১১:৩১ অপরাহ্ন

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুন ২৪, ২০২৩ ১:৫৬ অপরাহ্ন
কুরবানির গরু কিনে বাসায় আনার পর এর যত্নে ৮ টি করণীয়…
প্রাণিসম্পদ

তাই জেনে নিন কুরবানির গরুর যত্নে করণীয়ঃ

১. গরু কেনার পর থেকেই গরুর পুরো দায়িত্ব আপনার উপরে। তাই কোরবানির হাট থেকে গরুকে হাঁটিয়ে না এনে পিক আপ ভ্যানে করে আনতে পারেন। এতে গরমে গরুর কষ্ট কম হবে আর হেঁটে আনার যে ঝামেলা হয় তারও সম্মুখীন হওয়া লাগবে না।

২. গরুটিকে বাসায় আনার সাথে সাথেই পানি খেতে দিবেন না, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে দিন, পরিবেশ টা বুঝতে দিন, এরপর বিশুদ্ধ পানি দিবেন । পশুর জন্য খড়, কচি ঘাস, কলা পাতা কিংবা বিচালি কিনে রাখুন। পানি দেবার পর খাবার দিতে পারবেন ।

৩. গরুটিকে প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করাবেন । বাসি খাবার না দিয়ে টাটকা খাবার খাওয়ান, অল্প অল্প করে বার বার খাবার দিন। এত খাদ্য অপচয় কমবে এবং খাওয়া বৃদ্ধি পাবে । খৈল, ভুষি, তুষ, কুড়া, লবণ, ভাতের মার পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।

৪. গরুর থাকার জন্য একটি অস্থায়ী স্থান তৈরি করুন। জায়গাটি যেন শুষ্ক থাকে কিংবা পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন।

৫. দিনের বেলায় খোলা স্থানে বেঁধে রাখবেন এবং দুপুরে ভালো করে গোসল করাবেন । সম্ভব হলে গরুকে বিকেল বেলা হাটাবেন ।

৬. রাতের বেলা নিরাপদ স্থানে রাখুন। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে মশারি কিংবা কয়েল ব্যবহার করুন।

৭. গরুর সাথে যতটা সম্ভব ভালো ব্যবহার করুন। গায়ে হাত বুলিয়ে দিন আর যতটা পারেন সময় দিন। বাচ্চারা যেন গরুকে বিরক্ত না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন ।

৮. কুরবানির দিন সকাল বেলা গরুকে শুধু পানি পান করাবেন, অন্য কোন খাবার দিবেন না অর্থাৎ যা খাওয়ানোর তা আগের রাতেই খাওয়াবেন ।

আল্লাহ আমাদের সকলের কুরবানি কবুল করুন (আমীন) ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৪, ২০২৩ ১০:১৪ পূর্বাহ্ন
ছাগলের কৃমি দমনে করণীয়
প্রাণিসম্পদ

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন বাংলাদেশের খামারীদের ভাগ্যবদলের অন্যতম পাথেয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। তবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলেও নিতে হয় আলাদা যত্ন। বিশেষ করে কৃমি দমনে কার্যকরী পদক্ষেপ খামারীদের জন্য বেশ উপকারী।

ছাগলের বাচ্চার কৃমি দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ:

কৃমি দমন : কৃমি ছাগলের মারাত্মক সমস্যা। বয়স্ক ছাগল ও বাচ্চার কৃমি দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ও উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না।

কৃমির জন্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কাজেই কাছের প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে ছাগলের মল পরীক্ষা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছাগলকে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।

১-৪ মাস পর্যন্ত বাচ্চা দের কৃমি মুক্ত করার পদ্ধতি:

বাচ্চা ছাগল, ভেড়া, গাড়ল:- বিভিন্ন খামারী এরং ছাগল পালন কারীর সাথে আলোচনা করে এবং নিজে অভিজ্ঞতা থেকে একটি সাধারণ বিষয় লক্ষ্যণীয় হল ছাগলের ক্ষেত্রে বাচ্চা জন্মানোর প্রথম ১ মাস বাচ্চা গুলোর দৈহিক বৃদ্ধি ভাল থাকে এবং দেখতে খুব সুন্দর থাকে কৃমি মুক্ত না করা বাচ্চাগুলো দ্বিতীয় মাস থেকেই আস্তে আস্তে দৈহিক বৃদ্ধি এবং সৈন্দর্য কমতে থাকে, দিন দিন শুকিয়ে যায় আর পেটের সাইজ বড় হতে থাকে,খুবই ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়, আবার পায়খানার সাথে সাদা সাদা ফিতা কৃমি,হুক কৃমি,চাবুক কৃমি বের হতে থাকে ।

বাচ্চাগুলো খুবই দূর্বল হয়ে ধীরে ধীরে হাড় চামড়ার সাথে ভেসে উঠে কিছু বাচ্চা মারা যায় আবার কিছু বাচ্চা বছর পার হলেও শরির স্বাস্হ্য খারাপ হতেই থাকে । আমারা খামারে সাধারণতঃএই সমস্যার সন্মুখিন হচ্ছি বা হতে পারি। সেজন্য নিচের নিয়মে ছাগল,গাড়লের বাচ্চাদের কৃমি মুক্ত করতে পারলে খামার কে লাভবান করা সম্ভব।

বাচ্চাকে ১ মাস বয়স হলে নিওট্যাক্স,বা এক্সট্রাস মানুষের সিরাপ জেনেরিক নেইম লিভামিসোল প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ এমএল হিসেবে খাওয়াতে হবে । (বিঃদ্রঃ কৃমির প্রভাব দেখা দিলে ১৫দিন বয়স থেকেও দেওয়া যেতে পারে।) দুই মাস বয়স পূর্ন হলে এলটিভেট জেনেরিক নেইম লিভামিসোল + ট্রাইক্লাবেন্ডাজল ৪০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়াতে হবে ।

তিন মাস বয়স হলে এমেকটিন প্লাস জেনেরিক নেইম আইভারমেকটিন + ক্লোরসুলন ২৫ কেজি হিসেবে ১ এমএল চামড়ার নীচে ইঞ্জেকশন দিতে হবে। চার মাস বয়স হলে প্যারাক্লিয়র ফেনবেন্ডাজল গ্রুপের ট্যাবলেট ১০-২০ কেজির জন্য ১ টি । তার ৭-৮ মাস পূর্ণ হলে বড় ছাগলের রুটিনে কৃমি মুক্ত করতে হবে ।

বাচ্চা গাড়ল, ভেড়া, ছাগলের ক্ষেত্রে যেহেতু ১-২ মাসের অধিক সময় পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে তাই কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পর লিভারটনিক না খাওয়াতে পারলে তেমন কোন সমস্যা হবে না আর ৩-৪ মাসে কৃমির ঔষধের দেওয়ার পর লিভারটনিক খাওয়াতে হবে ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৩, ২০২৩ ১:৪৪ অপরাহ্ন
গাভীর ওলান ফোলা রোগ নির্ণয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কর্মশালা
প্রাণিসম্পদ

দীন মোহাম্মদ দীনু: দুধ উৎপাদন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম ম্যাসটাইটিস বা ওলান ফোলা রোগ। এটি গাভীর নীরব ঘাতক রোগ হিসেবে পরিচিত। মাঠ পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল ও সাব ক্লিনিক্যাল এই দুই ধরনের ওলান ফোলা রোগ দেখা যায়। ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা গেলেও কোন লক্ষণ প্রকাশ না করায় সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস সহজে নির্ণয় করা যায় না। তাছাড়া এই রোগ নির্ণয় করার জন্যে উল্লেখযোগ্য কোন যন্ত্র উদ্ভাবিত না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খামারীরা।


তবে দেশে প্রথমবারের মতো মাঠ পর্যায়ে সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিস রোগ নির্ণয়ের জন্য ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এ যন্ত্র দুধের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা, তাপমাত্রা ও দ্রবীভূত কঠিন পদার্থের পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে। পাশাপাশি যন্ত্রটি ব্যবহারে মাঠ পর্যায়ে কম সময়ে, খুব সহজে ও সুলভ মূল্যে রোগ নির্ণয় সম্ভব।

ড. মো. আবু হাদী বলেন, নিরাপদ দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণায় গত দুই বছরে ৩৯টি খামারের মোট ১০০টি গাভীর ওপর ম্যসটাইটিসের জীবাণু শনাক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ গাভীর ওলানের এক চতুর্র্থাংশ সাব ক্লিনিক্যাল ম্যাসটাইটিসে আক্রান্ত।
তিনি আরও বলেন, দুধ দুহানোর আগে ও পরে জীবাণুনাশকের সাহায্যে গাভীর ওলান পরিষ্কার করতে হবে। পরে শুকনো কাপড় দিয়ে ভেজা ওলান মুছে দিতে হবে। গাভীর জন্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন খামার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। এর মাধ্যমে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ম্যাসটাইটিস প্রতিরোধ সম্ভব। তাই এ রোগ প্রতিরোধে খামারিদের উদ্বুদ্ধ করণ খুব জরুরি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২২, ২০২৩ ১:১২ অপরাহ্ন
দেশি জাতের গরু চেনার উপায়
প্রাণিসম্পদ

দেশে দিন দিন দেশি জাতের গরুর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ফলে দেশি জাত কিভাবে চেনা যায়, সে প্রশ্ন অনেকের।

সাধারণত দেশি জাতের গরুর শরীরে বিদেশি জাত বা শংকর জাতের চেয়ে চর্বি কম থাকে। দেশি গরু আকারও কিছুটা ছোট হয়। মাংসে স্বাদ বেশি হয়, কিন্তু দুধের পরিমাণ বিদেশি গরুর তুলনায় কম হয়।

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল নিউট্রিশন, জেনেটিক্স ও ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক লামইয়া আসাদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, দেশি গরু চেনার উপায় হচ্ছে দেশি জাতের গরুর চামড়া শক্ত থাকে। এছাড়া এর কুঁজ থাকে এবং গলার নিচে চামড়ার ভাঁজ কম থাকে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন বিভাগের পরিচালক ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার গণমাধ্যমকে বলেছেন, দেশি জাতের যেসব গরু বাজারে জনপ্রিয়, তার মধ্যে মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম, চট্টগ্রাম ও এর আশেপাশের এলাকার আরসিসি, পাবনা ক্যাটল, সিরাজগঞ্জের ব্রিড নামে পরিচিত গরুগুলো উল্লেখযোগ্য।

পাবনা ক্যাটল

এটি পাবনা ব্রিড নামেও পরিচিত। এই জাতের গরুর বড় অংশটির রং সাদা বা সাদা মেশানো ছাই রং। এছাড়া লাল, ধূসর বা মিশ্র বর্ণেরও হয় এসব গরু। দেশীয় আবহাওয়া সহনশীল এসব গরু পালনে খাবার কম লাগে।

দেশের জাতীয় তথ্য বাতায়নে পাবনা ক্যাটল সম্পর্কে বলা হয়েছে, পাবনার চলনবিল সংলগ্ন এলাকায় এই গরুর বাস। এটি খর্বকায় মানে বেশি বড় আকৃতির নয়। এদের স্বাস্থ্য সুঠাম, রোগব্যাধি কম হয়। এটি ঘাস খায়, এর বাইরে অন্য ধরনের খাবার কমই দিতে হয়। দেশে দুধের উৎপাদন বাড়াতে ফ্রিজিয়ান গরুর সাথে এর কৃত্রিম প্রজনন করা হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে।

সিরাজগঞ্জ ব্রিড

এই জাতের গরু মূলত পদ্মাপারের কয়েকটি জেলায় হয়ে থাকে। এই জাতের গরুর সঙ্গে পাবনা ক্যাটলের সাদৃশ্য রয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি পাবনা ক্যাটলের চেয়ে আকারে কিছুটা বড় হয়। এর কুঁজ উঁচু ও বলিষ্ঠ হয়।

এসব জাত ছাড়াও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাংসের চাহিদা মাথায় রেখে শাহীওয়াল এবং ব্রাহমা জাতের গরুর সাথে সংকরায়ন করে আরো কিছু জাতের প্রজনন ঘটানো হয়েছে, যেগুলো কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতাদের মন জয় করেছে।

মীরকাদিমের ধবল গাই

এটি আকারে সাধারণ গরুর চেয়ে বড়। এটি সাধারণত সাদা রংয়ের হয়। কখনো এর সঙ্গে তার গায়ে অল্প ছাই রং বা কালোর ছোপ থাকতে পারে। মীরকাদিমের গরুর মাংসে আঁশ কম থাকে, এর হাড় চিকন হয়। ফলে মাংস হয় নরম ও তেলতেলে।

এটি পালন সহজ, মানে খাবারের খরচ কম। খৈল, গম, মসুর ডালের ভুসি এবং ভুট্টা গুঁড়ার মত খাবার দিয়ে পালন করা যায়।

আরসিসি বা রেড চিটাগাং ক্যাটল

এই গরুর গায়ের রং লাল। এর ক্ষুরা মানে পায়ের রংও লাল। এটি আকারে বেশি বড় হয় না। এর কুঁজ ছোট আকারের হবে। এই গরু পালনে খাবার কম লাগে। দেশি আবহাওয়া সহনশীল বলে খামারিদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই গরু। মূলত এই জাত চট্টগ্রাম এবং এর আশেপাশের জেলায় বেশি উৎপাদন হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২১, ২০২৩ ১:৪২ অপরাহ্ন
কোরবানির পশু সুস্থ ও স্টেরয়েড মুক্ত কিনা বুঝবেন যেভাবে
প্রাণিসম্পদ

যিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-আযহা পালিত হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী এ বছর জুন মাসের ২৯ তারিখ বাংলাদেশের মানুষ ঈদুল আযহা উদযাপন করবেন। ঈদুল আযহার অন্যতম একটি আনুষ্ঠানিকতা হলো পছন্দের পশুকে কোরবানি করা।

মুসলিমদের এই উৎসবে সামর্থ্যবানরা পছন্দমতো পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহর কাছে তার তাকওয়া প্রদর্শন করে। সামর্থ্যবানদের কোরবানি গরুর মাংসের একটি অংশ থাকে গরিবদের জন্য। আর এই কোরবানির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল সুস্থ ও সবল পশু নির্বাচন করা। সবাই ভালো গরুটিই পছন্দ করতে চায়, এজন্যে সবার নজর থাকে গরুর স্বাস্থ্যের প্রতি। এই উৎসবকে পুঁজি করে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করে দ্রুত গরু মোটাতাজাকরণের দিকে ঝুঁকছে। তাই কোরবানির হাটে যাওয়ার আগে অবশ্যই সুস্থ সবল পশু চিহ্নিত করার উপায়সমূহ জেনে নেওয়া উচিত।

কোরবানির গরু সুস্থ ও রোগমুক্ত কিনা তা চেনার উপায়:

১) হরমোন ও স্টেরয়েড ব্যবহার করে মোটাতাজা করেছে কিনা তা জানার উপায়: স্টেরয়েড দিয়ে মোটাতাজা করা গরু স্বাস্থ্যবান দেখাবে কিন্তু এরা তেমন চটপটে হবে না। খুব বেশি নড়াচড়া করতে দেখা যাবে না। গরুর শরীরে আঙ্গুল দিয়ে হালকা চাপ দিলে ঢেবে যাবে। কিন্তু সুস্থ গরুর শরীরে আঙ্গুলের চাপ দিয়ে আঙ্গুল সরিয়ে নিলে তাৎক্ষণিকভাবে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আসবে।

২) সুস্থ পশুর চোখ উজ্জ্বল ও তুলনামূলক বড় আকৃতির হবে। অবসরে জাবর কাটবে (পান চিবানোর মতো), কান নাড়াবে, লেজ দিয়ে মাছি তাড়াবে। বিরক্ত করলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সহজেই রেগে যাবে।

৩) সুস্থ গরুর নাকের সামনের কালো অংশ (Muzzle) ভেজা থাকবে, অসুস্থ গরুর ক্ষেত্রে শুকনো থাকবে। এছাড়া অসুস্থ গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে।

৪) সুস্থ গরুর গোবর স্বাভাবিক থাকবে, পাতলা পায়খানার মতো হবে না।

৫) সুস্থ গরুর সামনে খাবার এগিয়ে ধরলে জিহ্বা দিয়ে তাড়াতাড়ি টেনে নিতে চাইবে। অপরদিকে অসুস্থ পশু ভালোমতো খেতে চাইবে না।

৬) অসুস্থ গরু ঝিমায়, নিরব থাকে। খুব বেশি আশেপাশের কোলাহলে সাড়া দেয় না।

কোরবানির জন্য দেশে গরু, মহিষ, ছাগল প্রভৃতি পশু বা প্রাণীর চাহিদা ব্যাপক। পূর্বে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও অনেক পশু আমদানি করা হত। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এবছর দেশে কোরবানিযোগ্য প্রাণীর সংখ্যা ১ কোটি ২১ লাখ, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। এবছর ১ কোটির মতো পশু কোরবানি করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা যাচ্ছে। পশু ক্রয় থেকে শুরু করে মাংস ভক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে সর্বক্ষেত্রে। রোগব্যাধির প্রকোপ বেশি হলে প্রাণী চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।

হাট থেকে পশু কিনে আনার পর পশুর সামনে স্যালাইনযুক্ত পানি দিন। পশুর কোনো অসুস্থতা পরিলক্ষিত হলে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দিন। পশুকে ভাতের মাড় বা কাঠাঁলের চোবড়া বেশি খাওয়াবেন না, এতে করে পশুর পেটে গ্যাস জমা হয়ে পেট ফুলে যেতে পারে।

কোরবানির পশু কেনার পর আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই পশুর প্রতি বেশি দরদ দেখাতে গিয়ে জবাইয়ের পূর্বে বেশি করে খাবার খাওয়ায়, যা বিজ্ঞানসম্মত নয়। এতে করে মাংসের গুণগত মান কমে যেতে পারে৷ পশু জবাইয়ের ১২ ঘন্টা পূর্ব থেকে পশুকে কোনো খাবার না দেওয়াই ভালো এবং বেশি করে পানি খাওয়াতে হবে৷ এতে করে চামড়া ছাড়ানো সহজ হবে৷

লেখকঃ
ডাঃ আবদুর রহমান (রাফি)
বি. এস. সি. ভেট সায়েন্স এন্ড এ. এইচ.
এম. এস. (ডেইরি সায়েন্স)
প্রয়োজনে: 01987899651

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২০, ২০২৩ ৮:০৭ অপরাহ্ন
বিএলআরআই’তে প্রকল্প সমাপনী কর্মশালা ও অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এ গত ১৮/০৬/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প সমাপনী কর্মশালা এবং পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা কর্মশালা-২০২৩।

প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালা দুটির উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব ড. নাহিদ রশীদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) জনাব মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

বেলা তিনটায় পবিত্র কুরআন হতে তিলওয়াত এবং পবিত্র গীতা হতে পাঠের মধ্য দিয়ে ইনস্টিটিউটের চতুর্থ তলার সম্মেলন কক্ষে শুরু হয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কর্মশালা দুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ড. নাসরিন সুলতানা।

স্বাগত বক্তব্যের পরে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও সফলতা তুলে ধরেন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক ড. ছাদেক আহমেদ। এর পরে পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রকল্পটির প্রকল্প পরিচালক ড. সাজেদুল করিম সরকার। বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি এসময় সংশ্লিষ্ট প্রকল্প দুটির উপরে নির্মিত ভিডিও ডুকমেন্টারিও উপস্থাপন করা হয়।

বক্তব্য ও ভিডিও ডুকমেন্টারি উপস্থাপনের পরে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প দুটির উপরে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান পর্ব। এসময় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত সংরক্ষণ ও উন্নয়ন গবেষণা প্রকল্পের উপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. ইয়াহিয়া খন্দকার। পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের উপর আলোচনা করেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিএলআরআই এর সাবেক মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকার এবং বিএলআরআই এর সাবেক মহাপরিচালক ড. কাজী মোঃ এমদাদুল হক।

বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদানের পরে শুরু হয় উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। এসময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত আমন্ত্রিত শিক্ষকগণ, বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা ও মন্ত্রণালয় হতে আগত কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন ও প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

উন্মুক্ত আলোচনা পর্ব সমাপ্তির পর অনুষ্ঠিত হয় আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য প্রদান পর্ব। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সফলতার সাথে সাথে ব্যর্থতার দিকসমূহও তুলে ধরতে হবে। প্রকল্প যখন গ্রহণ করা হবে তখন যেনো দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার জন্য যেনো প্রকল্প গ্রহণ করা না হয়। প্রকল্প সমাপ্তির সাথে সাথে সব শেষ নয়, বরং এর ওয়ে ফরোয়ার্ড থাকতে হবে।

এসময় গবেষণা ও সম্প্রসারণের মধ্যে সমন্বয় স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, গবেষণার সাথে সম্প্রসারণের সংযোগ থাকতে হবে। বিএলআরআই এর প্রযুক্তি বা প্রোডাক্ত প্রান্তিক খামারিদের নিকট নিতে হবে। গবেষণা কেনো সম্প্রসারণ হচ্ছে না সেটি খুঁজে বের করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২০, ২০২৩ ১২:১৬ অপরাহ্ন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর সাথে বাফিটা’র নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎঅনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

বাফিটা’র সভাপতি জনাব সুধীর চৌধুরী এর নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়ে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের অফিস কক্ষে গত ১৪ জুন বাফিটা’র নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সভায় প্রাণিজসম্পদ বিষয়ক প্রাণবন্ত ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আলোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন এর নব-নির্বাচিত সভাপতি জনাব এ. এম আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি জনাব গিয়াসউদ্দিন খান, মহাসচিব জনাব জয়ন্ত কুমার দেব, যুগ্ন-মহাসচিব জনাব মাহবুবুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আলতাফ হোসেন বিশ্বাস, সমাজকল্যান সম্পাদক জনাব মুহাম্মাদ শাহ আকরাম, ট্রেজারার জনাব খোরশেদ আলম, প্রচার সম্পাদক জনাব আব্দুর রহমান, কার্য্যনির্বাহী সদস্য জনাব ডাঃ রাশেদুল জাকিরসহ এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ১৮, ২০২৩ ৮:১০ অপরাহ্ন
সুস্থতার জন্য পুষ্টি কতটা জরুরি অনেকেই তা জানেনা
প্রাণিসম্পদ

কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে প্রোটিন বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০৩০ সালকে সামনে রেখে গ্রহণ করা হয়েছে জাতীয় পরিকল্পনা কিন্তু এখনও জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মাঝে পুষ্টি ও প্রোটিন বিষয়ক সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে হলে দেশব্যাপী প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে; চিকিৎসক, ওপিনিয়ন লিডার এবং মডেল তারকাদের কাজে লাগাতে হবে। ১৭ জুন ২০২৩ কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজে “রাইট টু প্রোটিন” বিষয়ক সেমিনারে বক্তারা এ মতামত দেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ এবং ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. মো. আব্দুল হালিম বলেন, টেকসই উন্নয়নের পথে পুষ্টি ঘাটতি একটি বড় অন্তরায়। এর নেতিবাচক প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়। পুষ্টি সূচকে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করলেও ২০৩১ কিংবা ২০৪১ সালের জাতীয় লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হবে।

মেডিসিন বিভাগের প্রধান, প্রফেসর ডা. মিজানুর রহমান বলেন- দেহের ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধি সাধন ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস অত্যন্ত দরকারি খাদ্য অথচ এখনও দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মাঝে এসব খাদ্য সম্পর্কে নানাবিধ ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আমাদের দেশে দুধ খাওয়ার পরিমাণ এখনও অনেক কম। ব্রয়লার মুরগির মাংস অনেকেই খান না অথচ বিশ্বজুড়েই এ মাংস সমাদৃত। ডিম খেলে হার্টের সমস্যা হয়, প্রেসার হয়, শরীর মোটা হয়ে যায়, অপারেশনের রোগীকে ডিম দেয়া যাবেনা, বয়স্কদের ডিম-মাংস দেয়া যাবেনা- এগুলো সবই ভ্রান্ত ধারণা।

বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ মহুয়া বলেন, পুষ্টি ঘাটতির কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ১০৭২ হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে। প্রি-স্কুল বাচ্চাদের এক তৃতীয়াংশ খর্বাকৃতির, এক পঞ্চমাংশের বেশি কম ওজনের এবং দশভাগের এক ভাগ ক্ষীণকায়। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ৪৩ শতাংশই এনিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে। বিবাহিত নারীদের এক তৃতীয়াংশের ওজন প্রত্যাশিত মাত্রার নিচে। পুষ্টি ও প্রোটিন বিষয়ক জনসচেতনতা বাড়াতে তিনি স্কুলের পাঠ্যক্রমে এ বিষয়টিকে আরও গুরুত্বের সাথে তুলে ধরার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, বিগত কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়েছে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বেশ লম্বা হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ম্যাথ অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। এই ইতিবাচক অগ্রগতি এবং ডিম, দুধ, মাছ, মাংসের কনজাম্পশন বাড়ার যে প্রবণতা- তা প্রায় একই গতিতে এগিয়েছে।

জনাব খালেদ বলেন, পশ্চিম ইউরোপের দেশ মোনাকোর মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। চীনের একজন মানুষ ৭৫ বছর বয়সেও অনেক বেশি কাজ করতে পারেন। নেদা রল্যান্ডস কিংবা চীনের মানুষেরা এখনকার মত এতটা লম্বা ছিল না। অলিম্পিকের মেডেল তালিকায় আমেরিকা এবং ইউরোপই শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বহুকাল। এ সফলতার পেছনে মূল কারণটি হচ্ছে- তাঁরা পর্যাপ্ত প্রোটিন ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করেন।

ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের বাংলাদেশ টীম লীড খবিবুর রহমান কাঞ্চন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। পুষ্টি সূচকে উন্নতি করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার চিত্র পাল্টে যাবে। তিনি বলেন, প্রোটিনের অধিকার নিশ্চিত করতে তাঁর প্রতিষ্ঠান বিশ্বজুড়ে কাজ করে যাচ্ছে।

সেমিনারে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়, ভাইস-প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. নিরঞ্জন চন্দ্র বসাক, প্রফেসর খন্দকার শাহনেওয়াজ এবং ডা. কিউ এম এনায়েত হোসেন। উপস্থিত ছিলেন বিপিআইসিসি’র সেক্রেটারি দেবাশিস নাগ, যোগাযোগ ও মিডিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার আবু বকর প্রমুখ। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিয়ান নাজনিন ও রামনিক কর। সেমিনারে মোট প্রায় ২৫০ জন ডাক্তার, মেডিকেল অফিসার, ইন্টার্ন ও শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ১৭, ২০২৩ ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদি পশুর খাদ্য তালিকা
প্রাণিসম্পদ

গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে দ্রুত লাভবান হতে গিয়ে অনেকেই ভুল করে বসেন। অনেক খামারি ভাবেন গরুকে বেশি বেশি খাদ্য প্রদান করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে এবং দ্রুত গরু মোটাতাজা হবে। আসলে ব্যাপারটি তেমন নয়।

প্রতিটি প্রাণীরই খাদ্য খাওয়ার একটি নির্দিষ্ট মাপকাঠি থাকে। যেমন মানুষ প্রতিদিন তিনি বেলা খেয়ে থাকেন এবং পরিমিত হারে খেয়ে থাকেন তেমনি গবাদিপশুকেও পরিমিত হারে খাদ্য প্রদান করতে হবে।

গরুর দোহিক ওজনের ভিত্তিতে খাদ্য প্রদানের হার নির্ধারণ করা যায়। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক গরুর দৈহিক ওজনের ভিত্তিতে দৈনিক কি পরিমাণ খাদ্য দেয়া যেতে পারে-

১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা উপাদান পরিমাণ

ধানের খড় ২ কেজি
সবুজ ঘাস ৪-৫ কেজি (ঘাস না থাকলে খড় ব্যবহার করতে হবে

দানদার খাদ্যে মিশ্রন ১.২-২.৫ কেজি
ইউরিয়া ৩৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী)

চিটাগুড়া ২০০-৪০০ গ্রাম
লবণ ২৫ গ্রাম

দানাদার খাদ্যের সাথে লবণ, ইউরিয়া, চিটাগুড় এক সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার দিতে হবে। ধানের খড় এবং কাঁচা ঘাস ছোট ছোট করে কেটে এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

১৫০ কেজি ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা উপাদান পরিমাণ

ধানের খড় ৩ কেজি
কাঁচা ঘাস ৫-৬ কেজি

দানাদার খাদ্যের মিশ্রন ১.৫-২ কেজি
চিটাগুড় ৫০০ গ্রাম

ইউরিয়া ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুয়ায়ী)
লবন ৩৫ গ্রাম

১৫০-২০০ কেজি ওজনের পশুর খাদ্য তালিকা উপাদান পরিমাণ

ধানের খড় ৪ কেজি
কাঁচা ঘাস ৫-৬ কেজি

দানাদার খাদ্যের মিশ্রন ১.৫-২ কেজি
চিটাগুড় ৫০০ গ্রাম

ইউরিয়া ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী)
লবন ৩৫ গ্রাম

মোটাতাজাকরণের গরুকে সর্বক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ জাতীয় খাবার (খড়, কাঁচা ঘাস) এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।

গবাদীপশুকে ইউরিয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রদানে কিছু কিছু সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।
১। এক বছরের নিচে গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না।
২। কখনও মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না
৩। গর্ভাবস্থায় ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না।
৪। অসুস্থ গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না, তবে দূর্বল গরুকে পরিমাণের চেয়ে কম খাওয়ানো যেতে পারে।
৫। ইউরিয়া খাওয়ানোর প্রাথমিক অবস্থা (৭ দিন পর্যন্ত পশুকে ঠান্ডা ছায়াযুক্ত স্থানে বেঁধে রাখতে হবে এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। প্রকল্প মেয়াদ তিন মাস, শুরু হবে ইউরিয়া মিশ্রিত খাবার প্রদানের দিন থেকে।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২, ২০২৩ ৭:৫৫ অপরাহ্ন
লাম্পী স্কীন রোগে মারা যাচ্ছে গরু, আতঙ্কে খামারিরা!
প্রাণিসম্পদ

শেরপুর জেলা ( উত্তর )’এ লাম্পী স্কীন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে গরু। দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে কৃষক ও খামারিগণ। সম্প্রতি গারো পাহাড়ের ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেও এ রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে উপজেলার সাড়ি কালিনগর গ্রামের কৃষক আলহাজ¦, শরীফ উদ্দিন সরকারের ১টি গাভি ও প্রতাব নগর গ্রামের ডা: আব্দুল বারীর একটি বাছুর গরুসহ বিভিন্ন গ্রামে অনেক গরু মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গরু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় ও এ রোগের ব্যাপকতার ও খবর পাওয়া গেছে। একটি বাছুর গরু আক্রান্ত হয়েছে মো: সাদা মিয়া, গ্রাম বন্দভাটপাড়া ( মাটিয়া পাড়া ) এ পর্যন্ত তার কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে চিকিৎসা বাবদ। এ ছাড়া চাপা ঝুড়া গ্রামের আজমত আলীর গরু আক্রান্ত হয়েছে। বন্দভাট পাড়ার সোহবার উদ্দিন কাজির গাভি ও বাছুর মারা গেছে। তা ছাড়া সাড়ি কালিনগর গ্রামের সোলায়মানের গরু আক্রান্ত হয়েছে। জানা গেছে পাহাড়ি এলাকাসহ উপজেলার প্রায় বাড়িতেই আক্রান্ত হচ্ছে গরু।

অপর দিকে শেরপুর উত্তরের শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ও ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে সংবাদ কর্মি আমিরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওয়াকুড়া গ্রামের কৃষক আবু সাইদের প্রায় ৩০-৩২ হাজার টাকা মুল্যের একটি বকনা বাছুর মারা গেছে। একই গ্রামের কৃষক আবদুল মতিনের প্রায় ৮০-৮২ হাজার টাকা মুল্যের একটি গাবিন গরু ও আন্ধারুপাড়া গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান মানিকের প্রায় ৫০-৫২ হাজার টাকা মুল্যের ১টি ষাঁড় বাছুর গরু মারা গেছে। রোগটি নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ গোটা শেরপুর ( উত্তর ) ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক ও খামাড়িগণ। রোগ প্রতিরোধে জরুরী ভিত্ততে আক্রান্ত এলাকা শেরপুর ( উত্তর )’র উপজেলাগুলোর গবাদিপশুকে দ্রæত ভ্যাকসিন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।

জানা গেছে, প্রায় ৩ মাস আগে নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোক্তভোগী কৃষকরা তাদের গরুর শরীরে প্রথম লাম্পী স্কীন রোগের উপস্থিতি টের পান। রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে গুটি বের হয়ে শরীর ফুলে যায় পচন ধরে ও রক্ত বের হয়। গরুর শরীর গরম থাকে। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়। সঠিক চিকিৎসা না নিলেই মারা যায়। বর্তমানে এ রোগ আস্তে আস্তে নালিতাবাড়ী উপজেলা ও পাশ্বরবতী ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ায় আতংকে রয়েছেন কৃষক ও খামারিগণ। নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইনিয়নের পলাশীকুড়া গ্রামের ক্ষদ্র খামারি কৃষাণী মরিয়ম বেগম ইনকিলাবকে বলেন, তার খামারে ১১টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে দেড় বছর বয়সী ১ টি ষাড় বাছুর গরু লাম্পী স্কীন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত তার প্রায় ৬ হাজার টাকা চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়েছে। এমতাবস্থায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। ক্ষদ্র খামারি কৃষক আন্ধারুপাড়া গ্রামের লালচাঁন মিয়ার ৩টি ষাঁড় গরু আক্রান্ত হলে চিকিৎসায় ১টি সুস্থ হলেও ২ ষাঁড় গরুর চিকিৎসা এখন ও চলছে।

এছাড়া ওই এলাকার কৃষক রুহুল আমীনের ১টি, মুনসুর আলীর ১টি ও পলাশীকুড়া গ্রামের কৃষাণী আম্বিয়া খাতুনের ১টি গরুর চিকিৎসা চলছে। তারা বলেন, লাম্পী স্কীন রোগ যাতে আর না ছড়ায় তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আক্রান্ত এলাকার গবাদিপশুদেরকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা দরকার।

ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তারা বলেন, লাম্পী স্কীন ডিজিস মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই এই রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুকে আলাদা করে মশারীর ভেতর রাখতে হবে। পাশাপাশি আক্রান্ত হওয়ার আগেই সরকারি ভ্যাকসিন না পেলে নিজ উদ্যোগে বেসরকারি কোম্পানির ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। তাহলে কৃষকের ক্ষতির সম্ভবনা কম।’

’ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) মো: ফারুক আল মাসুদ জানান, আমাদের উপজেলায় ও ইদানিং লাম্পি স্কিন রোগের প্রদুর্ভাবের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেহেতু মাছির মাধ্যমে রোগটি ছড়ায় সেজন্য কৃষক ও খামারিদের আক্রান্ত পশু অবশ্যই মশারির নিচে রাখতে হবে যাতে মাছি বসতে না পারে। তার পর ও পশু সম্পদ বিভাগকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।’

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop