চাকরি ছেড়ে গরুর খামার করে কোটিপতি গিয়াস
প্রাণিসম্পদ
ছিলেন ব্যাংকার। তবে অন্যের অধীনে চাকরি তার ভালো লাগেনি। সিদ্ধান্ত নেন উদ্যোক্তা হবেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নেমে পড়লেন নিজের সিদ্ধান্ত বায়স্তবায়নে। গড়ে তোলেন গরুর খামার। যে খামার ঘুরে দিয়েছে তার ভাগ্যের চাকা। এখন তিনি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।
বলা হচ্ছে গোপালঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে মো. গিয়াস উদ্দিনের (৩৩) কথা।
গিয়াস উদ্দিন অগ্র ডেইরি ফার্মের সত্ত্বাধিকারী। ফার্মের দুধ প্রসেস করে গড়ে তুলেছেন অগ্র সুইটস ভিলেজ নামে ৩টি মিষ্টির দোকান। ডেইরি ফার্ম ও মিষ্টির দোকানে তিনি ১৫ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তার ফার্মে গরুর সংখ্যা এখন ৯০টি। তিনি ১০ লাখ টাকা নিয়ে ডেইরি ফার্ম শুরু করেন। এখানে তিনি এ পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে স্থায়ী, আবাসনসহ তার সম্পদের পরিমান প্রায় ৩ কোটি টাকা।
মো. গিয়াস উদ্দিন গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি গ্রামের স্কুল হোগলাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। সেখান থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করেন। এরপর বাড়ির পাশের জয়নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ বিদ্যালয় থেকে তিনি ২০০৩ সালে এসএসসি পাস করেন। ২০০৫ সালে খুলনার হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন।
আবুল হোসেন কলেজ থেকে বিবিএস ও নিউ মডেল ইউনিভার্সসিটি কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০১৪ সালে গিয়াস উদ্দিন একটি বেসরকারি ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করেন। ব্যাংকে চাকরি তার ভালো লাগেনি। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন।
২০১৫ সালের শেষের দিকে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। এরপর তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। ২০১৮ সালের ১০ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ১৮ এপ্রিল তিনি ৪টি উন্নত জাতের গাভী দিয়ে হোগলাকান্দি গ্রামেই ডেইরি ফার্ম শুরু করেন। তারপর আর তকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরম মমতায় তিনি তিলতিল করে গড়ে তোলেন ডেইরি ফার্ম। ৪টি থেকে এখন তার ডেইরি ফার্মে গরুর সংখ্যা ৯০টি।
গিয়াস উদ্দিন তরুণদের উদ্দেশে বলেন, উদ্যোক্তা হয়ে ডেইরি ফার্ম করা যেতে পারে। এটি লাভজনক ব্যবসা। আত্মপ্রত্যয়ী হলেই এই ব্যবসা থেকে লাভ করা যায়। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এটি করে জাতিকে দুধ, মাংসের যোগান দেয়া সম্ভব। মেধাবী জাতি গঠনে ভূমিকা রাখা যায়। এটি খুবই পূণ্যের কাজ।
জয়নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ সালাহউদ্দীন বলেন, শহরের অভিজাত এলাকার মিষ্টির মতো মানসম্পন্ন মিষ্টি পাওয়া যায় অগ্র সুইটস ভিলেজে। মিষ্টি খুবই মজাদার। দামও নাগালের মধ্যে। গিয়াস উদ্দিন তার ফার্মের গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে এ মিষ্টি তৈরি করেন। এ মিষ্টিতে কোনো ভেজাল নেই। খাঁটি মানের নিশ্চয়তার এ মিষ্টি আমরা গ্রামে বসে খেতে পারছি।
সূত্র: বাসস