খুলনায় কম দামে মাছ মেলে যেখানে
মৎস্য
সূর্য কেবল পূর্ব আকাশে উঁকি দিতে শুরু করেছে। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে রূপসা নদীর পশ্চিম তীরে রূপসা কেসিসি পাইকারি মৎস্য আড়তটি জমজমাট হয়ে উঠেছে।
এটি খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় পাইকারি মাছে বাজার। শীত উপেক্ষা করে মানুষের ঢল নেমেছে বাজারে।
নদ-নদী, খাল-বিলের সব ধরনের তাজা মাছ ছাড়াও সামুদ্রিক মাছে ভরপুর এই বাজার। তবে রুই, কাতলা, ইলিশ, বোয়াল, শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা ও ছোট-বড় সব ধরনের দেশি মাছই আছে এখানে। মূলত এখান থেকেই মাছ সরবরাহ হয় নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার হাট-বাজারে। এমনকি আশপাশের জেলাগুলোতেও।
তবে শীতকালে এ বাজার দখল করে রেখেছে সামুদ্রিক নানা মাছ। এর মধ্যে রয়েছে- ইলিশ, মেইদ, মোচন, স্যামন, রূপচাঁদা, ম্যাকারেল, টুনা, ছুরিমাছ, করাত মাছ, তুলার ডান্ডি, লইট্টা, বাটার ফিশ, ডোরাব হেরিং, পাইক, মুলেট, অয়েল সারডিনসহ নানা ধরনের শুটকি মাছ।
শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোরে সরেজমিনে দেখা যায়, এ আড়তে শ্রমিকদের ব্যস্ততা, ক্রেতাদের ভিড়, আড়ৎদারদের হাসিমুখ। বাজারের সামনের সড়কে ট্রাক ও পিকআপের খোল ভরে আছে নানা সামুদ্রিক মাছে। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় সবশ্রেণির মানুষ এ বাজারে আসছেন মাছ কিনতে। দাম করে ব্যাগ ভরছেন অনেকে।
কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্স পরিচালক মো. আবু মুছা বলেন, এ বাজারে সব ধরনের মাছ পাওয়া যায়। তবে এখন বেশি সামুদ্রিক মাছ। সামুদ্রিক মাছ অনেক জটিল রোগ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে। প্রজাতি ভেদে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ভিন্ন হয়। শীতকাল এলে সামুদ্রিক মাছের চাহিদা বেড়ে যায়।
রায়হান এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. রায়হান হাওলাদার বলেন, সামুদ্রিক মাছের দাম এখন অনেকটা কম। সাড়ে ১০ কেজি ওজনের মেইদ মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ভোলা মাছ ১৫০-২০০ টাকা কেজি, ইলিশ ১ কেজি ওজনের ১০০০-১১০০ টাকা, রূপচাঁদা ১০০-২০০ গ্রাম ওজনের ৬০০ টাকা, ছুরি মাছ ৭-৮টিতে কেজি ২৫০-২৬০ টাকা, বোতল ১১০-১২০ টাকা, তুলার ডান্ডি মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, লইট্টা ৮০-৯০ টাকা ও বাটার ফিশ ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সামুদ্রিক মাছ কিনে স্বস্তি প্রকাশ করে ইদ্রিস আলী মামুন নামের এক ক্রেতা বলেন, শহরের যেকোনো বাজারের চেয়ে এখানে সামুদ্রিক মাছের দাম কম। তিন কেজি ওজনের একটি মেইদ মাছ কিনেছি ২০০ টাকা কেজি দরে। অন্য বাজারে যার দাম কমপক্ষে ৪০০ টাকা কেজি হতো।