সরকার নির্ধারিত দামে সার মিলছেনা গাইবান্ধায়
কৃষি বিভাগ
গাইবান্ধায় চলতি বোরো মৌসুমে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ করছে কৃষকরা। খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি সার পাঁচ থেকে ১৩ টাকা বেশি নিচ্ছেন। ফলে কৃষকরা হয়ে পড়েছেন দিশেহারা। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে তাদের।
কৃষকদের অভিযোগ, রশিদের মাধ্যমে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে বস্তা প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি নিচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সাত উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ২৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষকরা এখন জমিতে তৈরি ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষের আগে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার ছিটিয়ে দিবেন। পরে বোরোধান রোপন করবেন।
জানা যায়, জেলায় বিসিআইসির ১১১ জন এবং বিএডিসির ১১৮ জন ডিলারের মাধ্যমে সার সরবরাহ করা হয়। সরকারিভাবে এক বস্তা ট্রিপল সুপার ফসফেট-টিএসপি এক হাজার ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও চাষিদের কাছে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকায়। আর, মিউরেট অব পটাশওÑএমওপি সার প্রতি বস্তা ৭৫০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। একইভাবে ডিএপি ও ইউরিয়া সার এর দাম প্রতি বস্তা ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ৮৩০ থেকে ৮৬০ টাকায়।
ন্যায্যমূল্যে সার কিনতে না পারায় উৎপাদন খরচ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন জেলার কৃষকরা। ফলে বাধ্য হয়ে অল্প পরিমানে সার দিচ্ছেন জমিতে বা কোথাও কোথাও গোবর সার ব্যবহার করে ধান লাগানো হচ্ছে।
এদিকে, সারের বাড়তি দামের জন্য ডিলার ও ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দুষছেন। সঠিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে কৃষি বিভাগের কোনো তদারকি নেই বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. বেলাল হোসেন জানান, জেলায় সারের কোনো সংকট নাই। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সারের বাড়তি দাম নিলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।