ইউটিউব দেখে সফল খামারি কলেজছাত্রী দিলরুবা
পোলট্রি
কখনো কোদাল নিয়ে ক্ষেতে লাঙ্গলের ফলা ধরে মাটিচাষ, কখনো আবার হাঁস-মুরগির খাবার ও পানি দেয়াসহ নানান কাজে পারদর্শী অদম্য এক কলেজছাত্রীর নাম দিলরুবা। ইউটিউব দেখে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তোলেন ক্ষুদ্র হাঁস-মুরগির খামার।
তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামে। পিতার নাম হেলাল উদ্দিন।
দিলরুবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অভাব অনটনের সংসারে গড়ে তুলেছেন একটি ব্রয়লার মুরগির খামার। নিজে মুরগির ঘর তৈরিসহ যাবতীয় কাজ করেছেন দিলরুবা। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর খামারের পরিধি বাড়িয়ে এক হাজার ব্রয়লার মুরগি ও ২০০ হাঁসের বাচ্চা নিয়ে গড়ে তোলেন আরেকটি হাঁস-মুরগির খামার। পোল্ট্রি খামার দেখাশোনা ও ঔষধপত্র দেয়া সবই নিজ হাতে করেন তিনি।
অন্যদিকে লেখাপড়াতেও পিছিয়ে নেই দিলরুবা। কাজের ফাঁকে একটু সময় পেলেই টেবিলে বই নিয়ে পড়তে বসেন। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। তাই পড়ার চাপ কিছুটা বেশি। তবুও থেমে নেই তার পথচলা। লেখাপড়ার পাশাপাশি মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন এই হাঁস-মুরগির খামার।
বর্তমানে তার হাঁসগুলো ডিম দিতে শুরু করেছে। খামারের ব্যয় মিটিয়েও বাড়তি উপার্জনের আশা তার। দিলরুবা জানান, হাঁস-মুরগি পালনের কাজে তার বাবা হেলালউদ্দিন সাহায্য ও অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছেন শুরু থেকেই।
দিলরুবা জানান, কৃষি কাজ ও হাঁস-মুরগি পালন করা তার কাছে ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত ভালো লাগতো। তাই মহামারী করোনায় দীর্ঘ সময় কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায় প্রথমে মুরগির খামার গড়ে তোলেন। তার উন্নতি দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর খামার করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
দিলরুবার প্রত্যাশা সহজ শর্তে শিক্ষার্থীদের জন্য এসব খাতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যদি ঋণ প্রদান করতো তবে আগামীতে আরো একটি হ্যাচারি ও একটি গবাদিপশুর খামার স্থাপন করে সফল উদ্যোক্তার কাতারে নাম লেখাতে পারতেন তিনি।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কলেজছাত্রী দিলরুবা একজন কঠোর পরিশ্রমী ও সফল নারী উদ্যোক্তা। তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় এলাকার অনেক বেকার যুবতী হাঁস-মুরগি পালনের সাথে জড়িত থেকে আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মান্নান জানান, কলেজছাত্রী দিলরুবা লেখাপড়ার পাশাপাশি হাঁস-মুরগির খামার করে একজন আদর্শ খামারি হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভের পাশাপাশি মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণ করে জাতীয় পর্যায়েও অবদান রেখে চলছেন। তিনি হাঁস-মুরগি পালন অব্যাহত রাখলে আগামীতে আরো উন্নতি লাভ করতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।