১২:২১ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • কোরবানির হাট কাঁপাচ্ছেন যে পাঁচ জাতের গরু 
ads
প্রকাশ : জুলাই ৭, ২০২২ ৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
কোরবানির হাট কাঁপাচ্ছেন যে পাঁচ জাতের গরু 
প্রাণিসম্পদ

্বাংলাদেশে আগামী সপ্তাহে হতে যাচ্ছে ঈদুল আজহা। এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোরবানির গরুর হাটগুলো জমে উঠেছে। কিন্তু এসব হাটে নানা জাতের গরু থাকলেও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে কয়েকটি জাত মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয়।

বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, এবার ঈদে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ।

এই চাহিদা মেটানোর জন্যা এক কোটি ২১ লাখ পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর মধ্যে এক কোটির মতো শুধু গরু।

বাড়িতে লালন-পালন করা দেশী গরুর কদর ক্রেতাদের মাঝে সব সময় থাকে।

এবারের কোরবানির হাটে পাঁচটি জনপ্রিয় জাতের গরুর কথা উল্লেখ করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও খামারিরা।

শাহীওয়াল গরু
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে পাকিস্তানের সিন্ধুতে এই গরুর জন্ম।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. মো: শাহিনুর আলম বলেন, এই জাতের গরু বহুদিন ধরে বাংলাদেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে। দেখতে অনেকটা লাল রঙের, আর বেশ বড়।

শাহীওয়াল জাতের গরু ধীর ও শান্ত প্রকৃতির। শাহীওয়াল জাতের গরু আকারে বেশ লম্বা, মোটাসোটা ও ভারী দেহ। সাধারণত এ জাতের গরুর দেহের রং ফ্যাকাসে লাল। তবে কখনো গাঢ় লাল বা লালের মাঝে সাদা ও কালো ছাপযুক্ত হয়।

গাভীর ওজন ৪৫০ থেকে ৫৫০ কেজি ও ষাঁড়ের ওজন ৬০০ থেকে এক হাজার কেজি। জন্মকালে বাছুরের ওজন ২২ থেকে ২৮ কেজি। মাথা প্রশস্ত, পা ছোট, শিং ছোট কিন্তু মোটা। গলকম্বল বৃহদাকার যা ঝুলে থাকে। শাহীওয়াল জাতের গরুর ত্বক পাতলা ও শিথিল।

গরুর খামার এসএসি এগ্রোর নির্বাহী পরিচালক মিরাজ আহমেদ বলেন, তাদের খামারে এই জাতের গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকে প্রতি বছর। আর এই গরুর সর্বনিম্ন দাম এক লাখের বেশি।

হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান গরু
হোলস্টাইন অর্থ সাদাকালো ডোরাকাটা, স্থানের নাম ফ্রিসল্যান্ড-এর সাথে মিলিয়ে এই গরুর নাম হয় হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান। বাভারিয়া (বর্তমান জার্মানি) ও ফ্রিসল্যান্ড (বর্তমান নর্থ হল্যান্ড) এই গরুর আদি উৎস স্থান।

হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান গরুকে তাদের সাদা-কালো রঙের কারণে সহজেই চেনা যায়।

ফ্রিজিয়ান জাতের গরু গোশতের জন্য পালা হয় না। কিন্তু তারপরেও বাজারে গোশত সরবরাহের বিরাট অংশই ফ্রিজিয়ান গরুর। কারণ, এটি আকারে বেশ বড়। বিশ্বে যত গরু পালন করা হয়, তার ৫০ শতাংশের বেশি ফ্রিজিয়ান জাতের।

একটা হোলস্টাইন জাতের পূর্ণ বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন এক হাজার ১০০ কেজি পর্যন্ত হয় এবং উচ্চতা ৫৫ থেকে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।

