কুমিল্লায় দু‘দিনে কুকুরের কামড়ে আহত ২৪!
প্রাণিসম্পদ
কুমিল্লার পাঁচ গ্রামের অন্তত ২৪ জনকে কুকুরে কামড় দিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় উপজেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।সোমবার থেকে মঙ্গলবার এই দুই দিনে উপজেলার ফজুরকান্দি, ঘারমোড়া, শ্যমপুর, শ্রীপুর, খোদে দাউদপুর ও নিলখী গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৮ জুন) সকাল পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন শিশুসহ মোট ২৪ জন নানা বয়েসি নারী ও পুরুষ।
এদিকে এক সঙ্গে এতো মানুষকে কুকুরে কামড়ানোর ফলে সদরের ফার্মেসিগুলোতেও দেখা দিয়েছে এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিনের (প্রতিশেধক) সংকট। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেন্সে এই ভ্যাকসিন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে ভুক্তভোগীরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া হয় না এই ভ্যাকসিন, জেলা সদর হাসপাতালে থাকে। কুকুরের কামড়ে আহত শিশুসহ ১৯ জন নানা বয়সের নারী ও পুরুষ হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহতরা হলেন- ফজুরকান্দি গ্রামের তাসফিয়া (৪), আ. রহমান (৫), হোসাইন (৬), শারমিন আক্তার (২৬), রাহিমা (৬), সামিয়া (১৮), আতিক (১২), ছোট ঘারমোড়া গ্রামের রুশিয়া বেগম (৫০), জিসান (৭), খাদিজা (১৪), শাহনাজ (৩০), শাওন (১২), সেলিম (২৬), মিরাজ (২৮), মারিয়া (৬), লিটন (৪০), শ্রীপুর গ্রামের রাফী (৮), শ্যামপুর গ্রামের শাওন (১২), খোদে দাউদপুর গ্রামের মাসুদা আক্তার (২৮), নিলখী গ্রামের হাজী মনোয়ারা বেগম (৫৫), ফজিলত বেগম (৬০), আনোয়ারা বেগম (৬০), ফয়েজ উদ্দিন (৬৫) ও মামুন (৩২)।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা জানান, হঠাৎ কোথা থেকে দ্রুত গতিতে দৌঁড়ে এসে যাকে পাচ্ছে তাকেই কামড়ে আহত করেছে কুকুর।
কুকুরের কামড়ে আহত শিশু রাফীর মা জানান, হঠাৎ কোথা থেকে এসে লাফ দিয়ে আক্রমণ করে বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকা রাফীকে। ওর পিঠে, বাহুতে কামড়াতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে লঠি-সোঁটা নিয়ে তাড়া করে ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভ্যাসসিন পাইনি। বাজারের কোনও ফার্মেসিতেও নেই। পরে দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে এনে তারপর দিতে হয়েছে।
ফার্মেসিতে ভ্যাকসিন সংকট সম্পর্কে উপজেলা সদরের বিল্লাল মেডিকেল হলের প্রতিনিধি আ. সালাম বলেন, এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিন আমাদের কাছে যা ছিল, আজই শেষ হয়েছে। এটি সচরাচর প্রয়োজন পড়ে না বিধায় বেশি রাখা হয় না। সবাই দুই-একটা করেই দোকানে রাখে। আজ এক সঙ্গে অনেককে কামড়ানোর ফলে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। আগামীকালই আর এই সংকট থাকবে না।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার জানান, হঠাৎ কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। আজ দিনে রাতে কয়েকটি গ্রামের ১৯ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। প্রথমেই তাদের ড্রেসিং করা হয়েছে। তারপর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
ভ্যাকসিন সংকট সম্পর্কে তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিন নেই। জেলা সদর হাসপাতালে পাওয়া যায় এই ভ্যাকসিন। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে বলে জানান তিনি।