টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে আগাম জাতের সরিষা চাষ
কৃষি বিভাগ
টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে দেড় মাস আগে থেকেই। নতুন ধান কাটার পরেই চাষ দিয়ে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বুনেছেন কৃষকরা। সরিষা তোলেই ইরি বোরো লাগাবেন। এভাবে বছরে একই জমিতে অধিক ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছে গ্রামের কৃষকরা। বছরে কেউ কেউ তিন চার বার ফসল ফলান। আমন বোরো ধান চাষের মধ্যবর্তী সময়টা অলস পড়ে থাকে। এ সময়টাকে কাজে লাগাতে অল্প খরচে বাড়তি ফসল সরিষা চাষে এগিয়ে আসছে। কয়েক বছর ধরে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে একই জমিতে কয়েক বার ফসল চাষ।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এ উপজেলায় ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। এ বছর ১২শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা আগের তুলনায় বেশি। এ বছর ৩ হাজার কৃষক প্রণোদনার আওতায় এসেছে। ধান, ভুট্টা, আলু, গমসহ সব ধরনের ফসল চাষে এ উপজেলা এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ধান চাষের পর সরিষার চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর গত বছরের চেয়ে পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের হলুদের সমারোহে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ।
মুশুদ্দি গ্রামের কৃষক আনছার আলী বলেন, তাদের গ্রামে আলু। মরিচ, ভুট্টা, গম,শিম, কপি, লাউসহ প্রচুর পরিমানে সরিষা চাষ হয়ে থাকে। তিনি গত বছর ফসলের নিবিড়তা প্রকল্পের আওতায় সরিষা চাষে সেরা কৃষকের সম্মাননা পেয়েছেন। চার দিকে এ সময় সরিষার ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। ধনবাড়ী উপজেলার কয়েকজন সরিষা চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়া ভালো থাকলে ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৫ থেকে ৭ মণ করে সরিষার ফলন হয় এবং সরিষা চাষে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলে খরচের তুলনায় লাভ বেশি থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। মুশুদ্দি ঝুপনা কামার পাড়া গ্রামের সরিষা চাষি জলিল মিয়া ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর এ এলাকায় অনেক কৃষক সরিষা চাষ করেছে। তুলনামূলক খরচও কম। তা ছাড়া সরিষা চাষে সেচ ও সার কম লাগে। অন্যদিকে ধান তোলার পর আগাম সরিষা চাষ করে আবার ধান চাষ করা যায়। শফিকুল ইসলাম জানান, তাদের এলাকায় ১ বিঘা থেকে শুরু করে ৭ বিঘা পর্যন্ত সরিষা চাষ করেছে। তার মতে এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে তারা আশানুরূপ ফলন পাবেন এমনটাই জানালেন এ চাষি
এ বিষয়ে ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ পরিমাণে সরিষার চাষ এর আগে কখনো হয়নি। গত বছর ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। এ বছর ১২শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। যা আগের তুলনায় বেশি। প্রদর্শনী ও অন্যান্য বীজ সহায়তার আওতায় ১ হাজারসহ মোট ৪ হাজার কৃষককে সরিষার বীজ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষকরা লাভবান হবে। আগামীতে সরিষা চাষে আরও উৎসাহিত হবে এমনটাই প্রত্যাশার কথা জানালেন তিনি।