দিনাজপুরে আগাম আলুর বাম্পার ফলন, দাম না পেয়ে হতাশ চাষিরা
এগ্রিবিজনেস
আগাম জাতের আলু উত্তোলনের ধুম পড়েছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর মাঠে মাঠে। এই আলুর ফলন কম হলেও দাম ভালো থাকে। তাই প্রতিবছর ভালো দাম পাওয়ার আশায় চাষিরা আগাম জাতের আলু রোপণ করেন। কিন্তু এবার আলুর ফলন গত মৌসুমের চেয়ে ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় রয়েছেন চাষিরা। চাষাবাদে খরচ বৃদ্ধি পেলেও মাঠে কিংবা হাটে মিলছে না কাঙ্খিত মূল্য।
উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের পাঠকপাড়া গ্রামের আগাম জাতের আলুচাষি নিপিন চন্দ্র রায়, দীলিপ চন্দ্র দাস, নবাব আলী শাহ ও বাবলু মিয়া বলেন বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর বাজার প্রতি মণে এক’শ থেকে দেড়’শ টাকা কমে গেছে। এভাবে কমতে থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন তাদেরকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এতে হতাশায় আছেন আলুচাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার পাঠকপাড়া, বুজরুক সমশের নগর, সমশের নগর, পলি শিবনগর, পলিপাড়া, গোয়ালপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষাণ-কৃষাণিরা আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন মূলত গ্রানোলা, ফ্রেশ, ক্যারেজ, রোমানা পাকরি এবং বট পাকরি আলু বেশি তোলা হচ্ছে।
ফুলবাড়ী পাইকারী আলু বাজারে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, আজকের বাজারে প্রতি মণ ক্যারেজ আলু ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর গ্রানোলা আলু ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা মণ। আলুর দাম দিনদিন নেমেই যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চাষিদের লোকসানে পড়তে হবে।
এবার ১৫ শতক জমিতে আগাম জাতের ক্যারেজ জাতের আলু চাষ করেছেন উপজেলার বুজরুক সমশের নগর গ্রামের আলুচাষি বাবলু মিয়া। তিনি বলেন, রোপণের ৫৮ দিন বয়সে আমি আলু তুলেছি। জমিতে বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ৬৫ মণ।
গোয়ালপাড়া গ্রামের আলু চাষি পরিক্ষিত চন্দ্র রায় বলেন, ৪৫ শতক জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছে। আলুর ফলন হয়েছে ৬৬ মণ। ৪৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।
আলুর পাইকারি ক্রেতা উজ্জল কুমার, নবিউল ইসলাম ও কালু দত্ত বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। এক সপ্তাহ পরে আলুর দাম বাড়তেও পারে। আবার কমতেও পারে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এক হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৪০ মেট্রিক টন আলু।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, বর্তমানে আলুর বাজার নিম্নমুখী। হিমাগারগুলোতে এখনও আলু মজুদ আছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হিমাগারে সংরক্ষিত আলু শেষ হলে নতুন আলুর চাহিদা ও দামও দুই-ই বৃদ্ধি পাবে।