বাংলাদেশে খাদ্য ও কৃষির অবস্থা অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নয়নে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০ বছর আগে ১৯৯৯-২০০০ সালে এ সরকারের আগের আমলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে ও বর্তমান সরকার এ আমলেও তা ধরে রেখেছে। মাথাপিছু আয় ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ও দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। ফলে খাদ্যে মানুষের প্রবেশযোগ্যতা সহজতর হয়েছে। এছাড়া, বিগত দশকে অপুষ্টি দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী মঙ্গলবার খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৪২তম সম্মেলনে ‘স্টেট অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার’ অংশে বাংলাদশের অবস্থা তুলে ধরে এ কথা বলেন। মন্ত্রী সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলক কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি এ সম্মেলনে সংযুক্ত হন।
মন্ত্রী বলেন, চলমান কোভিড-১৯ এর শুরুতেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সরবরাহ অব্যাহত রাখা ও দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুততার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনতে নানামুখী প্রণোদনা প্রদান করেন। এছাড়া, কৃষিখাতে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। ফলে কোভিড পরিস্থিতি সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও নির্দেশনায় দেশে কৃষির উৎপাদন ও খাদ্য সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, করোনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ১১ লাখ রোহিঙ্গাও দেশে রয়েছে। যা আমাদের সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।তিনি এসময় উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
কোভিড-১৯ এর কারণে ভার্চুয়ালি ১৪-১৮ জুন সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের সম্মেলন। কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। ঢাকা থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো: রুহুল আমিন তালুকদার, যুগ্ম সচিব তাজকেরা খাতুন, উপসচিব আলী আকবর ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব বিধান বড়াল অংশগ্রহণ করছেন। ইটালির রোম থেকে অংশগ্রহণ করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান ও ইকনমিক কাউন্সিলর মানস মিত্র।
মন্ত্রী জানান, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ৩৬তম এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওনাল কনফারেন্স (এপিআরসি-৩৬) ২০২২ সালের মার্চের ৮-১১ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলন সাফল্যমণ্ডিত করতে তিনি এফএও দেশসমূহের সহযোগিতা কামনা করেন। উল্লেখ্য, গত বছর এপিআরসি ৩৫তম সম্মেলনে বাংলাদেশ ৩৬তম সম্মেলনের আয়োজক হিসাবে মনোনীত হয়।