৫:৪৯ অপরাহ্ন

রবিবার, ১৭ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জানুয়ারী ২৬, ২০২২ ৩:০০ অপরাহ্ন
সামুদ্রিক মাছের বেচাকেনায় সরগরম বাগেরহাটের মৎস্য আড়ত
মৎস্য

সব ধরনের সামুদ্রিক মাছের বেচাকেনায় সরগরম বাগেরহাটের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। সাগর থেকে ট্রলারে করে জেলেরা ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে আসেন বাজারে। তবে শীতের কারণে কিছুটা কম সরবরাহ।

কুয়াশার মধ্যেই আশপাশের জেলা থেকে ক্রেতা ও পাইকাররা ভিড় করেন বাগেরহাট শহরের কেবি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে।

প্রচণ্ড শীতে ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের সরবরাহও কিছুটা কম। তবে ঢেলা, চ্যালা, জাবা, পোয়া, লইট্যা, কলম্বো, চন্দনা, টেংরাসহ নানা মাছের সরবরাহ চোখে পড়ার মতো। এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। এ ছাড়া জাবা ও পোয়াসহ অন্য মাছ ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে জানান ক্রেতারা।

মাছের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, দাম একদম কম। ৪০০ গ্রামের ইলিশ মাছ ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুব ভোরের এ বাজারে আসি মাছ কিনতে, পরে তার হাটে ঘাটে বিক্রি করি।

সাগরের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম হলেও পাইকারি মাছের এই হাট সবসময় সরগরম থাকে বলে জানান মৎস্য আড়তের নেতা। এ বিষয়ে বাগেরহাটের কেবি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার সমিতির সভাপতি আবেদ আলী বলেছেন, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সকাল বেলায় বিক্রি হয়। এখানে প্রচুর পরিমাণ পাইকার  আসে।

উল্লেখ্য, বাগেরহাটের এই মাছ বাজারে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৬, ২০২২ ১২:৪৪ অপরাহ্ন
ভোলায় দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছের চাষ হচ্ছে
মৎস্য

ভোলা জেলায় বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের চাষ হচ্ছে। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে শিং, মাগুর, টাকি, শোল, বাইন, কই, পাবদা, পুটি, গুলশা, ব্লাক কাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ চলছে। এতে করা বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ১২০ জন চাষি এসব দেশি এসব মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছে। বাজারে দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে অনেকের মাঝে এসব মাছ চাষের।

জানা যায়, একটা সময়ে শহর ও গ্রামের পুকুর, খাল ও বিলে প্রচুর দেখা মিলতো দেশি শিং, মাগুর, টাকি, শোল, পুটি, বাইন, তেলাপিয়া, কই, পাবদা, গুলশা, ব্লাক কাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। কিন্তু কালের পরিবর্তনের সাথে প্রায় হারিয়ে গেছে এসব মাছ। ফলে এখন আর বাজারে দেখা মিলেনা এসব মাছের।

তবে ২০১৯ সাল থেকে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ভোলা সদর উপজেলায় শতাধিক মাছ চাষিকে দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বিলুপ্ত প্রজাতির দেশি মাছ চাষ শুরু করেন। এতে করে সফলতার মুখ দেখছেন চাষিরা। স্থানীয় বাজারে এ মাছের চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষের পরিকল্পনা নিচ্ছেন অনেক চাষি।

ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শের-ই বাংলা বাজার এলাকায় মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে তিনি দেশি প্রজাতির মাছ চাষ করতে দুই দিনের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাকে বিনামূল্যে শিং, জাগুর, টাকি, শোল, গুলশাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি প্রায় ১ হাজার মাছ দেওয়া হয়।

তিনি জানান, পরে তিনি তার ৮ শতাংশ জমির পুকুরে ওইসব মাছ চাষ শুরু করেন। মাছগুলোকে খাবার খাইয়ে বড় করে তুলেছেন। এপর্যন্ত ২ হাজার টাকার খাবার খাইয়েছেন। বাজারের বিক্রি করলে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেন।

ভোলা সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিরহাট গ্রামের মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, তিনিও ওই এনজিও থেকে গত বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পরে দেড় হাজার দেশি মাছ চাষ শুরু করেন। প্রায় ১০ মাসের মত খাবার খাইয়ে মাছগুলোতে বড় করে তুলেছেন। খাবার ও পুকুর তৈরিতে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পরে মাছ বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ হয়েছে তার। সামনের দিনে আরো বড় পরিসরে দেশি মাছ চাষের কথা জানান তিনি।

গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ঐশী মজুমদার জানান, সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক মাছ চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পরীক্ষমূলকভাবে দেশি মাছ চাষে সফলতা এসেছে। ছোট আকারের খামারে ২৫/৩০ হাজার ও মাঝারি খামারের ৫০ হাজার টাকার মত লাভ হচ্ছে চাষিদের। তবে আগামীতে বাণিজ্যিভাবে বড় ধরণের এ জাতের মাছ চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও পর্যাক্রমে আমরা ভোলার অন্যান্য উপজেলায়ও এ জাতের মাছ চাষ করাবো।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৫, ২০২২ ২:১৮ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীতে পরিত্যক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ
মৎস্য

পরিত্যক্ত জলাশয় খনন করে তাতে মাছ চাষ শুরু করেছে মৎস্য বিভাগ। পটুয়াখালীতে এমন ২৬টি খাল ও জলাশয়ে মাছ চাষ হচ্ছে। এতে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তেমিন অভ্যন্তরীন উৎস্যগুলোতে মাছের উৎপাদনও বেড়েছে। শুস্ক মওসুমে এসব জলাশয়ের পানি চাষাবাদে ব্যবহার হচ্ছে। 

পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ উপকূলে জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে খাল ও জলাশয়। তবে দীর্ঘদিন খনন না করায় বেশিরভাগই ভরাট হয়েছে। সম্প্রতি মৎস্য বিভাগ পরিত্যক্ত এসব জলাশয় খনন করার উদ্যোগ নেয়। মৎস্য চাষ সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২৬ টি খাল এবং পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে।

বর্তমানে এসব জলাশয়ে স্থানীয়দের অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে চলছে মাছ চাষ। আর খালের পাড়ে চলছে বিভিন্ন শাক সবজীর চাষাবাদ। ফলে করোনা মহামারিতে কাজ হারানো অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

মৎস্য বিভাগ বলছে, পুনঃখনন হওয়া খাল ও জলাশয়গুলো যাতে মাছ চাষের পাশপাশি কৃষি ও মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা যায় সেজন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। এসব খালের পানি প্রবাহ সচল করতে পারলে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৫, ২০২২ ১:১২ অপরাহ্ন
ভোলায় প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে জাটকা
মৎস্য

ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা-তেঁতুলিয়া চলছে জাটকা শিকার। জেলার প্রায় সব মাছঘাট এবং বাজারে হাঁকডাক দিয়ে প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে জাটকা। মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে বন্ধ হচ্ছে না।

ঋণের টাকা পরিশোধের পাশাপাশি পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে জাটকা ধরার কথা জানান জেলেরা।

ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা না মিললেও, পৌষ-মাঘের অসময়ে ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। তবে জেলেদের জালে বড় ইলিশের চেয়ে জাটকা ধরা পড়ছে বেশি।

নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণ, মজুদ, পরিবহন ও কেনাবেচার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য বিভাগ। কিন্তু তা অমান্য করে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে জাটকা নিধনের মহোৎসব চলছে।

প্রতি হালি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। ঋণের টাকা পরিশোধ ও পেটের দায়ে কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা শিকারের কথা জানান জেলেরা।

মোকামে না পাঠালেও স্থানীয় বাজারে জাটকা বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন আড়তদাররা।

কিছু অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরছে উল্লেখ করে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।

চলতি অভিযানে ১৬১ জেলেকে জেল-জরিমানা এবং ৩ লাখ মিটার কারেন্ট জালসহ ৯ মেট্রিকটন জাটকা জব্দ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২২, ২০২২ ১:৫২ অপরাহ্ন
যমুনা পাড়ের আড়তে কমেছে মাছের দাম
মৎস্য

মানিকগঞ্জের শিবালয়ের যমুনা নদীর পাড়ের আরিচা ঘাটের ঐতিহ্যবাহী মৎস্য আড়তে বেড়েছে মাছের সরবরাহ।পদ্মা-যমুনাসহ খাল-বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলের জালে মাছ ধরা পড়ায় খুশি জেলেরা। পানি নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে আড়ত কমিটি।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) ভোর পর থেকে কনকনে শীত উপেক্ষা করে জেলে এবং পাইকারদের পদচারণায় সরগরম মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটের মৎস্য আড়ত।

এখান পাওয়া যাচ্ছে বড় বড় বোয়াল, আইড়, চিতল, ইলিশ, কাজলীসহ পদ্মা-যমুনা, ইছামতি, ধলেশ্বরী, কান্তাবতীসহ মুক্ত-জলাশয়ের টাটকা মাছ। দুদিনের ব্যবধানে জেলের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মা-যমুনার মাছ। এতে কমেছে দাম।

আরিচা মৎস্য আড়তে আজকের পাইকারি মাছের দর:

বোয়াল প্রতি কেজি ১ হাজার ১৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, আইড় ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, টাটকিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা, বাটা ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা, চিতল ৫০০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা, ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, ট্যাংরা ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাজলী ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, কই প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।

আরিচা মৎস্য আড়তের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, ২০০ বছরের পুরনো এ মৎস্য আড়তে রয়েছে স্থান সংকলনসহ নানা সমস্যা। দীর্ঘদিনেও সমস্যাগুলো সমাধান না হওয়ায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, মানিকগঞ্জের শিবালয়ের যমুনা পাড়ের মৎস্য আড়তে ৭০ জন আড়তদার এবং ৭ শতাধিক পাইকারদের মাধ্যমে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার দেশীয় মাছ বেচা-কেনা হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২২, ২০২২ ১:১৯ অপরাহ্ন
শীতে মাছের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে করণীয়
মৎস্য

শীতে মাছের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে করণীয়:

মাছ আমাদের আমিষ জোগানের প্রধান উৎস। বাজার থেকে মাছ কিনে খাওয়ার চেয়ে নিজের পুকুরে জলাশয়ে মাছ চাষ করে নিজেরা খাওয়া যায়। অতিরিক্ত অংশ বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। তবে মাছ চাষে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক বা আধুনিক প্রযুক্তি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। নিয়মিত ও পরিমিত যত্নআত্তি করলে মাছ চাষে লাভাবান হওয়া যায়। শীতকাল মাছ চাষে অতিরিক্ত কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। একটু সচেতন হলেই সেসব সমস্যা সমাধান করা যায় অনায়াসে। আমাদের দেশে শীতকালে মাছের বিশেষ কিছু কিছু রোগ দেখা যায়। এ সময় সঠিকভাবে মাছের যত্ন না নিলে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ মরে যেতে পারে। শীতকালে মাছের ক্ষতরোগ, লেজ ও পাখনা পচা রোগ, ফুলকা পচা রোগ এবং উদর ফোলা রোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ যত্ন ও পরিচর্যা করলে মাছের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায়। শীতকালে মাছের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। কারণ এ সময়ে পুকুরের পানি কমে যায়, পানি দূষিত হয়, মাছের রোগবালাই হয়। ফলে মাছের বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। বিশেষ যত্ন ও পরিচর্যা করলে মাছের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায়।

মাছের ক্ষতরোগ : এফানোমাইসেস ছত্রাক পড়ে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৩২ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছে এ রোগ হয়। যেমন- টাকি, শোল, পুঁটি, বাইন, কই, শিং, মৃগেল, কাতলসহ বিভিন্ন কার্পজাতীয় মাছে এ রোগ হয়। মাছের ক্ষত রোগ হলে প্রথমে মাছের গায়ে ছোট ছোট লাল দাগ দেখা যায়। লাল দাগে ঘা ও ক্ষত হয়। ক্ষতে চাপ দিলে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হয়। লেজের অংশ খসে পড়ে। মাছের চোখ নষ্ট হতে পারে। মাছ ভারসাম্যহীনভাবে পানির ওপরে ভেসে থাকে। মাছ খাদ্য খায় না। আক্রান্ত মাছ ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মারা যায়। এ রোগে করণীয় হলো শীতের শুরুতে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর পুকুরে প্রতি শতাংশে ০১ কেজি ডলোচুন ও ০১ কেজি লবণ মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। পুকুর আগাছামুক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জৈবসার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। জলাশয়ের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে হবে। মাছের ঘনত্ব কম রাখতে হবে। ক্ষতরোগ হওয়ার আগে এসব ব্যবস্থা নিতে হবে। মাছ ক্ষতরোগে আক্রান্ত হলে প্রতি কেজি খাদ্যের সাথে ৬০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম টেরামাইসিন ওষুধ দিতে হবে। অথবা তুঁত দ্রবণে মাছ ডুবিয়ে রেখে পুকুরে ছাড়তে হবে। আক্রান্ত মাছপুকুর থেকে সরাতে হবে।

লেজ ও পাখনা পচা রোগ : অ্যারোমোনাসে ওমিক্সো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এ রোগ হয়। কার্প ও ক্যাটফিস জাতীয় মাছে বেশি হয়। তবে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ প্রায় সব মাছেই এ রোগ হতে পারে। রোগের লক্ষণ হলো মাছের পাখনা ও লেজের মাথায় সাদা সাদা দাগ পড়ে।  লেজ ও পাখনা পচে খসে পড়ে। দেহের পিচ্ছিলতা কমে যায়। দেহের ভারসাম্য হারায় এবং ঝাঁকুনি দিয়ে পানিতে চলাচল করে। মাছ ফ্যাকাশে হয়। মাছ খাদ্য কম খায়। আক্রান্ত বেশি হলে মাছ মারা যায়। রোগ প্রতিরোধ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। রোগ হওয়ার আগেই ওই ব্যবস্থাগুলো নিলে লেজ ও পাখনা পচা রোগ হয় না। আক্রান্ত পাখনা কেটে মাছকে শতকরা ২.৫ ভাগ লবণে ধুয়ে নিতে হবে। এক লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম তুঁত মিশিয়ে ওই দ্রবণে আক্রান্ত মাছকে এক মিনিট ডুবিয়ে পুকুরে ছাড়তে হবে। মাছের পরিমাণ কমাতে হবে। আক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে সরাতে হবে।

ফুলকা পচা রোগ : ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে অধিকাংশ বড় মাছে এ রোগ হয়। তবে সব প্রজাতির পোনা মাছেই এ রোগ হতে পারে। লক্ষণ হলো মাছের ফুলকা পচে যায় এবং আক্রান্ত অংশ খসে পড়ে।  শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। মাছ পানির ওপর ভেসে ওঠে। মাছের ফুলকা ফুলে যায়। ফুলকা থেকে রক্তক্ষরণ হয়। আক্রান্ত মারাত্মক হলে মাছ মারা যায়। এ রোগ হলে করণীয় হচ্ছে শতকরা ২.৫ ভাগ লবণে আক্রান্ত মাছকে ধুয়ে আবার পুকুরে ছাড়তে হবে। এক লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম তুঁত মিশিয়ে ওই দ্রবণে আক্রান্ত মাছকে এক মিনিট ডুবিয়ে রেখে পুকুরে ছাড়তে হবে।

উদর ফোলা বা শোঁথ রোগ : অ্যারোমোনাস নামক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে কার্পও শিং জাতীয় মাছে ড্রপসি রোগ বেশি হয়। এ রোগ সাধারণত বড় মাছে বেশি হয়। লক্ষণ হলো দেহের ভেতর হলুদ বা সবুজ তরল পদার্থ জমা হয়। পেট খুব বেশি ফুলে। দেহের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তরল পিচ্ছিল পদার্থ বের হয়। মাছ উল্টা হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। দেহে পিচ্ছিল পদার্থ কমে যায়। খাদ্য গ্রহণে অনীহা হয়। প্রতিকার হলো- আঙুল দিয়ে পেটে চাপ দিয়ে কিংবা সিরিঞ্জ দিয়ে তরল পদার্থ বের করতে হবে। প্রতি কেজি খাদ্যের সঙ্গে ১০০ মিলিগ্রাম টেরামাইসিন বা স্ট্রেপটোমাইসিন পরপর ৭ দিন খাওয়াতে হবে। অন্যান্য পরিচর্যা-১. পানির অক্সিজেন বৃদ্ধির জন্য বাঁশ দিয়ে অথবা সাঁতার কেটে অথবা পানি নাড়াচাড়া করতে হবে।
একরপ্রতি ০৫ থেকে ১০ কেজি টিএসপি দিলেও হবে। ২. পুকুরের পানিতে সরাসরি রোদ পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে পুকুরের পানি গরম হয় এবং প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয়। ৩. শেওলা, আবর্জনা, কচুরিপানা, আগাছাসহ সব ক্ষতিকর জলজ উদ্ভিদ পরিষ্কার করতে হবে। ৪. ১৫ দিন পরপর জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। ৫. পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাস হলে চুন প্রয়োগ করতে হবে। ৬. পানি ঘোলা হলে ১ মিটার গভীরতায় ১ শতক পুকুরে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। ৭. পুকুরের পানি কমে গেলে পানি সরবরাহ করতে হবে। ৮. পুকুরের পানি বেশি দূষিত হলে পানি পরিবর্তন করতে হবে। ৯. সুষম খাদ্য নিয়মিত সরবরাহ করতে হবে। শীতকালে মাছের বিশেষ যত্ন নিতে হয়। কারণ এ সময়ে পুকুরে পানি কমে, পানি দূষিত হয়, পানি গরম হয়, অক্সিজেন কমে যায়, গ্যাস সৃষ্টি হয়, রোগবালাইসহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যার জন্য মাছের মড়ক দেখা দিতে পারে। এতে মাছ চাষি  ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমস্যার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে ও সমস্যা হওয়ার পরেও সমাধান করে মাছের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা যায়।

