২:৪২ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • শীতকালে মুরগির খামার পরিচর্যায় যা করবেন
ads
প্রকাশ : নভেম্বর ১৮, ২০২২ ৯:৪১ পূর্বাহ্ন
শীতকালে মুরগির খামার পরিচর্যায় যা করবেন
পোলট্রি

শীতকালে বাংলাদেশে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এ সময় খামারিদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এ কারণে শীতকালে মুরগি পালনে বিশেষ পরিচর্যার দরকার হয়।

শীতকালে একজন খামারীকে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:
বাসস্থান : শীতকালে বয়সভেদে মুরগির ঘরের ভেতরের পরিবেশ ঠিক করতে হবে। যে বয়সের মুরগি পালন করা হবে সে বয়সের মুরগির জন্য ঘরে উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ঘরের আশপাশের ঝোপ-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করতে হবে, যাতে দিনের আলো পরিপূর্ণভাবে ঘরের চালার ওপর পড়ে।

লিটার : শীতকালে লিটার হিসেবে ধানের শুকনা তুস সবচেয়ে ভালো। তুষ মুরগিকে গরম রাখে। ব্রুডার হাউসে ৫-১০ সেন্টিমিটার পুরু করে লিটারসামগ্রী বিছাতে হবে। মুরগি যদি ফ্লোরে পালন করা হয়, তাহলে বড় মুরগির জন্য লিটারের পুরুত্ব ৪ ইঞ্চির কম হবে না। লিটারসামগ্রী হতে হবে পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত। কোনো কারণে পানি পড়ে লিটার ভিজে গেলে ভিজা লিটার ফেলে ওই স্খানে শুকনা লিটার বিছাতে হবে। লিটার যেন খুব শুকনা ধুলাময় না হয়।

তাপমাত্রা : শীতকালে মুরগি পালনে সবচেয়ে বড় সমস্যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা। মুরগির ঘরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা দরকার ৬৫-৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তবে ব্রুডার হাউসে প্রাথমিক তাপমাত্রা দরকার পর্যায়ক্রমে ৩৫-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যখন পরিবেশের তাপমাত্রা খুব বেশি কমে যায়, তখন ব্রুডারে বাল্ব সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে হবে। ঘরের চালা টিনের হলে হার্ডবোর্ড বা এই জাতীয় পদার্থ দিয়ে সিলিং দিতে হবে। ঘর উষä রাখতে টিনের বা ছাদের ওপর খড় বিছিয়ে দিতে হবে। ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্খা থাকতে হবে। ব্রুডিং পিরিয়ডে বাচ্চা যাতে সমভাবে তাপ পায় এ জন্য ৫০০ বাচ্চার জন্য ১০০ ওয়াটের তিনটি বাল্ব সংযুক্ত একটি ব্রুডার হার্ডবোর্ড বা প্লেনশিট দিয়ে তৈরি চিকগার্ডের মধ্যে স্খাপন করতে হবে।

আলো : মুরগির ঘরে আলো এমনভাবে দিতে হবে যেন তা ঘরে সমভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রুডিং পিরিয়ডে প্রথম তিন দিন নিরবচ্ছিন্ন আলো দরকার।

বাচ্চার ঘনত্ব : ব্রুডার হাউসে প্রতি বর্গমিটারে প্রথমে ৫০টি বাচ্চা রাখতে হবে এবং চার দিন বয়সের পর থেকে ক্রমান্বয়ে জায়গা বাড়িয়ে দিতে হবে। ১৪ দিন বয়সের পর ঘরের তাপমাত্রা ঠিক রেখে বাচ্চা যাতে পুরো ঘরে বিচরণ করতে পারে সে অনুযায়ী জায়গা বাড়াতে হবে। ডিমপাড়া মুরগির শরীরের তাপমাত্রা ঘরের তাপকে কিছুটা প্রশমিত করলেও উৎপাদনের জন্য এটা ভালো নয়। তাই ঘরে মুরগির ঘনত্ব কেমন হবে তা নির্ভর করবে ঘরের ধরন, ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি, মুরগির বয়স, জাত ও পালন পদ্ধতির ওপর, পরিবেশের তাপমাত্রার ওপর নয়।

ভেন্টিলেশন : মুরগির ঘরে ভেন্টিলেশন ব্যবস্খা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভেন্টিলেশন ব্যবস্খা বাতাস প্রবাহের মাধ্যমে ঘরে উৎপন্ন বিষাক্ত বাতাস বের করে এবং বিশুদ্ধ বাতাস প্রবেশ করে। শীতকালে ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সব দরজা-জানালা ব রাখলেও ভেন্টিলেশন ব্যবস্খা অবশ্যই চালু রাখতে হবে।

খাদ্য : শীতকালে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় মুরগি খাবার বেশি খায়। অতিরিক্ত খাবার খেয়ে শরীরে তাপ উৎপাদন করে। অর্থাৎ শীতকালে শরীরে বেশি ক্যালরি দরকার হয়। এ জন্য রেশনে শর্করা-চর্বি উৎপাদনের উৎস কিছুটা বাড়িয়ে দিতে হবে। তবে রেশনের সব খাদ্য উপাদানের পরিমাণগুলো ঠিক রেখে কিছু পরিমাণ তেল মিশিয়ে ক্যালরির পরিমাণ বাড়ানো যায়। ব্রুডিং অবস্খায় প্রথম তিন দিন লিটারের ওপর চট বা কাগজ বিছিয়ে তার ওপর খাদ্য ছিটিয়ে দিলে ভালো হয়। বাচ্চা মুরগিকে অল্প অল্প বার বার খাবার দিতে হবে। ফলে খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। শীতকালে সব বয়সের মুরগির উৎপাদন ( গোশত, ডিম) কমে যায়। তাই সরবরাহকৃত খাবারে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের থাকা নিশ্চিত করতে হবে।

পানি : মুরগি যা খাবার গ্রহণ করে তার দ্বিগুণ পানি পান করে। তবে শীতকালে ঠাণ্ডার কারণে পানি গ্রহণের পরিমাণ কম হয়। তাই পানি গ্রহণের পরিমাণ ঠিক রাখতে প্রচণ্ড শীতের সময় সকালে ঠাণ্ডা পানি না দিয়ে হালকা গরম দিতে হবে। পানি ভরার আগে পাত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

ভ্যাক্সিনেশন : সঠিক খামার ব্যবস্খাপনার জন্য একটি ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। ব্রয়লারের জন্য রানীক্ষেত এবং গামবোরো এই দু’টি ভ্যাক্সিনই যথেষ্ট, তবে ব্রিডার খামারের জন্য সম্পূর্ণ ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি অনুসরণ করতে হবে। শীতকালে পরিবেশের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণ বিশেষ করে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ও রানীক্ষেত রোগ সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। ধারণা করা হয় রানীক্ষেত রোগ প্রতিরোধ করার মাধ্যমে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ কমানো যায়। এ জন্য সময়মতো রানীক্ষেত রোগের ভ্যাক্সিন নিয়মিত করতে হবে।

জীবাণুনাশক স্প্রে : শীতকালে পরিবেশের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, তাই বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা খামারের আশপাশে ১০০ গজের মধ্যে প্রতিদিন জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে। মুক্ত পরিবেশে ছেড়ে পালন করা মুরগি যাতে খামারের সংস্পর্শে না আসে এটা খেয়াল রাখতে হবে। এবং ওই সব মুরগি নিয়মিত টিকা প্রদানের ব্যবস্খা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ওই সব মুরগি থেকেই এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop