চাহিদার চেয়ে গরু-ছাগল বেশি খুলনা-রংপুরে, ঘাটতি ঢাকা-বরিশালে
প্রাণিসম্পদ
গত বছর সারাদেশে কোরবানি জন্য লালন-পালনকৃত পশুর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০টি। আসন্ন ঈদুল আযহায় মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী কোরবানিযোগ্য ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার গরু-মহিষ, ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ছাগল ভেড়া, ৪ হাজার ৭৬৫টি অন্যান্য প্রজাতিসহ (উট, দুম্বা) সর্বমোট প্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি গবাদি পশু প্রস্তুত আছে। তবে কোরবানি উপলক্ষ্যে গরু-ছাগলে ঘাটতি রয়েছে ঢাকা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহসহ চার বিভাগে। অন্যদিকে গরু-ছাগলে বাড়তি রয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুরে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
আসন্ন কোরবানির ঈদে ঢাকা বিভাগে মোট কোরবানির পশুর চাহিদা ২৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৩০টি। এর মধ্যে কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে মাত্র ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩২টি। এবং ঘাটতি রয়েছে ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯০টি।
এর পরেই কোরবানির পশুর ঘাটতি রয়েছে বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগে মোট কোরবানির পশুর চাহিদা ৫ লাখ ২৩ হাজার ৮০টি। এর মধ্যে কোরবানির পশুর ঘাটতি রয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৬৬টি। সিলেট বিভাগে মোট কোরবানির পশুর চাহিদা ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬০৩টি। এই বিভাগে ২ লাখ ৯ হাজার ৫১৮টি পশুর ঘাটতি রয়েছে। সব থেকে কম ঘাটতি রয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে ৭০ হাজার ৮৪৭টি। এই বিভাগে মোট চাহিদা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ১২০টি।
রংপুর বিভাগে ১৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩০টি কোরবানির পশু বাড়তি রয়েছে যা দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি। এই বিভাগে কোরবানির জন্য মোট পশুর চাহিদা ১০ লাখ ২৪ হাজার ৯৩টি। চাহিদার থেকে বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত করে এই বিভাগ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ লাখ ৬১ হাজার ৫৪৪টি পশু কোরবানির জন্য বাড়তি রয়েছে। চট্টগ্রামে মোট চাহিদা ২০ লাখ ৯২ হাজার ৬২৩টি।
খুলনা বিভাগে কোরবানির জন্য ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ২০৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই বিভাগে চাহিদা মাত্র ৯ লাখ ৭১ হাজার ৬৩৪টি ফলে বাড়তি রয়েছে ৭ লাখ ৬৫টি হাজার ৬৯টি পশু। রাজশাহী বিভাগে ২৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৬৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই বিভাগে মোট চাহিদা ২০ লাখ ৯ হাজার ৪৫৮টি। মোট চাহিদা ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৪১০টি কোরবানির পশু বাড়তি রয়েছে রাজশাহী বিভাগে।
দেশে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু প্রস্তুত আছে। যাতে করে করোনা সংকটের মধ্যে প্রতিবেশি দেশ ভারত ও মায়ানমার থেকে কোনো কোরবানির পশু প্রবেশ না করতে পারে সেই জন্য সীমান্ত সিলগালা করা হবে। দেশের বাহির থেকে গবাদিপশু আসা বন্ধের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকরা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিজিবি এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে অবৈধ বা বৈধ পথে গবাদিপশু বন্ধ করা হবে।
কোরবানির ঈদের ১ মাস আগে থেকে কোরবানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সময়ে সীমান্ত পথে দেশের বাইরে থেকে গবাদি পশু আসতে দেওয়া হবে না। গবাদিপশু প্রবেশ রোধে বিজিবিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য জননিরাপত্ত্বা বিভাগকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ জানান, দেশে কোরবানিযোগ্য পর্যাপ্ত পশু মজুদ আছে। এবারের কোরবানির প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনা ভাইরাস দেশে বাড়ছে। নানা বিষয়কে সামনে নিয়ে বাইরের দেশ থেকে কোরবানির পশু ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে কিছু বিভাগে পশু ঘাটতি আছে কিছু বিভাগে বাড়তি রয়েছে। যেখানে কোরবানির পশু ঘাটতি আছে চাহিদা অনুযায়ী সেখানে ট্রেন দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এগ্রিভিউ/এসএমএ