৮:২৬ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বেগুন চাষ করবেন যেভাবে
ads
প্রকাশ : মার্চ ২৬, ২০২২ ২:০৫ অপরাহ্ন
বেগুন চাষ করবেন যেভাবে
কৃষি বিভাগ

আমাদের দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি বেগুনের চাষ করা হয়ে থাকে। আমাদের অনেকেরই বেগুন চাষ পদ্ধতি অজানা। সারা বছরই বেগুন চাষ করা হয়। বেগুনের গাছ প্রায় ৪০ থেকে ১৫০ সেমি লম্বা হয়। আমরা বেগুন সবজি হিসাবে খেয়ে থাকি, বেগুন পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি। সঠিক নিয়মে চাষ না করার কারণে অনেক চাষীগণ লোকসান করে থাকেন।

আমাদের দেশে সারা বছর বেগুন চাষ করা হলেও সব জাতগুলো সব সময় চাষ করা যায় না। ভাল ফলন পেতে হলে উপযুক্ত জাত নির্বাচন করা একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশে বেগুনের বহু জাত রয়েছে। এক জাত থেকে অন্যজাতে গাছের প্রকৃতি, ফলের রং, আকার, আকৃতি প্রভৃতি বিষয়ে বেশ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশে প্রধানতঃ লম্বা ফল, গোলাকর ফল ও গোলাকার এই তিন ধরণের বেগুনের চাষ বেশী হয়ে থাকে। সব জাতকে মৌসুম ভিত্তিক দুই ভাবে ভাগ করা যেতে পারে, যেমন-শীতকালীন বেগুন ও বারমাসী বেগুন। শীতকালীন জাতের বেগুন রবি মৌসুমে চাষ করা হয় কারণ, এই জাতের বেগুন কেবলমাত্র রবি মৌসুমেই ফল দিতে পারে। আর বারমাসী বেগুন বছরের যে কোন সময় চাষ করা যেতে পারে।

উন্নত জাতঃ বারি বেগুন-১, বারি বেগুন-২, বারি বেগুন-৪, বারি বেগুন-৫, বারি বেগুন-৬, বারি বেগুন-৭ , বারি বেগুন-৮, বারি বেগুন-৯, বারি বেগুন-১০, বারি হাইব্রিড বেগুন-৩, বারি হাইব্রিড বেগুন-৪, বারি বিটি বেগুন-১, বারি বিটি বেগুন-২, বারি বিটি বেগুন-৩ , বারি বিটি বেগুন-৪। তাছাড়া কিছু স্থানীয় জাত যেমন ইসলামপুরি, খটখটিয়া, নয়ন কাজল, ডিম বেগুন, শিংনাথ  ইত্যাদি।

পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম বেগুনে চর্বি ২.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৮ গ্রাম, আঁশ ১৩ গ্রাম খাদ্যশক্তি ৪২ কিলোক্যালরি, আমিষ ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৮ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৯ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮৫০মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.১২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.০৮মিলিগ্রাম ও শর্করা ২২ গ্রাম ইত্যাদি।

বপনের সময়ঃ শীতকালীন- আগস্টের শেষ থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত (মধ্য শ্রাবন থেকে আশ্বিন মাস) বর্ষাকালীন -জানুয়ারীর প্রথম থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত (মধ্য পৌষ)।

চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে। মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। মাটির ধরন অনুযায়ী ১ মিটার চওরা ও ৮ ইঞ্চি উঁচু বেড তৈরি করতে হবে ।

বীজের পরিমানঃ প্রতি শতকে ০.৫ গ্রাম এর মত বীজ প্রয়োজন হয়।

সার ্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম শতক প্রতি সার
গোবর ৪০ কেজি
ইউরিয়া ১ কেজি
টিএসপি ৭০০ গ্রাম
এম ও পি ৭০০গ্রাম
জিপসাম ৪০০গ্রাম
বোরন ৫০গ্রাম
 দস্তা ৪০ গ্রাম

সমুদয় গোবর, টিএসপি, জিপসাম, দস্তা, বোরণ এবং ২১০ গ্রাম পটাশ শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের পর ১০-১৫ দিন প্রথমবার, ফল ধরা শুরু হলে দ্বিতীয় বার এবং ফল আহরণের মাঝামাঝি সময়ে তৃতীয় বার ৪০০ গ্রাম করে ইউরিয়া এবং ২০০ গ্রাম করে পটাশ প্রয়োগ করতে হবে।

সেচঃ চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ এবং পরবর্তীতে প্রতি কিস্তি সার দেয়ার পর সেচ দিতে হয়। বেডের দু’পাশে নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেয়া সুবিধাজনক। নালায় সেচের পানি বেশিক্ষণ ধরে রাখা যাবে না, গাছের গোড়া পর্যন্ত মাটি ভিজে গেলে নালার পানি ছেড়ে দিতে হবে। প্রতি সেচের পর মাটির উপরিভাগের চটা ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে বাতাস চলাচলের সুবিধা হয় ।

আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার। ফসল বোনার ২৫-৩০ দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবে।সেচ দেয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতিবৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি যাতে জমি থেকে সরে যায় তার ব্যবস্থা করুন। জো  বুঝে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিন। গাছ হেলে পড়ে গেলে সোজা করে দিন।

পোকামাকড়ঃ

1.ফলছিদ্রকারী পোকা দমনে থায়ামিথক্সাম+ক্লোরানিলিপ্রল জাতীয় কীটনাশক (যেমন ভলিউম ফ্লেক্সি ৫ মিলিলিটার  অথবা ১মুখ) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার  অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার।

2.জাব পোকা দমনে  ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

3.ক্ষুদে মাকড়ের  আক্রমণ সালফার গ্রুপের (কুমুলাস ডিএফ বা রনোভিট ৮০ ডব্লিউজি বা থিওভিট ৮০ ডব্লিউজি বা সালফোলাক ৮০ ডব্লিউজি, ম্যাকসালফার ৮০ ডব্লিউজি বা সালফেটক্স ৮০ ডব্লিউজি) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

4.সাদা মাছি দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।

রোগবালাইঃ

1.কান্ড ও ফল পচা রোগ রোগ দমনে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। গোঁড়া পচা রোগের ক্ষেত্রে মাটি ভিজিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

2.গুচ্ছ পাতা/ খুদে পাতা / ছোট পাতা রোগ দমনের জন্য জাব পোকা ও জ্যাসিড দমন করতে হবে । বাহক পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।

3.পাতায় হলদে মোজাইক রোগের বাহক পোকা (জাবপোকা) দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।

সতর্কতাঃ  বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন।ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন।

ফলনঃ  জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ২০০-২৫০ কেজি।

সংরক্ষনঃ বেশি তাপ/ রোদ না লাগে এবং বায়ু চলাচল করে এমন  স্থানে বা কনটেইনারে ফসল সংরক্ষণ করুন। মাঝে মাঝে চটের বস্তার উপরে হালকা পানি স্প্রে করুন। কয়েক দিনের জন্য সংরক্ষণ করলে হিমাগারে রাখা

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop