বগুড়ায় বিষ দিয়ে মাছ শিকার!
প্রাণ ও প্রকৃতি
বিষ দিয়ে বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীতে অবাধে শিকার হচ্ছে চিংড়ি মাছ। আর এতে করে প্রাকৃতিকভাবে বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে চিংড়ি। শুধ মাছ নয়, পানি বিষাক্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অন্যান্য জলজ প্রাণিও। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে অসাধু চক্র এভাবে মাছ শিকার করে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আইনের প্রয়োগ না থাকায় যমুনা নদীতে বিষ দিয়ে চিংড়ি মাছ শিকার বন্ধ হচ্ছে না। সম্প্রতি বিষ দিয়ে মাছ শিকার বেড়েছে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে অসাধু চক্র এভাবে মাছ শিকার করে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এসব কীটনাশক যেখানে প্রয়োগ করা হয়, সেখানে ছোট-বড় সব মাছ মারা যায়। সেখান থেকে শুরু বড় মাছগুলো সংগ্রহ করে চক্রটি। ছোট মাছগুলো তারা নেয় না। কিন্তু এই ছোট মাছগুলো নদীতে বড় মাছের খাবার। ফলে ওই এলাকার খাদ্যচক্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মাছের খাবার নষ্ট এবং মাছের বংশ বিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা বিষ দিয়ে চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ শিকার করছে।
যমুনাপাড়ের ভাণ্ডারবাড়ি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ (বিষ) যা পানিতে প্রয়োগ করলে মাছ গভীর পানি থেকে ওপরে উঠে আসে। এসব মাছের বেশিরভাগই চিংড়ি। বিষয়ক্রিয়ায় অসংখ্য চিংড়ি ভাসতে থাকে। তখন যে কেউ সহজে মাছ ধরতে পারে। এসব মাছ হাতজাল, ঠেলাজাল, চালুনি কিংবা মশারি দিয়ে ধরা হয়। জালে বড় মাছগুলো আটকা পড়লেও ছোট মাছগুলো মরে নদীতে ভেসে ওঠে। ওরা সমাজের প্রভাবশালী শৌখিন মাছ শিকারি। এ কারণে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, ‘যমুনায় বিষ দিয়ে মাছ শিকার জীববৈচিত্র্যের জন্য ভীষণ হুমকিস্বরূপ। উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাসুদ রানা সরকার বলেন, ‘যমুনা নদীতে বিষ প্রয়োগের কারণে মাছ মারা যায়। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে প্রস্তুত মাছের খাদ্য ও প্রজনন নষ্ট হয়। কিন্ত অপ্রতুল লোকবল দিয়ে যমুনায় পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। তার পরও যতটুকু সম্ভব আইন প্রয়োগ করার চেষ্টা করছি।’