ধারের টাকা না পেয়ে ‘গরু নিয়ে গেল’ সুদখোররা
প্রাণিসম্পদ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রাহুথড় গ্রামে সুদের টাকা দিতে না পারায় দেনাদারের গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে যাওয়া অভিযোগ উঠেছে কৃষ্ণ তালুকদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুদখোরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাহুথড় গ্রামের লিটন বাইন গত চার বছর আগে ক্যাবল ব্যবসার জন্য পার্শ্ববর্তী মুকসুদপুর উপজেলার বরমপাল্টা গ্রামের সমর তালুকদারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নেন। কয়েক মাস লাভের টাকা দেওয়ার পর তিনি আর টাকা দিতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার সকালে সমর তালুকদারের প্রতিবেশী কৃষ্ণ তালুকদার ও রাহুথড় গ্রামের ঠাকুর বাইন হঠাৎ করে লিটন বাইনের বাড়িতে গিয়ে তার গোয়ালঘর থেকে গরু নিয়ে চলে যায়।
লিটন বাইন অভিযোগ করে বলেন, আমি সাড়ে তিন বছর আগে বরমপাল্টা গ্রামের সমর তালুকদারের কাছ থেকে মাসিক লাভে ৪০ হাজার টাকা সুদে আনি। কয়েক মাস লাভ দেয়ার পর আর্থিক সমস্যার কারণে আসল-লাভ কোনো টাকাই দিতে পারিনি।
বৃস্পতিবার সকালে সমরের প্রতিবেশী কৃষ্ণ তালুকদার ও তার মামা আমার প্রতিবেশী ঠাকুর বাইন আমার গোয়াল থেকে আমার মায়ের পোষা বকনা গাভীটি নিয়ে চলে যায়। এ সময় আমি বাধা দিতে গেলে আমার বাধা উপেক্ষা করে তারা গরু নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরো জানান, আমি গরু আনার চেষ্টা করলে তারা আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। পরে বিষয়টি আমি উজানি ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস, ইউপি সদস্য খোকন বালাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য লোককে জানাই। তাদের হস্তক্ষেপে ও সামাজিকভাবে সমঝোতার আশ্বাসে গরু ফেরত দিয়ে যায়।
গোয়াল থেকে গরু নিয়ে আসার কথা স্বীকার করে কৃষ্ণ তালুকদার বলেন, গত ৪ বছর আগে আমার প্রতিবেশী সমর তালুকদারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে লিটন বাইনকে দেই। অনেক দিন হলেও টাকা ফেরত দেয় না। টাকা চাইলে আজকাল করে নানা টালবাহানা করে। বুধবার টাকাটা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি।
তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমি ও আমার মা লিটনদের বাড়িতে টাকার জন্য গেলে আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমার মামা ঠাকুর বাইনের সহযোগিতায় লিটনের বাড়ি থেকে গরু ধরে নিয়ে আসি। রাহুথড় বাজারের কাছে পৌঁছলে লিটন আমাদের দু’জনকে মারধর করে ও কাছে থাকা মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলে।
এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান।