বাকৃবিতে বহিরাগতদের আগমনে নষ্ট হচ্ছে গবেষণার ফসল
ক্যাম্পাস
বাকৃবি প্রতিনিধি: বারোশো একরের প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) চত্বরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ সবুজের স্বাদ নিতে বেড়াতে আসে। বহিরাগতদের অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম ঘটছে নানা অঘটন।
করোনাকালীন সময়ে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ক গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সর্বত্র এখন বহিরাগতদের আনাগোনা। বিশ^বিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত¡ বিভাগের মাঠে গবেষণার জন্য সূর্যমূখী ও সরিষা ক্ষেতে বহিরাগতদের উপচে পড়া ভিড়।
এতে ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি গবেষণা কাজেও বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তাগুলোতে সজোড়ে বাইক চালিয়ে ঘুরতে দেখা যায় বহিরাগতদের।
এতে দুঘটনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছুটির দিনগুলোতে বহিরাগতদের সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা। নিত্যদিনের চিত্র এখন এটি। ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যহানির পাশাপাশি বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে ছুরিকাঘাতে নিহত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে বহিরাগতদের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পা ভেঙ্গে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সাজ্জাদ প্রান্ত নামের এক শিক্ষার্থীর।
বিশ^বিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবু জাফর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীরা বাসায় আর বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে। মাঝেমধ্যেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের বিভিন্ন বিশৃঙ্খলার খবর শুনতে পাই। বহিরাগতরা কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ক্যাম্পাসকে রীতিমত পার্ক বানিয়ে ফেলেছে। প্রশাসন শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই বাধাধরা নিয়ম করে দেয়, অন্যদিকে বহিরাগতদের সামাল দিতে পারে না।
বিশ^বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী শাহিনুর ইসলাম বলেন, ছুটির দিনগুলোতে বহিরাগতদের আনাগোনা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। তাদেরকে ঠেকানো এক প্রকার কঠিন হয়ে পড়ছে। তাদেরকে নিষেধ করলে অনেক সময় তারা কথা না শুনে আমাদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ছে।
বিশ^বিদ্যালয়ে কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা বলেন, বহিরাগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন সময় গবেষণা প্লট ও সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়ছে। অনেক সময় তারা গাছের ফুল, ফল ও ফসলের মাঠের ক্ষতি সাধন করে স্বাভাবিক গবেষণা কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বহিরাগত দর্শনার্থীদের নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যবস্থা নেওয়া করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেব।