মাছ চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে বায়োফ্লক পদ্ধতির
মৎস্য
বাড়ির উঠান, বাসার ছাদ বা পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার করে স্বল্প পরিসরে, অল্প পুঁজিতে তিন গুণ বেশি মাছ উৎপাদনের আধুনিক এ চাষ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ বেড়েছে।
বাবেল ফিশ বায়োফ্লক অ্যান্ড হ্যাচারিসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রবাসী মো. আব্দুর রহিম। ৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে এক বছরে লাভ দাঁড়িয়েছে তাঁর ৮ লাখ টাকা। তবে প্রজেক্ট সম্প্রসারণের জন্য সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন প্রবাসী মো. আব্দুর রহিম। সরকারি সহায়তা পেলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে অনেক পরিবারের। অন্যদিকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেন।
জানা গেছে, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের অশোকসেন গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে প্রবাসী মো. আব্দুর রহিম চায়না জিয়াংশু ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করতেন এবং জিংশু প্রদেশে জেন-জিয়াং সিটিতে বসবাস করতেন। প্রবাসী মো. আব্দুর রহিম আজকের পত্রিকাকে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে চীনে ফিরে যেতে না পেরে দেশে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য নিজ বাড়িতে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে শিং মাছের রেণু চাষ শুরু করেন।
পাশাপাশি তিনি বাড়ির পতিত জমিতে নার্সারি করে সৌদির খেজুর, আজওয়া, দার্জিলিং আপেল, চায়না থ্রি কমলা, আলুবোখরা, নাশপাতি, বাড়িওয়ান মাল্টা, থাইল্যান্ড মাল্টা, থাই লঙ্গান, পাকিস্তানি আনার, থাই জাম্বুরাসহ বিভিন্ন ফলদ গাছের চারা রাজশাহী থেকে আনেন। এরপর বড় করে তা বিক্রি করে এখন তিনি স্বাবলম্বী।
আব্দুর রহিম জানান, বায়োফ্লক পদ্ধতিতে চাষ করলে মাছের বর্জ্য থেকে আবার খাবার তৈরি হয়, তাই ২৫ শতাংশ খাদ্যে শতভাগ মাছ উৎপাদন করা যায়। তাঁর মতে, প্রথম অবস্থায় ১ লাখ টাকা খরচ করে কেউ ১০ হাজার লিটার পানির দুটি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।
এ ছাড়া পুকুরে মাছ চাষ করলে কিছু না কিছু ওষুধ দিতে হয়। এতে করে মাছের প্রাকৃতিক গুণাগুণ নষ্ট হয়ে অনিরাপদ হয়ে ওঠে। কিন্তু বায়োফ্লক পদ্ধতিতে ওষুধ প্রয়োগ করতে হয় না বলে এটি থাকে অত্যন্ত নিরাপদ ও প্রাকৃতিক।
চাকরির পেছনে না ছুটে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অল্পশিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা এ পদ্ধতি গ্রহণ করে বেকারত্ব ঘোচাতে পারেন বলেও মত দেন তিনি। পাশাপাশি পরিবারে আসবে সচ্ছলতা।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম আজকের পত্রিকাকে জানান, এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে এখানকার তরুণ যুবকসহ চাষিরা লাভবান হতে পারেন। এ পদ্ধতিতে একভাগ খাদ্য দিয়ে তিন গুণ মাছ পাওয়া যায়। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছের চাষ একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি।