সেচ সংকটে বাউফলে বোরো ধানের চাষাবাদ ব্যাহত
কৃষি বিভাগ
পটুয়াখালীর বাউফলে সেচ সংকটে বোরো ধানের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি সুযোগ না পেয়ে অধিকাংশ কৃষক চড়া দামে পাম্প ভাড়া নিয়ে বোরো ধান চাষ করছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে সেচনালা নির্মাণ করায় তা কৃষকের কোনো উপকারে আসছে না বলে অভিযোগ। কৃষকরা জানান, জৌতা-নওমালা-বগা খালটি খনন না করায় স্থানীয় কৃষকরা বোরো জমিতে সেচ দিতে পারছেন না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে বাউফল উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর করোনাভাইরাস ও অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে কাক্সিক্ষত আমন ধানের উৎপাদন হয়নি। তাই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো ধান চাষে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাউফলে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হলেও এ বছর ৩ গুণ বাড়িয়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
চন্দ্রপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন সূর্যমণি গ্রামের মিজান গাজী জানান, তিনি এ বছর দেড় একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ টাকা করে পাম্প ভাড়া করে এনে তিনি খেতে পানি দিচ্ছেন। পানির কারণে বোরোর উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে বাউফলের বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে সেচনালা নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সূর্যমণি ইউনিয়নের রামনগর ক্লাবঘর এলাকায় ভূগর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ করে বিএডিসি। নির্মাণের পর থেকে একদিনের জন্য এ সেচনালা ব্যবহার হয়নি বলে জানান রামনগর সেচ প্রকল্পের সভাপতি হাফিজুর রহমান মুন্সি। একই অবস্থা বীরপাশা ও সূর্যমণি সেচ প্রকল্পের।
বিএডিসি সূত্র জানায়, বাউফল উপজেলায় ২২ কিলোমিটার সেচনালা নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, প্রায় ১৯ কিলোমিটার সেচনালা কৃষকের কোনো উপকারে আসছে না। এভাবে নির্মাণের পর অধিকাংশ সেচ প্রকল্পই চালু করা হয়নি।
তবে অপরিকল্পিতভাবে সেচনালা নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করে বাউফল বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোশারেফ হোসেন বলেন, শুধু বিদ্যুৎ বিল দিয়ে কৃষকরা প্রতিটি সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন। কৃষকদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকায় তারা সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারছেন না বলে দাবি তার।
বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, সেচনালা নির্মাণের ক্ষেত্রে বিএডিসির সঙ্গে কৃষি বিভাগের কিছুটা সমন্বয়হীনতা রয়েছে। যেখানে চাহিদা বেশি সেখানে সেচনালা নির্মাণ করা হয় না বলেও তিনি জানান।