নওগাঁয় মাছ চাষে বিপ্লব
মৎস্য
স্থানীয় মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, গত অর্থবছরে নওগাঁয় ৮৩ হাজার ৮৬১ টন, এর মধ্য থেকে ১২২ টন মাছ বিদেশে রফতানি করেছে ৩ প্রতিষ্ঠান। ৭ নদী, ১২৩ বিল জলাশয় ও ৪৮ হাজার পুকুরে নিবন্ধিত এ জেলার মাছ চাষি ৫২ হাজার। জেলায় বার্ষিক মাছের চাহিদা ৬১ হাজার টন কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ৮৩ হাজার টন। দৈনিক মাথাপিছু ৬০ গ্রাম মাছের চাহিদা হিসাবে মাছের উদ্বৃত্ত উৎপাদন ২২ হাজার ৮৭৮ টন। যেখানে আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার টন।
বার্ষিক চাহিদার ২০ হাজার টন বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। তবে মাছের খাবারের দর দফায় দফায় বৃদ্ধি মাছ চাষিদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। বিদেশে মাছ রফতানির সুযোগ সৃষ্টি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর দাবি উদ্যোক্তাদের। রুক্ষ বরেন্দ্রভূমি নওগাঁর নিয়ামতপুরের কয়েকটি পুকুরে মাছ চাষিরা জানান, বরেন্দ্রভূমিতে গত দেড় দশকে মাছ চাষে এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। লাভজনক হওয়ায় মাছ চাষের কারবারে এগিয়ে এসেছেন অনেক শিক্ষিত বেকার তরুণরাও।
স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন বোনা এসব উদ্যোক্তা পুকুরে চাষ করছেন দ্রুত বর্ধনশীল রুই, কাতল মৃগেল তেলা পিয়া, পাঙাশ দেশীয় হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতির মাছ। আর চাষ করা এসব জীবন্ত মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে গত কয়েক মাস ধরে মাছের ফিডের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধিতে চিন্তায় ফেলেছে মাছ চাষি উদ্যোক্তাদের। মাছ চাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গত দু’বছর ভালো লাভ হলেও এখন ফিডের দাম বেশিতে লাভ কম হচ্ছে।
এদিকে পুকুর থেকে তোলা মাছ আড়তে বেচতে এসে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের জালে দরবঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নানা হয়রানির শিকার মাছ চাষিরা। নিয়ামতপুরের মাছ চাষি দুরুল ইসলাম জানান, আড়তে ৫০ কেজিতে মণ নেয়া ও সিন্ডিকেট করে দাম কমানোয় তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। উন্মুক্ত জলাশয় ও পুকুরে মাছ চাষ বাড়াতে আধুনিক কলাকৌশল প্রদানসহ উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতার কথা জানায় মৎস্য বিভাগ।
জেলায় নিবন্ধিত মৎস্যজীবীর সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৫১ জন, সর্বমোট মৎস্য চাষির সংখ্যা ৩৩ হাজার ২৭৬ জন। জেলায় ৫টি সরকারি মৎস্য হ্যাচারি ও ২৮টি বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে।