শূণ্য থেকে লাখপতি রাখাল বিদ্যুত
প্রাণিসম্পদ
চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা ভোলাহাটের বিদ্যুত রাখাল থেকে হয়েছেন লাখপতি। যার নিজের কোনো গরুই ছিল না, সে কিখন ৫০টি গরুর মালিক। অন্যের গরু চরিয়ে যা পেতেন, তা দিয়ে নিজে অল্প অল্প করে দইয়ের ব্যবসায় বাবার সঙ্গে বিনিয়োগ করেছেন। প্রাপ্ত লাভ ও কিছু টাকা ধার করে কিনেছিলেন একটি গাভী। সেই গাভী থেকেই লাখপতি বুনে গেলেন বিদ্যুত।
বিদ্যুত জানান, ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার না করে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈল, ছোলা ও ভুসি খাওয়ানোর মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করছেন তিনি। তবে রোগ প্রতিরোধের টিকা তিনি গরুকে দিয়েছেন।
আরও বলেন, বাজারে ভারতীয় গরু বেশি থাকায় আগের বছরগুলোতে ততটা লাভ করতে পারিনি। লোকসানের মুখে পড়েন আমার মতো অনেক খামারি। গরুগুলো একটু অসুস্থ হলেই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা সহযোগিতাও করেছেন।
জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যুৎ। তখন থেকেই ফল পেতে শুরু করেছেন। বর্তমানে এলাকায় প্রতিষ্ঠিত খামারিদের মধ্যে একজন হয়েছেন তিনি। বর্তমানে খামারে প্রায় ৫০টির মতো দেশি ও সংকর জাতের গরু রয়েছে। প্রতিদিনই প্রায় ২০টির মতো গাভীতে ১০০ লিটার দুধ হয়। সেই দুধ দিয়ে ঘি তৈরি করেন। বাকি অংশ দিয়ে সুস্বাদু দই তৈরি করেন। প্রতিদিনই প্রায় ১০০ কেজির বেশি দই উৎপাদন হয় বিদ্যুতের বাসায়। তাকে সহায়তা করছেন পরিবারের সবাই।
প্রতিবছরই প্রায় ১০টি করে গরু বিক্রি করেন। বিশেষ করে কোরবানির সময় বিক্রি করে থাকেন। বছর শেষে হিসাব করলে তার বার্ষিক আয় প্রায় ৮-৯ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, একটা সময় আমার দুঃখ ছিল, মনে মনে চাইতাম আমারও কিছু গরু হোক। টাকা হোক। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন আমার দু’ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই।
ভোলাহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল্লাহ বলেন, একেবারে শূন্য থেকে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা বিদ্যুতের পেছনে প্রাণিসম্পদের অনেক অবদান রয়েছে। একটি গরু দিয়ে শুরু করা খামারে এখন ৫০টির বেশি গরু রয়েছে। প্রতিবছর তিনি কয়েক লাখ টাকা গরু বিক্রি করেন।