১০:১৭ পূর্বাহ্ন

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২৪ ১০:৩২ পূর্বাহ্ন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশীয় কারিগরি জ্ঞান [Indigenous Technical Knowledge (ITK)] সম্পর্কিত কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল  [৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি.] অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের আপামর জনসাধারনের দেশীয় কারিগরি জ্ঞান সম্পর্কিত কর্মশালা। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে অবস্থিত সাংবাদিক লিয়াকত আলী অডিটোরিয়ামে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা এবং উদ্ভাবনী কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মাদ দিদারুল ইসলাম। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান। গবেষণা প্রকল্পের প্রধান বক্তা হিসেবে তথ্য পরিবেশন করেন ‘Identification and Efficacy Assessment of Indigenous Technical Knowledges (ITKs) as Climate Smart Agriculture (CSA) Technology’ শীর্ষক গবেষণা প্রকলপের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ মতিউল ইসলাম এবং সহযোগী হিসেবে ছিলেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের গ্রাজুয়েট  চঞ্চল বিশ্বাস, সাবরিনা ইমরোজ,  সুমনা সরকার এবং মো. আমিনুল খান। গবেষণা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় প্রাচীন কারিগরি জ্ঞান খুঁজে বের করা এবং এর ব্যবহার ও উপযোগিতাসমূহ বৈজ্ঞানিকভাবে পর্যালোচনা করা। গবেষণা প্রকল্পের জন্য তথ্য ৫টি জেলার ৫টি উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলাগুলোর দেড় ডজনের অধিক ইউনিয়নকে নির্বাচন করা হয়েছিল । এগুলো হচ্ছে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার শিবপুর , চিতলমারী ও চরবানিয়াড়ী ইউনিয়ন; সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমারী ও শ্যামনগর ইউনিয়ন; খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ও চাঁদখালী ইউনিয়ন; গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার  আমতলী ও কোটালীপাড়া ইউনিয়ন; যশোর জেলার সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠী ও হৈবতপুর ইউনিয়ন। গবেষণা প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকবৃন্দের কাছ থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছে। গবেষণা প্রকল্পটির প্রথম অংশটির তথ্য সংগ্রহ পরিচালিত হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। গবেষণা প্রকল্পের জন্য প্রত্যেক উপজেলা থেকে ১০০ জন করে মোট ৫০০ জন সম্মানিত কৃষকদের বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. কাজী মোহাম্মাদ দিদারুল ইসলাম বলেন এটি খুবই চমৎকার উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে দেশব্যাপী এই প্রকল্পের কাজ বিস্তৃত করার অনুরোধ করেন এবং প্রাপ্ত দেশীয় প্রাচীন কারিগরি জ্ঞানসমূহকে বই আকারে প্রকাশিত হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন । প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রফেসর ড. শামীম আহমেদ কামাল উদ্দিন খান বলেন এগুলো খুবই পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি এবং ভবিষ্যতে এ গবেষণা কাজে সম্ভব সকল ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে খুলনার নিকটস্থ স্থানসমূহের কৃষকসহ মোট ৬৫ জন উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ১২, ২০২৩ ৬:২৪ অপরাহ্ন
১ম বারের মতো সিএসআরের আওতায় বাকৃবিতে ৩ গবেষণা প্রকল্প
বিজ্ঞান ও গবেষণা

মো. শাহীন সরদার, বাকৃবি প্রতিনিধিঃ ফল ও সবজির সংরক্ষণ ক্ষতি কমানো, তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন বাড়ানো ও মুরগির এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দেশীয় স্ট্রেইন নিষ্ক্রিয়করণ করে ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে তিনটি গবেষণা প্রকল্পের উদ্বোধন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষিতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন উন্মোচনের লক্ষ্যে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) প্রকল্পের আওতায় গবেষণা প্রকল্পে ২কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছেন ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (ডিবিবিএল)। শনিবার  (১২ আগস্ট ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মঞ্জুরুল আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিবিএল-সিএসআর-গ্রাটা সেক্রেটারিয়েটের প্রকল্প সমন্বয়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.মো. আবুল মনসুর, ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর প্রমুখ।
কর্মশালার শুরুতেই ‘বাংলাদেশে ফল ও সবজির সংরক্ষণ ক্ষতি কমানোর জন্য হিমাগার সমস্যার সমাধান’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক চয়ন কুমার সাহা। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ৭২ প্রজাতির ফল এবং ১৫৬ প্রজাতির সবজি উৎপাদিত হয়। সবজি উৎপাদনে দেশের অবস্থান তৃতীয় এবং ফল উৎপাদনে দশম হলেও রপ্তানীতে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এতে সংরক্ষণজনিত ক্ষতি হয় প্রায় ২২ থেকে ৪৪ শতাংশ। এই ক্ষতি কমাতেই হর্টিকুল (হর্টিকালচার এবং কোল্ড স্টোরেজ পদ্ধতির সমন্বয়) পদ্ধতির মাধ্যমে নির্ধারিত কিছু ফল ও সবজির ওপরে গবেষণা করা হবে। এ পদ্ধতিতে ফল ও সবজি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ ক্ষতি কমানো যাবে। সংরক্ষিত ফল বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরে ‘উৎপাদন এবং জলবায়ুু অভিযোজন বৃদ্ধির জন্য নাইল তেলাপিয়া (নাইলোটিকা) মাছের একটি উচ্চ-ফলনশীল জাতের বিকাশ’ বিষয়ে উপস্থাপনা প্রদান করেন ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলাম কাদের খান। এসময় তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তেলাপিয়ার বিশুদ্ধ প্রজাতি নিয়ে এসে আণুবিক্ষনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রজনন ঘটিয়ে অধিক উৎপাদনশীল প্রজাতি তৈরী করা হবে। এতে উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া ‘বাংলাদেশে মুরগির এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দেশীয় স্ট্রেইন নিষ্ক্রিয়করণ করে ভ্যাকসিনের উন্নয়ন’ বিষয়ক নিজস্ব গবেষণার উপর আলোকপাত করেন প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগম। তিনি বলেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের দেশীয় স্ট্রেইন থেকে তৈরি করা হবে ওই ভ্যাকসিন। গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন হলে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিনের আর কোনো অপ্রতুলতা থাকবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালন আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, প্রথমবারের মতো কৃষি গবেষণায় ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। এর মধ্যে ব্র্যাকের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলের অবহেলিত কৃষকদের জন্য ফসলের বীজ, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, পাওয়ার টিলার, ট্র্যাক্টরসহ বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। করোনাকালীন দুইবছর কোনো আমদানী ছিলো না। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের জন্যই দেশে খাদ্য সংকট তৈরী হয়নি। কৃষিবিদদের অবদানের কথা মাথায় রেখেই কৃষিতে ডাচ-বাংলার এই অর্থায়ন। পাশাপাশি গবেষণা প্রস্তাবনাগুলো দেখে আমার মনে হয়েছে যে দেশের জন্য এই গবেষণাগুলো খুবই জরুরি।
প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের গবেষণার অবস্থান প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে। শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। এই গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডকে ধন্যবাদ জানাই।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ১৪, ২০২৩ ৫:০৫ অপরাহ্ন
ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্যে বাকৃবিতে খাদ্য প্রযুক্তি প্রদর্শনী
কৃষি বিভাগ

