৩:৩০ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ১৬ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ২১, ২০২২ ৩:১৮ অপরাহ্ন
হনুমান লোকালয়ে, কৌতূহলী মানুষের ভিড়
প্রাণ ও প্রকৃতি

উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে হঠাৎ একটি হনুমানের আগমন ঘটেছে। গত তিন দিন ধরে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় হনুমানটি বিচরণ করছে। স্থানীয় লোকজন তাকে দেখতে ভিড় করছেন। তবে হনুমানটি এখন পর্যন্ত কারো কোনো ধরনের ক্ষতি করেনি।

স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার প্রথমে উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়ন এলাকা পুটিয়াখালী গ্রামে হনুমানটির দেখা মিলে। পরে গত দু’দিন ধরে বেতাগী পৌর শহরের আবাসিক বাসা বাড়ির বিভিন্ন ছাদে অবস্থানের পর আজ শুক্রবার সকালে পৌর শহরের বাজারে এসেছে। সেখানে অস্থির এ প্রাণিটি ছুটে বেড়াচ্ছে। কখনও গাছের মগডালে, কখনও বাড়ির ছাদে। আবার কারো টিনের চালে অবস্থান করছে। হনুমানটিকে একনজর দেখতে উৎসুক মানুষও ছুটছে পিছু পিছু। মানুষ দেখে হনুমানও অস্থিরতা বোধ করছে। কয়েকদিন থেকে ঠিকমতো খাবার না পেয়ে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে সে। তবে মাটিতে আসার পর অনেককেই বিস্কুট, বাদাম, আঙুর, টমেটো ও কলা দিতে দেখা গেছে।

এলাকাবাসীর ধারণা করছেন, ফলের গাড়িতে ফল খেতে খেতে অথবা ভারত থেকে দলছুট হয়ে চলে এসেছে। খাবার সমস্যার কারণে লোকালয়ে খাবারের সন্ধানেও আসতে পারে। হনুমানটির মধ্যে এখনও শান্ত ভাব আছে। কারো কোনো ক্ষতি করেনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ বলেন, ওই এলাকায় হনুমান আসার কথা শুনেছি। হনুমানটি উদ্ধারে বন্যপ্রাণী বিভাগকে অবগত করেছি। এলাকার মানুষকে হনুমানটিকে উত্ত্যক্ত না করার পরামর্শও দেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২০, ২০২২ ১২:৪২ অপরাহ্ন
ভোলার উপকূলে জলচর পাখি কমেছে ৭০ ভাগ
প্রাণ ও প্রকৃতি

ভোলার উপকূলীয় এলাকার ৬০টি চরে টানা নয়দিন পাখি শুমারি শেষে এ তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সূত্রটি জানায়, ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জরিপে উপকূলে প্রায় ৭০ ভাগের মত পাখি কমেছে। ১৯৯৬ সাল থেকে উপকূলে চলে আসছে এ পাখি শুমারি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও পাখি শুমারি শেষ হয়েছে।

২০০০ সালে উপকূলীয় এলাকায় যখন পাখি শুমারি হয়, তখন পাখির সংখ্যা ছিল এক লাখের মত। কিন্তু ২০২২ সালে তা কমে ৩৩ হাজার ৬৪টি হয়েছে। যা খুবই উদ্বোগজনক বলে মনে করছেন পাখি গবেষকরা।

চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় ৬০টি চরে শুমারি করে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিনিধি দলটি।

মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর কোলঘেঁষা চরে পাখি গণনা করা হয়। টেলিস্কোপসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পাখি গণনা করেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্যরা। একই সঙ্গে পাখিদের পায়ে রিং পরানো এবং স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে জলচর পাখিদের অবস্থান নির্ণয় করছে দলটি। তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে নানা তথ্য।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, বন বিভাগের টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্প (সুফল), প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (আইইউসিএন-IUCN) যৌথ উদ্যোগে গত ৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নয়দিন বাংলাদেশের মধ্য দক্ষিণ উপকূলে এশীয় জলচর পাখি শুমারি ২০২২ পরিচালিত হয়। ভোলার খেয়াঘাট থেকে শুরু হয় এ শুমারি। এ শুমারিতে অংশ নেন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সায়াম ইউ চৌধুরী, সদস্য এম এ মুহিত, শফিকুর রহমান, নাজিম উদ্দিন খান ও মোহাম্মদ ফয়সাল।

ওই জরিপে ৫৮ প্রজাতির মোট ৩৩,০৬৪টি জলচর পাখি গণনা করা হয়। এর মধ্যে উল্লোখযোগ্য বৈশ্বিকভাবে বিপন্ন পাখি দেশি গাংচোষা ৫৪০টি- (Indian Skimmer) এবং বাদামী মাথা গাংচিল (Brown-headed Gull) ৪,১৬২টি পাওয়া গেছে। প্রতিনিধি দলটি মাছ ধরার ট্রলারে করে উপকূল থেকে উপকূলে পাখি গণনা করেন।

গুরুত্বপূর্ণ চরগুলোর মধ্যে আছে চর তাজাম্মল, চর পাতিলা, ঢালচর, শিবচর, চর নিজাম, ভেলুমিয়ার চর, দমার চর, চর কুকরি মুকরি, চর শাহজালাল, চর মনপুরা, চর মন্তাজ, সোনার চর, রোজিনার চর ইত্যাদি। নিঝুম দ্বীপ ও এর আশপাশের এলাকায় সবচেয়ে বেশি পাখি গণনা করা হয়েছে। সেখানে পাখি মিলেছে ১০ হাজার ৬৫টি।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য এমএ মুহিত বলেন, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং তিব্বতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শীতের সময় বাংলাদেশের উপকূলে চলে আসে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি। বিগত সময়ের চেয়ে এ বছর ৫৮ প্রজাতির জলচর পাখির দেখা মিললেও পাখিদের আগমন প্রায় ৭০ ভাগ কমে এসেছে বলা চলে।

তিনি বলেন, আমি যখন ২০০০ সালে প্রথম পাখি শুমারিতে অংশ নিই, তখন পাখি ছিল এক লাখের মতো। কিন্তু এ বছর হয়েছে মাত্র ৩৩ হাজার।

জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসৃষ্ট কিছু কারণে কমেছে পাখি। এছাড়া উপকূলে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়া, খাদ্য সংকট এবং চরাঞ্চলে গরু-মহিষ এবং মানুষের উপস্থিতির কারণে পাখিদের বিচরণ কমে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৯, ২০২২ ৩:০০ অপরাহ্ন
যশোরে অবৈধভাবে আটক বন্যপ্রাণী উদ্ধার
প্রাণ ও প্রকৃতি

যশোরে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী আটকে রাখায় এক ব্যক্তিকে জেল জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে এসব বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ ঝাঁপা বাওড়ের ভাসমান সেতুর পাশে ঝুমা চিড়িয়াখানায় খুলনা র‌্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার (পুলিশ সুপার) আল আসাদ মাহফুজুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানের সময় মণিরামপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিশু অধিকারি ও খুলনার বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম জানান, র‌্যাবের কাছে গোপন খবর ছিল ঝাঁপা বাওড়ের পাশে ঝুমা চিড়িয়াখানায় অবৈধভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রাণি আটক করে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করছে। এমন খবরের ভিত্তিতে র‌্যাব সেখানে অভিযান চালায়।

এসিল্যান্ড বিশু অধিকারি বলেন, ঝুমা চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন ধরণের পাখি, সজারু, উল্লুক, মেছোবাঘ, বনবিড়াল, সাফ বানর, হনুমানসহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণি অবৈধভাবে আটক করে হেফাজতে রেখে তা আবার প্রদর্শন করা হয়েছে। যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ সালে (৩৭)২ ধারায় অপরাধ। এ কারণে প্রতিষ্ঠানের মালিক না থাকায় মালিকের শ্বশুর (ম্যানজের) শামছুদ্দিন সরদারকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়েছে।

বন বিভাগের পরিদর্শক রাজু আহম্মেদ বলেন, র‌্যাবের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বন্যপ্রানি বন বিভাগের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পাখিগুলো এখনই ছেড়ে দিলাম। বাকি প্রাণিদের যে জায়গায় যার স্থান তাদের সেখানে অবমুক্ত করা হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৯, ২০২২ ১:১৫ অপরাহ্ন
পুকুর থেকে সুন্দরবনে ফিরে গেল অজগর
প্রাণ ও প্রকৃতি

বাগেরহাটের শরণখোলার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া অজগর সাপ সুন্দরবনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস এলাকার বনে ছাড়া হয় অজগরটি।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের জিতেন গাইনের বাড়ির পুকুর থেকে ওয়াইল্ড টিম ও ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের (ভিটিআরটি) সদস্যরা ধরেন সাপটি।

ওয়াইল্ড টিমের মাঠ কর্মকর্তা মো. আলম হাওলাদার জানান, মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে জিতেন গাইনের বাড়িতে যান তারা। এসময় পুকুরে অজগরটি ভাসতে দেখা যায়। পরে সেটি ধরে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. আব্দুল মান্নান জানান, ৮ফুট লম্বা এবং প্রায় ১০ কেজি ওজনের অজরগটি রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন বনে রাত সাড়ে ৮টার দিকে অবমুক্ত করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৭, ২০২২ ২:৪৯ অপরাহ্ন
ফেনীতে মিলল সাদা রঙের বিরল প্রজাতির সাপ
প্রাণ ও প্রকৃতি

সাদা রঙের বিরল প্রজাতির একটি সাপ খুঁজে পেয়েছে চট্টগ্রামের একদল শিক্ষার্থী। ফেনী থেকে উদ্ধারের পর সাপটিকে নিয়ে গবেষণা করছেন তারা। এর মধ্যে দু’বার সাপটি খোলস পাল্টে সাদা রঙে রূপ নিয়েছে। জলঢোড়া প্রজাতির সাপটি প্রথম পর্যায়ে এলভিনো বলে মনে হলেও পরবর্তীতে চোখের রংসহ নানা উপসর্গের মাধ্যমে এটি দুর্লভ লিউসস্টিক সাপ বলেই ধারণা তাদের। বিশ্বে এমন সাপ পাওয়ার তেমন নজির নেই।

গত ১৫ই নভেম্বর ফেনীর ছাগলনাইয়া এলাকার একটি বাসা থেকে সাদা রঙের এই সাপটি উদ্ধার করেন এক শিক্ষার্থী। এরপর তারা এটিকে চট্টগ্রামে এনে গবেষণা শুরু করেন। বিশেষ করে গত দুই মাসে এই সাপটি দুবার খোলস পরিবর্তনের পাশাপাশি গায়ের রংও পরিবর্তন এনেছে, যা সচরাচর সাপের ক্ষেত্রে হয় না। প্রথম থেকেই সাপটি জলঢোড়া বলেই নিশ্চিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু গায়ের রঙের পার্থক্যের কারণে এটি তাদের আকর্ষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সহকারী পরিচালক ইসমাইল মিথুন জানান, এ সাপটিকে ধরার পর প্যাকিং করে প্রথমে বাসাই রাখা হয়। পরে অবজারভেশনের জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।

স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের মেম্বার ফরহাদুল ইসলাম জানান, সাপের এ পরিবর্তনটা হয়েছে পিগমেন্টেশনের জন্য।

সাপ গবেষকদের মতে, কয়েকটি দেশে আগে কোবরাসহ কয়েক প্রজাতির সাপের মধ্যে এ ধরনের লিউসস্টিক সাপ পাওয়া গেলেও জলঢোড়া প্রজাতির মধ্যে এই ধরনের কোনো নজির নেই।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী জানান, জলঢোড়ার এটি একটি ভিন্ন প্রজাতি। এখন পর্যন্ত ফেনী থেকে উদ্ধার হওয়া সাপটিই এই অঞ্চলের একমাত্র জলঢোড়া প্রজাতির মধ্যে লিউসস্টিক বৈচিত্র্যের। বর্তমানে বিরল প্রজাতির এই সাপটিকে ইঁদুরের পাশাপাশি ছোট আকৃতির মাছ’ও খাবার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।

স্নেক রেসকিউ টিমের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান রাব্বী বলেন, পর্যবেক্ষণের পরে দেখা যাচ্ছে সাপটি আবার মোল্টিং করে এবং তার রংটা আরও ফ্যাকাশে হয়। যেটা সম্পূর্ণ লিউসস্টিকের বৈশিষ্ট্য।

রেসকিউ টিমের অন্য এক মেম্বার আরশাদ নাফিজ জানান, যে কোনো একটি সংরক্ষিত জায়গায়, যেখানে এ সাপটির নিরাপত্তা বজায় থাকবে যেখানে তাকে রিলিজ করা হবে।