খাবি খাওয়া : পানিতে অক্সিজেনের অভাব হলে মাছ পানির ওপর ভেসে ওঠে খাবি খায়। অর্থাৎ বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণের চেষ্টা করে। মনে হয় মাছ পানি খাচ্ছে। মাছ খুব ক্লান্ত হয়। এতে মাছের ফলন কমে। পানিতে সাঁতারকাটা, বাঁশ পানির ওপর পেটানো, হররা টেনে তলার গ্যাস বের করে দেয়া, পুকুরে পাম্প বসিয়ে ঢেউয়ের সৃষ্টি করা, পানি নাড়াচাড়া করে অক্সিজেন বাড়ানো যায়। নতুন পানি সরবরাহ করেও অক্সিজেন বাড়ানো যায়। প্রতি শতাংশে এক কেজি চুন দিলে উপকার পাওয়া যায়।
কার্বন-ডাই-অক্সাইডজনিত পানি দূষণ : পানিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেড়ে গেলে মাছের দেহে বিষক্রিয়া হয় এবং শ্বাসকষ্ট হয়। মাছ পানিতে ভেসে ওঠে। খাবি খাওয়া প্রতিকারের মতো পানি নাড়াচাড়া করে অক্সিজেন বাড়ালে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কমে যায়। পুকুর তৈরির সময় অতিরিক্ত কাদা সরাতে হবে।
অ্যামোনিয়াজনিত সমস্যা : পুকুরে অ্যামোনিয়া বেড়ে গেলে পানির রঙ তামাটে অথবা কালচে রঙের হয়। এতে মাছের ছোটাছুটি বেড়ে যায়। মাছ খাদ্য খায় না। বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। মাছের মজুদ ঘনত্ব কমাতে হবে। সার ও খাদ্য প্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে। নতুন পানি সরবরাহ করতে হবে।
নাইট্রোজেনজনিত সমস্যা : পানিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে গেলে মাছের দেহে অক্সিজেন সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়ে বিষাক্ততার সৃষ্টি করে। এতে মাছের দেহ বাদামি রঙ ধারণ করে। মাছ খাদ্যগ্রহণ বন্ধ করে দেয়। পুকুরে মাছের ঘনত্ব কমাতে হবে। পুকুরে ২৫০ মিলিগ্রাম লবণ প্রতি লিটার হারে দিতে হবে।
পিএইচজনিত সমস্যা : পানিতে পিএইচ কমে গেলে মাছের দেহ থেকে প্রচুর পিচ্ছিল পদার্থ বের হয়। মাছ খাদ্য কম খায়। পিএইচ বেশি হলে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন কমে যায় এবং মাছের খাদ্য চাহিদা কমে যায়। দেহ খসখসে হয়। মাছ রোগাক্রান্ত হয়। পিএইচ কম হলে চুন, ডলোমাইড বা জিপসাম ১ থেকে ২ কেজি প্রতি শতাংশ পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। পিএইচ বেশি হলে পুকুরে তেঁতুল বা সাজনা গাছের ডালপালা তিনচার দিন ভিজিয়ে রেখে পরে তুলে ফেলতে হবে। তেঁতুল পানিতে গুলে দেয়া যায়।

পানির ওপর সবুজ স্তর : পুকুরের পানির রঙ ঘন সবুজ হয়ে গেলে বা পানির ওপর শ্যাওলা জন্মালে খাদ্য ও সার প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। প্রতি শতাংশে ১২ থেকে ১৫ গ্রাম তুঁতে বা কপার সালফেট অনেক ভাগ করে ছোট ছোট পোটলায় বেঁধে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পানির নিচে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে রাখতে হবে। প্রতি শতাংশ পুকুরে ৮০০ থেকে ১২০০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে।
পানির ওপর লাল স্তর : পুকুরের পানির ওপর লাল স্তর পড়লে ধানের খড়ের বিচালি বা কলাগাছের শুকনো পাতা পেঁচিয়ে দড়ি তৈরি করে পানির ওপর দিয়ে ভাসিয়ে নিলে পরিষ্কার হয়।
পানির ঘোলাত্ব : পানি ঘোলা হলে মাছ খাদ্য কম খায়, চোখে দেখে না, প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয় না, প্রজননে সমস্যা হয় ও রোগবালাই বেশি হয়। প্রতি শতাংশে ৮০ থেকে ১৬০ গ্রাম ফিটকিরি দিতে হবে। পুকুর তৈরির সময় জৈবসার বেশি দিলে স্থায়ীভাবে ঘোলা দূর হয়। পানিতে কলাপাতা ও কচুরিপানা রাখলেও ঘোলা কমে।

পানির ক্ষারত্ব : পানি ক্ষারীয় হলে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি কম হয়। মাছের দৈহিক বৃদ্ধি কমে যায়। মাছের দেহে পিচ্ছিল পদার্থ কমে যায়। পুকুর তৈরির সময় ওপরে শতাংশ প্রতি ১ থেকে ২ কেজি চুন প্রয়োগ করতে হয়। লেবু কেটে দিলেও ক্ষারত্ব কমে। ছাই প্রয়োগেও ক্ষারত্ব নিয়ন্ত্রণ হয়।
জলজ উদ্ভিদ : কচুরিপানা, কলমিলতা, চেচরা, পাতাঝাঝি, শাপলা, হেলেঞ্চা, মালঞ্চ এসব জলজ উদ্ভিদ জলাশয়ে রোদ পড়তে বাধা দেয়, মাছের চলাচল, খাদ্য গ্রহণ, প্রজননে সমস্যা করে। এসব ক্ষতিকর জলজ উদ্ভিদ কাঁচি দিয়ে কেটে সব সময় পুকুরের পানি ও পুকুর পরিষ্কার রাখতে হয়।

রোগবালাই : শীতে মাছের ক্ষতরোগ, লেজ ও পাখনা পচা রোগ ও ফুলকা পচা রোগ হয়। এসব রোগ প্রতিরোধের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তাহলো-
১. পুকুরের পরিবেশ ও পানির গুণাগুণ ঠিক রাখা; ২. জলজ আগাছামুক্ত রাখা; ৩. পুকুরে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ার ব্যবস্থা করা; ৪. অনাকাক্সিক্ষত জলজ প্রাণী অপসারণ করা; ৫. অতিরিক্ত কাদা সরানো; ৬. দুই তিন বছর পর পর পুকুর শুকানো; ৭. নিয়মিত ও পরিমিত চুন প্রয়োগ করা; ৮. মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা; ৯. প্রাকৃতিক খাদ্যের উপস্থিতি পরীক্ষা করা; ১০. হররা টানা; ১১. পাখি বসতে না দেয়া; ১২. জাল শোধন করে ব্যবহার করা; ১৩. রোগাক্রান্ত মাছ অপসারণ করা; ১৪. সব সময় ঢেউয়ের ব্যবস্থা রাখা; ১৫. পানি কমে গেলে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা; ১৬. ভাসমান খাদ্য প্রয়োগ করা; ১৭. পানি বেশি দূষিত হলে পানি পরিবর্তন করা; ১৮. পুকুরে বিভিন্ন স্থানে একটু গভীর বা গর্ত করা যাতে পানি কমে গেলে মাছ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।
শীত ও গ্রীষ্মে প্রতিদিন পুকুরে যেতে হবে। পুকুরের অবস্থা দেখতে হবে। সাত দিন পর পর মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। আর মাছ সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা হলে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এতে খরচ কমে যাবে, লাভ বেশি হবে।

 

লেখকঃ

ভুঁইয়া মো. মাহবুব আলম
মৎস্য চাষী, আমতলী, বরগুনা

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২১, ২০২২ ২:৫৮ অপরাহ্ন
মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় সস্তায় মিলছে ইলিশ
মৎস্য

ইলিশে ভরপুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া মৎস্য আড়ত। দামেও বেশ সস্তা। শীত উপেক্ষা করেই ইলিশ কিনতে আড়তে ছুটছেন দূর-দূরান্তের পাইকার-ক্রেতারা। আর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ভিড়টা যেন একটু বেশিই।

