ফুলকপিখেতে পোকার আক্রমণ, কীটনাশকেও রোধ হচ্ছে না
কৃষি বিভাগ
মেহেরপুরে পোকার আক্রমণে ফুলকপি ও বাঁধাকপির খেত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকেরা জানান, খেতে কালো মাথার পোকা ছড়িয়ে পড়েছে, যা কীটনাশক ছিটিয়ে দমন করা যাচ্ছে না।
তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, কপিখেতে লেদাপোকার আক্রমণ হয়েছে। অনেকে বেশি মাত্রায় ছত্রাক ও কীটনাশক ব্যবহার করায় পোকার সহনশীল ক্ষমতা বেড়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার মেহেরপুরে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ হয়েছে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে পোকার আক্রমণে এক-তৃতীয়াংশ খেত কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বুধবার সদর উপজেলার কালিগাংনী, হিজলবাড়িয়া, কুতুবপুর, শোলমারি এবং গাংনী উপজেলার কাথুলী, ধলা, নওয়াপাড়া, জোড়পুকুর ও গাড়াবাড়িয়া এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ কপিখেত পোকার আক্রমণ। কপির পাতায় ছিদ্র ও হলুদ আকার ধারণ করেছে। শিকড় পচে গাছ মরে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার কুতুবপার গ্রামের হারেজ শেখ এ বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গ্রামের অধিকাংশ কৃষকের ফুলকপি ও বাঁধাকপির খেতে কালো মাথা ও উড়া পোকা আক্রমণ করেছে। পোকা দমনের জন্য তাঁরা দানাদার ও তরলজাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করছেন। কিন্তু কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না আক্রমণ। এক বিঘা জমিতে কীটনাশক বাবদ চার-পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এরপরও কোনো কাজ হয়নি।
গাংনী উপজেলার মধ্যপাড়ার বাসিন্দা মোরাদ শেখ সাত-আট বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত বছরে আগাম জাতের বাঁধাকপি বিঘাপ্রতি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন। এবার মৌসুমের শুরুতে বাঁধাকপির বিঘাপ্রতি দাম ছিল ৭০-৭৫ হাজার। এলাকায় কপিখেতে দুই ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছেন। এতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলি খাতুন বলেন, ছত্রাকনাশক ও কীটনাশকের অধিক মাত্রার ব্যবহারের কারণে পোকার সহনশীল ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে কীটনাশক যথাযথভাবে কাজ করতে পারছে না।
পোকার আক্রমণ রোধ করতে উপজেলা সহকারী মাঠকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ। তিনি বলেন, পরিমাণমতো কীটনাশক ব্যবহার করলে পোকার আক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।