মাইক্রো, ছোট, মাঝারি উদ্যোক্তরা ফুড বেভারেজের ৯৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে। একটা বয়সের পর শরীরে ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় । যার মূল কারণ শরীরে সঠিকভাবে পুষ্টি গ্রহণ না করা। কথাগুলো বলেছেন প্রফেসর ড.লুৎফুল হাসান উপাচার্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) স্বাস্থ্যকর খাদ্য পণ্য নিশ্চিত করণে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি (এমএসএমই) উদ্যোক্তাদের জন্য আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় খাদ্য প্রযুক্তি প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

তিনি আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই প্রদশর্নী গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। এমএসএমইকে সঠিকভাবেভাবে পরিচালনা করতে পারলে একটি বৃহৎগোষ্ঠী উপকৃত হবে।

রোববার (১৪ মে) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাকৃবির ফুড টেকনোলজি এবং গ্রামীণ শিল্প বিভাগ এবং গ্লোবাল এলায়েন্স ফোর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজের সভাপতিত্বে এবং সহযোগী অধ্যাপক ড. আফজাল রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন (ভার্চুয়ালি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপদ কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিম, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জাতীয় সমিতির( নাসিবের) সভাপতি মো নুরুল গনি।

এছাড়া নাসিবের ময়মনসিংহ ও জাতীয় পর্যায়ের সদস্যবৃন্দ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনের সামনের মুক্তমঞ্চে একটি খাদ্য প্রযুক্তি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এখানে ৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন খাদ্য পণ্য প্রদর্শন করা হয়। যেগুলো প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রক্রিয়াকরণ করে তৈরি করা হয়েছে।

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম।
এ সময় প্রকল্প প্রধান ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ বলেন, শিল্প কারখানাগুলোর খাদ্য পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে যথেষ্ট জ্ঞানের অভাব আছে। তাই ইন্ডাস্ট্রি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে আমরা এই প্রোগ্রামের আয়োজন করেছি। এতে জ্ঞান ভাগাভাগির মাধ্যমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। গেইনের সাথে বাকৃবির প্রজেক্ট চলছে । এর একটি উদ্দেশ্য হলো মার্কেটে প্রচলিত কম খরচের খাদ্য পণ্যগুলো শনাক্তকরণ, যা খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে। প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে খাদ্য প্রযুক্তি প্রদর্শনী ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোগক্তাদের শক্তিশালী করে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতা অর্জনই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুল আলিম বলেন, এমএসএমই চাইলেই সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার প্রধান করতে পারে না। পণ্য উৎপাদনের জন্য তাদের ক্ষুদ্র অর্থ প্রদান করা হয়, যার জন্য চাইলেও স্বাস্থ্যকর খাবার প্রদান করতে পারে না। কারণ ভোক্তারা স্বাস্থ্যকর খাবার থেকেও বেশি তারা দাম কমের দিকে নজর বেশি দেয়। সরকার এখন বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে এমএসএমইকে সমর্থন করে থাকে কারণ তা না হলে বড় কোম্পানিগুলো এইসব পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে অনেক সুবিধা ভোগ করবে। তাই প্রত্যেক জেলার এমএসএমএইকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খাবার গুণগত মান উন্নয়ন করণে প্রদর্শন ও প্রোগ্রামের আয়োজন করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১০, ২০২৩ ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
গবেষণায় ফিরে এলো বিলুপ্তপ্রায় জারুয়া মাছ
বিজ্ঞান ও গবেষণা

একের পর এক সফলতা অর্জন করে চলেছেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরের বিজ্ঞানীরা। গুতুম, টেংরাসহ অন্যান্য বিলুপ্ত মাছের পোনা উত্পাদনের পর এবার জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনে সফলতা দেখিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রের একদল বিজ্ঞানী এই মাছটি রক্ষায় ২০১৮ সাল থেকে নিবিড়ভাবে গবেষণা শুরু করেন। অবশেষে সেই সফলতা আসে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। জারুয়া মাছের এ গবেষণা সফলতার ফলে ব্যক্তি মালিকাধীন ও সরকারি মত্স্য হ্যচারিসমূহে জারুয়া মাছের পোনা প্রাপ্তি সহজতর হবে বলে ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে। কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলীর নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালিহা হোসেন, ইশতিয়াক হায়দার, শ্রীবাস কুমার সাহা, তাশরিফ মাহমুদ মিনহাজ এই গবেষণায় অংশ নেন।

জারুয়া মাছ মূলত বাংলাদেশের মিঠাপানির একটি মাছ। মাছটির (বৈজ্ঞানিক নাম Chagunius chagunio)। দেশের উত্তর জনপদে মাছটি উত্তি নামে পরিচিত। মিঠাপানির জলাশয় বিশেষ করে পাথুরে তলদেশ ও অগভীর স্বচ্ছ নদীতে এদের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মাছটি সুস্বাদু, মানবদেহের জন্য উপকারী অণুপুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ এবং উত্তরাঞ্চলে খুবই জনপ্রিয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একসময় মাছটির প্রাচুর্য ছিল। মাছটির উত্তর জনপদে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু জলাশয় দূষণ অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদীতে বানা ও কারেন্ট জালের ব্যবহার এবং চৈত্র মাসে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা নানাবিধ কারণে বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়ায় এ মাছের প্রাচুর্যও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটিকে বিপন্নের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের দীর্ঘ পাঁচ বছর গবেষণা চালিয়ে প্রথম বারের মতো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উত্পাদনের কলাকৌশল উদ্ভাবনে সফলতা লাভ করেছে।

ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, জারুয়া মাছের প্রধান প্রজননকাল জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রজনন মৌসুমের এক-দুই মাস আগেই নদনদী, বিল, হ্রদ ইত্যাদি থেকে সুস্থ-সবল ও রোগমুক্ত ১০০-১৫০ গ্রাম ওজনের জারুয়া মাছ সংগ্রহ করে পূর্ব প্রস্তুতকৃত পুকুরে শতাংশে ১৫০টির সঙ্গে দুটি কাতলা, দুটি সিলভার কার্প, তিনটি রুই এবং তিনটি রাজপুঁটি মজুত করে এক-দুই মাস প্রতিপালন করে প্রজনন উপযোগী ব্রড মাছ তৈরি করা যায়।

মজুতকৃত মাছগুলোকে প্রতিদিন দেহ ওজনের ৫-৩ শতাংশ হারে ৩০ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ সম্পূরক খাবার সরবরাহ করতে হবে। নিয়মিত পানির গুণাগুণ যেমন তাপমাত্রা, পিএইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া ও মোট ক্ষারত্বের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মজুতের পর থেকে প্রতি ১৫ দিন পরপর জাল টেনে মাছের দেহের বৃদ্ধি ও পরিপক্বতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য পুকুরে এয়ারেটর ব্রড স্থাপন করা যেতে পারে।

একটি পরিপক্ব মা-মাছ থেকে বয়স ও ওজনভেদে প্রতি ১০০ গ্রাম দৈহিক ওজনের জন্য ১২ হাজার থেকে ২২ হাজার ১৭৫টি ডিম পাওয়া যায়। মাছটি প্রায় ৫০ সেমি এবং ২৫০-৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে অঞ্চলভেদে ১৫০-২০০ গ্রাম থেকেই স্ত্রী মাছ প্রজননক্ষম হতে শুরু করে।

সিস্টার্নে স্থাপনকৃত হাপায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিশ্চিত করতে কৃত্রিম ঝরনা ব্যবহার করা হয়। প্রজননের জন্য জারুয়া মাছের স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে কৃত্রিম হরমোন ওভোহোম দ্রবণ বক্ষ পাখনার নিচে ইনজেকশন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজননে একক মাত্রার হরমোন ইনজেকশন প্রতি কেজি পুরুষ মাছকে ০.৫ মি.লি. হারে এবং স্ত্রী মাছকে ২.০ মি.লি. হারে প্রয়োগ করা হয়।

হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের ১৮-২০ ঘণ্টা পর স্ত্রী মাছকে চাপ প্রয়োগ করে ডিম বের করা হয় এবং পুরুষ মাছের স্পার্ম বের করে ০ দশমিক ৯ শতাংশ লবণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করা হয়। উক্ত দ্রবণ ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে পাখির পালক দিয়ে দুই-তিন মিনিট নাড়ানো হয় এবং ফ্রেশ পানি দিয়ে ধুয়ে ট্রেতে কৃত্রিম ঝরনায় স্থানান্তর করা হয়। ডিম ছাড়ার ৮০-১০৪ ঘণ্টা পর ডিম থেকে রেণু বের হয়। রেণু বের হওয়ার ৭২ ঘণ্টা পর থেকে রেণুকে খাবার দিতে হবে। রেণু পোনাকে সিদ্ধ ডিমের কুসুমের দ্রবণ দিনে ছয় ঘণ্টা পরপর চার বার দিতে হবে। হাপাতে রেণু পোনাকে এভাবে সপ্তাহব্যাপী রাখার পর নার্সারিতে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ছোট পুকুর (১-৫ শতক) নার্সারি হিসাবে ব্যবহার করা যায় এবং সঠিক পরিচর্যায় ৫০-৬০ দিনের মধ্যে আঙুলি পোনায় পরিণত হয়।

কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী জানান, ‘বিলুপ্তপ্রায় এই মাছটি খানসামার জয়গঞ্জ এলাকার আত্রাই নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়। এরপর দীর্ঘ গবেষণার পর কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনে সফলতা আসে। আমরা প্রযুক্তি হেড অফিসে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে মত্স্য বিভাগের মাধ্যমে চাষি পর্যায়ে যাবে জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদনের কৌশল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, দেশের মত্স্য উত্পাদনে দেশীয় ছোট মাছের অবদান ৩০-৩৫ শতাংশ। দেশীয় মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। জারুয়া মাছের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা এর নতুন সংযোজন। মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা কার্যক্রম সাম্প্রতিক কালে জোরদার করা হয়েছে এবং দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে গবেষণা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব দেশীয় মাছকে পুনরুদ্ধার করার জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৩০, ২০২৩ ১২:৫৩ অপরাহ্ন
মরিচ গাছের পোকা দমনে কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরামর্শ
কৃষি বিভাগ

নানা সময় মরিচ গাছের যত্ন নিয়ে সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। বিশেষ করে পোকা দমন নিয়ে। কারণ মরিচ গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফেলে পোকা। এতে দুর্বল হয়ে যায় গাছ। ফলে কমে যায় ফলন। এ থেকে প্রতিকারের উপায় জানিয়েছে কৃষি তথ্য সার্ভিস।

মরিচের ফল ছিদ্রকারী পোকার লক্ষণ
এই পোকা কচি ফল ও ডগা ছিদ্র করে ভেতরে কুরে কুরে খায়। এরা ফুলের কুঁড়িও খায়।