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। রুপালি ইলিশে সয়লাব মুন্সীগঞ্জের মাওয়া মৎস্য আড়ত।

মাঘের হাড় কাঁপানো শীত আর কুয়াশা উপক্ষো করেই ভোরে মাওয়ার পদ্মা তীরের এ আড়তে ইলিশ কিনতে ভিড় ক্রেতা-পাইকারদের। আর সরবরাহ প্রচুর থাকায় দামও কম। আকারভেদে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত।

ক্রেতারা বলছেন, এখানে মোটামুটি অনেক বড় বড় ইলিশ পাওয়া যায়। এ জন্যই এখানে আসা। বিক্রেতারা বলছেন, স্বাদের কারণে পদ্মার ইলিশ খেতে এখানে লোকজন ভিড় জমায়। প্রচুর ইলিশ আছে। ক্রেতাও অনেক বেশি। দামও একটু কমে চলছে। 

মাওয়া মৎস্য আড়তের সভাপতি ছানা রঞ্জন দাস বলেন, যে ইলিশ আগে এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হত, সে ইলিশ আজ এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজ ক্রেতাও খুব আসছে।

কেজি প্রতি বড় ইলিশ এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১১ থেকে এক হাজার টাকা, ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।

এদিকে চলমান জাটকা রক্ষা অভিযান সফল করতে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান আড়ত কমিটির।

মাওয়া মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম বলেন, সরকারকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এ জাটকা রক্ষায় যেন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কারেন্ট জাল নির্মূল করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

অর্ধশতাব্দী প্রাচীন এই আড়তে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় তিন হাজার মানুষের। এক বছরে জেলায় ২ হাজার ৭২ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৯, ২০২২ ৩:৩১ অপরাহ্ন
মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে জাটকা নিধনের মহোৎসব
মৎস্য

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে অবাধে জাটকা নিধন। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়া জাটকায় সয়লাব জেলার হাটবাজারগুলো। এরপরও প্রতিরোধে নেই প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ। আর এমন বেপরোয়া জাটকা নিধনের ফলে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হবে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইলিশ সম্পদ রক্ষায় ১ নভেম্বর থেকে পরবর্তী ৮ মাস জাটকা ধরা, কেনাবেচা ও মজুত নিষিদ্ধ হলেও ভোলার চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে জাটকা শিকারে মেতেছেন জেলেরা।

এসব জাটকা আবার মজুত করা হচ্ছে নদীর পাড়ের মাছঘাটগুলোতে। হাঁকডাক দিয়ে প্রকাশ্যেই চলছে জাটকা বেচাকেনা। অসময়ে ধরা পড়া এসব জাটকা বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। প্রতি হালি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৮০ টাকায়। এরপরও প্রশাসনের নজরদারি শুধু কাগজে-কলমে থাকায় হতাশ সচেতন মানুষ। অন্যদিকে, জেলেদের দাবি, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে জাটকা ধরছেন তারা।

ভোলা সদর উপজেলার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতি সভাপতি মো. এরশাদ ফরাজি বলেন, জাটকা নিধন থেকে বিরত থাকতে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে জেলে সমিতি। এরপরও ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে জাটকা রক্ষায় তৎপরতা আরও বাড়ানোর দাবি তাদের।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার কথা।

নিষেধাজ্ঞার প্রথম আড়াই মাসে ভোলায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ২৫৫টি অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসন। এ সময় প্রায় ৭ মেট্রিক টন জাটকা ও ৯০ হাজার মিটার অবৈধ জাল জব্দ করা হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৭, ২০২২ ১:৪৭ অপরাহ্ন
বিক্রি হলো ৭ মণ ওজনের ‘শাপলাপাতা’ মাছ
মৎস্য

বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি পাইকারি মৎস্য বাজারে সাত মণ ওজনের একটি স্টিং রে বা ‘শাপলাপাতা’ মাছ বিক্রি হয়েছে। সোমবার সকাল ৭টার দিকে নিউ আলামিন ফিসের আড়তদার মোস্তফা আলম প্রতিমণ ১২ হাজার পাঁচশ’ টাকা দরে মাছটি বিক্রি করেন।

পরে মঠবাড়িয়া উপজেলার মৎস্য পাইকারি ব্যবসায়ী কবির হোসেন প্রকাশ্য নিলামে ১৬ জন পাইকারের মধ্যে সর্বচ্চ দরদাতা হিসাবে মাছটি কিনে নেন।

আড়তদার মোস্তফা আলম জানান, তার আড়তের দাদোনভোগী সেলিম মাঝি সাগরে ইলিশের জাল ফেললে ওই জালে দু’টি শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়ে। মাছ দুটি ট্রলারে তুলতে না পারায় রশি দিয়ে বেঁধে পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে আসেন তারা। পাথরঘাটায় পরে মাছ ঘাটের লেবারদের নিয়ে বিএফডিসি মার্কেটে এগুলো তোলা হয়।

মোস্তফা আলম বলেন, বড় মাছটির আনুমানিক ওজন সাড়ে ৪ মণ ধরে বিক্রি করা হয়। পরে কেটে ওজন করা হলে, বড় মাছটির ওজন হয়েছে ৬ মন ৩৩ কেজি। আর অপর মাছটির ওজন হয়েছে ৭৮ কেজি।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২২ ৪:৩৩ অপরাহ্ন
ভোলার মেঘনায় অসময়ে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ
মৎস্য

এবারের বর্ষা মৌসুম ইলিশ ছাড়া শেষ হলেও অসময়ে ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে রুপালী ইলিশ সহ সামুদ্রিক মাছ। ছোট বড় এসব ইলিশ বেপারীরা চালান করছেন ঢাকা, চাঁদপুর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে। 

এছাড়া স্থানীয় বাজার গুলোতে প্রচুর ইলিশের দেখা মিলছে। সাধারণত এ সময়ে বাজারে তেমন ইলিশ থাকেনা। তবে এ বছর ছোট-বড় ইলিশের ছড়াছড়ি দেখে অবাক ক্রেতারা। বাজার চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক, দামও ক্রেতাদের নাগালে।

জেলে ও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। এবার ভরা মৌসুমে ইলিশের দেখা মিলেনি। পৌষ-মাঘ মাসে অসময়ে ভোলার মেঘনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এখানকার জেলে, আড়ৎদার ও ব্যবসায়ীরা ইলিশকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এছাড়া দাম সস্তা, তাই জেলার মাছঘাট ও হাট-বাজার-গুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয়। গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সুস্বাদু রূপালি ইলিশ।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে শশীগঞ্জ মাছঘাট ও বাজার ঘুরে দেখা যায়, একেকটি মাছ ২৫০-৪০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি (৪টা) ইলিশ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, ৪৫০-৭০০ গ্রামের প্রতি হালি ইলিশ ৯০০ থেকে ১৬০০ টাকা এবং প্রতিটি ৭৫০- ৯০০গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ ১৭০০ থেকে ২৫০০ টাকা, ১কেজির উপরে প্রতি হালি (৪টা)২৬শ থেকে ৩৫শ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। অথচ বর্ষার মৌসুমে ১কেজির বেশী ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকায়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি আবুল হাসেম মহাজন।

মাছ ধরে ফিরে আসা শশীগঞ্জ ঘাটের জেলে মফিজ মাঝী জানান, ছোট নৌকায় ৬ জেলে নিয়ে মাছ ধরে একদিন পরপর ঘাটে আসি, মাছ বিক্রি করে ১৯ হাজার ৫শত টাকা হাতে পেয়েছি।

আলাউদ্দিন মাঝী, জামাল মাঝী, মতিন মাঝিসহ কয়েকজন জানান, এখন তারা দৈনিক ২০-২৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পাড়লেও বর্ষা মৌসুমে দৈনিক সর্বোচ্চ ১০হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারেনি। বর্তমানে এসব জেলেরা সংসার পরিচালনা করে দেনা পরিশোধ করার আশা করছেন।

চৌমুহনী বাজার এলাকার শ্রমজীবী আশরাফ, আরিফ বলেন, বর্ষার চেয়ে ইলিশের দাম অনেক কম হওয়ায় ছোট বড় মিলিয়ে ১০ হালি ইলিশ কিনেছি। মেঘনার টাটকা ইলিশ অনেক সুস্বাদু ।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম বলছেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুম, অভয়াশ্রম, জাটকা রক্ষা অভিযান, অবৈধ জাল উচ্ছেদের অভিযান ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ রক্ষা অভিযান বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় নদ-নদীতে সফল ভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা সব ধরনের মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন। সকল নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেদের অবরোধ পালন ফলপ্রসূ হয়েছে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop