এক সপ্তাহেই হত্যা করা হয়েছে ৭টি বন্য হাতি
প্রাণ ও প্রকৃতি
দিনকে দিন বাড়ছে হাতি নিধনের ঘটনা। চলতি সপ্তাহেই হত্যা করা হয়েছে ৭টি বন্য হাতি। বনাঞ্চল দখল, চাষাবাদ আর হাতির দাঁত বিক্রির জন্য একটি সংঘবদ্ধ চক্র কখনও বিদ্যুস্পৃষ্ট কখনও বা গুলি করে, ফাঁদ পেতে হত্যা করছে হাতি। শেরপুর, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে হাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা।
সারাদেশে এশিয়ান হাতি রয়েছে ২৬৮টি। এদের দুই তৃতীয়াংশের বসবাস কক্সবাজার, শেরপুর ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে। হাতি চলাচলের জন্য রয়েছে ১২টি করিডোর।
বনাঞ্চল ধ্বংস, রোহিঙ্গা বসতি, পর্যাপ্ত খাদ্যাভাবসহ চলাচলের করিডোর চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতি। নষ্ট করছে ফসলের ক্ষেত, বাড়িঘর।
লোকালয়ে হাতি আসা ঠেকাতে দুর্বৃত্তরা ফসলের ক্ষেতে পল্লী বিদ্যুতের তারের সংযোগ বসিয়ে, কখনো বা গুলি করে হত্যা করছে হাতি। গত এক বছরে কক্সবাজার অঞ্চলে ১০টি ও শেরপুরে গত ২৬ বছরে ৩১টি হাতি হত্যা করা হয়।
এভাবে ফাঁদ পেতে হাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশবাদীরা।
এনভায়রনমেন্ট পিপল প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, কক্সবাজারে হাতি নিরাপদে নেই, আমাদের জীববৈচিত্র্য ও হাতিগুলো রক্ষার জন্য পরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বনবিভাগ জানায়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বনাঞ্চলে হাতির করিডোর ও আবাসস্থল বৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, “হাতির জায়গায় মানুষ চলে আসছে। হাতি যেসব জায়গায় ফ্রিভাবে চলাচল করতো সেখানে মানুষ ঘর উঠাচ্ছে, ধান চাষ করছে। যার ফলে এগুলো দেখে হাতির সাথে মানুষের কনফ্লিকটা হচ্ছে।”
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের কর্মকর্তা মো: সারওয়ার আলম বলেন, “আমরা প্রায় ২০টি এলিফেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করেছি। এই টিম স্থানীয় বনবিভাগ, স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে কিছু কৌশল অবলম্বন করে ঢোল পিটিয়ে, পটকার আওয়াজ দিয়ে তাদেরকে আবার বনাঞ্চলে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে।”
একের পর এক বন্যহাতির মৃত্যুতে এশিয়ান হাতি বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা আরও তীব্র হচ্ছে।