোজন করা হয়।কর্মশালার তৃতীয় দিনে সরকারি ও বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে ভেটেরিনারিয়ানের নৈতিক আচরণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়। পরিকল্পনার চতুর্থ দিনে ইভিডেন্স বেইসড ভেটেরিনারি মেডিসিন (প্রমাণ ভিত্তিক ভেটেরিনারি মেডিসিন) গুরুত্ব এবং প্রয়োগ বিষয়ে আলোচনা রাখা হয়। সপ্তাহের শেষ দিনে ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে খামারির সাথে কার্যকরী ব্যবহার এবং উদ্যোক্তা হবার বিভিন্ন দিকগুলো আলোচনা করা হয়।
পেশাগত দক্ষতা কার্যক্রম এর সমন্বয়ক অধ্যাপক মোঃ আহসানুল হক এর তত্ত্বাবধানে, প্রকল্পটির গবেষণা সহায়ক ডা. আবদুল্লাহ আল সাত্তার সহ ভেটেরিনারি ইপিডেমিওলজি বিষয়ে মাস্টার্সরতশিক্ষার্থীদের সহায়তায় প্রতি দলের জন্যে এই পর্বগুলো পরিচালনা করা হয়। কার্যক্রমটির বিভিন্ন বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল থেকে অধ্যাপক সারাহ বেইলি এবং সেন্ট জর্জেস ইউনিভার্সিটি থেকে সহযোগী অধ্যাপক
টালিয়া গুটিন সহযোগীতা করেন।
২-সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণের বিভিন্ন পর্বে রিসোর্স পার্সনের দায়িত্বে ছিলেন সিভাসু থেকে অধ্যাপক আব্দুল আহাদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, অধ্যাপক মোঃ মিজানুর রহমান, অধ্যাপক আমির হোসেন সৈকত, সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব আলম, সহযোগী অধ্যাপক আহাদুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক এস. এম. মোকাদ্দেস আহমেদ দিপু, সহকারী অধ্যাপক সাজেদা আক্তার এবং সহকারী অধ্যাপক রিদোয়ান পাশা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে রিসোর্স পার্সন হিসেবে ছিলেন ডা. ফরহাদ হোসেইন (সাবেক পরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর), ডা. রুমন তালুকদার (উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা), ডা. সেতু ভূষণ দাশ (উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা), ডা. মোঃ ইবরাহিম খলিল (বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা), ডা. অজয় দেবনাথ (ভেটেরিনারি সার্জন) এবং ডা. মোঃ আব্দুল কাদের (ভেটেরিনারি সার্জন)। বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পর্বে রিসোর্স পার্সন হিসেবে যুক্ত ছিলেন ডা. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম (সহকারী মহাব্যবস্থাপক, কাজী ফার্ম লিমিটেড), ডা. সজীব দেবনাথ (প্রতিষ্ঠাতা, স্কাইটেক এগ্রোফার্মা), ড. রুবাইয়াত বিনতে হাসান (কনসালটেন্ট, ইউনিসেফ, মিয়ানমার), ডা. সাদ্দাম হোসেন (প্রধান কার্যনিবাহী কর্মকর্তা, বার্ড এন্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিক)এবং ডা. পার্থ সামন্ত (প্রধান কার্যনিবাহী কর্মকর্তা, এন্টিটি)।
কর্মশালার শেষ দিনে সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ও পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এ.এস.এম লুত্ফুল আহসান, উপাচার্য, সিভাসু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এ.কে.এম. সাইফুদ্দিন, পরিচালক, বহিঃর্বিভাগ, অধ্যাপক গউজ মিঞা, পরিচালক, আইকিউএসি (ইন্টার্নাল কোয়ালিটি এসিউরেন্স সেল) এবং ডা. ফরহাদ হোসেইন, সাবেক পরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।আরোও উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ, রিসোর্স পার্সন, কোর্সটিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং এপি-মাস্টার্স ফেলো।অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ লুত্ফর রহমান, ডিন, ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এ. এস. এম লুত্ফুল আহসান পেশাগত দক্ষতা কার্যক্রমটির জন্যে প্রয়োজনীয় চাহিদা গুলো পূরণের লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন এবং তিনি একটা শিক্ষা বিষয়ক গবেষণা প্রস্তাব (অর্থনৈতিক সহায়তা সাপেক্ষে) পাশের প্রতিশ্রুতি দেন।তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কেবল চাকরি না খুঁজে, চাকরিদাতাও হতেহবে। শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে হবে।শিক্ষার্থীদের লিডারশিপ গুণাবলি তৈরি করা অতীব জরুরি।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে, ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ লুত্ফর রহমান বলেন, “ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত একাডেমিক সময়ের উপযুক্ত বিষয় বা সময় নির্ধারণ করে, এই পেশাগত দক্ষতা ভিত্তিক বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে, কেননা বর্তমান যুগে চাকরি পাবার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে একাডেমিক দক্ষতার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতা থাকাওজরুরি।”
ইন্টার্ন ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের মতে, মাঠপর্যায়ে কাজে নামার পূর্বে পেশাগত দক্ষতাভিত্তিক কোর্স বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এধরনের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চালু করা হলে, তাদের এবং পরবর্তী ভেটেরিনারি প্রজন্মের জন্যে কর্মক্ষেত্রে আরো সফলতার সাথে কাজ করা সম্ভব হবে।