প্রতিকার
ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। চারা রোপণের ১৫ দিন পর থেকে ক্ষেত ঘন ঘন পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। জৈব বালাইনাশক ব্যবহার যেমন- নিমবিসিডিন ৩ মি.লি. বা লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

এছাড়া শতকরা ১০ ভাগের বেশি ক্ষতি হলে যে কোনো একটি বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। যেমন- সাইপারমেথ্রিন ১ মি.লি. বা ডেল্টামেথ্রিন ০.৫ মিলি বা প্রোপেনোফস (৪০%), সাইপামেথ্রেন (২.৫%) ২ মিলি বা সুমিথিয়ন ২ মিলি অথবা ডায়াজিনন ২ মি.লি. বা লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

মরিচের জাব পোকার লক্ষণ
এই পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফেলে। গাছকে দুর্বল করে দেয়।

প্রতিকার
গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা। প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই দেওয়া। পরিষ্কার পানি জোরে স্প্রে করা। ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা। তামাকের গুড়া (১০ গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫ গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা। প্রতি গাছে ৫০টির বেশি পোকা দেখা দিলে ইমিডাক্লোপ্রিড ০.৫ মিলি/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

মরিচের সাদা মাছি পোকার লক্ষণ
এরা পাতার রস চুষে খায়, ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে গাছ। পাতায় অসংখ্য সাদা সাদা পাখাযুক্ত মাছি দেখা যায়। ঝাঁকি দিলে উড়ে যায়।

প্রতিকার
সাদা আঠাযুক্ত বোর্ড স্থাপন বা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা। নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করা। ৫০ গ্রাম সাবানের গুড়া ১০ লিটার পানিতে গুলে পাতার নিচে সপ্তাহে ২-৩ বার ভালো করে স্প্রে করা। সাথে পাঁচ কৌটা গুল (তামাক গুড়া) পানিতে মিশিয়ে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ইমিডাক্লোপ্রিড ০.৫ মিলি/লিটার বা ২ মিলি ডায়মেথয়েড গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

মরিচের থ্রিপস পোকার লক্ষণ
এর আক্রমণে পাতা কুঁকড়ে যায়। পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে।

প্রতিকার
গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা। প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা। পরিষ্কার পানি জোরে স্প্রে করা। ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা। তামাকের গুড়া (১০ গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫ গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা। বেশি পোকা দেখা দিলে ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক ০.৫ মিলি/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৭, ২০২২ ১:৫৯ অপরাহ্ন
মাছের তথ্য জানাচ্ছে বাকৃবির জাদুঘর
বিজ্ঞান ও গবেষণা

দেশের প্রথম মৎস্য জাদুঘর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে (বাকৃবি) মৎস্য জাদুঘর। এতে প্রায় ২৩৫ প্রজাতির দেশীয় মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণীর এক বিশাল সংগ্রহশালা।

মূলত এটি ‘ফিশ মিউজিয়াম অ্যান্ড জার্মপ্লাজম সেন্টার’ যা বাকৃবির মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আওতাধীন একটি সংগ্রহশালা। 

সহজেই মাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারা, বিলুপ্ত এবং বিলুপ্তপ্রায় সব স্বাদু পানি ও সামুদ্রিক মাছ এবং জলজ প্রাণী সংরক্ষণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই জাদুঘরটি। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং বাংলাদেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ মৎস্য জাদুঘর।

জানা যায়, মাছের নমুনাগুলো বিভিন্ন আকারের কাঁচের জারে ফরমালিনে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি মাছের জার বরাবর ওপরে দেয়ালে সাঁটা পোস্টারে প্রদর্শন করা হয়েছে ঐ মাছেরই পরিপক্ব বয়সের আলোকচিত্রসহ প্রচলিত ও বৈজ্ঞানিক নাম এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। গবেষণা কাজে সহায়তার জন্য বড় এবং ছোট দেশি প্রজাতির মাছের জন্য এ্যাকোরিয়াম, ক্রায়োজেনিক মাছের একটি জিন ব্যাংক এবং ডিএনএ সংগ্রহশালা করার পরিকল্পনা রয়েছে। একটি কক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে থ্রিডি অডিও-ভিজুয়াল-সুবিধা। কক্ষটিতে প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিলুপ্ত মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জীবাশ্মের প্রতিলিপি প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। রয়েছে কোটি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত প্রাণীর কঙ্কাল।

জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, ১০ বছর ধরে গবেষণার কাজে এবং শখের বশে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের নমুনা সংগ্রহ করেন বাকৃবির মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি এবং জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা আলী রেজা হোসেন। অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ড. মোস্তফা আলী রেজা হোসেন নিজ উদ্যোগে বাকৃবির নয়নাভিরাম সবুজ চত্বরে স্থাপন করেন ‘ফিশ মিউজিয়াম অ্যান্ড জার্মপ্লাজম সেন্টার’। পরে ২০১০ সাল থেকে এটিকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধান নেওয়া হয়। জাদুঘরটি মোট পাঁচটি কক্ষ নিয়ে সাজানো।

এই জাদুঘরটির প্রথম কক্ষটির শিরোনাম ফ্রেশওয়াটার ডলফিন অ্যান্ড ফিশ (মিঠাপানির ডলফিন ও মাছ), দ্বিতীয়টির এনসিয়েন্ট অ্যান্ড মিডিয়া, তৃতীয়টির সিলোরিফরমিস বা বিড়াল জাতীয় মাছ, চতুর্থটির সিপ্রিনিফরমিস বা কার্প জাতীয় মাছ এবং পঞ্চমটির শিরোনাম পার্সিফরমিস বা কই জাতের মাছ। এছাড়াও জাদুঘরের করিডোরে আছে আবহমানকাল ধরে এ দেশের জেলেদের ব্যবহার্য বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরার উপকরণ আর দেশের মৎস্য ঐতিহ্যের ইতিহাস ও নিদর্শন।

