২:২৩ অপরাহ্ন

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২২ ১১:৫৪ অপরাহ্ন
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে লবণাক্ত জমিতে বিনা সয়াবিন-২ চাষে লাভবান হবে কৃষক,কমবে ভোজ্যতেল আমদানি
কৃষি গবেষনা

বাংলাদেশের উপকূলবর্তী দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে সয়াবিনের উপযুক্ত জাত নির্বাচনের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেলের অর্থায়নে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে দক্ষিণপশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ততা প্রবণ পতিত জমির জন্য অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত বিনাসয়াবিন জাতটিই সবচেয়ে আদর্শ জাত।

গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর . মতিউল ইসলাম একই ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী বর্ণালী সাহা। এছাড়াও একই ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক জয়ন্তী রায় গবেষণায় সহযোগিতা করেন। উক্ত গবেষণায় বারি বিনা কর্তৃক উদ্ভাবিত সয়াবিনের ১০টি জাত নিয়ে কাজ করা হয়।

. মো. মতিউল ইসলাম জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ডুমুরিয়া উপজেলায় পরিচালিত মাঠ গবেষণায় দেখা যায় বিনাসয়াবিন জাতটি অধিক ফলনশীল, লবণাক্ততা সহনশীল, রোগবালাই প্রতিরোধী স্বল্পমেয়াদী। তাই বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জমির ব্যবহার এবং ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এটি একটি আদর্শ জাত।

তিনি আরও বলেন সকলের সহযোগিতা পেলে কৃষক পর্যায়ে জাতগুলো সম্প্রসারণ করলে কৃষক এর আয় বাড়বে,শুধুমাত্র ধানের উপর নির্ভরতা কমবে ।

তিনি আরও জানান, জাতটি হলুদ মোজাইক ভাইরাস প্রতিরোধী ১২ ডিএস এম মাত্রা পর্যন্ত লবণাক্ততা সহনশীল এবং কম উর্বর লবণাক্ত বেলে দোআঁশ হতে এটেল দোআঁশ মাটিতেও চাষের উপযোগী। রবি মৌসুমে পৌষের প্রথম থেকে মধ্য মাঘ এবং খরিপ মৌসুমে শ্রাবণের প্রথম থেকে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত এটি রোপণের উপযুক্ত সময়।

গবেষণার জন্য চাষ করতে গিয়ে দেখা গেছে, সয়াবিনে মাকড়সার আক্রমণ বেশি থাকে এবং মাটিতে অবস্থানকারী কিছু ছত্রাকের কারণে গোড়াপচা রোগ দেখা যায়। তবে এতে খুব বেশি প্রভাব পড়ে না। সয়াবিনের বিছাপোকা দমনের জন্য আক্রান্ত পাতা দেখে পোকাসহ তুলে মেরে ফেলতে হবে। তবে আক্রমণ বেশি হলে সেভিন ৮৫ এসপি ৩৪ গ্রাম পাউডার প্রতি ১০ লিটার পানিতে অথবা এডভান্টেজ ২০ এসসি ৩০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।

অধ্যাপক মো. মতিউল ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের আবহাওয়া সয়াবিন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হলেও কৃষকদের ব্যাপারে জ্ঞানের স্বল্পতা থাকায় অঞ্চলে চাষ হয় না। শুধুমাত্র লক্ষ্মীপুর নোয়াখালীর চরাঞ্চলে স্বল্প পরিমাণে চাষ করা হয়। কিন্তু আমি পিএইডি গবেষণার সময় দেখেছিলাম সয়াবিন স্যালাইনিটি সহ্য করতে পারে। এরা শুধুমাত্র জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না”।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে ল্যাব ট্রায়ালে আমরা দেখেছি বিনাসয়াবিন বিনাসয়াবিন লবণাক্ততা সহনশীল চাষের জন্য উপযোগী। কিন্তু মাঠ গবেষণার ভিত্তিতে ফলনের পরিমাণ, গাছের স্থায়ীত্ব সবদিক বিবেচনা করে উপকূলীয় লবণাক্ত জমিতে চাষের জন্য বিনাসয়াবিন২ই সবচেয়ে আদর্শ জাত। এটি চাষ করতে বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আমন চাষের পর বোরো মৌসুমে জমি ফেলে না রেখে সয়াবিন চাষ করলে কৃষকরা অত্যন্ত লাভবান হবে। তাছাড়া সয়াবিন থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্যও অত্যন্ত নিরাপদ কার্যকরী।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেলের পরিচালক প্রফেসর . আশীষ কুমার দাস বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে এই গবেষণাটি নিয়ে আগ্রহী। কারণ সয়াবিন আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের অত্যন্ত ভালো একটি উৎস। অঞ্চলে চাষ শুরু হলে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও সুফল বয়ে আনবে”।

মোঃঅামিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২২ ৪:৩২ অপরাহ্ন
সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির এক অনন্য হাতিয়ার হাইব্রিড বীজ
কৃষি গবেষনা

