আমন আবাদে ব্যস্ত কৃষক,ভালো ফলনে প্রত্যাশা তাদের
কৃষি বিভাগ
পানির অপেক্ষা ফুরাল বগুড়ার কৃষকদের। শ্রাবণে বৃষ্টি দেখা পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন তারা। দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছেন আমন আবাদে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বগুড়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আমন চাষ হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
জানা যায়, আমন চাষে খরচ কিছুটা কম হওয়ায় প্রতি বছরই লাভের মুখ দেখছেন কৃষক। এবারও ভালো ফলন ও ভালো দামের প্রত্যাশা রয়েছে তাদের। চলতি মৌসুমে প্রখর রোদের কারণে জমিতে পানি না থাকায় কিছুটা দেরি করে জেলায় আমন আবাদ শুরু হয়েছে। অনেক এলাকায় শ্যালো মেশিন অথবা গভীর নলকূপের সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে আগাম চাষাবাদ শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
বগুড়া সদর ও গাবতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা জানান, ইরি ধানের চেয়ে খরচ কিছুটা কম হওয়ায় প্রতিবারই তারা আমন চাষ করেন। বৃষ্টি হওয়ায় এখন সবাই চাষাবাদে ব্যস্ত। সেচ খরচ নেই বললেই চলে। তবে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় আমন চাষে। জেলার শেরপুর, শিবগঞ্জ, নন্দীগ্রামসহ সব উপজেলায়ই আমন আবাদ হয়ে থাকে।
সোনাতলা উপজেলার হুয়াকুয়া গ্রামের মুসা মন্ডল জানান, বৃষ্টির পর জমি তৈরি করে চারা লাগানো হয়েছে। উপজেলায় মাঠে মাঠে চাষিরা আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে। শেরপুর উপজেলার নাহিদ হাসান জানান, বেশকিছু জমিতে আমন চারা রোপণ শেষ হয়েছে। আরও জমি আছে যেগুলোতে চাষ শেষ করে বীজ লাগানোর কাজ চলছে। নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি দিয়ে জমি তৈরি করা গেলেও উঁচু জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে।
জানা যায়, ১০-১২ হাজার টাকা খরচে বিঘাপ্রতি ১৫-২০ মণ ধান পাওয়া যায়। জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আমন আবাদ করেন চাষিরা। আগাম জাতের ধান অক্টোবরের মাঝামাঝি কাটা শুরু হলেও নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কৃষকের ঘরে ওঠে সোনালি ফসল। জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন।
এখন পর্যন্ত বগুড়ায় ৪০ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ করা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, সব ঠিক থাকলে এবার আমনের বাম্পার ফলন হবে। উচ্চ ফলশীল জাতের ব্রি-৮৭, ব্রি-৭৫, বিনা-১৭ সহ অনেক জাতের ধান রোপণ করা হচ্ছে। এ জাতের ধান আগাম চাষ হয়ে থাকে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার আমন চাষের জমি বেড়েছে। যে কারণে ফলনো বেশি হবে।