পদোন্নতি জটিলতায় খুকৃবির ৩৭ জন শিক্ষক
ক্যাম্পাস
২০১৮ সালে উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হওয়া খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ধাপে যোগদান করেন ৭৩ জন শিক্ষক যারা প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞপ্তি ও সকল আইন অনুসরণ করেই নিয়োগ পান। গত ২৩ জানুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের জন্য ইউজিসির তদন্ত কমিটির সুপারিশে বলা হয়, আইন, বিধি, সংবিধি ও প্রবিধি অনুসরণ করে বিষয় বিশেষজ্ঞসহ পৃথকভাবে প্রতিটি বাছাই কমিটি গঠন করে অবিলম্বে কমিশনকে অবহিত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া যেতে পারে। কিন্তু, শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৩ আগষ্ট ২০২২ ইং তারিখে বিষয় বিশেষজ্ঞ ছাড়া বাছাই কমিটি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের নেতৃবৃন্দ কয়েক দফায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সাথে আলোচনা করে এবং বিষয়টি সমাধান করার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু আইন ও বিধি পরিমার্জিত করে একাডেমিক কাউন্সিলে পাস করা হয়েছে যা আগামী সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হবে। উল্লেখ্য, নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বাছাই কমিটি গঠন বা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনভাবেই অবহিত না এবং বিষয়টি একান্তই নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
শিক্ষকদের মধ্যে ৩৭ জন প্রভাষক গত ২২ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখে সকল শর্তপূরণ সাপেক্ষে পদোন্নতির আবেদনপত্র জমা দেন। অথচ, দীর্ঘ ৩ মাস অতিক্রম করলেও এখনো শিক্ষকদের পদোন্নতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। উল্লেখ্য যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাটি কোনভাবেই শিক্ষকদের পদোন্নতির বাধা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক জানায়, এই বিষয়ে ইউজিসিকে জানালে তারাও বলেন সকল শর্তপূরণ করলে শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে কোন বাধা নেই, কারন এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রমেরই অংশ। শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের নেতৃবৃন্দসহ শিক্ষকরা একাধিকবার প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে পদোন্নতির পদক্ষেপ নিতে বলে। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিষয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ নিচ্ছেনা এবং বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষকদের পদোন্নতিকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সকল কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলছে, এমনকি নতুন নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। এদিকে শিক্ষকরা সকল দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছেন এবং এখন পর্যন্ত একদিনের জন্যও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। । এই শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্যে সম্মানজনক স্কলারশিপসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু পদোন্নতির বিলম্বের জন্য তারা উচ্চ শিক্ষায় যেতে পারছেন না যার কারনে বিভিন্ন স্কলারশিপে নিষেধাজ্ঞাও পেয়েছেন। এমতাবস্থায়, শিক্ষকগণ ও তাদের পরিবার মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত।