নওগাঁয় আগাম আলু চাষে ব্যস্ত চাষিরা
কৃষি বিভাগ
নওগাঁর চাষিরা আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আলুতে ভালো লাভের আশা করছেন তারা। চাষিদের মতে, বৃষ্টি না হলে চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমি থেকে ২০-২২ মণ হারে ফলন হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে।
চলছে শীতের মৌসুম। বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন শাক-সবজি। দামও বেশ চড়া। শীতের আগাম সবজি হিসেবে আলুর ভালো দাম পেতে চাষিরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ জমি চাষ করছেন, কেউবা জমি সমান করতে মই দিচ্ছেন আবার কেউ জমির আইলের ঘাস পরিষ্কার করছেন। কেউ জমিতে আলুর বীজ রোপণ করছেন। আগাম এই নতুন জাতের আলুর ভালো দাম পাওয়ার আসায় দিনরাত কাজ করছে চাষিরা। আগাম জাতের আলু কার্তিক মাসে রোপণ করা হয়। প্রায় দুই মাসে এই আগাম জাতের আলু বাজারে পাওয়া যায়। আবহাওয়া ভালো থাকলে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ হারে ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী চাষিরা।
জেলার সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের কীর্তিপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল বলেন, চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে ফাটাপাপরি আগাম জাতের আলু চাষ করছি। আলু রোপণ করা প্রায় ৪৫ দিনের মতো হয়েছে। আর ২০-২৫ দিনের মধ্যে নতুন আলু ওঠা শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, এই আগাম জাতের আলু বৃষ্টি না পেলে বিঘা প্রতি ২০-২২ মণ হারে ফলন হয়। আর এই জাতের আলু যদি পরবর্তীতে লাগানো হয় তাহলে বিঘা প্রতি ৪০-৫০ মণ হয়।
হাঁপানিয়া গ্রামের কৃষক আমজাদ আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। প্রথম দিকে ১০০ টাকা কেজি থেকে শুরু হলেও পরবর্তীতে আলুর আমদানি বেশি হলে ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আগাম জাতের আলুর ফলন কিছুটা কম হলেও দাম বেশি পাওয়ায় পুষিয়ে নেওয়া যায়।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ বলেন, চলতি মৌসুমে ২৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার আবহাওয়া ভালো। এই কারণে আলুর আবাদ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়। এই কারণে অনেক আলু আগে আসবে আবার অনেক আলু পরে আসবে। যে আলু আগাম আসবে বাজারে সেটার দাম বেশি। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে দাম কমে যাবে। যারা একটু আগে লাগিয়েছে তারা ভালো দাম পাবে। কৃষক যদি আগাম আলু চাষ করে সেক্ষেত্রে লাভবান হবে।