ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা মিলল বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ
প্রাণ ও প্রকৃতি
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভুল্লী বড় বালিয়া থেকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ।দেশে এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মত ‘রেড কোরাল কুকরি সাপ’ উদ্ধার করা হল।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার ভুল্লী বড় বালিয়া থেকে জয়নাল নামে এক ব্যক্তি সাপটি রাস্তা থেকে উদ্ধার করেন। এর আগে দেশে পাঁচ বার এই সাপের দেখে মিলেছে। পরে শুক্রবার জেলা বন্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বন্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটক করেন এবং আমাকে খবর দিলে শুক্রবার সেখানে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করেছি। এরই মধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আর্ন্তজাতিক গবেষণা পত্রে প্রকাশ পেয়েছে বলে মানুষ এ সাপটির বিষয়ে এখন মোটামুটি ভাবে সচেতন হয়েছেন। সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছেন তারা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, সাপ উদ্ধারের খবরটি শুনেছি। বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপটি সংরক্ষণের জন্য বন্য ও প্রাণী অধিদপ্তরকে দ্রুত বার্তা পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, পুরো পৃথিবীতে মাত্র ২০-২৫ বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে। গত ১২ মাসে দেশে পাঁচ বার দেখা মিলেছে এ সাপের। পাঁচ বারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় পঞ্চগড় তথা বাংলাদেশে প্রথম বারের মত উদ্ধার হয় এই সাপ।
রেড কোরাল কুকরি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)। ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এই সাপ আবিষ্কৃত হয়। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে।