সুপারির দামে হতাশ বেতাগীর কৃষকরা
কৃষি বিভাগ
বরগুনার বেতাগীতে এ বছর সুপারির ফলন পূর্বের বছরের তুলনা কম।এ উপজেলার গত বছরের কার্তিক মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত অনাবৃষ্টি থাকায় সুপারির ফলন কম হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া দ্রব্যমূল্যের বর্তমান দাম অনুযায়ী সুপারির বাজারদর কম থাকায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এখানকার বেতাগীর কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের ছোট-বড় মিলিয়ে বিভিন্ন বাড়ির আঙিনা ও বাগানে প্রায় আট হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে।
এ বছর এসব বাগানের অনাবৃষ্টির কারণে সব গাছে সুপারি ধরেছে ফলন ধরেনি।
এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন,’ সুপারি একটি উদ্যান জাতীয় ফল। এতে
ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যালকালয়েডস, টের্পেনয়েডস, ট্যানিনস, সায়ানোজেনিক, গ্লুকোসাইড, আইসোপ্রেনয়েড, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ইউজেনল জাতীয় বিশেষ উপাদানগুলি লাল সুপারির পাতায় পাওয়া যায়। এই সমস্ত উপাদানগুলি স্ট্রোক, মানসিক এবং কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি কমাতে উপকারী। তবে সুপারি বেশি খেলে এবং নেশায় পরিনত হলে তা সাস্থ্য’র জন্য ক্ষতিকর। ‘
এ উপজেলার বাগান মালিকরা জানান, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে সুপারি গাছে ফুল আসে। সেই ফুল থেকে সুপারি হয়, যা আশ্বিন- কার্তিক মাসে পুরোপুরি পেকে যায়।
আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে বাজারে সুপারি আসতে শুরু করে। মূলত আশ্বিন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে সুপারির ভরা মৌসুম। এখন উপজেলার প্রতিটা বাজারে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে বিক্রির জন্য সুপারি আসতো কিন্তু এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হওয়ায় পূর্বের তুলনায় কম সুপারি আসছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সেগুলো কিনে ৬০ শতাংশ পানিভর্তি পাত্রে ভিজিয়ে রাখে। ৪০ শতাংশ সুপারি দেশের বিভিন্নস্থানে সরবারাহ ও রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু এ বছর কাঁচা-পাকা সুপারির দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষক, গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
আব্দুর রহমান জানায়,বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী সুপারির দাম কম।
এ বছর আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে দাম ভালো ছিল কিন্তু এ মাসের মাঝামাঝি এসে দাম কিছুটা কমে গেছে। তবে বাজার দর এখন পর্যন্ত মোটামোটি পাচ্ছে কৃষক বলে তিনি জানান।
বেতাগী পৌরসভার বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ভূদেব সমাদ্দার জানান, ‘এ বছর সুপারির ফলন কম এবং বাজার দরও গত বছরের তুলনায় বাজারে কম।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এ বছর উপজেলার অনাবৃষ্টির কারণে সুপারির ফলন কম হয়েছে। তবে বাজারে কাঁচা-পাকা সুপারির দাম না থাকায় গৃহস্থ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিছুটা শঙ্কায় রয়েছে।