১১:৪৭ অপরাহ্ন

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ২৯, ২০২২ ৪:০৩ অপরাহ্ন
​​​​​​​বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আরও ২ জেব্রা অসুস্থ
প্রাণ ও প্রকৃতি

গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আরও দুটি জেব্রা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দীপংকর বরের পাঠানো এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

চলতি মাসে সাফারি পার্কে ৯ জেব্রার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং করণীয় বিষয়ে মতামত দেওয়ার লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দেয়। এর মধ্যেই দুটি জেব্রা অসুস্থ হয়ে পড়ল।

এদিকে জেব্রাগুলোর মৃত্যু প্রতিরোধে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া এবং এ ধরনের অসুস্থতার কারণ উদঘাটনে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সাফারি পার্কে এক জরুরি সভায় মিলিত হয়েছেন। আজ দুপুর দেড়টারদিকে এ সভা শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (দুপুর ২টা ১৫) সভা চলছিল। এ মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বন বিভাগ।

মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হলেন- জাতীয় চিড়িয়াখানার অবসরপ্রাপ্ত কিউরেটর ড. এবি এম শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম, প্রফেসর আবু হাদি মো. নুর আলী খান এবং সাফারি পার্কের ভেটারেনারি চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন। বিশেষজ্ঞ হিসেবে সভায় যোগ দেন কেন্দ্রীয় ভেটারেনারি হাসপাতালের পরিচালক ড. শফিউল আহাদ সরদার (স্বপন) এবং কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গোলাম আজম চৌধুরী (টুলু)।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৯, ২০২২ ১২:০২ অপরাহ্ন
জাতীয় চিড়িয়াখানায় সিংহীর মৃত্যু
প্রাণ ও প্রকৃতি

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চলতি মাসে ৯টি জেব্রার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় মারা গেল একটি সিংহী। ২৫ জানুয়ারি সিংহীটি মারা গেলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে গোপন রাখে।

সর্বশেষ শুক্রবার রাতে এ-সংক্রান্ত তথ্য আসার পরও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতে গড়িমসি করে। তবে এক পর্যায়ে সিংহীর মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করে নেয় কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, ইতোমধ্যে রাজধানীর কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালে সিংহীটির ময়নাতদন্তও শেষ হয়েছে। এতে বলা হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মারা গেছে। এ ছাড়া সরকারের কেন্দ্রীয় রোগ গবেষণাগারে (সিডিআইএল) সিংহীটির নমুনা পাঠানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর বিস্তারিত কারণ জানা যাবে।

এ বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. আব্দুল লতিফ বলেন, ‘চিড়িয়াখানায় মাঝেমধ্যেই প্রাণী অসুস্থ হয়।’ গত কয়েকদিনে কোনো প্রাণী মারা গেছে কিনা— এ প্রশ্ন করা হলে তিনি এর জন্য কিছুক্ষণ সময় চান। এরপর রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে এর মধ্যে রাত পৌনে ১২টায় জাতীয় চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদা সিংহী মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘গত ২৫ জানুয়ারি সিংহীটি হঠাৎ মারা যায়। কোনো রোগ কিংবা অসুস্থতা ছিল না সিংহীটির। এর বয়স ছিল ১২ বছর। গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে প্রাণী বিনিময়ের মাধ্যমে এটিকে আনা হয়েছিল।’

তিনি জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ লেখা রয়েছে। তবে ল্যাব রিপোর্ট আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

সিংহীটির নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি এ চিকিৎসক।

প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিংহের গড় আয়ু প্রায় ২০ বছর। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হৃদরোগে অনেক প্রাণীই মারা যায়। সাধারণত একাকিত্ব ও বিষণ্ণতায় হৃদরোগে প্রাণী আক্রান্ত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্বের আট প্রজাতির সিংহের মধ্যে মিরপুর চিড়িয়াখানায় তিনটি আফ্রিকান প্রজাতির এবং একটি এশীয় প্রজাতির সিংহ ছিল। তাদের মধ্যে সিংহ কেবল আফ্রিকান প্রজাতির একটি।

