৬:১৪ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : মার্চ ১৩, ২০২২ ১২:১৭ অপরাহ্ন
৬ বছরে পোল্ট্রি ফিডের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ, দায় কার ?
পোলট্রি

আবারো বাড়লো পোল্ট্রি ফিডের দাম যা স্মরণকালের সর্বোচ্চ । গত ৬ বছরের মূল্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, বস্তাপ্রতি এই মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ । কিন্তু সেই অনুপাতে মুরগির দাম বাড়েনি, ফলের খামারিদের অবস্থা দিনকে দিন হয়েছে শোচনীয় । ব্রয়লার মুরগির খাবারের দামের অস্থিতিশীলতা গত কয়েক বছরে চরম আকার ধারন করেছে । সাধারনত এদেশের খামারীগন ব্রয়লার পালনের ক্ষেত্রে রেডি ফিড খাওয়ান এবং দেশে অসংখ্য ফিড কোম্পানি রয়েছে । বিগত বছরগুলির ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে, ২০১৬ সালে প্রতি ৫০ কেজি ফিডের বস্তার দাম ছিল কোম্পানিভেদে ২০৫০-২১০০ টাকা । সময়ের সাথে সাথে ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু চরম রূপ ধারন করেছে মূলত ২০১৯ এর আগস্ট থেকে । সেই সময়ে ফিডের দাম কোম্পানিভেদে বস্তাপ্রতি ২২৫০ থেকে ২৩০০ টাকা ছিল, ২০২০ এর প্রায় পুরোটা সময় এই দাম ২৪০০ থেকে ২৪৫০ টাকার মাঝে ছিল আর সেটা বৃদ্ধি পেতে পেতে ২০২১ সালের জুলাই মাসে হয় প্রায় ২৫০০-২৫৫০ টাকা । এরপর কয়েক দফা মূল্য বৃদ্ধি পায়, সর্বশেষ মূল্য বৃদ্ধির পর (২০২২ এর ১১ মার্চ) বস্তাপ্রতি ব্রয়লার ফিডের মূল্য হয়েছে কোম্পানিভেদে প্রায় ২৯২০-৩০০০ টাকা ।  অর্থাৎ ৬ বছরে ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বস্তাপ্রতি ১০০০ টাকা (২০১৬ তে ২০৫০-২১০০ থেকে মার্চ, ২০২২ এ ৩০০০ টাকা), কেজিতে প্রায় ২০ টাকা । ফলে মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে অনেক, কিন্তু এই দাম বৃদ্ধির পেছনে দায় কার ? এক কথায় উত্তর দিলে সহজেই এই দায় চাপিয়ে দেওয়া যায় ফিড মিল মালিকদের উপর, কিন্তু আসলেই কি তাই ?

২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের ফেসবুক পেইজে পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনে যেসব কাঁচামাল প্রয়োজন তার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটির আইটেমের প্রতিদিনের মূল্য নিয়ে ধারাবাহিক পোস্ট করতাম ।  ১৩ নভেম্বর, ২০২০ এ আমাদের দেওয়া কয়েকটি আইটেমের মূল্য এবং ১৬ মাসের ব্যবধানে সেই আইটেমগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য নিম্নরূপঃ

এই তথ্যগুলি দেখার পর যারা ফিড মিলগুলিকে দায় দিচ্ছিলেন তাঁরা হয়ত বুঝতে পারবেন যে তাদের দায় দেয়াটা কতটা যৌক্তিক ।

পোল্ট্রি ফিডের মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান এনাম ট্রেডিং এর এজিএম মোঃ সাইফুল আলম। তিনি বলেন, দেশের অন্য সকল সেক্টর এর মতো পোল্ট্রি খাত আমদানী নির্ভর, ফিড তৈরীর কাচামাল এবং মেডিসিন বেশীর ভাগই আমদানী নির্ভর, পোল্ট্রি খাদ্যের মুল উপাদান ভুট্রা, সয়াবিন মিল, রেপসীড কেক, ডিওআরবি, লাইমষ্টোন এবং বিভিন্ন প্রোটিন যেমন পোল্ট্রি মিল, ফিশমিল, সিজিএম এসব পন্যের মধ্যে অল্প পরিমানে ফুলফ্যাট সয়াবিন আমাদের দেশে চাষ হলে এটা অত্যন্ত নগন্য পরিমান । আর ফিড তৈরীর মুল উপাদান ভুট্রার ব্যাপক চাষ হলেও আমাদের চাহিদা পুরনের জন্য সারা বছর নির্ভর করতে হয় ভারত, ব্রাজিল কিংবা ইউরোপীয় দেশ গুলির উপর। । সারা বছরই দফায় দফায় ভুট্রা সয়াবিনের মুল্যবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্য সকল কাঁচামালের দাম – ৪০ টাকা দামের ডিসিপি এখন ৭৫ টাকা, ৮ টাকা দামের লাইমষ্টোন এখন ১৩-১৪ টাকা, ২৪০ টাকার ডি এল মিথুনিন ৩১০ টাকা, ১৪৫ টাকার লাইসিন ২২০ টাকা, ২০ টাকার রাইচ পলিশ এখন ৩০ টাকারও বেশী । এই সময়ে নতুন ভুট্রার দাম যেখানে প্রতি বছর ১৬ -১৮ টাকায় মৌসুম শুরু হয় সেখানে এ মৌসুমে শুরুই হয়েছে ৩০ টাকার উপর, মৌসুমের শেষ পর্যন্ত এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা অনুমান করাও দুঃসাধ্য ।  সয়াবিন এর বাজার পুরোটাই অস্হিরতা আর অনিশ্চয়তায় ছিলো সারা বছর । দফায় দফায় মুল্য বৃদ্ধি আর বিকল্প হিসাবে আগে মিট এন্ড বোন মিল ব্যবহার করলেও এখন সেটি নিষিদ্ধ থাকায় সয়াবিন এর বিকল্প কিছু নেই বলে সয়াবিন এর বাজার নির্ভর করে দেশের বড় দুই জায়ান্ট সিটি আর মেঘনার ইচ্ছে অনিচ্ছের উপর আর আন্তর্জাতিক বাজারে মুল্য বৃদ্দির নতুন অনুঘটক রাশিয়া ইউক্রেম যুদ্ধের কারনে এ অস্থিরতা আরো বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে বিটিসি লিমিটেড (ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস অ্যান্ড এডিটিভস সাপ্লাই ডিভিশন) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতাফ বিশ্বাস বলেন, আমদানি নির্ভরতা, আমদানিকৃত পণ্য পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি, কনটেইনারের স্বল্পতা, যুদ্ধ ও বৈশ্বিক মহামারি – এসব কারণগুলোও বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী । তিনি আরোও বলেন – আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি সুস্থ্য, সবল ও মেধাবী জাতি গঠনের জন্য বেশি বেশি আমিষের যোগান বৃদ্ধিও গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থা তাতে প্রোটিনের সংকট দেখা যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়, অথচ বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে চীন তাদের আগামী ২ বছরের কাঁচামাল মজুদ করে রেখেছে, আমাদের মত দেশগুলি পিছিয়ে পড়েছি, তার স্বরূপ আজকের এই সংকট ।

 

বর্তমানে দেশের পোল্ট্রি সেক্টরের অবস্থা এতটাই শোচনীয়, শুধু যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামার বন্ধ হয়েছে তা নয়, ইতোমধ্যে ছোট ছোট অনেক ফিড মিল বন্ধ হয়েছে, আর যারা টিকে আছে তারাও রয়েছে অস্তিত্ব সংকটে । বর্তমানে এমন একটা অবস্থায় এসে পৌঁছেছে যে ফিড কোম্পানিগুলোর ফিড বিক্রি করলেই বরং লস হচ্ছে ।  আগামীতে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি আর পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক হলে আবারো ফিডের মূল্য বৃদ্ধি পাবে । ততদিনে ফিড মিল মালিকদের উপর দায় দেবার মত খামারি খুঁজে পেতে কষ্ট হবে, এই সময়ে হয়ত আরোও অনেক ফিড মিল হারিয়ে যাবে আর ডিম ও মাংসের মূল্য কোথায় যাবে তা সময়ই বলে দেবে…

 

ডাঃ খালিদ হোসাইন

সম্পাদক

 

৫ বছরে খাদ্যের বস্তার দাম বেড়েছে প্রায় ৫০০ টাকা, ব্রয়লারের দাম বেড়েছে কত ?

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১৫, ২০২১ ১:৪৮ অপরাহ্ন
৫ বছরে খাদ্যের বস্তার দাম বেড়েছে প্রায় ৫০০ টাকা, ব্রয়লারের দাম বেড়েছে কত ?
পোলট্রি

সালাম সাহেব, উত্তরার বিজিব মার্কেট থেকে নিয়মিত বাজার করে থাকেন । বাজারের লিস্টে আর কিছু থাকুক আর না থাকুক ব্রয়লার মুরগি থাকা চাই কেননা তার ২ বাচ্চার প্রিয় খাবার হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি । প্রায় ৪ বছর ধরে এখানেই বাজার করেন, রমজানের ঈদ ছাড়া প্রায় সবসময়ই ব্রয়লারের দাম স্থিতিশীল তার কাছে । দামটা কেজি প্রতি ১১০ থেকে ১৫০ এর মাঝেই থাকে সবসময়, অর্থাৎ দাম বাড়েনি খুব একটা। ব্রয়লার মাংস কম বেশি সবারই খাওয়া হয়, শুধু নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত ভেদে রেসিপি ভিন্ন হয় ।

ঠিক বিপরীত চিত্র খামারিদের মাঝে । ব্রয়লারের খাবারের দাম অস্থিতিশীল যা গত কয়েক মাসে চরম রূপ ধারন করেছে । সাধারনত এদেশের খামারীগন ব্রয়লার পালনের ক্ষেত্রে রেডি ফিড খাওয়ান এবং দেশে অসংখ্য ফিড কোম্পানি রয়েছে । বিগত বছরের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে, ২০১৬ সালে প্রতি ৫০ কেজি ফিডের বস্তার দাম ছিল কোম্পানিভেদে ২০৫০-২১০০ টাকা । সময়ের সাথে সাথে ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু চরম রূপ ধারন করেছে মূলত ২০১৯ এর আগস্ট থেকে । এই সময়ে ফিডের দাম বস্তাপ্রতি কোম্পানিভেদে ২২৫০ থেকে২৩০০ টাকা ছিল, ২০২০ এর প্রায় পুরোটা সময় এই দাম ২৪০০ থেকে ২৪৫০- টাকার মাঝে ছিল আর সেটা বৃদ্ধি পেতে পেতে বর্তমানে প্রায় ২৫০০-২৫৫০ টাকা । অর্থাৎ ৫ বছরে ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বস্তাপ্রতি ৫০০ টাকা, কেজিতে প্রায় ১০ টাকা । অথচ ব্রয়লার মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কত টাকা ?

আরেকটু গভীরে যেতে চাই । ১ টি পূর্ণ ব্রয়লার উৎপাদনে কতটুকু খাবার দিতে হয় সে সম্পর্কে একটু ধারনা দেওয়া যাক । ১ দিন বয়সের একটি বাচ্চা প্রায় ৩০-৩৫ দিন লালন পালন করা হয় । এই সময়ে ২.৫ কেজি ফিড খাওয়ানো হলে একটি মুরগির ওজন আসে (খাবার ভেদে) প্রায় ১.৬ কেজি থেকে ১.৮ কেজি ।  অর্থাৎ ১২৫-১৩০ টাকার খাবার খাওয়ালে আপনি ১.৬ কেজি থেকে ১.৮ কেজি ওজন পাবেন, ১.৬ কেজি-১.৮ কেজি মাংসের দাম ১৯০ থেকে ২০৫ টাকা  (১২০ টাকা কেজি ধরে) । আরেকটি তথ্য না দিলেই নয়, ভোক্তা কি দামে মাংস কিনেন সেটা আপাতত ভুলে যান কারণ একজন খামারি মুরগি বিক্রির সময় বাজার মূল্যের চেয়ে কেজি প্রতি প্রায় ১০-১৫ টাকা কমে বিক্রি করেন, মাঝের যোগ বিয়োগ গুন ভাগ মধ্যস্বত্বভোগীদের । এই সব হিসেবের সাথে যোগ করুন ১ দিন বয়সী বাচ্চার দাম যা সারা বছরের গড় হিসেব ধরলেও প্রায় ৩৫-৪০ টাকা । আরোও যোগ করুন মুরগি পালনের সময় ভ্যাক্সিন, অন্যান্য ঔষুধ, মুরগি মারা যাওয়া বাবদ লস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল এবং অন্যান্য ।  উৎপাদন খরচের যোগ বিয়োগ আপনারা করে নিন । তারপরও একজন খামারি ১০০০ মুরগিতে যদি ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকা লাভ করে তাহলেও সে বেজায় খুশি অথচ এটা কিন্তু তার লাভ না । বেশিরভাগ খামারই স্বামী -স্ত্রী দ্বারা পরিচালিত হয়, এই ২ জনের পারিশ্রমিক কখনই হিসেব করা হয় না, আসলে এই যে ৫-৭ হাজার টাকা আসছে এটা লাভ নয় বরং পারিশ্রমিক; অনেকের ভাগ্যে তাও জুটে না । তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পারিশ্রমিকের টাকাও বেশিরভাগ খামারি পাচ্ছেন না কারণ খাবারের দাম বৃদ্ধি, মুরগি মারা যাওয়া এবং অন্যান্য ।

 

খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানান এনাম ট্রেডিং এর এজিএম মোঃ সাইফুল আলম।  তিনি বলেন, মূলত খাদ্যের কাঁচামালের কারণেই আজকের এই অবস্থা, ভুট্টার জন্য আমরা ব্রাজিলের উপর নির্ভরশীল, আমাদের দেশে যে ভুট্টা হয় তা দিয়ে চাহিদার ২০-২৫% পূরণ হয়, বাকিটা আমদানি করতে হয় । করোনার কারনে ব্রাজিলের ভুট্টা কম আসছে, গত বছর যেখানে ভুট্টার কেজি ছিল ১৬-১৭ টাকা বর্তমানে তা ২৭-২৮ টাকা । ১ বছরের ব্যবধানে সয়াবিনের মূল্য ৩৭-৩৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৮-৫০ টাকা । প্রায় সকল উপাদান বাইরে থেকে আনতে হয়, করোনার কারণে সবকিছুর দাম যেমন বেড়েছে তেমনি জাহাজের ভাড়াও বেড়েছে অনেক । এখন এমন একটা অবস্থানে এসে পৌঁছেছে যে ফিড কোম্পানিগুলোর ফিড বিক্রি করলেই বরং লস হচ্ছে, ফিড বিক্রি কমে গেলেই বরং তারা খুশি হবে ।

এ প্রসঙ্গে বিটিসি লিমিটেড (ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস অ্যান্ড এডিটিভস সাপ্লাই ডিভিশন)  এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতাফ বিশ্বাস বলেন, চীনের বেশি পরিমানে পণ্য ক্রয় করে রাখা, পণ্য পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি (প্রায় দ্বিগুন), কনটেইনারের স্বল্পতা, বৈশ্বিক মহামারির ফলে শ্রমিক সংকট, চট্টগ্রাম বন্দরের অত্যধিক ভীড়ের ফলে শিপিং কোম্পানিগুলোর কনটেইনার পাঠানোর অনীহা- এসব কারণগুলোও বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী ।

প্রভিটা গ্রুপের জিএম (সেলস এন্ড মার্কেটিং) মোঃ ফজলুর রহমান মজুমদার বলেন, আমাদের দেশের খামারিদের অবস্থা এমন যে, তিনি কষ্ট করে পণ্য উৎপাদন করেন কিন্তু তিনি তার উৎপাদিত পণ্যের দাম নির্ধারন করতে পারেননা। তার জন্য নির্ভর করতে হয় অন্যজনের উপর। এই নিয়মের বিকল্প কিছু করা জরুরী বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা জোরদার করাও জরুরি বলে মনে করি।

 

খামারীদের অবস্থা দিনকে দিন এতটাই শোচনীয় হচ্ছে যে ইতোমধ্যে অনেক খামারি ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে তাদের খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে আর যারা টিকে আছে তারা বিশ্বাস করে যে, একমাত্র সরকারী হস্তক্ষেপই পারে খামারীদের নতুন দিনের আলো দেখাতে…

 

 

ডা. খালিদ হোসাইন

সম্পাদক

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৮, ২০২১ ২:৫৭ অপরাহ্ন
মুরগিতে সমস্যা ১ টা, ফেসবুকে পোষ্ট দিলে সমাধান পাবেন হাজারটা
পোলট্রি

আমাদের দেশে কেউ অসুখে আক্রান্ত হলে বেশিরভাগ মানুষই সর্বপ্রথম নিজেই নিজের মত করে ঔষধ সেবন করেন কিংবা ফার্মেসিতে যেয়ে সমস্যার কথা বলে ঔষধ কিনে আনেন । একইভাবে পোল্ট্রি খামারিগন যদি সমস্যায় পড়েন তাহলে নিজেই ডাক্তারি করেন, না হয় পাশের খামারির পরামর্শে ঔষধ খাওয়ান । বর্তমানে এক শ্রেণির খামারি দেখা যায় যারা মুরগির সমস্যা হলে ফেসবুকে পোল্ট্রি সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রুপে পোষ্ট দিয়ে তার প্রতিকার/চিকিৎসা চান আর খামারিরাও নিজের মেধা, প্রজ্ঞা এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে দারুণ দারুণ সব পরামর্শ দেন । বাস্তবতা হচ্ছে এইসব পরামর্শ কতটা যুক্তিযুক্ত কিংবা খামারীবান্ধব ?

এক খামারি সেদিন পোষ্ট দিলেন যে তার ব্রয়লার মুরগির বয়স ২০ দিন, অনবরত খাদ্য ছিটাচ্ছে। সমাধান কি ?  কেই খামারি খুব বিপদেই পড়ে এই পোষ্ট দিয়েছেন আমি নিশ্চিত কিন্তু এই পোষ্টে প্রায় ৪০-৫০ জন কমেন্ট করে সমাধান দিয়েছেন যা হয়ত সেই খামারির বিপদ আরোও বাড়িয়ে দিবে । ১ টা সমস্যায় যদি ৩০-৪০ টা সল্যুশন পাওয়া যায় তাহলে ব্যাপারটা হয়ে ওঠে “কোনটা রেখে কোনটা নিবো” এই টাইপের । সল্যুশনগুলার দিকেও একটু নজর দেই -কয়েকজন কমেন্ট করেছেন আমাশয় হয়েছে, আর বেশিরভাগই দিয়েছেন ট্রিটিমেন্ট । কেউ এনপ্রোভিন দিতে বলেছেন, কেউ এনজাইম, কেউ কক্সিকিউর, আরেকজন এপ্রোলিয়াম, অন্যজন সিপ্রোসিন, কেউবা টলটাজরিল, কেউ রেনামাইসিন আবার কেউ কেউ ২-৩ টা সিপ্রোসিন, এপ্রোলিয়াম, রেনামাইসিন একসাথে চালাতে বলেছেন, সাথে এনজাইম ।  রুবেল নামের এক ভদ্রলোক দেখলাম কমেন্টে নিজের নাম্বার দিয়ে ফোন দিতে বললেন চিকিৎসার জন্য । খামারি সেজে আমি নিজেই ফোন দেই, দেখি তিনি কি বলেন । একই সমস্যার কথা বলে সমাধান চাইলাম, বললেন আয়রনের সমস্যা, এনটক্স দেন ২৪ ঘন্টা, ঠিক হয়ে যাবে। পরিচয় জানলাম, তিনি একজন খামারি।

আরেকজন খামারি তার মুরগির সমস্যার কথা লিখে গ্রুপে পোষ্ট দিয়েছেন, সমস্যাটা হলো মুরগির বয়স ২৩ দিন, ৯০০ মুরগির মাঝে ৫০-৬০ টা মুরগি মাথা উপর করে হা করে শ্বাস নিচ্ছে, কি করবেন । এই পোষ্টেও প্রায় ৫০ এর অধিক কমেন্ট ও সল্যুশন । কেউ বলছে ঠান্ডা লেগেছে, কেউ বলছে পেটে পানি জমেছে, কেউ বলছেন ফাঙ্গাসের সমস্যা আবার কেউ বলছেন রানীক্ষেত হতে পারে  আর একদল তো ফ্রি তে চিকিৎসা দিয়েছেন – কেউ ব্রডিল, কেউ টাইলোডক্স, কেউ সিপ্রোসিন, আরেকজন টিলমোকসিন ও ডক্সিসাইক্লিন, অন্যজন পালমোকেয়ার, লিভোফ্লক্সাসিন, এমোক্সাসিলিন, নাপা, ক্যালিক্স, টু প্লাস দিতে বললেন, কেউবা আবার মাইক্রোনিড সাথে ডক্সিভেট দিতে বললেন ।

একটা সমস্যার জন্য যদি এতগুলা সল্যুশন হয় তাহলে খামারির অবস্থা কি হতে পারে ভাবা যায় !  আমাদের দেশে খুবই অবাক করা বিষয় যে, ভেটেরিনারিয়ানগন যে পরিমান ফ্রি তে চিকিৎসা দেন তা অন্য কোন দেশে আছে কিনা সন্দেহ । এমনও হয়েছে যে নিজের ফার্ম দেখতে গিয়েছি অন্য ফিড ব্যবহার করা পাশের খামারি তার মুরগি দেখানোর জন্য দাঁড়িয়েছিলেন ঘন্টারও বেশি সময় । এমনটা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে এবং ফ্রি তে চিকিৎসা দিচ্ছেন (কেউ কেউ স্বল্প ভিজিটে) এমন হাজার হাজার উদাহরণ দেওয়া যাবে । এছাড়া ফোনেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ভালো সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন নিজের খামারকে ঝুঁকির মুখে ফেলছেন ?

মুরগির খাবার ছিটানোর অসংখ্য কারণ আছে, সত্যিকারের কারণ না জেনেই চিকিৎসা দেওয়াটা যেমন বোকামি তেমনি মুরগির প্রতি বড় ধরনের এক নিষ্ঠুরতা । মুখ হা করে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা । আমাদের স্মার্ট খামারি ভাইগন, আসুন আমরা শুধু ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়ার মাধ্যমে স্মার্টনেস না দেখিয়ে নিজেদের কাজের মাধ্যমে আরোও বেশি স্মার্ট হই…

 

ডাঃ খালিদ হোসাইন
সম্পাদক
শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:১২ পূর্বাহ্ন
মানিকগঞ্জে গাজর চাষে বাম্পার ফলন
এগ্রিবিজনেস

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় গাজর চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন মানিকগঞ্জের গাজর চাষিরা। এছাড়া বাজারে পাচ্ছেন গাজরের ভালো দাম।

উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবারের মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে গাজরের চাষ করেছেন চাষিরা। মাটি ও জলবায়ু গাজর চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলন ভালো পেয়েছেন কৃষকরা। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সকল ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

উপজেলার কৃষি অফিসার টিপু সুলতান বলেন, লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলার কৃষকরা গাজর চাষে ঝুঁকছেন। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের সকল ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

কৃষক আবুল কালাম বলেন, একই জমিতে অন্য সবজির জায়গায় গাজর চাষ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এই এলাকার মাটি ও আবহাওয়া গাজর চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবারও ফলন ভালো হওয়ায় পাশাপাশি দামও ভালো পেয়েছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:১১ পূর্বাহ্ন
মাছের উৎপাদন বাড়াতে চালু করা হয়েছে ‘ফিশটেক ল্যাবরেটরি’
এগ্রিবিজনেস

মাছ চাষিদের জন্য সুখবর। এবার মাছ ও চিংড়ির রোগ রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে চাষিদের পরামর্শ সেবা দেয়া ও গবেষণার জন্য চালু হয়েছে অ্যাকোয়াটেক অ্যানিমেল হেলথ ল্যাবরেটরি। যার নাম দেয়া হয়েছে ফিশটেক ল্যাবরেটরি। নতুন এ গবেষণাগারটি মৎস্য খাতের সমস্যা সমাধান ও উৎপাদন বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) খুলনায় এ ল্যাবরেটরির উদ্বোধন করা হয়। ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফিশটেক (বিডি) লিমিটেডের যৌথ অংশীদারিত্বের এই গবেষণাগারে অর্থায়ন করছে মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএইড বলে জানা যায়।

জানা যায়, এর মাধ্যমে মাছ ও চিংড়ির রোগ নির্ণয়, সংশ্লিষ্ট খামারের মাটি-পানি পরীক্ষা, পুকুরের সঠিক সমস্যা নির্ণয়সহ নির্দিষ্ট খরচে বিভিন্ন সেবা নিতে পারবেন মাছ চাষিরা।

ওয়ার্ল্ড ফিস জানায়, ২০১৭-১৮ সালে খুলনা জেলায় মাছ উৎপাদন হয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ২৭৪ টন। মাছ ও চিংড়ির বিভিন্ন রোগের মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের কারণে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিনদিন মাছ বিশেষ করে চিংড়ি চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে দেশের রফতানি আয় কমেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:১০ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজারে বেড়েছে ছাগল কমেছে গরু
এগ্রিবিজনেস

মৌলভীবাজারে গরুর সংখ্যা না বাড়লেও বেড়েছে ছাগল ভেড়া ও মুরগির সংখ্যা। কর্মকর্তাদের মতে, গরুর কোয়ান্টিটি না বাড়লেও কোয়ালিটি বেড়েছে। ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার।

জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, মৌলভীবাজারে ২০১৯ সালে মোট গরু ছিল পাঁচ লাখ ৬০ হাজার ৪৩৫টি, ছাগল ছিল এক লাখ ৮১ হাজার ৭৬০, ভেড়ার সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৮৯৬ ও ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৩টি মুরগি ছিল।

গত বছরের তথ্য মতে গরুর সংখ্যা ছিল পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ২৩৮টি, ছাগল দুই লাখ ১৫ হাজার ২৩৩টি, ভেড়া ছিল ২১ হাজার ৭২৮টি এবং মুরগির সংখ্যা ছিল ৩৯ লাখ ৭৮ হাজার ৫৩৭টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, করোনা মহামারির কারণে পশু পালনে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। আগের তুলনায় গরু, ছাগল, মুরগি পালন বেড়েছে। গরু কোয়ান্টিটি না বাড়লেও কোয়ালিটি বেড়েছে। ছাগলের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভৈরব বাজারের ছাগল বিক্রেতা সাজ্জাদ মিয়া জানান, গত বছরের চেয়ে সরবরাহ বাড়ায় আনুপাতিক হারে ছাগলের দাম আগের তুলনায় কমেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
ক্যালেন্ডুলা ফুল ছাড়া বাগানের সৌন্দর্য যেন অর্থহীন
এগ্রিবিজনেস

এমনিতেই দেখতে খুবই অসাধরণ লাগে ক্যালেন্ডুলা ফুলকে। তারউপর শীত আসলে এই ফুল যেন সাজে আর অসাধারণ ভঙ্গিমায়। বলা চলে এই ফুল ছাড়া বাগানের সৌন্দর্য যেন একেবারেই অর্থহীন। এই ফুলের বিস্তার এখন রাজধানী ছাড়িয়ে মফস্বলে গিয়েও তার সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এই ফুলের রয়েছে বহু জান। অনেকে এগুলোকে ভুল করে জার্বেরা বা জিনিয়াও ভেবে থাকেন।

মূলত এরা দক্ষিণ ইউরোপের প্রজাতি। গাছ ঝোপাল, ৩০ থেকে ৬০ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পাতা লম্বা, খসখসে, রোমশ এবং কিছুটা আঠালো। বৃন্তের ওপর প্রায় ১০ সে.মি. চওড়া বড়সড় ফুলগুলো চ্যাপ্টা ধরনের, থাকে জোড়ায় জোড়ায়। রং গাঢ় কমলা, ক্যানারি-হলুদ, ঘন হলুদ এবং কমলা লাল।

জোড়া ফুলের পরিচিত জাতগুলো হলো- বল, ক্যাম্পফায়ার, গোল্ডপিঙ্ক গ্রান্ডিফ্লোরা, প্যাসিফিক বিউটি, পার্সিমোন বিউটি, অরেঞ্জ কিং, অরেঞ্জ সান, রেডিও, হলুদ কলোসাল ইত্যাদি। নোভা জাতের ফুলগুলো জার্বেরার মতো একক, রং কমলা, কেন্দ্রের দিকটা গাঢ় একরকম চকলেট বর্ণের হয়ে থাকে।

নতুন জাতের ভোলানেকস ক্রেস্টেড মিক্স ফুলগুলো ভারি সুন্দর। একসারি করে পাপড়ি, কেন্দ্রস্থল সরু সরু নলের ঝুঁটির মতো বা ভাঁজ করা। ক্যালেন্ডুলা (Calandula officinalis) ব্যবহূত হয় ভূমিশয্যায় এবং কলম করার কাজে। টবেও চাষযোগ্য।

ভালো ফলনের জন্য সূর্যের আলো এবং সেচ দুটোই দরকার। বীজ বপনের সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস। আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফুল ফোটে। তবে পাহাড়ি ও বৃষ্টিবহুল অঞ্চলে সময়ের কিছুটা তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। আমাদের বাগানগুলোতে চারার মাধ্যমেই চাষ। পাতার রস কৃমি দমনে কাজে লাগে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
গবাদি পশুর খাদ্যের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পদ্ধতি উদ্ভাবন
এগ্রিবিজনেস

বাংলাদেশে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ওষুধি ঘাসের ব্যবহার নতুন নয়। কিন্তু বায়োএক্টিভ কম্পোনেন্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ঘাসের মাধ্যমে গবাদিপশুর প্রচলিত খাদ্যের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পদ্ধতি দেশে প্রথমবারের মতো উদ্ভাবিত হয়েছে। এই উদ্ভাবন আগামীতে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ও সুস্থ-সবল প্রাণি ও মানবদেহ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। খবর জাগোনিউজ।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের পশু-পুষ্টি বিভাগের আয়োজনে দুগ্ধজাত গাভীর প্রচলিত খাদ্যের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, নিরাপদ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ দুধ উৎপাদনে ওষুধি ঘাসের প্রভাব বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, বাউরেসের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আবু হাদি নুর আলি খান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (প্রাণিসম্পদ) ড. মো. মেহেদি হোসাইন।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-মামুন। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে দেশীয় ১১টি ঘাসের নির্বাচন করে তাদের থিন লেয়ার ক্রোমাটোগ্রাফ ও ডিপিপিএইচ-এর মাধ্যমে সেরা ৭টি ঘাস নির্বাচন করি। তারপর এদের বায়োএক্টিভ কম্পোনেন্ট নির্ণয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ফর্ম যেমন- ফ্রিজ, শেড ও সান ড্রাইয়ের মাধ্যমে ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ ৬টি ঘাস নির্বাচন করি। খামারিদের জন্য ঘাসের সহজলভ্যতা ও খরচ বিশ্লেষণ বিবেচনা করে বায়োমাস ও খনিজ পদার্থের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে সেরা ৪টি ঘাস (আনারসের উচ্ছিষ্টাংশ, তেলাকুচার পাতা, সজিনার পাতা ও লেমন ঘাস) নির্বাচন করেছি।

তিনি জানান, তারপর আমরা বিভিন্ন ফর্মে এদের টোটাল ফেনোলিকসের পরিমাণ, গরুর দুধ উৎপাদন ও তাতে এন্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ, ফ্যাটি এসিড প্রোফাইল অ্যানালাইসিস করে শেড ড্রাই ফর্মে ভালো রেজাল্ট পেয়েছি। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটি সফল করতে ও পরোক্ষভাবে এএমআর-এর ভয়াবহতা থেকে মানবদেহকে রক্ষা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
নেত্রকোনায় ফসলের ধুম, বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা
এগ্রিবিজনেস

বেশ কয়েক বছর ধরেই নেত্রকোনার কৃষকরা পাচেছ না তাদের ন্যায্য মূল্য। তবে এবার আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় নেত্রকোনার কৃষকরা অধিক পরিমাণ জমিতে ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রচণ্ড শৈত্য প্রবাহ ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে নেত্রকোনায় ইরি-বোরো আবাদের ধুম পড়েছে। অন্যদিকে দুশ্চিন্তায় ভোগছে ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কার সময়মতো শুরু না হওয়াতে সেখানকার চাষিরা।

জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা শেষ করার কথা।

সম্প্রসারণের দেয়া তথ্যমতে, নেত্রকোনায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ১ লাখ ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল এবং ২ শত ৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৪ শত ৯৩ মেট্রিক টন। ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত চলবে ইরি-বোরো ধানের আবাদ।

জেলা পাউবো’র সূত্র অনুযায়ী, নেত্রকোনার ছোট বড় মোট ১৩৪টি হাওর রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খালিয়াজুরিতে ৮৯টি হাওর। হাওরের একমাত্র ফসল বোরো। হাওরঞ্চলে ৩১০ কিলোমিটার ডুবন্ত (অস্থায়ী) বাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে খালিয়াজুরিতে মোট ১৮১ কিলোমিটার ডুবন্ত অস্থায়ী বাঁধ আছে। এই বাঁধের ওপর খালিয়াজুরি ও মোহনগঞ্জের স্থানীয় কৃষকদের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল নির্ভর করে।

হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধগুলো মেরামতের জন্য এ বছর পাউবো প্রথম পযায়ে ৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৬১টি নির্মাধীন ফসল রক্ষা বাঁধের মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে ১০০টির। কাজ শুরু বাকি রয়েছে এখনো ৬১ টি বাঁধের পিআইসি প্রকল্পের।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, কয়েক দফা বন্যার কারণে হাওরের পানি নামতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। একারণে সময়মতো বাঁধের কাজ শুরু করা যায়নি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। আমি নিজেও হাওরে গিয়ে বাঁধের কাজ তদারকি করছি।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন, ১ ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে। সেই লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে কৃষি আবাদ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ কৃষি প্রণোদনা দিয়ে আসছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ অঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।

নেত্রকোনা জেলা পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত বলেন, ‘হাওরে এবার পানি ধীর গতিতে নেমেছে। আর কার্যালয়ের জনবল শূন্য থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। এরই মধ্যে জেলার ১৬১ টি পিআইসি মধ্যে ১শটির কাজ শুরু হয়েছে। বাকি গুলোর কাজও শিগ্রই শুরু করা হবে। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই(আটাশ ফেব্রুয়ারি) কাজ শেষ করা হবে।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২১ ১২:০৫ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে মুরগির খামার থেকে ৬জুয়াড়ি আটক!
Uncategorized

মুরগির খামারে জুয়ার আসর। এমনি ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর এয়ারপোর্ট এলাকায়। সেখানে একটি মুরগির খামার থেকে ছয় জুয়াড়িকে আটক করেছে পুলিশ। আজ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১টার দিকে নগরীর বায়া বৈরাগীপাড়া থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, বালিয়াডাঙ্গি গ্রামের সেন্টু (৩৭), শিহাব আলী (৩৫), রুবেল হোসেন (২১), বায়া ভোলাবাড়ি গ্রামের তাজরুল ইসলাম (৩৩) বড়বনগ্রাম নতুন চকপাড়া এলাকার সেলিম রেজা (৪০) এবং দক্ষিণ নওদাপাড়া মহল্লার রফিকুল ইসলাম (৩৫)।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার মুরগির খামারে জুয়ার আসর বসছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় জুয়া খেলা অবস্থায় তাদের আটক করে ছয় প্যাকেট তাস ও নগদ ৬৭ হাজার ৪০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আটককৃতদের শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop