কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বাড়ির আঙ্গিনায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ
কৃষি বিভাগ
কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বাড়ির আঙ্গিনায় আর মাঠে মিষ্টি কুমড়ার চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম ও চাহিদা থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। হাসি ফুটেছে ছোট-বড় পরিবারগুলো বাড়ির আঙ্গিনা থেকে চালে ছড়িয়ে পড়া ডগায়-ডগায় কুমড়া দেখে।
কৃষি নির্র্ভর ও সবজি চাষ খ্যাত এই জেলায় বারো মাস মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়। আগে গৃহবধূরা বসতবাড়ির আঙিনায় মিষ্টি কুমড়া লাগিয়ে পারিবারিক চাহিদা মেটাতেন। বর্তমানে আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করছে কৃষকরা।
বর্তমানে জেলায় কলা, আলু, আখ, বিভিন্ন ফলজ বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বেড়েছে। কম খরচে এবং তিন মাসের মধ্যেই এই উৎপাদন করা যায় বলে দিন-দিন জেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, বিরুপ আবহাওয়ার জন্য গতবছর মিষ্টি কুমড়া চাষে ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। চাষের সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ফল ছোট ও বিকৃত হয়ে যায়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাড়তি সার ও কীটনাশক ছাড়াই মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন ভালো হয়েছে। একই জমিতে অন্য ফসলের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষে ফলন কিছুটা কম হলেও এক জমিতে একই সাথে দুটি ফসল পাওয়ায় লাভবান কৃষকরা। আবার অনেক কৃষক এগুলো এককভাবে চাষ করেন। এক্ষেত্রে অবশ্য ফলনও বেশি পাওয়া যায়।
কৃষি বিভাগের হিসেবে জেলায় প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে কুমড়ার চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা মিষ্টি কুমড়া তোলা হচ্ছে ট্রাকে। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে যাচ্ছে সুস্বাদু এই সবজি।
সদর উপজেলার উজ্জলপুর গ্রামের কুমড়া চাষি কামরুল হাসান বলেন, মাঠে প্রতিনিয়ত কুমড়ার চাষ বাড়ছে। গতবছর ১ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে ১০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করেছিলাম। এ বছর ১ বিঘা ১০ কাঠা জমিতে কুমড়ার চাষ করে ২০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করেছি। এখনও ২৫-৩০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারব। আশা করি গত বছরের লোকসান কাটিতে লাভবান হতে পারব।
গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের কুমড়া চাষি আব্দুর রহমান জানান- তিনি মরিচের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে ২ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এবার এতো দাম পাবো আশা করিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সামসুল আলম জানান, কুমড়া চাষ লাভজনক। অল্প ব্যয়ে ফলন বেশি পাওয়া যায়। এই ফসল চাষের সুবিধাজনক দিক হল, এটি সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। এতে অন্য ফসলও হয় আবার বাড়তি হিসেবে কুমড়াও হয়। তিনি আরো জানান- কুষি বিভাগ থেকে নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়। ক্ষতিকারক বালাইনাশক ব্যবহার করলে অনেক উপকারী পোকা মারা যায়। তাই কৃষকদের জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করাতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।