হিমাগারে পচে গেল দেড় লাখ বস্তা আলু, ১০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
এগ্রিবিজনেস
রাজশাহীর পবা উপজেলায় “আমান কোল্ড স্টোরেজে” রাখা আলুতে পচন ধরেছে। হিমাগারের শীতলীকরণ ও গ্যাস মেশিন খারাপ হওয়ার কারণে আলুগুলো পচে গেছে। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকার আলু নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
জানা গেছে, হিমাগারের গ্যাস মেশিন খারাপ হওয়ার কারণে আলুর পচে গেছে। পবা উপজেলার মদনহাটি এলাকার ‘আমান কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’ নামে ওই হিমাগারে রাখা আলুর বিষয়ে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকেরা। এ নিয়ে বুধবার সকাল থেকে শতাধিক কৃষক ও আলুচাষী স্টোরের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ক্ষতিপূরণের দাবিতে সেখানে অবস্থান করছেন। পরে হিমাগার কর্তৃপক্ষ ১০ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর কৃষকেরা শান্ত হন।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, সেখানে ১ লাখ ৬৬ হাজার বস্তা আলু রয়েছে। প্রতিটি বস্তায় আলুর পরিমাণ ৫০ কেজি। বর্তমান বাজারে ৫০ কেজি আলুর বস্তার দাম ৬০০ টাকা। সব আলু পচে গেলে ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়াবে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে সবগুলো নয় মেশিন ত্রুটির কারণে কিছু অংশের আলু পচে গেছে। সেগুলো এরই মধ্যে হিমাগার থেকে বের করে ফেলা হয়েছে।
কৃষকদের দাবি, সব আলুই পচে গেছে। বস্তায় একটা আলু পচে যাওয়া মানেই সব আলু নষ্ট হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এই হিমাগারে এমন পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার ও বৃহস্পতিবার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদামঘর থেকে আলুর বস্তা বের করে স্টোরেজের ভেতরে কৃত্তিম উপায়ে বাতাস দেয়া হচ্ছিল। তখনই কৃষকেরা আলু পচে যাওয়ার কথা জানতে পারেন।
রানা সর্দার নামের এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, গতবছর আমি এই কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলাম। বিক্রি করার পর ক্রেতারা অভিযোগ করেন যে আলুর মান ভাল না। নষ্ট হয়ে গেছে। এবার তিনি সব আলু অন্য হিমাগারে রেখেছেন। শুধু একটা ট্রলি ভুল করে আমানে ঢুকে পড়েছিল বলে সে ট্রলির ৫৭ বস্তা আলু এখানে রাখা হয়েছিল। এগুলো সব পঁচে গেছে।
হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, আলু নানা কারণেই পচতে পারে। আলুর মান খারাপ হলেও পচে যায়। কেন পচেছে তা জানি না। কী পরিমাণ পচেছে সে হিসাবও করা হয়নি। আমার মালিক ১০ দিনের সময় নিয়েছেন। এটা একদিনের ব্যবসা না। কীভাবে কী করা যায় তা দেখছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. তৌফিকুর রহমান বলেন, যান্ত্রিকত্রুটির কারণে আলু পচে গেছে। কৃষকরা ক্ষতিপুরণের জন্য আবেদন করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের সবধরণের সহযোগিতা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।