সাফারি পার্কে মায়ের সঙ্গে ঘুরছে থমসন গজেল পরিবারের ছোট্ট শাবকটি
প্রাণ ও প্রকৃতি
গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকান প্রাণী থমসন গজেল পরিবারে জন্ম নেওয়া নতুন শাবককে মায়ের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে।
রোববার সকালে সরেজমিন সাফারি পার্কে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
এর আগেও এ পার্কে থমসন গজেল শাবকের জন্ম দিয়েছিল। তবে হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেনি। নতুন অতিথি নিয়ে সাফারি পার্কে থমসন গজেল পরিবারের সংখ্যা ৩-এ দাঁড়াল। নতুন শাবকটির এখনও লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পারেনি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, থমসন গজেল মূলত আফ্রিকান অ্যান্টিলুপ প্রজাতির প্রাণী। এগুলো দেখতে হরিণের মতো। অভিযাত্রী জোসেফ থমসনের নামে এ প্রাণীটির নামকরণ করা হয়েছে। অনেক স্থানে প্রাণীটিকে ‘টমি’ নামেও ডাকা হয়। পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়া ও তানজানিয়ার সেরিঙ্গেটি অঞ্চলে এ প্রাণীর মূল আবাসস্থল।
এরা তৃণভূমিতে বিচরণ করে থাকে। এদের প্রধান খাবার ঘাস। দৈর্ঘ্যে এরা ৮৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এরা ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে সক্ষম।
চিতার পরে চতুর্থ দ্রুততম স্থলপ্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয় থমসন গজেলকে। একটি পুরুষ গজেলের ওজন হয় ২০-৩০ কেজি হয়ে থাকে। স্ত্রীদের ওজন ১৫-২৫ কেজি পর্যন্ত হয়। চোখের চারপাশে সাদা রিং, চোখের কোণ থেকে নাকের দিকে কালো ডোরা, নাকের ওপর একটি কালো দাগ থাকে।
পুরুষের চোখের সঙ্গে সুবিকশিত প্রিঅরবিটাল গ্রন্থি থাকে, যেগুলো ঘ্রাণ চিহ্নিত অঞ্চলের জন্য ব্যবহৃত হয়। পুরুষের রিংযুক্ত শিং রয়েছে। স্ত্রীদের শিং থাকে না। দলের পুরুষ সদস্যরা অনেকটা যুদ্ধ করে নিজের অবস্থান তৈরি করে। স্ত্রী গজেলের গর্ভকাল সময় ১৬৬ দিন। প্রতিবার একটি করে শাবকের জন্ম দেয় থমসন গেজেল। সংখ্যার দিক দিয়ে কমে যাওয়ায় প্রাণীকে প্রায় বিপদাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান জানান, সাফারি পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশে এর আগেও থমসন গজেল শাবকের জন্ম দিয়েছিল। এরা আফ্রিকান সাফারিতে উন্মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করে। উন্মুক্ত অবস্থায় বিচরণের কারণে হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে সেগুলো আর টেকেনি।
তবে গত এক সপ্তাহ আগে গেজেল পরিবারে শাবকের জন্ম হলেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মা সন্তানকে লুকিয়ে রাখায় এদের দেখা মেলেনি। পরে শাবক নিয়ে বের হয়ে আসায় তাদের দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত শাবকটি সুস্থ রয়েছে। মায়ের সঙ্গে ঘুরে দুধপান করতে দেখা গেছে। এবার প্রাণীটিকে টিকিয়ে রাখতে আমরাও নজরদারির চেষ্টা করছি।