ব্রাহমা গরু
বাংলাদেশে যেসব ব্রাহমা জাতের গরু রয়েছে তার প্রায় সবই কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রজনন করা গরু।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কৃত্রিম প্রজনন বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন বা বীজ বা শুক্রাণু এনে সরকার কয়েকটি জেলায় স্থানীয় খামারিদের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে এই জাতের গরু উৎপাদন শুরু করে।

দেশে ২০০৮ সালে প্রথম প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ‘বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রাহমা উৎপাদন কর্মসূচি শুরু করে। শুরুতে ১১টি উপজেলায় তিন বছরের জন্য এ কর্মসূচি চালু হলেও এখন প্রায় ৫০টির মতো জেলায় চলছে এ কর্মসূচি।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ডা. সরকার বলেছেন, ব্রাহমা গরু মূলত মাংসের জাত বলে পরিচিত। দুধের জন্য এই গরুর তেমন খ্যাতি নেই।

ব্রাহমা গরু দেখতে অনেকটাই দেশী গরুর মতো কিন্তু আকৃতিতে বেশ বড় হয়। এই গরুর গোশতের স্বাদ দেশী গরুর মতো। এর গায়ে চর্বি কম হয়। যে কারণে পুষ্টিগুণ বেশি।

প্রাণি, পুষ্টি ও জেনেটিক্স বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্রাহমা গরুর আদি নিবাস ছিল ভারতে।

সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের ষাঁড়ের ওজন ৮০০ থেকে এক হাজার কেজির বেশি হতে পারে। একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হবে ৫০০ থেকে এক হাজার কেজি।

কোরবানির সময় বাজারে অস্বাভাবিক দাম হাঁকানো গরুগুলো মূলত এই ব্রাহমা জাতেরই গরু। দেশের কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ব্রাহমা জাতের গরু নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। সেগুলোর ফলাফল জানা গেলে আগামী দিনে এ জাতের গরুর উৎপাদন দেশে আরো বাড়বে।

মীরকাদিম
মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম জাতের গরু দেখতে ধবধবে সাদা। কিছুটা লালচে আর আকর্ষণীয় বাঁকা শিং। বাজারে এই গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে। তবে চাহিদার তুলনায় এই জাতের গরুর সরবরাহ কমে গেছে।

এসএসি এগ্রোর নির্বাহী পরিচালক মিরাজ আহমেদ বলেন, এই গরুর দাম এক লাখ ২০ হাজার থেকে শুরু হয়ে আড়াই লাখ পর্যন্ত হয়। মীরকাদিমের গরুর গোশতে আঁশ কম থাকে, এর হাড় চিকন হয়। এই গরুর গোশত হয় নরম ও তেলতেলে।

তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, দেশে মীরকাদিম জাতের ভালো ষাঁড়ের সঙ্কট রয়েছে। যে কারণে এই জাতের উন্নয়নপ্রক্রিয়া ধীরে ধীরে হচ্ছে।

রেড চিটাগং ক্যাটেল
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, রেড চিটাগাং ক্যাটেল বা অষ্টমুখী লাল গরু বা লাল বিরিষ সংক্ষেপে আরসিসি আমাদের দেশের অধিক পরিচিত একটি গরুর প্রজাতি। রেড চিটাগাং ক্যাটেলের প্রধান চারণস্থল চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম।

এছাড়াও এটি কুমিল্লা ও নোয়াখালিতে পাওয়া যায়। দেখতে লাল বর্ণের। দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩০ সেন্টিমিটার ও উচ্চতা প্রায় ২৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ কেজি হয়ে থাকে। গরুর ওজনের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ খাদ্য উপযোগী মাংস।

খামারি মিরাজ আহমেদ বলেন, আরসিসি গরু দেখতে সুন্দর। কোরবানির হাটে সহজেই চোখে পরার মতো এই গরুর প্রজাতি। তবে, গরুর এই বিশেষ প্রজাতি জনপ্রিয় হওয়ার এক বিশেষ কারণ হলো, এর গোশত খুবই সুস্বাদু।

সূত্র : বিবিসি

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop