চলনবিলে ধান কাটা শুরু
কৃষি বিভাগ
খাদ্যশস্যের ভাণ্ডারখ্যাত চলনবিলে আগাম জাতের বোনা ও রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসছে।
চলনবিলের প্রসিদ্ধ চাল ও ধানের হাট চাঁচকৈড়, মির্জাপুর, কাছিকাটা, সলঙ্গা, আসামগঞ্জ, নওগাঁ, গুল্টা, বিনসাড়া, নিমগাছি, চান্দাইকোনা, তালগাছি, রণবাঘা, ধামাইচ হাট, বোয়ালিয়াসহ অর্ধশত হাট ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের ধান ও চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর; পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও ফরিদপুর; নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর এবং নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৮০ হেক্টর জমিতে বোনা ও রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। আর চলনবিল এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জমিতে প্রচুর পলি পড়ায় জমি উর্বর হয়। ফলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়, এবারও তাই হয়েছে। এ অবস্থায় বিলপাড়ের মানুষের মধ্যে ধান কাটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
তাড়াশের ধামাইচ হাটের ধানের আড়তদার কেরামত আলী জানান, রোববার পর্যন্ত চলনবিলে প্রতি মণ আব্দুল গুটি ধান এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ২০০, কাটারিভোগ ১৩০০ থেকে ১১০০, ব্রিআর-৫১ এক হাজার ১২৫ থেকে ৯৫০, ব্রিআর-২৯ এক হাজার ২৫০ থেকে এক হাজার ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।
গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় হাটের চালের আড়তদার আয়নাল সরদার জানান, বর্তমানে খুচরা ও পাইকারি বাজারে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি কাটারিভোগ চাল ৬০ টাকার স্থলে ৫২, ৫৮ টাকার মিনিকেট ৫২ টাকা, ব্রিআর-২৯ ধানের চাল ৪৭ টাকার স্থলে ৪১ টাকা, মোটা চাল ৪৫ টাকার স্থলে ৩৮ টাকা ও নতুন সব ধরনের আমন ধানের চাল ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাড়াশ বাজারের চালের আড়তদার লাবু হোসেন জানান, চলনবিলের হাটবাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে আট টাকা কমেছে। এ ছাড়া চলনবিলের ধান কাটা শেষ হলে ধান ও চালের দাম আরও কমবে।
স্থানীয় হোসেন আলী, দুদু ফকির, ওমেলা খাতুন, আহাদ আলীসহ অনেক শ্রমজীবী মানুষ বলেন, ‘ধান ও চালের দাম কমে আসায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।’ তাড়াশের ইউএনও মেজবাউল করিম বলেন, চলনবিল খাদ্যশস্যের অন্যতম বড় উৎস। এখানে ধান কাটা শুরু হলে চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া চালের দাম কমাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।