গত বছরের মে মাসেও পুরুষ সঙ্গীর অভাবে তিনটি সিংহীর মধ্যে ‘নেতিবাচক পরিবর্তন’ দেখতে পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মিরপুর চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা। সঙ্গীহীন প্রাণীদের স্বস্তি দিতে চেষ্টা চালালেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি বলেও তারা জানান।

২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে চারটি সিংহ নিয়ে আসা হয় মিরপুর চিড়িয়াখানায়। এর মধ্যে দুটি সিংহ সাফারি পার্কে জন্মানো, বাকি দুটি সিংহী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা। মারা যাওয়া সিংহীটিও বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের।

২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মানো সিংহী মুক্তার পুরুষ সঙ্গী মতি সাফারি পার্কে জন্মেছিল ২০১৫ সালে। জন্মগত ত্রুটির কারণে মতি মারা যায় ২০১৯ সালে, এরপর থেকেই সঙ্গীহীন মুক্তা। সঙ্গীহীন থাকার কারণে মুক্তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আচরণগত বিভিন্ন পরিবর্তন দেখতে পায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। মারা যাওয়া প্রাণীটির নাম জানতে গতকাল রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত একাধিক কর্মকর্তাকে বারবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৮, ২০২২ ৩:২৯ অপরাহ্ন
বিষ প্রয়োগে সুখসাগরে হাজারো পাখির মৃত্যু
প্রাণ ও প্রকৃতি

প্রচণ্ড শীতে নিজেদের রক্ষা করতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ত্রিপুরা এসে ছিল পরিযায়ী পাখির দল, কিন্তু মানুষের হিংস্রতার কারণে মৃত্যু হল তাদের। বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হলো কয়েক হাজার পরিযায়ী পাখি বেগুনী কালেমকে।

মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার গোমতী জেলার উদয়পুরের সুখসাগর জলাশয়ে।

প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে শীতের মৌসুমে পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমায় উদয়পুরের নানা সরোবর, বিল, জলাভূমিতে।

পাখি প্রেমীরা এই পরিযায়ী সুন্দর পাখিদের ছবি নিজেদের সংগ্রহে রাখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন। গত ৭ থেকে ৮ বছর ধরে পরিযায়ী পাখিরা উদয়পুরের সুখ সাগর জলাতে দল বেধে নামা শুরু করেছিল।

জানা যায়, দূরবর্তী এলাকার কয়েকজন যুবকের নজরে পড়ে এই পরিযায়ী পাখি। এরা রাতে ধানের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে সুখসাগর জলার জমিতে ছিটিয়ে যায়। বিষ মেশানো ধান খাওয়ার পরই পাখিগুলো ছটফট করতে থাকে এবং বাঁচার তাগিদে ওড়ার চেষ্টা করে, কিন্তু বেশি দূর উড়তে পারেনি। সামান্য উড়ারপর লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। ফলে গোটা সুখসাগর জলার চারপাশে পাখিদের মরদেহ ছিটিয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পাখিগুলো মরে যাওয়ার পরে এক দল যুবক বস্তায় ভরে নিয়ে মৃত পাখিগুলো নিয়ে যায়। সব মিলিয়ে দুই বস্তার বেশি পাখি নিয়ে গেছে তারা।

এদিকে এই মৃত পাখিদের ছবি বৃহস্পতিবার(২৭ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে।

এঘটনায় যারা জড়িত তাদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানয়েছেন পরিবেশ সচেতন মানুষ।

পাখি প্রেমীরা জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে মূলত দুই জাতের পাখি সেখানে ছিল। এর এক জাতের পাখি হচ্ছে বেগুনি কালেম বা কামপাখী এবং অপর পাখী হচ্ছে সরাইলি বা সরাইল।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৬, ২০২২ ১:৫৬ অপরাহ্ন
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ৯ জেব্রার মৃত্যুর কারণ জানাল বিশেষজ্ঞ দল
প্রাণ ও প্রকৃতি

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ৯ জেব্রার মৃত্যু হয়েছে। মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে এমন মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।

এ ছাড়া কয়েকদিন আগে মারা গেছে একটি বাঘ। একসঙ্গে এতগুলো প্রাণী কীভাবে মারা গেছে এতোদিন তা নিশ্চিত করে বলতে পারছিল না পার্ক কর্তৃপক্ষ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জানুয়ারির প্রথম থেকে সোমবার পর্যন্ত হঠাৎ করে ৯ জেব্রার মৃত্যু হয়। উদ্বেগজনকভাবে একের পর এক প্রাণী মারা যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ে পার্ক সংশ্লিষ্টরা। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চিঠি দেয়া হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। পরবর্তীতে, ময়নাতদন্তের পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ল্যাবে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে চার সদস্যের প্রাণী বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর নমুনা পরীক্ষার ২৩টি রিপোর্ট নিয়ে বৈঠকে বসেন তারা। প্রথমে খাদ্যে বিষক্রিয়া, ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণসহ নানা বিষয় নিয়ে আশংকা করা হলেও-বিশেষজ্ঞ এই দল বলছেন, পাঁচটি জেব্রা ব্যাকটেরিয়া ও অপর ৪টি নিজেদের মধ্যে মারামারিতে মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য, ডা. এ বি এম শহিদুল্লাহ বলেন, পাঁচটি জেব্রা ব্যাকটেরিয়া ও অপর ৪টি নিজেদের মধ্যে মারামারিতে মারা গেছে। পাঁচ ধরনের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৬, ২০২২ ১২:০৯ অপরাহ্ন
মোংলায় হরিণের ৫টি চামড়াসহ পাচারকারী আটক
প্রাণ ও প্রকৃতি

বাগেরহাটের মোংলায় পাঁচটি হরিণের চামড়াসহ আল আমিন (২৫) নামে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী পাচারকারীকে আটক করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে মোংলা বন্দরের শিল্পাঞ্চল সংলগ্ন দ্বিজরাজ বিদ্যারবাহন এলাকা থেকে তাকে আটক  করে র‌্যাব-৬-এর সদস্যরা

সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য আল আমিনের বাড়ি ডাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের খেজুরিয়া গ্রাম এলাকায়।

র‌্যাব-৬ কার্যলয়ের পুলিশের কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, বেশ কিছুদিন ধরে একদল দুর্বৃত্তরা সুন্দরবনের মায়াবী হরিণসহ বিভিন্ন প্রকারের বন্যপ্রাণী পাচার ও হত্যা করে তা দেশের অন্যান্য জেলা শহরে পাচার করছে এমন খবর আসে র‌্যাব-৬-এর কাছে।

মঙ্গলবার গোপন খবরে জানতে পারি সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রির পর চামড়া চোরাই বাজারে বিক্রির জন্য মজুত করে রাখা হচ্ছে। পরে দ্বিগরাজের বিদ্যারবাহন এলাকায় আভিযান চালানো হয়। এ সময  র‌্যাব সদস্যেদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পলানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া করে এক পাচারকারীকে আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, আটক আল আমিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে সুন্দরবনের মূল্যবান সম্পদ বন্যপ্রাণী বিক্রি ও পাচারের কাজে কারা জড়িত তাদের নাম-পরিচয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে হরিণের পাঁচটি চামড়াসহ আটক ব্যক্তিকে মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৫, ২০২২ ১২:০৯ অপরাহ্ন
গাজীপুরে ২০ দিনে ৯ জেব্রার মৃত্যু, কারণ জানে না কর্তৃপক্ষ
প্রাণ ও প্রকৃতি

গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেতরেই জন্ম হয়েছিল জেব্রাগুলোর। এখানকার আলো, বাতাস ও পরিবেশেই বড় হয়েছিল। হঠাৎ করে ২০ দিনের ব্যবধানে পার্কের কোর সাফারির অভ্যন্তরেই ৯টি জেব্রার মৃত্যু হয়। কিন্তু কি কারণে মৃত্যু হয়েছে সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পার্ক কর্তৃপক্ষ। এই ব্যাপারে মঙ্গলবার জরুরি বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে।

শত্রুতাবশত কেউ হত্যা করেছে, নাকি খাবারে বিষক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে অথবা কোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে ৯ জেব্রার মৃত্যু হলো – এসব বিষয় মাথায় রেখেই সঠিক কারণ অনুসন্ধান চলানো হচ্ছে। ৯ জেব্রার এমন রহস্যজনক মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করার জন্য মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত শেষে বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে স্যাম্পল। পার্কের দায়িত্বে থাকা সহকারী বন সংরক্ষক মো. তবিবুর রহমান জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণিগুলোর মৃত্যু হয়েছে কিনা সে বিষয়টিও  বিবেচনায় রয়েছে।

এদিকে ৯টি জেব্রার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে এতো দিন গোপন রেখে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তারা বলছেন, এটা পরিকল্পিত হত্যা  কিনা সেটাও তদন্ত করে বের করা উচিৎ।

পার্ক সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময় সাফারি পার্কের কোর সাফারির ভেতরেই ওই ৯টি জেব্রার জন্ম হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে গত ২ জানুয়ারি ৬টি জেব্রার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কর্তৃপক্ষ। সোমবার পর্যন্ত আরও ৩টির মৃত্যু হয়।

পার্কের এক কর্মচারী জানান, এ ঘটনার পর সকল কর্মচারী কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এ কারণে তারা মুখ খুলেননি। এরই মধ্যে আরও কয়েকটি জেব্রা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুস্থও হয়ে উঠেছে জেব্রাগুলো। গত শনিবার  পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব  মো. মোস্তফা কামাল ও প্রধান বনসংরক্ষক মো. আমিন উদ্দিন চৌধুরী পার্ক পরিদর্শন করে গেছেন। জেব্রার মৃত্যুর বিষয়টি তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান পার্কের কর্মকর্তারা।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল কবির বলেন, ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নজরদারি করছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে প্রত্যেকটা মৃতদেহের স্যাম্পল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআরসহ বেশ কয়েকটি  প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। কিছু রিপোর্ট এসেছে, কিছু আসেনি। মঙ্গলবার জরুরি বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে রিপোর্টগুলো উপস্থাপন করা হবে। পরে  বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ সিদ্ধান্ত দেবেন।

তিনি বলেন,  কোনো সন্দেহই আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। খাবারে বিষক্রিয়া হতে পারে, পয়জিং হতে পারে, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। আবার লোকজন শত্রুতাও করতে পারে। এই সব বিষয়ই বিবেচনায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শেই কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় এখনও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। প্রয়োজন হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ প্রসঙ্গে জাহিদুল কবির বলেন, মঙ্গলবারের বোর্ড সভা শেষে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রধান বনসংরক্ষকের কাছে দেওয়া হবে। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন তদন্ত কমিটি গঠন করবেন কি না।

বিশেষজ্ঞ প্রাণি চিকিৎসক ও ঢাকা চিড়িয়াখানার সাবেক পরিচালক ডা. এবিএম শহিদুল্লাহ বলেন, কী কারণে জেব্রাগুলোর মৃত্যু হয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবেও কিছু ধারণা করা হচ্ছে না। জেব্রার অঙ্গ, মাংস, রক্ত ও মল পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকে প্রতিবেদন দিলে কারণটা বলা যাবে।

পার্কের দায়িত্বে থাকা সহকারী বনসংরক্ষক মো. তবিবুর রহমান বলেন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পরে স্যাম্পল সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সব শেষে জেব্রাগুলো মাটিচাপা দেওয়া হয়।  ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে করোনার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা উকিল উদ্দিন।

তবিবুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে করোনা নেগেটিভ এসেছে। মানুষের করোনা পরীক্ষা আর প্রাণির করোনা পরীক্ষার মধ্যে একটু পার্থক্য রয়েছে। প্রাণির করোনা পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল আসতে একটু বিলম্ব হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২২ ৪:০০ অপরাহ্ন
সৈকতে ভেসে আসলো মৃত ডলফিন
প্রাণ ও প্রকৃতি