এছাড়াও জাদুঘরে প্রায় ৪০টি জীবাশ্ম ও কঙ্কাল সংগৃহীত আছে। এর মধ্যে হাঙরের চামড়া, ৫৪০ মিলিয়ন বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া দুই দাঁতবিশিষ্ট বাঘের কঙ্কাল, ৫৪ মিলিয়ন বছর আগে বিলুপ্ত জলজ প্রাণী গারপাইক, হর্সগ্রাস, স্টিংরের প্রতিলিপি, ১৫ মিলিয়ন বছর আগে বিলুপ্ত হাঙরের চোয়াল ও দাঁত, ৩৫ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত কোরালের প্রতিলিপি অন্যতম। এই মৎস্য জাদুঘরে স্বাদু পানির প্রায় ২৩০ প্রজাতিসহ রয়েছে হাজার বছরের বিলুপ্ত প্রজাতির ফসিল যা চারটি সুপরিসর গ্যালারিতে সাজানো হয়েছে।

ফরমালিনের দ্রবণে বড় বড় কাচের সিলিন্ডারে এই সমস্ত মাছ সংরক্ষিত আছে। প্রতিটি মাছের ওপরে দেওয়ালের সঙ্গে টাঙানো আছে নয়নাভিরাম আলোকসজ্জা। আলোকসজ্জার সঙ্গে বৈজ্ঞানিক নামসহ মাছের যাবতীয় বর্ণনা দেওয়া আছে যাতে করে শিক্ষার্থীরা এখান থেকে পরিপূর্ণ জ্ঞান নিতে পারে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ৭:৫৫ অপরাহ্ন
বিএলআরআই’র ‘বার্ষিক রিসার্চ রিভিউ কর্মশালা ও প্রযুক্তি হস্তান্তর-২০২২’ সমাপনী অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞান ও গবেষণা

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) কর্তৃক ২০২১-২২ অর্থবছরে সমাপ্ত গবেষণাসমূহের ফলাফল ও অগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ‘বার্ষিক রিসার্চ রিভিউ কর্মশালা ও প্রযুক্তি হস্তান্তর-২০২২’ সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিএলআরআই এর মূল কেন্দ্র সাভারে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালাটির সমাপনী ঘোষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত অতিরিক্ত সচিব জনাব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার এবং সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত যুগ্ম সচিব জনাব শাহীনা ফেরদৌসী।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের বর্তমান মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দুইদিনব্যাপী চলা এই কর্মশালায় অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক (গবেষণা) ড. নাসরিন সুলতানা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, বাংলাদেশ দেশ আজকে বটমলেস বাস্কেট থেকে বাস্কেট অব ডেভেলপমেন্টে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে কৃষির অবদান অভূতপূর্ব। সারা বিশ্বেই এই উন্নয়ন দৃশ্যমান। মুক্তিযুদ্ধের পরে দেশে সবচেয়ে বেশি অবদান এদেশের কৃষিবিদদের। দেশের কৃষি খাত বিকশিত না হলে দেশের কিছুই যে ভালো মতো চলবে না সে কথা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন। সেজন্য তিনি কৃষি খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তৎকালীন সময়ে যে চিন্তা করেছিলেন, তারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই এসডিজি গোলগুলোতে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্যামল চন্দ্র কর্মকার বলেন, রিসার্চ পেপারের মূল্যায়ন করতে হবে, গবেষণার মূল্যায়ন করতে হবে। ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল রিভিউয়ের মাধ্যমে গবেষণাগুলোকে গ্রেডিং করতে হবে। সবচেয়ে ভালো গবেষণাগুলো নিয়ে প্রচার প্রচারণা বাড়াতে হবে যাতে সারা বিশ্বের মানুষ জানতে পারে আমাদের দেশে কি কাজ হচ্ছে। গবেষণা থেকে সম্প্রসারণ পর্যন্ত যে সকল গ্যাপ আছে তা দূর করতে হবে। গবেষণা ও সম্প্রসারণ সমান গতিতে চলতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের পূর্ণ মেধা ব্যবহার করে দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার ভাবনা থেকে কাজ করতে হবে। আমাদের চলমান গবেষণা কার্যক্রমগুলোর পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এমন গবেষণা করতে হবে যার আউটপুট থাকে। এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে যেনো তা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়।

দেশের প্রান্তিক খামারিদের প্রয়োজনে লাগে। একই সাথে তরুণ ও আধুনিক খামারিদের চাহিদা বিবেচনায় নিয়েও আমাদের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। আগামী দিনের গবেষণা প্রকল্পসমূহকে ঢেলে সাজানো হবে, যেন তা টার্গেট পূরণে সহায়তা করে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহায়তা নেওয়া হবে। দুইটি প্রতিষ্ঠান এক হয়ে কাজ করলে নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

উক্ত আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বিএলআরআই-এর সাবেক মহাপরিচালকগণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আগত সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, প্রাণী ও পোল্ট্রি উৎপাদন ও খামার ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত বিশেষজ্ঞ এবং সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিএলআরআই-এর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ১৬, ২০২২ ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
বেগুনে নয়, চাষের মাটিতেই ভারী ধাতু: বাকৃবির গবেষণা
ক্যাম্পাস

বেগুনে ভারী ধাতুর উপস্থিতি তা থেকে ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা করছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, শুধু বেগুনে নয়, যে মাটিতে ফসল উৎপাদন হচ্ছে তাতেই রয়েছে ক্ষতিকর ভারী ধাতু লেড, ক্যাডমিয়াম ও নিকেলের উপস্থিতি। অন্য সবজি বা ধান-গমেও মিলতে পারে এসব ক্ষতিকর ধাতু।

সম্প্রতি জামালপুরের ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার মাটিতে চাষ হওয়া বেগুন নিয়ে বাকৃবির গবেষকরা একটি গবেষণা করেন। সেখানে দেখা গেছে, বেগুনে ভারী ধাতুর উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি। পরে এর কারণ খুঁজতে ফসলের মাটি পরীক্ষা করা হয়। মাটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, মাটিতেও রয়েছে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর ভারী ধাতুর (লেড, ক্যাডমিয়াম ও নিকেল) উপস্থিতি।

এই মাটিতে ফলানো অন্য ফসলেও এসব ভারী ধাতুর উপস্থিতি থাকতে পারে। তবে কী কারণে মাটিতে লেড, নিকেল ও ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ বাড়ছে তা জানতে এবং এর প্রতিকারে আরও গবেষণা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন গবেষকরা। কারণ এসব ভারী ধাতু খাবারের সঙ্গে বছরের পর বছর নিয়মিত গ্রহণ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে অধ্যাপক ড. কাজী ফরহাদ কাদির, অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদের সমন্বয়ে বেগুন ও মাটির নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হয়। জামালপুরের ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে বেগুন ও মাটির নমুনা নিয়ে দুই বছর ধরে গবেষণা করা হয়। সম্প্রতি ওই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয় আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টে’।

এ বিষয়ে বেগুন চাষি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বেগুন ক্ষেতের পোকা মারতে চার ধরনের বিষ দিতে হয়। এই চার জাতের বিষ একসঙ্গে মিশিয়ে ক্ষেতে দিলে পোকা মরে, না হলে মরে না। আমার এক বিঘা জমিতে ৯ মাসে প্রায় ৩৬ হাজার টাকার বিষ দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, তবে আগামীতে বেগুন ক্ষেতে বিষ না দিয়ে নেট হাউজ তৈরি করে ফেলবো। এতে নিজের ক্ষতি, ফসলের ও মাটির ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আর এসব বিষ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির। কারণ, এই বছর বেগুনক্ষেতে দুই প্রকার বিষ দিয়ে পোকা মারলাম। কিন্তু, পরের বছর চার প্রকার বিষ দিয়ে পোকা মারতে হবে, না হলে বেগুন ক্ষেতের পোকা মরবে না। প্রতিবছর এভাবে বেগুন ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ বাড়াতে হয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাকৃবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী ফরহাদ কাদির বলেন, গবেষণাটা শুরু হয় ২০২০ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি ফান্ডে এবং পরবর্তীকালে একই দাতা সংস্থার আরেকটি ফান্ডে মোট দুই বছর আমাদের গবেষণা চলে। গবেষণায় আমরা জামালপুর জেলার ইসলামপুর ও মেলান্দহ উপজেলা থেকে বেগুন এবং যে মাটিতে বেগুন হচ্ছে সেই মাটি সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। সেখানে ভারী ধাতুর পাশাপাশি অন্য কিছু পুষ্টি উপাদানের মাত্রা কতখানি আছে তা দেখি।

তিনি বলেন, আমাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল, আমরা যে পরিমাণ বেগুন খাই সেখানে যে আয়রন, জিংক আছে তা আমাদের জন্য যথেষ্ট কি না তা দেখা। পাশাপাশি ক্ষতিকর উপাদান ভারী ধাতু আছে কি না তা জানার চেষ্টা করি। ভারী ধাতু লেড, নিকেল, ক্যাডমিয়াম ও কপার কতখানি আছে তা সহনীয় মাত্রার চেয়ে কম না বেশি; সেটা ক্ষতিকর হলে কতখানি ক্ষতি হতে পারে, তাও জানার চেষ্টা করেছি।

কাজী ফরহাদ কাদির বলেন, পাশাপাশি লেড, নিকেল ও ক্যাডমিয়াম পেলাম তা কোথা থেকে এলো। সেজন্য আমাদের মাটির সঙ্গে একটা যোগসূত্র স্থাপন করার চেষ্টা করেছি। সে ক্ষেত্রে গবেষণা করে দেখেছি লেড, নিকেল, ক্যাডমিয়াম ও কপার চারটি ধাতু মাটি থেকেই এসেছে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি মাটিতে এই চারটি ধাতু সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি আছে।

বাকৃবির কৃষি রসায়ন বিভাগের আরেক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, মাটিতে লেড, ক্যাডমিয়াম, নিকেল ও কপারের উপস্থিতি সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি। এর কারণে শুধু বেগুন নয়, অন্যান্য সবজি, এমনকী ধান-গমেও আসতে পারে। এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে বড় ঝুঁকির কারণ। এসব ধাতু শুধু জামালপুরের ইসলামপুর ও মেলান্দহের মাটিতে বেশি আছে বিষয়টি এমন না। আমরা ভালুকা ও গাজীপুরের মাটিতেও এসব ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছি। আমরা যদি মনে করি, গাজীপুর ও ভালুকায় কলকারখানা বেশি এই কারণে এসব জায়গার মাটিতে লেড, ক্যাডমিয়াম, নিকেলের উপস্থিতি বেশি। তা ঠিক নয়, কারণ, জামালপুরে তো কলকারখানা নেই। তাহলে সেখানে এসব ভারী ধাতু এলো কীভাবে?

তিনি আরও বলেন, মাটিতে ভারী ধাতুর যে উপস্থিতি পাওয়া গেছে, এর উৎস কী- রাসায়নিক সার, কীটনাশক, সেচের পানি নাকি অন্য কোনো উপায়ে মাটি নষ্ট হচ্ছে- এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন। যে সমস্ত উৎস থেকে ভারী ধাতুগুলো আসছে সেগুলো যদি আমরা বন্ধ করে দিতে পারি, তাহলে মাটিতে ভারী ধাতুর পরিমাণ কমে যাবে এবং খাদ্যে কম অনুপ্রবেশ করতে পারবে। এ বিষয়ে গবেষণার ওপর ভিত্তি করে নেওয়া পদক্ষেপে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সূত্র: সিটিনিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ১৫, ২০২২ ৮:১১ অপরাহ্ন
সামুদ্রিক শৈবালে ৫ প্রভাবক পেলেন শাবিপ্রবির গবেষক
বিজ্ঞান ও গবেষণা

সামুদ্রিক শৈবাল বা ফাইটোপ্লাংকটন (উদ্ভিদকণা) নিয়ে গবেষণা করে ৫ ধরণের প্রভাবক পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষক সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. সুব্রত সরকার। প্রভাবকগুলো সামুদ্রিক শৈবালকে বিভিন্ন দিক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন লাঘবে এ শৈবাল ‘বাফার বা সেইফটি শিল্ড’ হিসেবেও কাজ করছে। গবেষণা করে এমন তথ্য পেয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) একটি গণমাধ্যমের সাথে সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য তুলে ধরেন এ তরুণ গবেষক।

তিনি জানান, গবেষণায় ৫টি প্রভাবক পেয়েছেন তিনি। প্রথমটি ‘পুষ্টি উপাদান’, দ্বিতীয়টি ‘টার্বিডিটি বা পলি’ তৃতীয়টি ‘লবনাক্ততা’ চতুর্থটি ‘পানির তাপমাত্রা’ সর্বশেষ প্রভাবকটি ‘খাদক’। প্রথম প্রভাবকে ‘সিলিকেট, নাইট্রেট, ফসফেট’ রয়েছে। আমরা যেমন ভাত খাই ক্ষুধা মেটানোর জন্য, তেমনি শৈবালের ক্ষেত্রে এগুলো সে ভূমিকা পালন করছে, শৈবাল সেগুলো খেয়ে বেড়ে উঠে।

দ্বিতীয় প্রভাবকটি পানিতে বেশি বাড়লে অর্থাৎ পানির উপর স্তর পলি দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে গেলে সূর্যের আলো উদ্ভিদকণার কাছে পৌঁছাতে পারে না। ফলে খাদ্য উৎপাদন বা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে শৈবাল কমে যেতে পারে। তৃতীয় প্রভাবকে রয়েছে ‘লবনাক্ততা’ এবং চতুর্থটি ‘পানির তাপমাত্রা’। এ দুটির মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি শৈবালের অস্তিত্বের জন্য হুমকিসরূপ। সর্বশেষটি খাদক, শৈবাল এটাকে খায়। আর প্রধান খাদক হচ্ছে মাছ। এর মধ্যে শৈবাল ও মাছের মধ্যে একটি ভারসাম্য প্রয়োজন।

সমুদ্রে এ শৈবালের নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশের কোনো উপাদান এটাকে প্রভাবিত করছে? তা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শৈবালের নমুনা পরীক্ষা করেন এ গবেষক। এরমধ্যে পটুয়াখালী, ভোলা, সুন্দরবন, রাজশাহী, নোয়াখালীসহ উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে নমুনা ও পানি সংগ্রহ করেন। পানিতে থাকা ফ্যাক্টরগুলো উদ্ভিদকণাকে কীভাবে প্রভাবিত করে সে দিকটিও গবেষণায় উঠে আসে।

পানিতে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো বেশিরভাগ সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনের গাছগুলো থেকে প্রতিনিয়তই পাতা ঝরছে, সেগুলো জোয়ারের পানির মাধ্যমে মূল পানিতে মিশে পঁচে যায়। একপর্যায়ে তা পানিতে পুষ্টি উপাদান সৃষ্টি করে। নদীর মোহনাগুলোতে এগুলো বেশি থাকে। তাই উদ্ভিদকণা সেখানে বেশি হয়, সেখানে মাছসহ বিভিন্ন জলজদের বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়।

গবেষণায় উঠে আসে, নদীর মধ্য দিয়ে সমতল বা পাহাড় থেকে মোহনা বা সমুদ্রে নির্গত যে পদার্থগুলো আসে, নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে সেগুলোর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। ফলে উপকূল এলাকা ও মোহনায় লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে তা বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা প্যারা বনগুলো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অতিরিক্ত লবনাক্ততা সহ্য করতে পারে। এখন সারাদিন যদি তা লবণ পানি দিয়ে ঢাকা থাকে তখন তা ক্ষতিকর হয়ে দাড়ায়। এর প্রভাব উপকূলীয় কৃষি জমিতেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে বৈশ্বিক তাপমাত্রার পরিবর্তনে সঙ্গে মেরু অঞ্চলে বরফ গলা শুরু হয়েছে। এতে সমুদ্রে পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, এক্ষেত্রে শৈবাল বা ফাইটোপ্লাংকটন কি ভূমিকা রাখতে পারে? সে বিষয়টিও ছিল বলে জানান তিনি।

সুব্রত সরকার বলেন, পৃথিবীর চারভাগের মধ্যে তিনভাগই সমুদ্র। এখন শৈবাল বা ফাইটোপ্লাংকটনও উদ্ভিদ। এটি সমুদ্রে বেড়ে ওঠে। এরাও কার্বন-ডাই অক্সাইড ও সালেকসংশ্লেষন হয়। শৈবালেরা কার্বন ডাই অক্সাইড নেওয়ায় বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে বা উষ্ণায়ন লাঘবে ‘বাফার বা সেইফটি শিল্ড’ হিসেবে কাজ করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্লু-ইকোনমির অনেকগুলো উপাদান আছে। এরমধ্যে রয়েছে মাছ, সামুদ্রিক ঝিনুকসহ অন্যান্য উপাদান। বিদেশে এদের প্রচুর চাহিদা। আমাদের অর্থনৈতির জন্য এসব উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো রপ্তানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে বাংলাদেশ।

এ গবেষক বলেন, প্রত্যেকটি জিনিসের একটি অপটিমাম শর্ত আছে। ব্লু-ইকোনমির উপাদানগুলোর প্রধান উপাদান হল মাছ। যদি আমরা মাছ চাষ করতে চাই, তাহলে আমাদের দেখতে হবে পানির গুণাগুণ, খাবার এবং পুষ্টিগুণ ইত্যাদি। তখনই সেখানে মাছ চাষ করা যাবে। তাই ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে এবং বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনে বিবেচনায় শৈবাল বা ফাইটোপ্লাংকটন অন্যতম ভূমিকা রাখছে। সূত্র: বাংলা নিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ১৬, ২০২২ ১১:০০ পূর্বাহ্ন
গো-সম্পদ খাতে উন্নয়নে লাম্ফি স্কিন রোগ দমনে পদক্ষেপ জরুরি
প্রাণিসম্পদ

নিতাই চন্দ্র রায়: ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি বন্ধের পর আমাদের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে বাংলাদেশে গো-সম্পদ খাতে এক অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। এ কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কুরবানির ঈদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পশু বাংলাদেশেই উৎপন্ন হয়।

এ কারণে কুরবানির পশুর জন্য এখন আর তীর্থের কাকের মতো বাংলাদেশকে ভারত ও মিয়ানমারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। ফলে একদিকে যেমন আমাদের মাংসের উৎপাদন বেড়েছে, অন্যদিকে বেড়েছে দুধের উৎপাদন।

এছাড়া গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে পশুসম্পদ খাতের রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। মাংস ও দুধ ছাড়াও জৈব সার উৎপাদনের মাধ্যমে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি এবং প্রাণীর মলমূত্র থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনেও রয়েছে খাতটির বিশেষ অবদান।

বর্তমান সরকারের প্রাণিসম্পদবান্ধব কার্যক্রম, প্রাণিবিজ্ঞানীদের নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণা, মাঠকর্মীদের সঠিক কর্মকান্ড এবং খামারি ও কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদের এই অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। গ্রামের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে দুগ্ধ খামার।

বিদেশ থেকে প্রেরিত অর্থে গ্রামের বহু উদ্যমী যুবক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গো-খামার তৈরি করে, তা থেকে দুধ এবং মাংসের জন্য পশু বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হচ্ছেন। লাল সিন্ধি ও হলস্ট্রেইন ফ্রিজিয়ানের মতো অধিক দুধ প্রদানকারী গাভীও পালন শুরু করেছেন অনেক প্রগতিশীল খামারি। মাংস ও দুধ বিক্রি এবং এর প্রক্রিয়াকরণ কাজে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এককথায় প্রাণিসম্পদ খাতে উন্মোচিত হয়েছে এক বিরাট সম্ভাবনার দ্বার।

কিন্তু সম্প্রতি দেশব্যাপী লাম্ফি স্কিন রোগের (এলএসডি) প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই  সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হঠাৎ এ রোগের প্রাদুর্ভাব খামারিদের বড় দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। অনেকে ভয়ে আক্রান্ত পশু পানির দামে কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। ২০১৬ সালের দিকে প্রথম দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা ঝিনাইদহ ও যশোরে গরুর মধ্যে এলএসডি শনাক্ত করা হয়। ২০২০ সালে প্রায় ২৫টি জেলায় এলএসডির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এবার এ ভাইরাস রোগটির বিস্তার আরও বেশি। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের ধারণা, এবার কমপক্ষে ৫০টি জেলায় লাম্ফি স্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তাদের হিসাবে, সারা দেশে সাড়ে তিন লাখের বেশি গরু-মহিষ এই রোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শুধু ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার গরু এলএসডিতে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে মারা গেছে ৫০০ গরু। সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুরের পরিস্থিতি আরও খারাপ। ওই জেলায় প্রায় প্রতিটি খামার ও কৃষকের পরিবারেই লাম্ফি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু রয়েছে। অদ্যাবধি ওই জেলায় প্রায় শতাধিক গরু মারা গেছে মারাত্মক ওই রোগে। দেশের উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে নীলফামারী, নাটোর, দিনাজপুর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা এই রোগের হটস্পটে পরিণত হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়নের গরু এলএসডিতে আক্রান্ত হয়েছে। টাঙ্গাইলের মধুপুর ও ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গবাদিপশুর মধ্যে মহামারী আকারে এলএসডির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এসব উপজেলায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে  আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন শুধু প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে  শতাধিক গরু-বাছুর।

প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে, এলএসডি এক ধরনের ভাইরাসজনিত চর্মরোগ। এটি মশা-মাছি ও খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়ায়। আবার আক্রান্ত গরুর লালা খাবারের সঙ্গে মিশে এবং খামার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড়-চোপড়ের মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর দুধেও এই ভাইরাস বিদ্যমান থাকায় আক্রান্ত গাভীর দুধ খেয়ে বাছুরও আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া আক্রান্ত গরুর সিমেনও এই রোগের অন্যতম বাহন। প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের লক্ষণ হলো জ¦র। এরপর ত্বকের ওপরে বড় আকারের গুটি তৈরি হয়। মানুষের জলবসন্তের মতো শরীর জুড়েই গুটি তৈরি হয়। কয়েক দিনের মাথায় সেগুলো ফেটে তরল নিঃসৃত হতে থাকে। এর কিছুদিন পর ওই গুটিগুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এলএসডি সব গরুর ক্ষেত্রে এক রকম হয় না।  যেসব গরু প্রথম আক্রান্ত হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং মৃত্যুর হার হয় বেশি। আক্রান্ত গরুর শরীরে ফোসকা পড়ে। কোনো কোনো গরুর  পা ও অ-কোষ ফুলে যায়। কোনো গরুর গলায় ঘা হয়। কিছু কিছু আক্রান্ত গরুর  চামড়ার নিচে পচন ধরে। সঠিক চিকিৎসার অভাবে গরু দুর্বল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গরুর মৃত্যুসহ নানা রকম মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক গরুর চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে। এতে চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। গর্ভবতী প্রাণীদের গর্ভপাত হতে পারে। রোগের তীব্রতা কম হলে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে এবং তীব্রতা বেশি হলে এক থেকে দেড় মাসে আক্রান্ত গরু সুস্থ হয়ে ওঠে।

গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক ও খামারি না বুঝেই হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে গরুর চিকিৎসা করাচ্ছেন। এর ফলে রোগ সেরে গেলেও দেখা দিচ্ছে নানারকম শারীরিক জটিলতা। দেশের বিভিন্ন আক্রান্ত অঞ্চলের জেলা-উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে গরু নিয়ে ভিড় করছেন বহু কৃষক ও খামারি। কিছু উপজেলায় আক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় মেডিকেল ক্যাম্প করা হচ্ছে। দ্রুত রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় জনবল সংকটে সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। ওষুধ বরাদ্দও রয়েছে অপ্রতুল। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কেই কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং এর বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়কে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে কৃষক ও খামারিদের পাশে দাঁড়াতে হবে। মেডিকেল ক্যাম্পের সংখ্যা ও ওষুধ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সবচেয়ে জরুরি এ রোগ থেকে পশুকে নিরাপদ রাখতে কৃষক ও খামারিদের সচেতন করে তুলতে হবে। করোনা মহামারীর মতো এ রোগ দমনে নানামুখী পরিকল্পনা ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।

লেখক : সাবেক মহাব্যবস্থাপক (কৃষি), বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন

সূত্র: দেশ রুপান্তর

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop