কর্মকর্তা সঙ্কটে ভুগছে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ
কৃষি বিভাগ
দেশের আশি ভাগ মানুষ কৃষির উপর এখনো নির্ভরশীল। তাই বাংলাদেশকে কৃষি প্রধান দেশ বলা হয়ে থাকে। দেশের অর্থনৈতিক চাকার মূল চালিকা শক্তি হলো কৃষি। কৃষির যত উন্নতি হবে ততই দেশের অর্থনীতি দৃঢ় ও সমৃদ্ধিশালী হবে।
মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রধান হলো খাদ্য। দেশের মানুষের খাদ্যর যোগান দিতে সরকার রাজস্ব খাত থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ভর্তুকী দিচ্ছে। নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। দেশের কৃষিকে দিনদিন আধুনিকায়ন করছে।
তবে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয়। যারা কৃষকদের জন্য পথের সারথী হয়ে কাজ করবে। দক্ষ জনবল না থাকলে কৃষিকে এগিয়ে নেওয়া কোনোদিন সম্ভব নয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলা কার্যালয় দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কটে ভুগছে। দেশের এত বড় বৃহৎ জেলায় কৃষি কর্মকর্তা না থাকায় কৃষি কাজকে এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশের বড় জেলাটির কৃষি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে কয়েকজন কর্মকর্তার পক্ষে অত্যন্ত দুরুহ হয়ে পড়ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলা কার্যালয় সৃত্রে জানা গেছে, রাজস্থলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নেই। দুর্গম এই এলাকাটিতে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দিয়ে এ উপজেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অর্থাৎ উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কট রয়েছে।
বিলাইছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঙ্কট রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষি কর্মকর্তার হয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে।
জেলার আরেক দুর্গম উপজেলা জুরছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাই কৃষি কর্মকতার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে।
বরকল উপজেলায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নেই। জেলা থেকে একজন কৃষি কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে এ গুরুত্বপূর্ণ কৃষি প্রধান উপজেলার কৃষি খাতকে পরিচালিত করা হচ্ছে।
জেলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা লংগদু উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা নেই। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে দিয়ে এ উপজেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এছাড়াও জেলা কৃষি সম্প্রসারণের গুরুত্বপূর্ণ পদ অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য)-১, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ)-১ এবং অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান)-১ খালি রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে ২০জন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ৮ জন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে দিয়ে দেশের বৃহৎ জেলার কৃষি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যে কারণে জেলার কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের নির্দেশিত কৃষি উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগকে চরম ভাবে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রাঙামাটি জেলার উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, কৃষির উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। সরকার দেশের কৃষির উন্নয়নে আমাদের যে নির্দেশ দিচ্ছে তা আমরা বাস্তবায়নে সর্বাত্বক চেষ্টা করছি।
বলেন, এখানে কৃষির উন্নয়ন করতে হলে অনেক জনবলের দরকার। আমাদের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী সঙ্কট রয়েছে। অনেক কর্মকর্তাকে কৃষির উন্নয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। যে কারণে আমাদের গতির কাজ কিছুটা ধীর হচ্ছে। কাজের গতি বাড়াতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে যাতে শূন্যপদগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।