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে ৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি মৃত ইরাবতি ডলফিন। রোববার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সৈকতের কম্পিউটার সেন্টার পয়েন্ট থেকে ডলফিনটিকে উদ্ধার করে মাটি চাপা দেন উপজেলা মৎস্য বিভাগ ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের ডলফিনটি মৃত অবস্থায় রোববার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে। ডলফিনটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল এছাড়া প্রাণীটির ঠোট এবং একটি কান অর্ধেক কাটা অবস্থায় ছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জেলেদের জালের আঘাতে আজ (রোববার) সকালেই এটির মৃত্যু হয়েছে। পরে জেলা বন কর্মকর্তার নির্দেশে এটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিসের জীব বৈচিত্র্য গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ‘মৃত ডলফিনটি প্রথমে আমাদের ব্লুগার্ডের এক সদস্য দেখতে পান। এটি একটি ইরাবতি ডলফিন। জেলেদের জালের আঘাতেই ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে।’

পটুয়খালী জেলা বন বিভাগের বিভাগীয় বর্ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ডলফিন মৃত্যুর ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। ডলফিন রক্ষায় বেশ কয়েকবার জেলেদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২২ ২:৫৫ অপরাহ্ন
নিজ আবাসেই ফিরে গেলো বন বিড়ালের দুই ছানা
প্রাণ ও প্রকৃতি

একের পর এক মুরগী সাবাড় করছিলো বনবিড়াল। অতিষ্ঠ গ্রামবাসী হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে বনবিড়ালের আস্তানা। অবশেষে গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বৈদ্যুতিক পিলারের মধ্যে মিললো বনবিড়ালের বাসাটি। সেখানে তখন বাবা ও মা বনবিড়াল ছিলো না। ছিলো বনবিড়ালের দুটি ছানা। 

শেষে মুরগীর বাচ্চা খেয়ে ফেলার অপরাধে বনবিড়ালের ছানা দুটিকেই ধরে নিয়ে আসেন গ্রামবাসী। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বামইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সেখান থেকে বনবিড়ালগুলো ঘরে পালনের জন্য নিয়ে আসেন কুমিল্লা নগরীর চর্থা এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান ।

বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরে শনিবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে চর্থা মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে হাজির হন বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা যুবক মোশারফ হোসেন।

মোশারফ হোসেন একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। শখের বসে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি করেন৷ পাশাপাশি বিপন্ন প্রজাতির বন্য পশুপাখি আটক হলে সেগুলো উদ্ধার করে অবমুক্ত করেন৷

তিনি বলেন, আমি ফেসবুকে দেখার পর চর্থায় যাই। সেখানে গিয়ে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে কথা বলি। ছানা দুটি ক্ষুধার্ত ছিলো৷ আমি দোকান থেকে দুধ কিনে এনে ছানা দুটোকে খাওয়াই। পরে বনবিভাগকে খবর দেই। বনবিভাগের লোকজন আসার পরে তাদের সঙে নিয়ে ওই গ্রামে যাই।

শনিবার সন্ধ্যায় বনবিড়ালের ছানা দুটিকে আবার তাদের বাসায় অবমুক্ত করা হয়।

কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে এবং বনবিড়ালের ছানা দুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেগুলোকে আবার তাদের বাসায় রেখে আসা হয়েছে।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৩, ২০২২ ১:০৮ অপরাহ্ন
চিতা বিড়াল মেরে ফেসবুকে উল্লাস
প্রাণ ও প্রকৃতি

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় নিরীহ বন্যপ্রাণী নিধন চলছেই। মাইকিং ও প্রচার প্রচারণা এবং মামলা দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না গ্রামাঞ্চলের নিরীহ শিয়াল, মেছোবিড়াল ও চিতা বিড়ালের মতো প্রাণীগুলো। শনিবারও উপজেলার কাচুয়া গ্রামে মেরে ফেলা হয় একটি চিতা বিড়ালকে।

বনবিভাগ মারা চিতা বিড়ালটি উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ডিভিশনার কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় রাতে চুনারুঘাট থানায় সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত অনেকের নামে মামলা দায়ের করেছেন।

এর আগে উপজেলার হাকাজুরা গ্রামে বাঘ বলে প্রচার করে একটি শিয়াল এবং নুরমোহাম্মদপুর গ্রামে একটি মেছো বিড়াল হত্যা করে। এ দুটি ঘটনায় বনবিভাগ দুটি মামলা দায়ের করেছে। এতে চিহ্নিতসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার কাচুয়া গ্রামের নাপিত বাড়ির পুকুড়পাড়ে স্থানীয়রা একটি চিতা বিড়াল দেখতে পায়। পরে গ্রামবাসী বিশেষ করে তরুণ ছেলেরা মিলে চিতা বিড়ালটিকে মেরে ফেসবুকে ভাইরাল করে উল্লাস প্রকাশ করে। বিষয়টি জানতে পেরে সকাল ১১টায় সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বনকর্মীদের নিয়ে এসে মৃত চিতা বিড়ালটি উদ্ধার করে।

বন বিভাগ জানায়, যারা চিতা বিড়াল হত্যা করেছে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের নামে মামলা দায়েরের করেছেন বলে জানিয়েছেন বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। এ মামলায় ৬ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত অনেকের নামে মামলা দায়ের করেন।

চিতা বিড়ালটির প্রায় ৪ কেজি হবে এবং দেড় ফুট প্রস্ত ও আড়াই ফুট লম্বা হবে। তার গায়ে গাড় কালো দাগ রয়েছে। এটি পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

এবিষয়ে প্রকৃতি সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, এটি বিপন্ন প্রজাতির একটি চিতা বিড়াল। এটি সাধারণ বন ও গ্রামাঞ্চলেও বাস করে। এরা সাধারণত ইঁদুর, চিকা ও পাখি ও পাখির ডিম ধরে খায়। এরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে আমাদের উপকার করে এবং নিজেরা বেঁচে থাকে। তিনি মানুষকে আরও সচেতন হয়ে এসব নিরীহ প্রাণীকে বাঁচানোর আহবান জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এর আগে চুনারুঘাটের রানীগাঁও ইউনিয়নের হাকাজুরা গ্রামে বাঘ বলে প্রচার করে একটি শিয়াল মেরে ফেলে গ্রামবাসী। এছাড়া উপজেলার নুরমোহাম্মদপুর গ্রামে কয়েকদিন আগে একটি মেছোবিড়াল পিঠিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী। দুটি ঘটনাই বনবিভাগ দোষীদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করেছে।

তিনি বলেন, আজ যারা চিতা বিড়াল পিঠিয়ে মেরেছে তাদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সাতছড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, চুনারুঘাটে গত ২০-২২ দিন ধরেই বিভিন্ন এলাকায় মেছোবাঘ বলে মেছোবিড়াল, চিতা বিড়াল, শিয়াল ও গন্ধগোকুল হত্যার চেষ্টা চলছে। আমরা মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। তারপরও কেন তারা এসব নিরীহ প্রাণী হত্যা করছে তা বুঝতে পারছিনা।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ৩ সপ্তাহে কমপক্ষে ১০-১২টি নিরীহ প্রাণীকে মানুষ হত্যা করেছে। অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটার পর সাধারণত এসব মেছোবিড়াল, চিতা বিড়াল, শিয়াল ও গন্ধগোকুল মানুষের বাড়িঘরের কাছে ও পুকুরপাড়ে আশ্রয় নেয়। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ এসব নিরীহ প্রাণীকে মেছোবাঘ বলে প্রচার করে হত্যা করছে।

গত ৫ জানুয়ারি উপজেলার বগাডুবি গ্রামে একটি শিয়াল কয়েকজনকে কামড় দিলে আতংক দেখা দেয়। অনেক স্থানে মেছোবাঘ আক্রমণ করছে বলে ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা করে বেশ কয়েকটি মেছোবিড়াল, শিয়াল ও সর্বশেষ চিতা বিড়ালটি হত্যা করা হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২২, ২০২২ ৪:২৫ অপরাহ্ন
শেরপুরে দখল হচ্ছে বন্যহাতির আবাসস্থল
প্রাণ ও প্রকৃতি

শেরপুরের গারো পাহাড়ের বনভূমি দিনদিন সংকুচিত হয়ে আসছে। এক সময় যেখানে গভীর অরণ্য ছিল এখন সেখানে বাড়িঘর গড়ে উঠেছে। বন বিভাগের শতশত একর পাহাড়ি জমিতে এখন চাষাবাদ হচ্ছে। বেদখল হয়ে যাচ্ছে শতশত একর বনভূমি। ফলে বন্যহাতির বিচরণক্ষেত্রও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভয়ারণ্য না থাকায় ক্ষুধার্ত বন্যহাতির দল খাদ্যের সন্ধানে নেমে আসছে লোকালয়ে। সাবাড় করে চলেছে কৃষকের কষ্টার্জিত খেতের ফসল ও গাছপালা। এতে যেন পাল্লা দিয়েই বাড়ছে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব। বন্যহাতির তাণ্ডবে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে কৃষকদের জানমাল ও খেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বন্যহাতির দল দিনের বেলায় গভীর অরণ্যে আশ্রয় নিচ্ছে। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসছে লোকালয়ে। তবে খেতের ধান পেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বন্যহাতির পাদচারণা বেড়ে যায়। এসময় খেতের ফসল ও কৃষকদের জানমাল রক্ষার্থে পাহাড়ি গ্রামবাসী ঢাকঢোল বাজিয়ে, পটকা ফুটিয়ে এবং মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু যতই হাতি তাড়ানোর চেষ্টা চলছে ততই বন্যহাতির দল তেড়ে আসছে লোকালয়ে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় দুই যুগে হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন পাহাড়ি গ্রামগুলোতে নারী পুরুষ ও শিশুসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অর্ধশতাধিক মানুষ। আহত হয়েছেন কয়েক শ। এছাড়া মানুষের পাতা ফাঁদসহ নানাভাবে ৩১টি হাতিরও মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে গারো পাহাড়ে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন এবং বন্যহাতি হত্যার প্রতিবাদ, হাতির জন্য অভয়াশ্রম এবং বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছে শেরপুরের নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইইডি। ঐ দুই সংগঠন থেকে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শেরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বন্যহাতির আক্রমণে মানুষ মারা গেছেন ৫৮ জন। আর মানুষের হাতে ৩১টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।

এসব হাতির বেশির ভাগই মৃত্যু হয়েছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ, গুলিবিদ্ধ, নয়তো ধারালো অস্ত্রের আঘাতে। জানা যায়, ভারতের সীমানাঘেঁষা শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৩৫টি গ্রাম রয়েছে। প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বন বিভাগের জমি রয়েছে ২০ হাজার একর। শতাধিক বন্যহাতি কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে ঐ সব পাহাড়ি জনপদে বিচরণ করছে। বনের জমি দখল করে অবৈধভাবে চাষাবাদ করায় মানুষ ও হাতি দ্বন্দ্ব বেড়ে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যহাতির পদচারণা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাহাড়ি এলাকার কৃষকদের শতাধিক একর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে এসব জমি।

শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু ইউসুফ বলেন, হাতি অত্যন্ত নিরীহ প্রাণী। আমরা চেষ্টা করছি যাতে হাতির কোনো ক্ষতি না হয়। তিনি বলেন, হাতিকে মেরে ফেললে আমরা কোনো ছাড় দেব না। তবে মানুষের জানমালেরও যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষ ও হাতির দ্বন্দ্ব কমিয়ে আনতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে গারো পাহাড়ে অভয়াশ্রম গড়ে তোলার পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ বলেন, সীমান্তের গারো পাহাড়ে হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

বন্যহাতির হামলায় নিহত, আহত ও ঘরবাড়িসহ ফসল নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি পাহাড়ে হাতিসহ প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় চেষ্টা করছি। তবে স্থায়ী সমাধানে অভয়ারণ্য গড়ে তোলাসহ টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop