ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দিশেহারা কৃষক
কৃষি বিভাগ
নীলফামারীর সৈয়দপুরে চলতি আমন ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। বিশেষ করে মাজরা ও কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত হয়ে ধানগাছ মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ফলন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকরা। সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন। পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের।
সরেজমিনে, উপজেলার কামারপুকুর, খাতামধুপুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বোতলাগাড়ী ও বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নেও গেছে একই চিত্র। শহরের হাতীখানা বানিয়াপাড়া ও তার পাশের কৃষি এলাকায় একের পর এক জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণে ফলন্ত ধানের শীষগুলো সাদাবর্ণ ধারণ করেছে এবং দানা নষ্ট হয়ে গেছে। জমির প্রায় এক তৃতীয়াংশ ধানগাছ এভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যারা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাদের ফসল কিছুটা রক্ষা পেলেও অনেকের ক্ষেত প্রায় পুরোটাই নষ্ট হওয়ার পথে।
বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের পাটোয়ারী পাড়ার কৃষক আনোয়ার তার জমিতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন।
তিনি জানান, আমি চলতি বছর প্রায় ৪ বিঘা (২ একর ৪০ শতক) জমিতে স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা ধানের চাষ করেছি। চারা রোপনের পর থেকে নানা সমস্যায় ভুগছি। প্রথম দিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটে। পরে পাতা মরা ও পঁচানী রোগ দেখা দেয়। এখন শুরু হয়েছে মাজরা পোকার ব্যাপক আক্রমণ।
এবার যে হারে মাজরা পোকা ধরেছে, আগে কখনও এমনটা দেখা যায়নি। এই পোকার কারণে ধান গাছে ফলন্ত শীষগুলোর দানা নষ্ট হয়ে সাদা হয়ে পড়েছে। দ্রæত এ রোগ এক গাছ থেকে আরেক গাছে ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যান্য কৃষকের সাথে কথা হলে তারাও জানান রোপনের পর থেকে পঁচানী, কারেন্ট পোকা ও এখন মাজরা পোকার আক্রমনে ফসল ধ্বংসের মুখে। ফলন নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শাহানা বেগম জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ইউনিয়ন ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তার (বিএস) কে মনিটরিং এর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সাথে আমরাও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছি।
কৃষকদের পরামর্শ বিষয়ে বলেন, আমরা তাদের পার্চিং পদ্ধতি (ক্ষেতের মধ্যে গাছ বা বাঁশের ডাল পুতে দিতে বলেছি) ওই ডালে পাখি বসে পোকাগুলোকে খেয়ে ফেলবে। পাশাপাশি জমিতে কিটনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দিচ্ছি। আমন মৌসুমে সৈয়দপুর উপজেলায় ৮ হাজার ২শত ১৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হচ্ছে আর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ১ শত ৫২ মেট্রিক টন।