সুস্থ-সবল জীবনের জন্য প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের সবজি খাওয়া অপরিহার্য। কারণ জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণের অন্যতম উৎস হলো সবজি। বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সবজির চাহিদা পূরণ করতে হলে ১১.২৪ মিলিয়ন টন সবজির প্রয়োজন। সবজি উৎপাদন হয় ৪.০৫ মিলিয়ন টন।

ক্রমহ্রাসমান আবাদি ভূমির চাপকে সমান রেখে সবজির উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বাড়াতে হবে। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র হাইব্রিড সবজির জাত ব্যবহার ও উন্নত চাষাবাদ প্রযুক্তির মাধ্যমেই এই বিশাল সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষকরা খুব অল্প পরিমাণে (৩০-৪০ শতাংশ) সবজির হাইব্রিড বীজ ব্যবহার করেন। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই শতভাগ পর্যন্ত সবজির হাইব্রিড জাত ব্যবহার হচ্ছে।

সংকর (হাইব্রিড) ও সংকরায়ন:

সংকরায়ন হলো একটি উদ্ভিদ প্রজনন প্রদ্ধতি যার মাধ্যমে দুই বা ততোধিক ভিন্ন রকম জেনোটাইপ সম্পন্ন উদ্ভিদগুলোর যৌনমিলনের ফলে নতুন ধরনের জাত সৃষ্টি করা। এর ফলে যে নতুন জাত তৈরি হয় তা হলো সংকর বা হাইব্রিড, আর এ প্রক্রিয়াটি হলো সংকরায়ন (Hybridi“ation)।

সংকরায়নের উদ্দেশ্য:

1.সংকরায়নের প্রধান উদ্দেশ্য হলো কৌলিক বিভিন্নতা সৃষ্টি করা।
2.সংকরায়নের মাধ্যমে কোনো একটি জাতে অন্যান্য জাত বা বন্য প্রজাতিগুলো থেকে এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত করা যায়।
3.সংকরায়নের অন্য একটি উদ্দেশ্য হলো প্রজনকদ্বয় অপেক্ষা উন্নতর বা অধিক ফলনশীল (১০-৫০ শতাংশ) পর্যন্ত জাত সৃষ্টি করা।
4.সংকরায়ন করার আগে নিম্নোক্ত তথ্যাবলি জানা একান্ত প্রয়োজন
5.পুং-প্রজনক (Male line) সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান।
6.স্ত্রী-প্রজনক (Female line) সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান।
7.গাছগুলো এক লিঙ্গ না উভয়লিঙ্গ।
8.ফুল প্রস্ফুটিত হওয়ার সময়।
9.ফুল স্বপরাগী (Self pollinated) বা পর-পরাগী (Cross pollinated)।
10.ফসল সংগ্রহের সময়।

যে কোনো ফসলের হাইব্রিড জাত তৈরি বা সংকরায়নের জন্য অনেকগুলো ধাপ আছে। প্রতিটি ধাপ সতর্কতার সঙ্গে অতিক্রম করলেই শুধু সংকরায়নে কৃতকার্যতা আসতে পারে। ধাপগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো :

প্রজনক নির্বাচন: সংকরায়নের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো প্রজনক নির্বাচন। উদ্দেশ্যের ওপর নির্ভর করে প্রজনক নির্বাচন করতে হয়। যদি আমাদের উদ্দেশ্য হয় সবজির ফলন বৃদ্ধি, তাবে যে লাইনদ্বয়ের ফলন বেশি শুধু তাদেরই নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে একটিকে পুরুষ লাইন হিসেবে নির্বাচন করতে হবে এবং অন্যটিকে স্ত্রী লাইন নির্বাচন করতে হবে। তবে উভয় লাইন অবশ্যই সমসত্ব (Homoyygous) হতে হবে। নিদিষ্ট লাইন দুটি যদি সমসত্ব (Homoyygous) না হয় তবে কখনোই সংকর বা হাইব্রিড জাত তৈরি করা যাবে না।

স্ত্রী ও পুরুষ ফুলকে সংকরায়নের জন্য উপযুক্তকরণ: নির্বাচিত স্ত্রী লাইন ও পুরুষ লাইনের নিজ নিজ ফুলকে সংকরায়নের জন্য উপযুক্ত করে নেওয়া সংকরায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

এক্ষেত্রে ফুলের বৈশিষ্ট্যের জ্ঞান থাকা খুবই জরুরি। কোনো কোনো সবজিতে একই ফুলে পুরুষ (পুংকেশর) ও স্ত্রী (গর্ভমু-) অংগ বিদ্যমান (যেমন- টমেটো, বেগুন ইত্যাদি) আবার কোনো কোনো সবজিতে পুরুষ ফুল ও স্ত্রী ফুল একই গাছে আলাদা আলাদাভাবে থাকে (যেমন কুমড়া জাতীয় ফসল), আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরুষ ও স্ত্রী গাছেই আলাদা (যেমন পটোল, কাঁকরোল ইত্যাদি)। সবজির প্রকার ভেদ অনুযায়ী কাজের ধরন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, টমেটো ও বেগুনের ক্ষেত্রে ফুল ফোটার আগের দিন স্ত্রী লাইনের ওই নিদিষ্ট ফুল থেকে পুরুষ অঙ্গ (পুংকেশর) চিমটার সাহায্যে অপসারণ করা হয়। এ কাজটিকে বলা হয় পুংহীনকরণ (Emasculation) এ পুংহীনকরণ কাজটি বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে। তবে চিমটার সাহায্যে অপরিণত ফুল হতে পুরুষ অংগ (পুংকেশর) অপসারণ বেশ প্রচলিত।

কিন্তু কুমড়া জাতীয় সবজির ক্ষেত্রে এই কাজটি করা হয় ভিন্নভাবে। এক্ষেত্রে যে স্ত্রী ও পুরুষ ফুল পরের দিন ফোটার সম্ভাবনা আছে, এমন পুরুষ ও স্ত্রী ফুলকে এক বিশেষ ধরনের কাগজের ব্যাগ (Butter paper bag) দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যেন কোনোভাবেই প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়ন না হতে পারে। কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এই ধরনের কাগজের ব্যাগকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পরাগায়ন: প্রত্যেক সবজির পরাগায়নের সময় নিদিষ্ট এবং এই সময়কাল ২-৩ ঘণ্টা হয়ে থাকে। ওই নিদিষ্ট সময়ে মধ্যে পরাগায়ন না হলে ফল সেট হয় না। যেমন মিষ্টিকুমড়ার ক্ষেত্রে সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা ৩০ পর্যন্ত সবচেয়ে উপযোগী সময়। এর আগে বা পরে পরাগধানী ও পরাগ রেণু কার্যকর অবস্থায় থাকে না। এই নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে (টমেটো ও বেগুনের ক্ষেত্রে (সকাল ৮টা ৩০ থেকে ১০টা ৩০ পর্যন্ত) ফুটন্ত স্ত্রী ফুল যা আগে পুংহীন করা হয়েছে, তার গর্ভমু-ের ওপর কাক্সিক্ষত পুরুষ লাইনের গাছ থেকে পুংরেণু (চড়ষষবহ) সংগ্রহ করে তা ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে।

এরপর বেগুনের ক্ষেত্রে উক্ত স্ত্রী ফুলটিকে আগে উল্লেখিত বিশেষ ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে; কিন্তু টমেটোর ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন হয় না। কুমড়াজাতীয় সবজির ক্ষেত্রে, পরাগায়নের আগের দিন ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখা স্ত্রী ফুলটিকে নির্দিষ্ট সময়ে খুলে কাক্সিক্ষত পুরুষ লাইন থেকে পুরুষ ফুলটিকে ছিঁড়ে পাপড়িগুলোকে আলাদা করে স্ত্রী ফুলের গর্ভমু-ের ওপর ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে এবং স্ত্রী ফুলটিকে পুনরায় ঢেকে দিতে হবে।

এক্ষেত্রে একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ২-৩টি স্ত্রী ফুলকে পরাগায়ন করা যায়। ফুল ঢাকার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে, তা হলো ফুল ঢাকার পর ফুলের ভেতর যেন কোনো পিঁপড়া বা অন্য কোনো পোকা প্রবেশ করতে না পারে। কাক্সিক্ষত সংকর (হাইব্রিড) ফল সেট হওয়ার ৩-৪ দিন পর ব্যাগ অপসারণ করে দিতে হবে। সংকরায়িত ফলে অবশ্যই বিভিন্ন তথ্য সংবলিত একটি ট্যাগ ঝুলিয়ে দিতে হবে। ট্যাগের মধ্যে পরাগায়নের তারিখ ও প্রজনকদ্বয়ের নাম অবশ্যই লিখে রাখতে হয়।

বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ: বীজ পরিপক্ব হলে প্রতি গাছের বীজ আলাদা আলাদা ব্যাগে ট্যাগ সহকারে সংগ্রহ করা হয়। বীজ শুকিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়, যেন তা অন্যান্য বীজের সঙ্গে মিশে যেতে না পারে এবং পোকামাকড় কর্তৃক আক্রান্ত হতে না পারে।

হাইব্রিড বীজের ব্যবহার: উপরোক্তভাবে উৎপাদিত সংকর (হাইব্রিড) বীজকে শুধু একবারেই ব্যবহার করা যাবে। কোনোভাবেই পরবর্তী বছর তা থেকে বীজ রাখা যাবে না এবং খাবারের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

দিন দিন আমাদের দেশে হাইব্রিড সবজি চাষাবাদ বাড়ছে। আমাদের দেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে সবজি উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। আর এক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে সবজিতে শতভাগ হাইব্রিড বীজের ব্যবহার। হাইব্রিড বীজকে কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয় করতে হবে এবং সে সঙ্গে সঙ্গে হাইব্রিড সবজি বীজের প্রাপ্যতাও নিশ্চিত করতে হবে।

এক্ষেত্রে একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে যে, হাইব্রিড সবজির স্বাদ দেশি সবজির মতো হয় না। এ ধারণা সঠিক নয়। হাইব্রিড সবজির স্বাদ নির্ভর করে প্রজনকদ্বয়ের স্বাদের ওপর এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহারের ওপর। মাত্রাঅতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহারের কারণে সবজির স্বাদে কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওয়াতাধীন বিএডিসি ‘বিএডিসির সবজি বীজ বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়াজতকরণ, সংরক্ষণ ও বিতরণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

আশা করা যায়, এই প্রকল্পের গবেষণা প্রান্তিক পর্যায়ে হাইব্রিড সবজি বীজের স্বল্পমূলে প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে এবং দেশে সবজি চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

 

ড. বাহাউদ্দিন আহমদ
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সবজি বিভাগ,
উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র বিএআরআই, জয়দেবপুর, গাজীপুর

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৬, ২০২২ ৪:১১ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জে ভুট্টার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
কৃষি গবেষনা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ভুট্টা চাষে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। ভালো দাম পাওয়ার ভুট্টা চাষিদের মুখে এখন খুশির হাসি। দেশে বর্তমানে ভুট্টার চাহিদা বেশি থাকায় ক্ষেত থেকে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সব ভুট্টা।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলায় ১ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। চলতি বছর আবহাওয়া ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী ছিল। যে কারণে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হয়নি ফলনও হয়েছে খুব ভালো।

চাষিরা জানান, বর্তমানে ক্ষেত থেকে প্রতি মণ ভুট্টা এক হাজার টাকা কেজি দরে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে কৃষকদের পরিবহন খরচও বেঁচে যাচ্ছে। বিঘা প্রতি ভুট্টা চাষ করতে খরচ হয় ১৮-২০ হাজার টাকা।

উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের নওখাদা গ্রামের কৃষক আজাদ মিয়া জানান, হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করে বিঘা প্রতি ৫৫ মণ ভুট্টার ফলন পেয়েছেন। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভুট্টা বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তিনি।

মৌসুমী ব্যবসায়ী আলী হোসেন জানান, বাজারে চাহিদা থাকায় ক্ষেত থেকেই ১ হাজার টাকা মণ দর দিয়ে ভুট্টা কিনে নিয়ে যাচ্ছি। মধ্যস্থ কারবারি না থাকায় ভুট্টা বিক্রি করে বেশি লাভবান হতে পারছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর নাহার লুনা জানান, ভুট্টার বাম্পার ফলন হওয়ায় এবছর কৃষকেরা লাভবান হয়েছেন। কৃষকেরা যাতে ভবিষ্যতে ভুট্টা চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে সে জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২২ ১০:০০ পূর্বাহ্ন
স্বল্প আলোয় ক্যাপসিকাম চাষে খুবি শিক্ষার্থীর সাফল্য
কৃষি গবেষনা

গবেষণায় স্বল্প আলোয় ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ চাষে সাফল্য পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানা। খুবির এগ্রো-টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নানের তত্ত্বাবধানে জার্মপ্লাজম সেন্টারে এ গবেষণা করা হয়।

এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল গবেষণায় লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, বেগুনি ক্যাপসিকাম নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি স্বল্প রৌদ্র-আলোতে মালচিং শিট ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ক্যাপসিকাম চাষ করেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ছায়াযুক্ত স্থানে ক্যাপসিকাম চাষ করা হলেও প্রতিটি গাছে প্রায় ১০-১৫টি ও সর্বোচ্চ ২০টি ক্যাপসিকাম ধরেছে ও প্রতিটি ক্যাপসিকামের ওজন প্রায় ৭০-২০০ গ্রাম। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ৭০০-৯০০ গ্রাম পাওয়া গেছে।

দেখতে অনেক সাধারণ হলেও ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ কিন্তু মোটেও সাধারণ নয়। দেখা গেছে প্রতি ১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামে রয়েছে- ৮৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন ৪.৬০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ১.৭০ মিলিগ্রাম স্নেহ, ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ৩৭০ আইইউ ভিটামিন এ। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, থায়ামিন, লেবোফ্লেবিস ও ফলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিংক, কপারের মত উপকারি সব উপাদান। যা নানাভাবে আমাদের দেহের জন্য ভীষণ উপকারী।

১। ক্যাপসিকামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। আর এই ভিটামিন সি আমাদের দেহে নানাভাবে উপকার করে থাকে। ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সহায়তা করে।ফলে আয়রনের অভাব দূর হয় এবং রক্তাল্পতার মতো রোগও প্রতিরোধ করে।  এছাড়াও ভিটামিন সি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকারী। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। দাঁত এবং দাঁতের মাড়ির সুরক্ষায় ভিটামিন সি অনেক উপকারী। এর ভিটামিন-এ ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি সজাগ রাখতে সাহায্য করে।

২। সবুজ ক্যাপসিকামের আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম । যা আমাদের পেশির সংকোচন-প্রসারণে সাহায্য করে।ক্যাপসিকামের ক্যাপসাইসিন উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে । এছাড়াও এতে আছে লাইকোপেন নামক এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পিগমেন্ট । যা আমাদের স্তন ও প্রস্টেটের ক্যানসার রুখতে সাহায্য করে। লাল ক্যাপসিকামে থাকা জেক্সানথিন ও লুটেনের সাহায্যে চোখের ছানি প্রতিরোধ হয় এবং এটি পেশির ক্ষয় রুখতে সাহায্য করে।

৩।  ক্যাপসিকাম আমাদের অতিরিক্ত ওজন কমায়। কারণ এতে থাকা অ্যাক্টিভেটিং থার্মোজেনেসিস এবং হজম শক্তি উন্নত করার ক্ষমতা আমাদের তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে সাহায্য করে। একই সাথে ক্যাপসিকাম আমাদের দেহের বাড়তি ক্যালরি পূরণ করে। এতে হাই ফ্যাট থেকে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায় ।ক্যাপসিকাম জুস আমাদের হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা ও পেটের বিভিন্ন রোগ যেমন ডায়রিয়া, গ্যাস, অ্যাসিডিটি দূর করে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ক্যাপসিকাম খুবই উপকারী। এটি পাকস্থলীর আলসার বা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।

৪। ক্যাপসিকামে আছে অ্যালকালোয়েড, ফ্লেবোনয়েড এবং ক্যানিনের মত উপকারী উপাদান। অ্যালকালোয়েড অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ক্যানিন বিভিন্ন আন্ত্রিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।এছাড়াও ক্যাপসিকাম আমাদের যেকোনো ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। মাইগ্রেন, সাইনাস, ইনফেকশন, দাঁতে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ইত্যাদি ব্যথা দূর করতে দ্রুত কাজ করে এটি। একই সাথে এটি আমাদের সি সিকনেস বা সমুদ্রে যাওয়ার কারণে  অসুস্থতা, ম্যালেরিয়া, জ্বর ইত্যাদি রোধে  বেশ কার্যকর।

৫। ক্যাপসিকামে রয়েছে লাইকোপেন। যা আমাদের বিভিন্ন কার্ডিওভ্যস্কুলার ডিজিস থেকে দূরে রাখে এবং হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে। এতে থাকা ভিটামিন কে আমাদের দেহের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে। ত্বক পরিষ্কার রাখতে ক্যাপসিকাম বেশ উপকারী। এটি ত্বকের র‍্যাশ ও ব্রণ প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এটি বাতের ব্যাথা কমায়। এতে থাকা ভিটামিন-সি আমাদের কোলাজেন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যা আমাদের দেহের ত্বক ও হাড়ের সন্ধিকে পরিপোষণ করে।এছাড়াও এটি হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে এবং কোষের ক্ষয় রোধ করে।

৬। ক্যাপসিকামে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং বিটা ক্যারোটিন।  যা আমাদের দৃষ্টিশক্তির বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং আমাদের দৃষ্টিশক্তি শক্তিশালী  করে। এতে থাকা ভিটামিন-এআমাদের চোখের জন্য বিশেষত রাত্রিকালীন দৃষ্টির জন্য ভাল। এছাড়াও এতে থাকা ক্যারোটেনয়েড বয়স জনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা ম্যাকিউলার ডিজেনারাইজেশনের সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দেয়।

এ গবেষণার উদ্দেশ্যের ব্যাপারে গবেষক জানান, ক্যাপসিকাম বিদেশি সবজি হওয়ায় বড় বড় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং দাম অন্য সবজির তুলনায় অনেক বেশি। এর বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০-৩০০ টাকা এবং প্রতিটি গাছে ৩০-৪০ টাকা খরচ করে ১৫০-২০০ টাকা আয় করা সম্ভব। এটি চাষ করলে কৃষকেরা স্বাবলম্বী হবে ও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।

ক্যাপসিকাম চাষে সবচেয়ে বড় বাধা হল বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ, বিশেষ করে এফিড, থ্রিপস, সাদা মাছি। এ জন্য চারা লাগানোর পরের দিনই ইমিডাক্লোরোফিড বা এসিটামপিড গ্রুপের কিটনাশক যেমন বিল্ডার বা তুন্দ্রা ব্যবহার করতে হয়।

জমি তৈরির সময় রাসায়নিক সারের সাথে কার্বফুরান গ্রুপের ফুরাডান ব্যবহার করলে গাছে ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট হয় না। ক্যাপসিকামের প্রথম ফুল অবশ্যই ঝরে পড়ে এবং ফুল ঝরে পরা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্লান্ট গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া চিলি লিফ কার্ল ভাইরাস ক্যাপসিকামের জন্য খুবই ক্ষতিকর। গাছ ভাইরাস আক্রান্ত হলে তা তুলে জমি থেকে দুরে মাটি চাপা বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। এ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষায় এর ভেক্টর দমন করতে হয়। সাধারণত সাদা মাছি, এফিড বা জাব পোকা, থ্রিপস এই ভাইরাসের ভেক্টর হিসেবে কাজ করে।

এফিড ও থ্রিপস দমনে নিম ওয়েল ও কেওলিন (অরগানিক) ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভালো মানের কেওলিন সচরাচর পাওয়া যায় না। সাদা মাছি ও এফিড দমনে ল্যাম্বডা সাইহেলোথ্রিন ও যায়ামেথোক্সেম গ্রুপের কীটনাশক ক্যারেট ও অলটিমো প্লাস বা এসিটামিপ্রিড গ্রুপের তুন্দ্রা ব্যবহার করা হয়। থ্রিপস দমনে স্পিনোসীড গ্রুপের ক্যারেট/ম্যনসার/এবেরন।

মাকড়ের আক্রমণ হলে পাতা নিচের দিকে কুচকে যায় এবং ভাইরাসের আক্রমণে পাতা উপরের দিকে কুচকে যায়। মাকড় দমনে ভার্টিমেক/ইন্ট্রাপিড,অ্যাবেমকটিন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতিবার কীটনাশক স্প্রে করার সময় ছত্রাকনাশক হিসেবে এন্ট্রাকল বা কার্বেন্ডাজিম, মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক দিতে হয়। পোকামাকড় কীটনাশক প্রতিরোধী হওয়ায় স্প্রে করার সময় কীটনাশক পরিবর্তন করতে হয়।

ক্যাপসিকাম চাষে ভালো ফলনের পূর্বশর্ত জাত নির্বাচন। মানসম্মত ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ১৬-২১° সেলসিয়াস। সাধারণত নভেম্বর মাসে চারা রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

সবুজ ক্যাপসিকাম ৯০-১০০ দিনের মধ্যে তোলার উপযোগী হয় যেখানে লাল, হলুদ, বেগুনী, কমলা ১২৫-১৩৫ দিন সময় লাগে। সাধারণত সারি থেকে সারি এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪৫ সে. মি. রাখা হয়। ক্যাপসিকাম বৃষ্টি বা উত্তাপ কোনটাই পছন্দ করে না। সবকিছু ঠিক থাকলে হেক্টর প্রতি ২০-২৫ টন ফলন পাওয়া যায়।

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২১, ২০২২ ১০:১১ অপরাহ্ন
খুবিতে আন্তর্জাতিক বন দিবস উদযাপিত
কৃষি গবেষনা

‘বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার, টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক বন দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ ২১ মার্চ (সোমবার) বেলা ১১টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন ঘুরে অদম্য বাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. ইফতেখার শামস, সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর এ কে ফজলুলসহ ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বেলা সাড়ে ১১টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে থ্রি মিনিটস টক কম্পিটিশনের গ্র্যান্ড ফিনালে ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফরেস্ট্র সার্ভিসের মানবসম্পদ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক (কমপাস প্রোগ্রাম) মোসা. শারমিন খানম। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. ইফতেখার শামস। কি-নোট স্পিকার হিসেবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ও আলোচনা করেন প্রফেসর ড. মো. গোলাম রাক্কিবু। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত ও সহযোগী অধ্যাপক ড. অরুণ কান্তি বোস।

অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতা ও থ্রি মিনিটস টক কম্পিটিশনের গ্র্যান্ড ফিনালের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। টক কম্পিটিশনে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও পিপলস চয়েজ হিসেবে মোট তিনজনকে পুরস্কারস্বরূপ ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও প্রাইজমানি প্রদান করা হয়। এছাড়া বাকি অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

তথ্যসূত্রঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফেসবুক পেজ

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১০, ২০২২ ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের কানাইঘাটে কৃষিবিভাগের লিচু বাগান পরিদর্শন
কৃষি গবেষনা

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ১ নং লক্ষিপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বড়চাতল গ্রামে ৯ মার্চ পাহাড়ের টিলার উপর বিভিন্ন জাতের লিচু বাগান পরির্দশন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃএমদাদুল হক।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃআবুল হারিছ,আরজু মিয়া,বাগানের মালিক কৃষক প্রতিনিধি হাজি আব্দুল মন্নান,হাসান আহমেদ,শরফ উদ্দিন ও কয়েছ আহমদ প্রমুখ।

কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক বাগান পরির্দশনের সাথে সাথে কৃষকদের পোকামাকড় আক্রমণ থেকে বাগান রক্ষায় বালাইনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ১, ২০২২ ১২:৩৩ অপরাহ্ন
নওগাঁয় ফার্মা এন্ড ফার্ম’র সায়েন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

বাংলাদেশের পোল্ট্রি, ক্যাটল ও আ্যাকুয়া সেক্টরের অন্যতম এগ্রোবেজড শিল্প প্রতিষ্ঠান ফার্মা এন্ড ফার্মা ও সিনিল ফার্মা’র সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে মাসব্যাপী সায়েন্টিফিক সেমিনার চলমান রয়েছে

তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ফার্মা এন্ড ফার্ম’র একটি সায়েন্টিফিক সেমিনার বা বৈজ্ঞানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহির উদ্দিন এর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফার্মা এন্ড ফার্মের সেলস ম্যানেজার ডাঃ মাহমুদ নেওয়াজ। এসময় তিনি ভেটেরিনারি প্রফেশন, সায়েন্টিফিক নলেজ শেয়ারিং, নতুন প্রোডাক্ট আপগ্রেডেশন, প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় গুনগত প্রোডাক্ট ব্যবহার গুরুত্ব, ফার্মা এন্ড ফার্মা’র প্রোডাক্টস (Amimox Inj, Cefa-4 Inj, F.T.D Inj., Toposol Inj, Amilyte-C Inj, Super CMP Inj, Milk More Bolus, Canishot RV-K, Cipryl) এর গুনগত মান ও কার্যকারিতা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন করেন।

উক্ত সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার, এরিয়া ম্যানেজার ও মার্কেটিং অফিসার সহ জেলার অন্যান্য ডাক্তারবৃন্দ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২২ ১২:০৫ অপরাহ্ন
দিনাজপুরে গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ক গম গাছ
কৃষি গবেষনা

দেশে বাজারে গমের চাহিদা বাড়লেও কমে গেছে আবাদ। দিনাজপুরে গো খাদ্য হিসেবে অপরিপক্ক গম গাছ কেটে ফেলে সৃষ্টি করা হচ্ছে নতুন সংকট। ঘাসের পরিবর্তে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব গাছ। দিনাজপুরে ব্যাপক হারে এ প্রবণতা শুরু হওয়ায় দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

কৃষিনির্ভর জেলা দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গমের চাষ হয়। সবুজে ছাওয়া এসব ক্ষেতের গাছে এরইমধ্যে কচি গম বেরিয়ে এসেছে। এক মাস পরই ক্ষেত থেকে গম তোলার কথা। কিন্তু বিভিন্নস্থানে গম পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে গবাদিপশুর খাবার হিসেবে।

কৃষকরা জানান, গম বিক্রি করে তারা যে আয় করেন তার থেকে গাছের ঘাস বিক্রি করে এর থেকে বেশি উপার্জন করেন তারা।

দিনাজপুর জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এমনিতেই গমের উৎপাদন কম, তারওপর গবাদিপশুর ঘাস হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় সার্বিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এটি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে খাদ্য বিভাগ।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু দিনাজপুর নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মধ্যে এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে ফলন আরও হ্রাস পেতে পারে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে কৃষি বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনজুরুল হক বলেন, লাভের আশায় কৃষকরা গম কেটে গরু কে খাওয়ার জন্য ঘাস হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছে। এজন্য আমরা বড় পরিকল্পনায় নিয়েছি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যেক উপজেলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

দেশে বছরে গমের চাহিদা ৭৫ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১২ লাখ টন। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে গমের চাহিদা বাড়ছে। তাই দেশের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে গম আমদানি করতে হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২২ ৯:৪৪ অপরাহ্ন
খুবিতে পরিবেশ বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন
কৃষি গবেষনা

বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে : মন্ত্রী

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক দু’দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন’। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকাল ৯টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তবে বাংলাদেশ পরিবেশের ক্ষতি না করেও আজ প্রথম সারির ভুক্তভোগী দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। এজন্য বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বিষয়ে ন্যাশনাল এডাপটেশন প্লান তৈরি করা হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রিসার্চ এবং নলেজ ম্যানেজমেন্টকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ জলবায়ু ইস্যুতে বিশ্বের সোচ্চার দেশ প্রধানদের মধ্যে অন্যতম। তিনি এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করছেন। জাতিসংঘের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগলিক অবস্থানজনিত কারণে এখানে গবেষণার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এই সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা মন্ত্রণালয়ের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে বিশ্ব কতটা চিন্তিত সেটা বুঝতেই এই সম্মেলন।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবেশ বিষয়ে বিভিন্ন আইন করে গেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কারণে তিনি এ বিষয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছেন। এ থেকেই আমরা বুঝতে পারি পরিবেশ নিয়ে ভাবনা এখন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের।

উপমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ১৯৭টি দেশ সবাই এখন বিশ্বাস করে আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশ ঠিক রাখতে হবে। গত বছর অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনেও পরিবেশের নানা দিক স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশই চায় সুন্দর পরিবেশ ধরে রাখতে। তবে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। তাদের বিষয়ে সবাইকে ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক প্রথম এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বার্তা যে, আমাদের পরিবেশ নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। সকলের গবেষণায় এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এসব দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে, আয়তন কমে আসছে। প্রতিবছর ২-৪টি দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। সুন্দরবন না থাকলে এ উপকূলে মানব বসতি ও জীবনযাপন সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে ভাবতে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসতে হবে। সকলের চিন্তা-ভাবনায় আমাদের দেশ বিশ্বে আরও ভাল অবস্থান তৈরি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও সম্মেলনের চিফ প্যাট্রন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে তা ভবিষ্যতে মানবজাতি ও সভ্যতার জন্য হুমকী স্বরুপ। তিনি বলেন এই সম্মেলনটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে শুধু দেশের জন্যই নয় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত নিয়েও আলোচনা হবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান উপকূলীয় এলাকায় হওয়ায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ নিয়ে শিক্ষা ও গবেষণা করা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সে দায়িত্ববোধ থেকেই এমন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্লিনারি স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত। প্যাট্রন হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অরগানাইজিং সেক্রেটারি সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলনের অরগানাইজিং কমিটির কনভেনর প্রফেসর ড. দিলীপ কুমার দত্ত। এর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন শুরু হয়। এরপর অতিথিবৃন্দ এবং বিদেশি ডেলিগেটদের ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সম্মেলনের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। এসময় ভাইস-চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে খ্যাতনামা পরিবেশবিদ প্রফেসর ড. আলী রেজা খান ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইডেনসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী সশরীরে এবং ভার্চুয়ালি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ৬টি কি-নোট পেপার এবং ১২৫টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ সম্মেলনে ৬০ জন তরুণ গবেষকের গবেষণা নিবন্ধও উপস্থাপিত হবে।

উৎসঃখুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফেসবুক পেজ

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১, ২০২২ ৩:৫২ অপরাহ্ন
রাঙামাটিতে সোর্সোপ চাষে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে
কৃষি গবেষনা

বিদেশি ফল সোর্সোপ। যার বৈজ্ঞানিক নাম অনারা মুরিকাটা। দেখতে অনেকটা আতার মতো। স্বাদে কিছুটা টক। তাই স্থানীয়দের কাছে এটি টক আতা হিসেবে পরিচিত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকলেও পরির্বতন হয় না রঙ। তবে আতার চেয়ে আকারে বড়। ডিম্বাকৃতির, কিছুটা চ্যাপ্টাও। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও তেমন মজাদার। রসালো এ ফলের গন্ধও অতুলনীয়। তাই এর নাম সোর্সোপ।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলছেন, এই সোর্সোপ কৃষিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে রাঙামাটিতে।

রাঙামাটি কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর সময় লেগেছে গবেষণা করে বিদেশি এ ফল সোর্সোপ উদ্ভাবন করতে। এটা বাংলাদেশে প্রথম। শুধুমাত্র রাঙামাটিতে সোর্সোপ ফল চাষে সফলতা এসেছে।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলা রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, ২০১৭ সালে ভিয়েতনাম থেকে সোর্সোপ ফলের চারাগাছ চারা সংগ্রহ করা হয়। এপর শুরু হয় গবেষণা। মোট ৩০টি গাছে কাপ্তাই রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বোপন করা হয়। ২০১৯ সালে সে গাছে ফল ও ফল আসে। প্রথমে সবগুলো গাছে ফল আসেনি কিন্তু ২০২০ সালে সব গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। ২০২২সালেও বেশ ভাল ফলন পাওয়া যায়। তাই বলা যায় এ গাছের উপর গভেষণা করে আমরা সফল হয়েছি। পার্বত্যাঞ্চলের মাটি এ গাছের জন্য খুবই উপযোগী। গবেষণা ৪ জন সদস্য নিয়ে আমরা টিম গঠন করি। সবই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। জাতীয় জীব বোর্ডে সোর্সোপ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। নিবন্ধন হয়ে গেলে এ সোর্সোপ ফল গাছ কৃষকদের মাঝে চাষাবাদের জন্য ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এটি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় গাছ যা সর্বোচ্চ দশ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। সাধারণ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মিটারের পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রথম ফল আনতে সময় লাগবে ১৬ থেকে ২৫ মাস পর্যন্ত। স্বাদ টক জাতীয়। তবে পারিপক্ক হলে খুবই মিষ্টি। আমেরিকা, আফ্রিকার, ইউরোপে ও স্পেনে এ সোর্সোপ ব্যাপক চাষাবাদ হয়ে থাকে। এ ফলের ব্যাপক ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের জন্য খুই উপকারী। এছাড়া এটি হজমশক্তি এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop