ফিডের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পোলট্রি শিল্প
পোলট্রি
কুড়িগ্রামে হু-হু করে বাড়ছে ফিডের দাম। সেই সাথে বাড়ছে ভ্যাকসিনের দাম। মধ্যসত্বভোগীরা উচ্চ ফুনাফার লোভে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াচ্ছে লেয়ারের বাচ্চার মূল্য। সে অনুযায়ী ডিমের পড়তি দামের কারণে পোলট্রি খামারিদের ব্যবসায় নেমেছে ধস। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু খামার। এই শিল্প রক্ষায় সরকারকে লেয়ারের বাচ্চা, ফিড ও ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছে খামারিরা।
সরজমিনে দেখা যায়, উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক লেয়ার খামারি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পোলট্রি ব্যবসা শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখলেও ২০১৬ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ফিড, ভ্যাকসিন ও বাচ্চার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কমতে থাকে। সেই সাথে গরমের সময় নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ না থাকায় কলেরা রোগে লেয়ার মুরগীর মড়ক শুরু হয়। পাশাপাশি করোনা আসার ফলে বন্ধ হয়ে যায় বিক্রি। ফলে বিরাট ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয় খামারিরা। লোকসানে থাকা অনেক খামারি ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। কিন্তু বেশিরভাগ খামারি ঋণ করে লাখ লাখ টাকা লগ্নি করায় তারা না পারছে খামার বন্ধ করতে; না পারছে চালিয়ে যেতে।
জেলায় সবচেয়ে বেশি লেয়ার খামার রয়েছে ফুলবাড়ী উপজেলায়। এখানে প্রায় ৭৪টি খামার রয়েছে। এখানকার বড় খামারি কুরুষা ফেরুষা মলিকার কুটি গ্রামের ধরলা পোলট্রি ফার্মের মালিক ডলার জানান, ২০০৫ সালে ৫ লাখ টাকা ব্যয় করে কাজী ফার্ম থেকে এক হাজার ব্রাউন জাতের লেয়ারের বাচ্চা দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। ২০১৫/১৬ সাল পর্যন্ত আমরা লাভের মুখ দেখি। এজন্য খামার বড় করে বর্তমানে আমার খামারে ২০ হাজার লেয়ার রয়েছে। কিন্তু বিদেশে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলে কোম্পানীগুলো ১৬০০ টাকা সিডের বস্তা এখন ২৩০০ টাকায় বিক্রি করছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার ভেটেনারী সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমানে প্রান্তিক খামারিদের লসের প্রধান কারণ হচ্ছে খাদ্যের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধি। দেশের বাইরে থেকে আনা কাঁচামালগুলোর মূল্যবৃদ্ধির কারণে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরেকটি কারণ হলো একই বয়সের বাচ্চা কিনতে হচ্ছে উচ্চ মূল্যে। দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে তাদের লাভটা বেশি নিশ্চিত করা যাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
অপরদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, করোনা পরবর্তীতে খামারিরা প্রোডাকশনে এসেছে। খাদ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।বিষয়টি আমরা জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় তুলেছি এবং সমাধান চেয়েছি। পাশাপাশি আমরা স্থানীয়ভাবে ভুট্টা সংগ্রহ করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফিড তৈরির পরামর্শ দিচ্ছি।