বেতাগীর ১৮ হাজার কৃষকের মাথায় হাত
কৃষি বিভাগ
উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদে ধান-সবজির পাশাপাশি পানির নিচে তলিয়ে গেছে খেসারি বোনা চাষিদের স্বপ্ন। অসময়ে বৃষ্টির কারণে ডুবে গেছে খেসারি ডাল ও আমনের মাঠ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন উপজেলার প্রায় ১৮ হাজার চাষি।
চাষিরা বলছেন, রোপা আমন কেটে ঘরে তোলার ঠিক আগমুহূর্তে গত ৩-৬ ডিসেম্বর হঠাৎ এ দুর্যোগ তাদের পথে বসিয়েছে। পানি কিছুটা কমে গেলেও ধানি জমিতে যে খেসারি বুনেছিলেন তা অঙ্কুরিত হলেও সেগুলো পচে গেছে ইতোমধ্যে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খেসারি বোনার সব ধানি জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে। প্রতিটি জমিতেই মাটিতে মিশে যাওয়া ধান গাছের ভেতরে লুকায়িত রয়েছে সদ্য অঙ্কুরিত খেসারিগাছ।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৮০০ হেক্টর উঁচু ধানি জমিতে প্রতিকেজি বীজ ডাল ৬০ টাকা দরে ক্রয় করে ৬ হাজার ৫০০ কৃষক খেসারি ডাল বুনেছিলেন। চাষিদের দেওয়া তথ্যমতে, কৃষকের সংখ্যা ১৮ হাজারেরও উপরে ও আবাদকৃত জমির পরিমাণ ১০ হাজার ৯৬১ হেক্টর। কিন্ত জাওয়াদে আবাদকৃত ২ হাজার ৮০০ হেক্টরের প্রায় সব জমির ফসল পানির কারণে পচে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক খেসারি বোনা চাষি জানান, পানিতে ডুবে থাকায় খেসারিগাছ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের প্রান্তিক চাষি সুকুমার হাওলাদার বলেন, ধার-দেনা করে ধানি জমিতে খেসারি বুনেছিলাম। পানি জমে থাকায় অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।
বেতাগী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর এ মৌসুমে অধিক লাভ পাওয়ার আশায় ধানি জমিতে এ এলাকার চাষিরা খেসারি বুনে থাকে। তাই তিনিও খেসারির চাষ করে আগের লোকসান সামাল দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি আরও বলেন, এবার তো তাতে কয়েকগুণ লোকসান গুণতে হবে। সব স্বপ্ন পানিতেই ডুবে গেল। কথা হয় বেশ কয়েকজন চাষির সঙ্গে। তাদের সকলেরই একই বক্তব্য।
এসব বিষয় নিশ্চিত করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, অসময়ে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে হয়ে যাওয়া বৃষ্টি কৃষকের ধানক্ষেতে পানি জমে খেসারির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, যা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।