গত এক বছরে ৫শ’র বেশি সাপকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে উদ্ধার করে বন বিভাগের সহায়তা জঙ্গলে অবমুক্ত করেছে শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ। সাদা রঙের জলঢোড়া প্রজাতির এই সাপটিকেও গবেষকদের মতামত নিয়েই অবমুক্ত করার অপেক্ষায় রয়েছে তারা।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২২ ৩:৩৮ অপরাহ্ন
ঢাকায় এখনও ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণী টিকে আছে
প্রাণ ও প্রকৃতি

সম্প্রতি ইতালির বায়োডাইভার্সিটি জার্নালে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, ঢাকায় এখনও ২০৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণী টিকে আছে। তবে এদের মধ্যে অনেক প্রাণীই বিপন্ন প্রায়।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. ফিরোজ জামানের নেতৃত্বে ২০১৫ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী রিসার্চ ল্যাবরেটরির অধীনে এই গবেষণার কাজ শুরু করা হয়। যা চলবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।

গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিন বছরে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, রমনা, উত্তরা, খিলক্ষেত, দিয়াবাড়ী, রামপুরার আফতাবনগর, বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীসহ মোট ২২টি এলাকা এবং এর আশপাশের বনভূমি ও জলাশয়ে জরিপ পরিচালনা করে মোট ২০৯ জাতের বন্যপ্রাণীকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এসব বন্যপ্রাণীর মধ্যে বসন্ত বাউরি, ফিঙে ও ছোট ভীমরাজ পাখিসহ মোট ১৬২ প্রজাতির পাখি রয়েছে।

বনবিড়াল, বানর, শিয়াল, শুশুকসহ ১৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী পাওয়া গেছে।

এছাড়া, ঝিঁঝিঁ ব্যাঙ, কটকটি ব্যাঙ, সবুজ, গেছো ব্যাঙ, ঘড়িয়ালসহ মোট ১২ প্রজাতির উভচর প্রাণী আছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২২ ২:১০ অপরাহ্ন
বরগুনায় হিমালয়ী গৃধিনী শকুন উদ্ধার
প্রাণ ও প্রকৃতি

বরগুনায় হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির (Himalayan griffon) একটি অসুস্থ শকুনকে উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।শকুনটিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বনে অবমুক্ত করা হবে। এটি একটি পরিযায়ী প্রজাতির শকুন; শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে খাবারের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে থাকে। এই সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা মেলে।

শনিবার বরগুনা সদর উপজেলার পাজরাভাঙা গ্রামের বাসিন্দারা শকুনটিকে দেখতে পেয়ে আটক করেন। পরে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে শকুনটিকে উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন ধরে বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে একটি বৃহৎ আকার পাখি ঘুরে বেড়িয়েছিল। অনেকেই পাখিটিকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন। এই পাখিটিই হলো শকুন।

ধারণা করা হচ্ছে খাদ্য সংকট অথবা পথ ভুলে শকুনটি লোকালয়ে এসেছিল। শনিবার সকালে বরগুনা সদর উপজেলার পাজরাভাঙা গ্রামে শকুনটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে শকুনটিকে বন্দী করে।

পরবর্তিতে তারা বন বিভাগকে খবর দিলে বন বিভাগ এসে শকুনটিকে উদ্ধার করে। শকুনটি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকদের কাছে হস্তান্তর করেন। চিকিৎসা শেষে বরগুনার তালতলী উপজেলার সখিনা সংরক্ষিত বনের টেংরাগিরি ইকোপার্কের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বন বিভাগের বরগুনা সদর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে শকুনটিকে উদ্ধার করে আমরা নিয়ে আসি। শকুনটি কোন প্রজাতির নিশ্চিত হওয়া না গেলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি বাংলা শকুন।

বরগুনা সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, উদ্ধারকৃত শকুনটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে শকুনটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই হয়তো বাঁচার তাগিদে লোকালয়ে এসেছিল। এখন শকুনটি মোটামুটি সুস্থ রয়েছে।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, সাধারণত এরা বট, পাকুড়, অশ্বত্থ, ডুমুর প্রভৃতি বিশালাকার গাছে লোকচক্ষুর অন্তরালে বাসা বাঁধে। এদের গলা, ঘাড় ও মাথায় কোনো পালক থাকে না। প্রশস্ত ডানায় ভর করে আকাশে ওড়ে। শকুন খুব একটা প্রয়োজন না হলে জীবন্ত প্রাণী শিকার করে খায় না। মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।

তিনি আরও বলেন, শকুনের নাম শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শকুন আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী একটি প্রাণী। সারাবিশে^ শকুন এখন একটি বিপন্ন প্রাণী। তাই আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত।

ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাংলাদেশের জন্য হিমালয়ী গৃধিনী একটি পরিযায়ী শকুন। এদেরকে শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আইইউসিএন এর লাল তালিকা অনুযায়ী এটি “প্রায় সংকটাপন্ন” একটি প্রাণী। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭ জাতের শকুন দেখা গেছে তার মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি সবগুলোই হুমকির সম্মুখীন।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অগ্রগামীর সভাপতি প্রভাতী মিত্র বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির বন্ধু হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে।

‘শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি মানবজাতি অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু থেকে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। তাই সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই পাখিটিকে রক্ষা আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২২ ১:০৪ অপরাহ্ন
হাওরে জরিপ, কমেছে পাখির বিচরণ
প্রাণ ও প্রকৃতি

টাঙ্গুয়ার হাওর ও বাইক্ক্যা বিলকে বলা হয় পরিযায়ী পাখির স্বর্গরাজ্য। তবে এখানে পাখির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। গণনা করে পাখির যে মোট সংখ্যা পাওয়া গেছে, তা রীতিমতো উদ্বেগের। গত বছরের তুলনায় এবার সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে পাখির বিচরণ কমেছে প্রায় ৩২ হাজার। আর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওরের প্রায় ১২০ একরের বাইক্ক্যা বিলে পাখি কমেছে আট হাজারেরও বেশি।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, বন বিভাগ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের যৌথ জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। টাঙ্গুয়ার হাওরে গত ২-৩ জানুয়ারি এবং বাইক্ক্যা বিলে ৪ জানুয়ারি জলচর পরিযায়ী পাখিশুমারি পরিচালনা হয়।

পাখিশুমারির তথ্য অনুযায়ী, দুই দিনে টাঙ্গুয়ার হাওরে মোট ৩৬ প্রজাতির ২৭ হাজার ১৭০টি পাখি গণনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৩৩ প্রজাতির ২৭ হাজার ১৬৭টি জলচর পাখি। পরিযায়ী বুনোহাঁসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে লালমাথা ভূতিহাঁস। সাত হাজার ৩৩২টি ভূতিহাঁস গণনা করা সম্ভব হয়েছে। দেখা গেছে, মরচে রঙের ভূতিহাঁসও। এদের মোট সংখ্যা সাত হাজার ২০৫। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে ৩৫ প্রজাতির ৫১ হাজার ৩৬৮টি পরিযায়ী পাখি ছিল। তবে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরও তিন প্রজাতির জলচর পরিযায়ী পাখি বেড়েছে। ওই সময় সংখ্যা সাত হাজার ৭০৬টি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯ হাজার ৭৪টিতে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ ৪৬ হাজার ৩০টি পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। একইভাবে ২০১৮ সালে ৫৯ হাজার ৫৪২টি, ২০১৭ সালে ৯১ হাজার ২৩৬টি, ২০১৬ সালে ৪২ হাজার ৫৫৮টি এবং ২০১৫ সালে ৫২ হাজার ২৯৯টি পাখি গণনা করা হয়। ২০০২ সালে এ হাওরে একসঙ্গে ৯০ হাজার ৯০০টি মরচে রং ভূতিহাঁস দেখা গিয়েছিল।

টাঙ্গুয়ার হাওরের পর গত ৪ জানুয়ারি বাইক্ক্যা বিলে শুমারিতে মোট ৩৪ প্রজাতির তিন হাজার ২৩০টি জলচর পাখি দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে ছিল ৯০০টি গেওয়ালা-বাটান, ৪৫২টি বেগুনি-কালেম ও ২৫০টি খয়রা-কাস্তেচরা। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে এ বিলে ৩৯ প্রজাতির ১১ হাজার ৬১৫টি পাখি পাওয়া যায়। ২০১৮ সালে এই পাখির সংখ্যা ছিল ৩৮ প্রজাতির পাঁচ হাজার ৪১৮টি। তবে ২০১৭ সালে বাইক্কা বিল জলাভূমিতে জলচর পাখির সংখ্যা ছিল ৪১ প্রজাতির ১০ হাজার ৭১৩টি। ২০১৬ সালে পাওয়া গিয়েছিল ৩১ প্রজাতির আট হাজার ৮৩১টি পাখি। এর আগের বছর ২০১৫ সালে পাখিশুমারির সময় ছয় হাজার ৯৯১টি জলচর পাখি পাওয়া যায়।

তবে বাইক্ক্যা বিলের ২০২০ ও ২০২১ সালের পাখির সংখ্যা পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ওই দুই বছর পুরো হাইল হাওরে শুমারি হয়।পাখিশুমারির মূল কাজটি (গণনা) হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। এর পরও পাখির অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে বার্ড ক্লাব ও আইইউসিএন। এ কাজটি এখনও চলছে। হাওরের পর উপকূলীয় এলাকায় গত ৭ জানুয়ারি থেকে পাখিশুমারি শুরু হয়েছে, যা চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।

পাখির সংখ্যা কমার বিষয়ে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইনাম আল হক বলেন, গত বছরের সঙ্গে তুলনা করে পাখি কমেছে বলা যাবে না। কারণ প্রতিবছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে শুমারি হয়। এবার ফেব্রুয়ারির শুমারির পর বলা যাবে।

তবে বিশ্বজুড়েই পাখির আবাসস্থল কমে আসছে জানিয়ে এ গবেষক বলেন, অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এশিয়ায় পাখি বেশি কমছে। বাংলাদেশে জলাভূমিগুলোতেও পাখি কমছে। এর পেছনে বৈশ্বিক নানা কারণও আছে। দেশে যেসব পাখি দেখা যায়, তার বেশিরভাগই পরিযায়ী। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিশ্বের ২০টি দেশে তারা বিভিন্ন ঋতুতে যায়। যে দেশে তাদের বসবাসের অনুকূল পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে, সেই দেশ থেকে তারা অন্য দেশে চলে যাবে। এজন্য সব দেশকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে পাখির অন্যতম আশ্রয়স্থল টাঙ্গুয়ার হাওর। এ হাওরে পাখিরা তাদের জীবন বিপন্ন মনে করলে আর সেখানে ভিড় করবে না। ফলে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, হাওর এলাকায় পাখিশিকারিরা বিভিন্ন কায়দায় পাখি ধরে নিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। এ ছাড়া পর্যটকের পদচারণা, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার, মাছ ধরতে বিষ প্রয়োগ ও দূষণে দিন দিন পাখির সংখ্যা কমছে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে জলাভূমিগুলোকে পাখির জন্য নিরাপদ করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৫, ২০২২ ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
তাড়ুয়া সৈকতে অবৈধ খুঁটিজাল, কমছে অতিথি পাখি
প্রাণ ও প্রকৃতি

ভোলার তাড়ুয়ার সৈকতে প্রভাবশালীদের অবৈধ খুঁটিজালের ভয়ে কমছে অতিথি পাখি। জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে সৈকতের সৌন্দর্য। এছাড়া সৈকতে ঘুরতে গিয়ে খুঁটি জালের কারণে চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা।

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে জেগে ওঠা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তাড়ুয়া সৈকত। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র এটি।

এই সৈকতে একসঙ্গে দেখা মিলবে চকচকে সাদাবালি, ঝাঁকঝাঁক লাল কাঁকড়া, ম্যানগ্রভ বন আর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি কেওড়া গাছ। শীত মৌসুমে সৈকতে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির কোলাহল, উড়ে বেড়ানো আর ডুব সাঁতারের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন শতশত ভ্রমণপিপাসু তাড়ুয়া সৈকতে ছুটে যান।

কিন্তু, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অসাধু কিছু জেলে তাড়ুয়ার সৈকতসহ আশেপাশের চরগুলোতে মাইলের পর মাইল এলাকা জুড়ে খুঁটি জাল দিয়েছে।

স্থানীয় চেয়ারম্যান ছালাম হাওলাদারের ছত্রছায়ায় কিছু জেলে এসব অবৈধ জাল দিয়ে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে

তবে, জেলেরা বলছে খুঁটি জাল বৈধ। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি জানে।

এদিকে খুঁটি জালের সাফাই গাইলেন ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালাম হাওলাদার। তিনি বলেন, রাতে পাখিরা তো অন্ধকারে দেখতে পায়না তাই এ জালে রাতের অন্ধকারে ২/১ টা পাখি আটকা পড়লেও তেমন কোন ক্ষতি হয় না। আর ছোট মাছ তো এখানে আটকায় না।

অবৈধ জাল ফেলে কেউ প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে জানান ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এম এম কায়চার। তিনি বলেন, কোনভাবেই যেন পাখি ধরা ও মারা না হয়। এ ধরনের ফাঁদ যারা পাতবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তাড়ুয়া সৈকতে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনি উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৪, ২০২২ ৩:২৬ অপরাহ্ন
অবমুক্তির অপেক্ষায় ১২টি বিরল প্রজাতির শকুন
প্রাণ ও প্রকৃতি

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে বিরল প্রজাতির ১২টি শকুন। একসময় পুরোপুরি সুস্থ হলে এসব উদ্ধারকৃত শকুনকে রক্ষা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সুস্থ করে প্রতি বছরের মার্চ-এপ্রিলের দিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে। বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বনবীট কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রশস্থ ডানার ওপর ভর করে শকুন আকাশের অনেক ওপরে ওড়ে।

এদের মাথা, গলা বা ঘাড়ে পালক নেই। এদের প্রবল ডানা ঝাপটানো আর সমস্বর বিকট শব্দে মানুষজন বুঝতে পারে শকুন এসেছে। কিন্তু এখন আর সেই চিরচেনা শকুনের দেখা পাওয়া যায় না। বট, পাকুড় কিংবা অশ্বত্থের মতো বড় বড় গাছে সাধারণত লোকচক্ষুর অন্তরালে শকুন বাসা বাঁধে।

এরা সাধারণত গুহায়, গাছের কোটরে বা পর্বতের চূড়ায় ১-৩টি ডিম পাড়ে। বিভিন্ন প্রাণীর মৃতদেহ শকুনের দল মুহূর্তেই খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। ফলে পচন ধরা গলিত মৃতদেহগুলো থেকে সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে না। নিঃসন্দেহে এরা মানবসমাজের জন্য উপকারী পাখি।

বীরগঞ্জের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ১২ শকুনের জন্য গড়ে প্রতিদিন বয়লার মুরগি দেয়া হয়। এছাড়াও স্যালাইন,পানি ওষুধ দেয়া হয় বলে জানায় শকুনের দেখভালের তদারককারী বেলাল হোসেন। প্রতিটি শকুনকে খাদ্য হিসেবে দু’দিন পর পর দেয়া হয় আধা কেজি বয়লার মুরগী।

বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বনবীট কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ জানান, হিমালয় এবং ভুটানে শীতের প্রকোপ বাড়লে দল বেঁধে শকুনগুলো আসে এবং বড় বড় গাছে আশ্রয় নেয়। বিলুপ্ত প্রায় এই শকুন বিশেষ করে শীতের সময় অন্য এলাকা থেকে দিনাজপুরসহ এ অঞ্চলে অসুস্থ বা খাদ্যাভাবে ক্লান্ত অবস্থায় আসে।

ঠিকমত উড়তে না পারায় সেসব শকুনকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে পরিচর্যা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে আনা হয়। একসময় পুরোপুরি সুস্থ হলে সেটিকে প্রকৃতিতে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রতি বছরের মার্চ-এপ্রিলের দিকে এসব শকুনকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করে দেয়া হয়। বর্তমানে এখানে এধরনের ১২টি শকুন রয়েছে।

উল্লেখ্য,এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আহত অবস্থায় শকুন উদ্ধার করে বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। গত বছরের এপ্রিলে ২০টি শকুন সুস্থ অবস্থায় প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলার অবস্থানের কারণে এই এলাকায় এখনো কিছু শকুন দেখা যায়। অনেক সময় এগুলো অতিথি হয়ে আসে। তবে মানুষ যদি সচেতন হয় এবং শকুন উদ্ধার করে অথবা বনবিভাগকে সংবাদ দেয়, তাহলে উদ্ধার করে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিচর্যার মাধ্যমে তাদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করা সম্ভব। বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানে গত ৫ বছর ধরে দেশে বিলুপ্ত ও বিপন্ন প্রায় শকুনকে বাচাঁতে আইইউসিএন বাংলাদেশ ও বন বিভাগ যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop